বাংলাদেশে ব্লগার হত্যার ঘটনা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই এখন আলোচিত৷ প্রশ্ন উঠেছে, মুক্তচিন্তার চর্চা এখানে কতটা নিরাপদ? একইসঙ্গে মুক্তচিন্তার সীমা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলতে কী বোঝায় তা নিয়েও চলছে বিতর্ক৷
বিজ্ঞাপন
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারের একটি ফেসবুক পোস্ট সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আলোচিত৷ তিনি তাঁর পোস্টে বলেছেন, ‘‘সুনির্দিষ্ট কোনো জাতি-গোষ্ঠী-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গের প্রতি সচেতনভাবে বিদ্বেষ ছড়ানো কোনোভাবেই মুক্তচিন্তা কিংবা মুক্তবুদ্ধির চর্চা হতে পারে না৷ একইভাবে যারা শুধুমাত্র নিজেদের হীন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সম্পূর্ণ যুক্তিহীনভাবে সমাজের বৃহত্ জনগোষ্ঠীকে অকল্যাণ ও বিশৃঙ্খলার মুখে ঠেলে দেন, তারা কোনোভাবেই মুক্তচিন্তা কিংবা মানবতাবাদী হতে পারেন না৷''
ব্লগাররা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করছেন
গত ৭ আগস্ট ব্লগার নিলয় নীল হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল বলেন, ‘‘ব্লগারদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, আপনারা কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করবেন না৷ লিখতে গিয়ে সীমা লঙ্ঘন করবেন না৷''
নিলয় হত্যারহস্যও একই পথে?
আবারও ব্লগার হত্যার ঘটনা ঘটল বাংলাদেশে৷ এবার বাড়িতে ঢুকে জবাই করা হলো ব্লগার নীলয় নীলকে৷ বরাবরের মতো হত্যাকাণ্ডের পরই পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলেও, নিহতের পরিবার এ আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছে না৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
ঘরে ঢুকে জবাই
গত ৭ আগস্ট ঢাকার উত্তর গোড়ান এলাকার বাসায় ঢুকে নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়, ওরফে নিলয় নীলকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে৷ ব্লগার ও গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী নিলয়ের বয়স হয়েছিল ৪০ বছর৷ ভাড়া নেয়ার জন্য বাসা দেখতে চেয়ে ঢুকে পড়া চার দুর্বৃত্ত প্রথমে নিলয়ের স্ত্রী ও তাঁর ছোট বোনকে বারান্দায় বের করে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়, তারপর জবাই করে নিলয়কে৷
ছবি: Twitter
পুলিশকে পাশে পাননি নিলয়
কিছুদিন ধরেই তাঁর ওপর হামলার আশঙ্কা করছিলেন নিলয়৷ তিন মাস আগে তিনি লক্ষ্য করেছিলেন, অচেনা কয়েকজন লোক তাঁকে অনুসরণ করছে৷ বিষয়টি জানিয়ে সাধারণ ডায়েরি করার জন্য থানায় গিয়েছিলেন৷ পুলিশ বিষয়টিকে আমলে না নিয়ে তাঁকে বরং দেশ ছাড়ার পরামর্শ দেয়৷ তাঁকে অনুসরণ করা এবং পুলিশের দেশ ছাড়ার পরামর্শের কথা ফেসবুকে নিলয় নিজেই লিখেছিলেন নিলয়৷
ছবি: Twitter
নিন্দার ঝড়, গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি
নিলয় নীল নৃশংসভাবে নিহত হওয়ার পর দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে৷ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে হত্যাকারীদের শাস্তি দাবি করেছে৷ নিলয়ের স্ত্রী আশামনি (ওপরের ছবিতে, বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয়) এখনো কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
প্রতিবাদ
