জার্মানিতে উদ্বাস্তুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা বেড়ে চলা সত্ত্বেও মিডিয়া অভিবাসীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধ ও সহিংসতাকে বেশি গুরুত্ব দেয়, বলছে একটি নতুন জরিপ৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে বসবাসকারী বিদেশিদের উপর আক্রমণের ঘটনা বেড়েছে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ – যা কিনা লক্ষণীয়৷ অপরদিকে অপরাধের দায়ে সন্দেহভাজন অ-জার্মান ব্যক্তিদের সংখ্যাও বেড়েছে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ৷ কিন্তু ২০১৭ সালে মিডিয়ার রিপোর্টিংয়ে এ দু'টি তথ্য সম্যকভাবে পেশ করা হয়নি – বলছে একটি নতুন জার্মান জরিপ৷
মিডিয়ায় অ-জার্মান বিদেশি-বহিরাগত, বিশেষ করে উদ্বাস্তুদের কৃত অপরাধের ঘটনাকেই বেশি করে তুলে ধরা হয়েছে, বলে মন্তব্য করেছেন ‘ম্যাক্রোমিডিয়া মিডিয়া স্কুল’-এ সাংবাদিকতার অধ্যাপক ও জরিপটির প্রধান পরিচালক টোমাস হেস্টারমান৷ জার্মান মিডিয়ার ‘‘বিদেশ থেকে আসা সহিংস অপরাধীদের দিকে বেশি নজর দেওয়ার প্রবণতা’’ লক্ষ্য করেছেন তিনি৷
প্রফেসর হেস্টারমান ডয়চে ভেলেকে বলেন যে, তিনি ও তাঁর দলের গবেষকরা জার্মানির চারটি নেতৃস্থানীয় জাতীয় পর্যায়ের পত্রিকার ২৮৩টি প্রবন্ধ ও ২০১৭ সালের প্রথম চার মাসে সম্প্রচারিত ২১টি টেলিভিশন নিউজ রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে দেখেছেন৷
তাঁরা দেখেন যে, ২০১৫/২০১৬ সালের নিউ ইয়ার্স ইভে কোলনে মহিলাদের ব্যাপক যৌন হয়রানির পর থেকে উদ্বাস্তুদের প্রতি মিডিয়ার মনোভাব পুরোপুরি বদলে যায়৷ ২০১৫ সালে জার্মানিতে বিপুল সংখ্যক উদ্বাস্তুর আগমনই কোলোনের ঘটনার জন্য দায়ী, জনমানসে এই ধারণা বদ্ধমূল হয়ে যায়৷
মিডিয়া যা দেখে ও দেখায়
বর্তমানে জার্মান মিডিয়া উদ্বাস্তু পরিস্থিতি সম্পর্কে অনেক বেশি নেতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করছে, বলে হেস্টারমানের ধারণা৷
সর্বাধুনিক যে ঘটনাটি আপাতত মিডিয়ায় আলোড়ন তুলেছে, সেটি হল হামবুর্গের একটি সুপারমার্কেটে ছুরিকাঘাতের ঘটনা৷ ঘটনায় এক ২৬ বছর বয়সি ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ও সম্ভাব্য ইসলামপন্থি এলোপাথাড়ি ছুরি চালিয়ে একজন ব্যক্তিকে হত্যা ও আরো কয়েকজনকে আহত করে৷ ফেডারাল কৌঁসুলি ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছেন৷
ম্যাক্রোমিডিয়ার জরিপে দেখা যায় যে, এ বছর জার্মান সংবাদ অনুষ্ঠানগুলিতে অ-জার্মান ব্যক্তিদের সম্ভাব্য অপরাধ সম্পর্কে ২০১৪ সালের তুলনায় চারগুণ বেশি রিপোর্ট প্রচারিত হয়েছে – যদিও অ-জার্মানদের কৃত সম্ভাব্য অপরাধের ঘটনা বেড়েছে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ৷
শরণার্থী সংকটের কিছু আইকনিক ছবি
ইউরোপে ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী প্রবেশের ছবি গোটা বিশ্বে ছড়িয়েছে এবং মানুষের মতামত সৃষ্টিতে প্রভাব বিস্তার করেছে৷ অভিবাসন এবং অভিবাসনের ফলে সৃষ্ট ভোগান্তির এত ছবি আগে দেখেনি বিশ্ব৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/E. Morenatti
লক্ষ্য: টিকে থাকা
অনিশ্চিত যাত্রার ধকল সামলাতে হয় শারীরিক এবং মানসিকভাবে৷ ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচতে হাজার হাজার সিরীয় নাগরিক তুরস্ক হয়ে গ্রিসে জড়ো হয়েছেন৷ সে দেশের তিনটি দ্বীপে এখনো দশ হাজারের মতো শরণার্থী বসবাস করছেন৷ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস অবধি ছয় হাজার নতুন শরণার্থী এসেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Messinis
পায়ে হেঁটে ইউরোপে
