কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার ঘটনায় স্বাধীন তদন্তের জন্য পাকিস্তানের আহ্বানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে চীন৷ দায়িত্বশীল সমাধানের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷
কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে৷ সীমান্তে চতুর্থ রাতের মতো গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে৷ তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি৷ এদিকে উত্তেজনা নিরসনে দুই পক্ষকেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র৷
সংযম প্রদর্শনের আহ্বান চীনের
রোববার পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইশাক দারের সঙ্গে কথা বলেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েং ই ৷ পহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান যে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে, তার প্রতি বেইজিংয়ের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন তিনি৷ চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে ওয়েং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন, ‘‘চীন একটি দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্তের পক্ষে এবং বিশ্বাস করে যে, এই সংঘাত পাকিস্তান ও ভারত কারো মৌলিক স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে না, তা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যেও উপকারী নয়৷''
দুই পক্ষই সংযম প্রদর্শন করবে এবং উত্তেজনা নিরসনে এগিয়ে আসবে, এমনটা প্রত্যাশা তার৷ ওয়েং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লামির সঙ্গেও আলাপ করেছেন৷ পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, ‘‘ভারতের মিথ্যা দাবি, ভিত্তিহীন প্রচারণা এবং একতরফা পদক্ষেপ'' নিয়ে তারা কথা বলেছেন৷
পহেলগামে নিহত ঝন্টু আলীর বাবার আকুতি
05:42
This browser does not support the video element.
‘দায়িত্বশীল সমাধান' চায় যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট দপ্তর রোববার জানিয়েছে তারা ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে৷ দুই দেশই যাতে একটি ‘দায়িত্বশীল সমাধান' নিয়ে কাজ করে সেটি চায় যুক্তরাষ্ট্র৷
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জানিয়েছেন তারা দুই দেশের মধ্যকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘"আমরা ভারত ও পাকিস্তান সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ রেখেছি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে একটি দায়িত্বশীল সমাধানের জন্য একসাথে কাজ করার জন্য উৎসাহ দিচ্ছে৷''
হামলার পরপর যুক্তরাষ্ট্র ভারতের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছিল৷ চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার৷
পহেলগামের ঘটনার পর দলে দলে কাশ্মীর ছেড়েছিলেন পর্যটকরা। আবার তারা কাশ্মীর যাচ্ছেন। আবার বুকিং শুরু হয়েছে।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
সোনমার্গে বাঙালি পর্যটক
কাশ্মীরের সোনমার্গে গিয়ে দেখা হলো আশিস পাল, প্রিয়াঙ্কা পালদের সঙ্গে। পহেলগামের ঘটনার পর তারা কাশ্মীর এসেছেন। এর আগেও তারা কাশ্মীর এসেছেন। তারা বললেন, ''কাশ্মীরের মানুষ খুব ভালো। অতিথিবৎসল। দুর্ঘটনা যে কোনো জায়গাতেই ঘটতে পারে। তাই আমরা ভয় পাচ্ছি না। এখনো পর্যন্ত আমাদের কোনো সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি।''
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
বিভিন্ন রাজ্যের পর্যটক
শুধু বাঙালি নয়, সোনমার্গে গুজরাট, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু থেকেও পর্যটকরা এসেছেন। সকলেই বলছেন, তারা কোনো সমস্যায় পড়েননি। তারা উপভোগ করছেন ভূস্বর্গকে।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
প্রথমে বুকিং বাতিল হয়েছিল
পহেলগামে ২২ তারিখের ঘটনার পর সোনমার্গের হোটেলেও বহু বুকিং বাতিল হয়েছে। সোনমার্গও খৈালি হয়ে গেছিল। কিন্তু গত দুই তিন ধরে নতুন করে বুকিং হচ্ছে। পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। ঘটনার পর খালি হয়ে যাওয়া সোনমার্গ তাই আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে ।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
ঘোড়াচালক ও ব্যবসায়ীরা যা বলছেন
ঘোড়াচালক ও ব্যবসায়ীরা ভেবেছিলেন, অনেকদিনের জন্য তাদের রুটিরুজির পথ বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু পর্যটকরা আবার আসতে শুরু করায়, তারাও আশাবাদী, পরিস্থিতি আবার আগের মতো হয়ে যাবে।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
ট্যাক্সিচালকরা যাত্রী পাচ্ছেন
পহেলগাম যেমন পুরো খালি হয়ে গেছে। ট্যাক্সিচালক, হোটেল ব্যবসায়ী-সহ পর্যটকদের উপর নির্ভর করা মানুষদের মাথায় হাত। কিন্তু সোনমার্গে ট্যাক্সিচালকরা যাত্রী পাচ্ছেন। আগের মতো না হলেও পাচ্ছেন। তারা কিছুটা স্বস্তিতে।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
ঘোড়া থেকে বাইক
ঘোড়াওয়ালারা যাত্রা পাচ্ছেন। ফলে তারাও খুশি। অনেকে বাইক ভাড়া করে ঘুরছেন। এমন একাধিক বাইক আরোহীকে দেখা যাচ্ছে সোনমার্গের রাস্তায়।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
অসাধারণ সোনমার্গ
সোনমার্গের প্রাকৃতিক দৃশ্য অসাধারণ। চারপাশে বরফের পাহাড়। এখান থেকে চলে গেছে কার্গিলের রাস্তা। এখান থেকে অমরনাথ যাত্রাও হয়। জোজিলা পাসও ঘুরে আসেন কিছু পর্যটক।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
গুলমার্গ, খিলানমার্গেও পর্যটক
রোববার গুলমার্গেও পর্যটকদের দেখা গেছে। তবে শ্রীনগর এখনো ফাঁকা।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
শ্রীনগর বিমানবন্দরের অধিকর্তা জাভেদ অঞ্জুম ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ২২ তারিখের পর শ্রীনগর বিমানবন্দরে পর্যটকদের আসা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে গেছে। তবে ২৭ এপ্রিল যাত্রীর সংখ্যা সামান্য বেড়েছে।