নিলয় হত্যার পর রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি শহরে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে৷ নিলয়সহ সব ব্লগার হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করার পাশাপাশি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং ব্যর্থতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, ‘‘এতদিন ব্লগারদের রাস্তায় হত্যা করা হতো, এখন বাসায় ঢুকে জবাই করা শুরু হলো৷ এই সরকার ব্লগার হত্যায় পৃষ্ঠপোষকতা করছে৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ও বিচারহীনতার জন্যই হত্যাকাণ্ড চলছে
গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ব্লগার ও বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়৷ ৩০শে মার্চ তেজগাঁও এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করা হয় ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে৷ মৌলবাদীদের প্রাণনাশের হুমকির মুখে দেশ ছাড়া লেখিকা তসলিমা নাসরীন ধারবাহিকভাবে ব্লগার হত্যার জন্য শেখ হাসিনার সরকার এবং পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করেছেন৷
ছবি: AFP/Getty Images
আল-কায়েদার দায়িত্ব স্বীকার
শুক্রবারই নিলয় হত্যার দায় স্বীকার করে আল-কায়েদা৷ আল-কায়েদার ভারতীয় উপ-মহাদেশের (একিউআইএস) বাংলাদেশ শাখা, আনসার আল-ইসলামের নামে সংবাদমাধ্যমে ই-মেল পাঠিয়ে ইসলামি জঙ্গি সংগঠনটি এ হত্যার দায়িত্ব স্বীকার করে৷
ছবি: Fotolia/Oleg Zabielin
‘ধর্মের নামে সন্ত্রাস চলতে দেবো না’
এদিকে ঢাকার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্মরক্ষার কথা বলে মানুষ হত্যাকে ‘ধর্মের নামে সন্ত্রাস’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশে এটা চলতে দেওয়া যাবে না৷’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম৷ যারা ধর্মকেও কলুষিত করে যাচ্ছে, তারা কখনোই ধর্মে বিশ্বাস করে বলে মনে হয় না৷ তারা নিজেদের মুসলমান হিসেবে কীভাবে ঘোষণা দেবে?’’
ছবি: Oli Scarff/Getty Images
‘সীমা লঙ্ঘন করবেন না’
পুলিশের আইজি একেএম শহিদুল হক বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া দণ্ডনীয় অপরাধ জানিয়ে ব্লগারদের প্রতি সীমা লঙ্ঘন না করার অনুরোধ জানিয়েছেন৷ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ‘‘কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া উচিত নয়৷ কেউ তা করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে৷’’ ব্লগার হত্যাকারীদের ‘মানসিক বিকারগ্রস্ত’ হিসেবে অভিহিত করে তাদের গ্রেপ্তারের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
জামায়াতের ‘ভুল’
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সোচ্চার ছিলেন নিলয় নীল৷ বিচারাধীন, সাজাপ্রাপ্ত এবং অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের অধিকাংশই জামায়াতে ইসলামীর নেতা৷ নিলয় নিহত হওয়ার পর হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয় জামায়াত৷ তবে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য হামিদুর রহমান আযাদের পাঠানো বিবৃতিতে নিলয় নীল নামে পরিচিতি নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়ের নাম লেখা হয় নীলয় হোসেন ওরফে নীল৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
9 ছবি1 | 9
এই দু'টি বক্তব্য পাশাপাশি পড়লে কিছু প্রশ্ন সামনে চলে আসে৷ তার মধ্যে অন্যতম হলো মত প্রকাশ করতে গিয়ে কেউ কি বাড়াবাড়ি করছেন? অথবা কোনো ধর্ম, গোষ্ঠী বা ব্যক্তির অনুভূতিকে কি আহত করছেন?
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভোগের প্রধান যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা মনে করি কেউ কেউ ধর্মীয় অনুভূতিকে আহত করছেন৷ যারা ব্লগার হত্যাকারী, তারা যেমন উগ্রপন্থী মৌলবাদী তেমনি যারা ধর্মীয় অনুভূতিতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আঘাত করেন তারাও উগ্রপন্থী মৌলবাদী৷ আর এই দুই অপরাধের বিচারের জন্য আইন আছে৷ কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারেনা৷''
তিনি জানান, ‘‘ব্লগার হত্যার তদন্ত এবং অপরাধীদের আটক করতে গিয়ে নিহত ব্লগার কী করেছেন বা লিখেছেন তা আমরা বিবেচনা করি না৷ বিবেচনার আইনগত সুযোগও নেই৷ আমরা বিবেচনা করি হত্যা এবং এরসঙ্গে কারা জড়িত তা৷ তবে এই তদন্ত করতে গিয়েই আমরা লক্ষ্য করেছি যে, কোনো কোনো ব্লগারের মধ্যে ইচ্ছাকৃত ঘৃণা ছাড়ানো এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার প্রবণতা আছে৷'
পুলিশের বক্তব্য হত্যাকারীদের ‘উৎসাহ যোগাতে' পারে
ইমরান এইচ সরকার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কোনো ধর্ম, গোষ্ঠী, গোত্র বা বর্ণের প্রতি ঘৃণা ছড়ান বা তাদের আঘাত করা অন্যায় – অপরাধ৷ এমনকি কোনো ব্যক্তির প্রতিও এই আচরণ করা যাবে না৷ এটা কোনো লেখা, বক্তৃতা, বিবৃতি অথবা যে কোনো মাধ্যমে হতে পারে৷''
তবে তিনি মনে করেন, ‘‘ব্লগার নিলয় হত্যার পরপরই আইজিপি ব্লগারদের সীমা লঙ্ঘন না করার আহ্বান জানাতে সঠিক সময় বেছে নেননি৷ তার আহ্বান প্রকারান্তরে হত্যাকারীদের উত্সাহিত করতে পারে বা হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিতে পারে৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘কোনো লেখা বা ব্লগ যদি ঘৃণা ছড়ায়, তাহলে তা প্রগতিশীলতা হতে পারে না৷ প্রগতিশীল মানুষ আলো ছাড়াবেন, ঘৃণা নয়৷ তিনি সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন না৷''
ব্লগার হত্যা বনাম ধর্ম অবমাননা
গেয়েন্দা বিভাগ জানায়, ‘‘আমরা সামাজিত যোগাযোগের মাধ্যমে জঙ্গিদের তত্পরতা যেমন পর্যবেক্ষণ করি, তেমনি কিছু ব্লগারের লেখালেখি এবং তত্পরতাও পর্যবেক্ষণ করছি৷ আর তাতে মনে হচ্ছে দু'টি গোষ্ঠী দাড়িয়েছে যারা সংখ্যায় অল্প হলেও তারা আতঙ্কের৷ একটি গ্রুপ ব্লগার হত্যার জন্য যেন ওঁত্ পেতে আছে৷ আরেকটি গ্রুপ যেন ধর্ম অবমাননার পণ করেছে৷''
যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, ‘‘আমরা দু'টি গ্রুপকেই আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি৷ আমরা প্রয়োজনে সতর্কও করছি৷ ব্যক্তির নিরপত্তার প্রথম ধাপটি তার নিজেকেই দেখতে হয়৷ কেউ যেন নিজেই নিজেকেই ঝুঁকিপূর্ণ করে না তোলেন৷ আইন লঙ্ঘন না করেন৷''
ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘‘বাকস্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা সব সময়ই আপেক্ষিক৷ আমাকে দেশের প্রচলিত আইন, সংবিধান এবং নৈতিকতাই বলে দেয় আমি কতদূর যেতে পারি৷ সেটা সবাইকে বুঝতে হবে৷ আর এটাও বুঝতে হবে নরহত্যা সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ৷''
দুই পক্ষই চরমপন্থা অবলম্বন করছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. সফিউল আলম ভুঁইয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক প্রবণতায় আমি উদ্বিগ্ন৷ আমার কাছে মনে হয় দু'টি গোষ্ঠী যেন মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে৷ একটি গোষ্ঠী হত্যাকেই সমাধান মনে করছে৷ আরেকটি গোষ্ঠি যেন ধর্মের অবমাননাকেই শ্রেয় মনে করছে৷ দুই পক্ষই চরমপন্থা অবলম্বন করছে৷ এর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে৷''
তিনি বলেন, ‘‘অসহিষ্ণুতা, ধর্মান্ধতা, ধর্মবিদ্বেষ কোনোটাই কাম্য নয়৷ আমার চিন্তা এবং মত প্রকাশের যেমন স্বাধীনতা আছে তেমনি আমার স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশ যেন অন্যের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশকে বাধাগ্রস্ত না করে তা খেয়াল রাখতে হবে৷''
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘আমাদের ভাবতে হবে আমরা ঘৃণা ছাড়াবো না প্রগতির চর্চা করবো৷ আমরা হত্যা করবো না আইন মানবো৷''
জার্মানি ঘুরে গেলেন ব্লগার বন্যা আহমেদ
ডয়চে ভেলের দ্য বব্স অ্যাওয়ার্ড নিতে সম্প্রতি জার্মানি ঘুরে গেছেন ব্লগার রাফিদা আহমেদ বন্যা, বাংলাদেশে যিনি পরিচিত বন্যা আহমেদ নামে৷ ঢাকায় দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত হওয়ার পর এটাই ছিল তাঁর প্রথম বিদেশ সফর৷
ছবি: DW/M. Müller
জার্মানিতে বন্যা
গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় দুর্বৃত্তের হামলায় নিহত হন নাস্তিক ব্লগার, লেখক ড. অভিজিৎ রায়৷ তবে হামলায় গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদ৷ বন্যা মনে করেন, ধর্মীয় মৌলবাদীরা সেই হামলা চালিয়েছিল৷ গত ২০ জুন জার্মানিতে আসেন তিনি৷
ছবি: DW/M.Magunia
মুক্তমনাদের মিলন
চলতি বছর ঢাকায় নিহত তিন ব্লগারের মধ্যে দু’জনই ছিলেন মুক্তমনা ব্লগের সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ স্বভাবতই এরপর মুক্তমনা ব্লগারদের মধ্যেও এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে৷ তবে সেই আতঙ্ককে পাশ কাটিয়ে রেখে লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা৷ শুধু নিজেদের পরিচয় গোপন রাখছেন৷ বন্যার সঙ্গে জার্মানিতে দেখা করেছেন এ রকম কয়েকজন ব্লগার৷ ছবিটি তুলেছেন প্রখ্যাত আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম৷
ছবি: Instagram/shahidul001
অন্য বিজয়ীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ
বন্যার জার্মানি সফরের মূলে ছিল ডয়চে ভেলের দ্য বব্স অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করা৷ এ বছর তাঁর এবং অভিজিতের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সামাজিক পরিবর্তন বিভাগে জুরি অ্যাওয়ার্ড জয় করে মুক্তমনা ব্লগ৷ জার্মানি সফরের দ্বিতীয় দিনে বন্যা দেখা করেন দ্য বব্স-এর অন্যান্য বিজয়ী এবং টিমের সঙ্গে৷
জাহাজে আড্ডা
শারীরিকভাবে এখনো দুর্বল বন্যা৷ দুর্বৃত্তরা এলোপাথাড়ি কুপিয়েছেন তাঁকে৷ মাথায় কোপের ক্ষতগুলো দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, তাঁকেও হত্যা করা ছিল তাদের উদ্দেশ্য৷ তবে মানসিকভাবে আজ আগের চেয়েও বেশি শক্তিশালী বন্যা৷ জুনের ২৩ তারিখ ডয়চে ভেলের আয়োজনে নৌভ্রমণে অংশ নেন তিনি৷ তখন আলোচনায় উঠে আসে এ সব বিষয়৷ ছবিতে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে বন্যা৷
ছবি: DW/A.Islam
অবশেষে মাহেন্দ্রক্ষণ
জার্মানির বন শহরে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামে একটি অনুষ্ঠানে দ্য বব্স বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়৷ বব্স-এর বাংলা ভাষার জুরি ড. শহিদুল আলম বন্যার হাতে পু্রস্কার তুলে দেন৷ এ সময় তিনি বলেন, ‘‘মুক্তমনা ছিল অভিজিতের গর্ব এবং আনন্দ৷ এই অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করতে পারলে তাঁর চেয়ে সন্তুষ্ট কেউ হতে পারত না৷’’
ছবি: DW/M. Müller
টিম সেলফি
বন্যা সেলফি তুলতে পছন্দ করেন না৷ তারপরও ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের জোরাজুরিতে রাজি হন তিনি৷ ছবিতে বাংলা বিভাগের বর্তমান এবং প্রাক্তন কর্মীরা ছাড়াও রয়েছেন ডয়চে ভেলের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর গ্যার্ডা ময়ার৷
ছবি: DW/A.Islam
ফিরে যাওয়া
ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গ একাধিকবার কথা বলেছেন ব্লগার বন্যা আহমেদের সঙ্গে৷ বন্যার সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন সবাই৷ ২৫শে জুন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন তিনি৷