২০১৫ এবং ২০১৬ সালে এক মিলিয়নের বেশি মানুষ গ্রিস ও তুরস্ক থেকে পশ্চিম ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করেছে৷ ম্যাসিডোনিয়া, সার্বিয়া, হাঙ্গেরি, অর্থাৎ বলকান রুট ব্যবহার করে তাদের এই যাত্রার অধিকাংশই ছিল পায়ে হেঁটে৷ অভিবাসীদের এই যাত্রা বন্ধ হয়ে যায়, যখন রুটটি আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয় এবং কয়েকটি দেশ সীমান্তে বেড়া দিয়ে দেয়৷
ছবি: Getty Images/J. Mitchell
বৈশ্বিক আতঙ্ক
এই ছবিটি গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে৷ তিন বছর বয়সি সিরীয় শিশু আয়লান কুর্দির মরদেহ তুরস্কে সমুদ্রতটে ভেসে ওঠে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে৷ ছবিটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে এবং শরণার্থী সংকটের প্রতীকে পরিণত হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/DHA
বিশৃঙ্খলা এবং হতাশা
শেষ সময়ের ভিড়৷ ইউরোপে প্রবেশের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শুনে ক্রোয়েশিয়াতে এভাবে ট্রেনে এবং বাসে উঠতে দেখা যায় অসংখ্য শরণার্থীকে৷ ২০১৫ সালের অক্টোবরে হাঙ্গেরি সীমান্ত বন্ধ করে দেয় এবং শরণার্থীদের জন্য কন্টেইনার ক্যাম্প তৈরি করে৷
ছবি: Getty Images/J. J. Mitchell
বিবেকবর্জিত সাংবাদিকতা
হাঙ্গেরির এক সাংবাদিক এক শরণার্থীকে ল্যাং মেরে ফেলে দেয়ার ভিডিও নিয়ে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে সমালোচনার ঝড় ওঠে৷ সার্বিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন হাঙ্গেরির একটি এলাকার সেই ঘটনায় আলোচিত সাংবাদিকের চাকুরি চলে যায়৷
ছবি: Reuters/M. Djurica
উন্মুক্ত সীমান্ত নয়
২০১৬ সালের মার্চে বলকান রুট আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেয়ার পর সীমান্তগুলোতে আরো আবেগপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়৷ হাজার হাজার শরণার্থী বিভিন্ন সীমান্তে আটকা পড়ে এবং তাদের সঙ্গে বর্বর আচরণের খবর পাওয়া যায় বিভিন্ন স্থান থেকে৷ অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে সীমান্ত পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করে৷
ধুলা এবং রক্তে ঢাকা এক শিশু৷ পাঁচবছর বয়সি ওমরানের এই ছবিটি প্রকাশ হয় ২০১৬ সালে৷ আয়লান কুর্দির ছবির মতো এই ছবিটিও গোটা বিশ্বকে আরেকবার নাড়িয়ে দেয়৷ সিরীয়ায় গৃহযুদ্ধ কতটা বিভৎস পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে এবং সিরীয়রা কতটা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে, তার এক প্রতীক হয়ে ওঠে ছবিটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Aleppo Media Center
অজানা নতুন ঠিকানা
গ্রিক-ম্যাসিডোনিয়া সীমান্তের ইডোমিনিতে নিজের মেয়েকে কোলে নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় হাঁটছেন এক সিরীয় নাগরিক৷ ইউরোপে তাঁর পরিবার নিরাপদ থাকবে, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল তাঁর৷ ডাবলিন রেগুলেশন অনুযায়ী, একজন শরণার্থী প্রথম ইউরোপের যে দেশে প্রবেশ করেন, সে দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে হবে৷ ফলে যারা আরো ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন, তাদের অনেককে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷
ছবি: Reuters/Y. Behrakis
সহযোগিতার আশা
বিপুল সংখ্যক শরণার্থী প্রবেশের কারণে জার্মানি অভিবাসন নীতি আরো কড়া করে ফেললেও এখনো শরণার্থীদের প্রথম পছন্দ জার্মানি৷ ইউরোপের আর কোনো দেশ জার্মানির মতো এত বিপুল সংখ্যক শরণার্থী নেয়নি৷ ২০১৫ সালে সঙ্কট শুরুর পর থেকে দেশটি ১২ লক্ষ শরণার্থী নিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Hoppe
ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরা
ইউরোপে শরণার্থী প্রবেশের সংখ্যা চলতি বছর কমেছে, তবে থেমে যায়নি৷ বরং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ডুবে মরছে অনেকে৷ বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা এবং সরকারের হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছর এখন অবধি সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে মারা গেছে প্রায় দু’হাজার মানুষ৷ গতবছর এই সংখ্যা ছিল ৫ হাজার৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/E. Morenatti
10 ছবি1 | 10
‘উদ্বাস্তু মানেই সহিংস’
দশ বছর আগে, অর্থাৎ ২০০৭ সালেও অ-জার্মান অপরাধ ও অপরাধীদের সম্পর্কে মিডিয়ায় আগ্রহ খুব কম ছিল না; তবে ২০১৭ সালে তা চরমে পৌঁছেছে, বলে দীর্ঘমেয়াদি জরিপটিতে প্রকাশ পেয়েছে৷
জরিপে অপরদিকে দেখা যায় যে, অ-জার্মানরা সহিংসতার শিকার হওয়ার ব্যাপারে জার্মান মিডিয়ায় রিপোর্টের সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমে গেছে – যদিও নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ যথারীতি উদ্বাস্তু নিবাসের উপর আক্রমণের ঘটনার পরিসংখ্যান রেখে চলেছেন৷ জার্মানির সর্বাধিক প্রচারিত ট্যাবলয়েড ‘বিল্ড’ পত্রিকায় বিদেশি-বহিরাগতদের নিয়ে রিপোর্টের ৬৪ শতাংশ ছিল বিদেশিদের কৃত সম্ভাব্য অপরাধকে কেন্দ্র করে৷
এই ধরনের একপেশে ও একতরফা রিপোর্টিংয়ের ফলে জনসাধারণ বিষয়টি সম্পর্কে একটি বিকৃত ধারণা করতে পারেন ও বিদেশিদের প্রতি বিরূপ মনোভাব উস্কানি পেতে পারে, বলে হেস্টারমান সাবধান করে দিয়েছেন: ‘‘লোকে মনে করতে পারেন যে, বিদেশিদের সমাজে অন্তর্ভুক্তির প্রচেষ্টা একটি বিশাল প্রমাদ ছাড়া আর কিছু নয়৷’’
ফেডারাল দায়রা তদন্ত কার্যালয় বা বিকেএ সবে মাত্র ২০১৩ সাল থেকে অপরাধের যারা শিকার হচ্ছেন, তাদের নাগরিকত্বের হিসাব রাখতে শুরু করেছে৷ বিকেএ-র পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে যে, জার্মানদের চেয়ে অ-জার্মানই বেশি সহিংস অপরাধের শিকার হয়ে থাকেন৷
‘দু'টি দিকই দেখাও'
উদ্বাস্তু বা বিদেশি-বহিরাগতদের কাহিনির ভালো-মন্দ দু'টি দিকই দেখানো মিডিয়ার কর্তব্য, বলে হেস্টারমান মনে করেন – একদিকে যেমন অসাফল্য ও হতাশার কাহিনি, অন্যদিকে তেমন সফলতা ও আশাবাদিতার কাহিনি৷
ইটালির যে গ্রামের প্রাণ ফিরিয়েছেন শরণার্থীরা
দক্ষিণ ইটালির এসপ্রোমন্টে পর্বতমালার পাদদেশের এক গ্রাম ক্রমশ যেন নির্জীব হয়ে যাচ্ছিল৷ তবে এখন শরণার্থীদের পদচারণায় অনেকটাই সজীবতা ফিরেছে সেখানে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Solaro
শরণার্থী এবং স্থানীয়দের সুবিধা
দক্ষিণ ইটালির এসপ্রোমন্টের ছোট্ট সেন্ট’আলেসিও গ্রামের বাসিন্দারা গত তিন বছর ধরে পরিবার এবং অভিবাসীদের স্বাগত জানাচ্ছেন৷ এক প্রকল্পের আওতায় এটা করা হচ্ছে, যা শুধু মানবিক সহায়তাও নয় অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সুযোগ সুবিধাও দিচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Solaro
প্রায় মরুতে পরিনত হওয়া গ্রাম
শরণার্থীরা আসার আগের বছরগুলোতে সেন্ট’আলেসিও’র বাসিন্দার সংখ্যা ক্রমশ কমছিল৷ সেখানে ছিল মাত্র ৩৩০ জন বাসিন্দা, যাদের অধিকাংশই বৃদ্ধ৷ গ্রামের রাস্তাঘাটগুলো হয়ে যাচ্ছিল মরুভূমির মতো, ঘরবাড়ির জানালাও থাকতো অধিকাংশ সময় বন্ধ৷ আসলে ভালো কাজের আশায় গ্রামটির অধিকাংশ বাসিন্দা পাড়ি দেন টুরিন, মিলান এমনকি অস্ট্রেলিয়া অবধি৷ ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Solaro
অভিবাসীদের জন্য ইটালীয় রান্নার প্রশিক্ষণ
গ্রামের পরিস্থিতি বদলের জন্য স্থানীয় কাউন্সিল অভিবাসীদের জায়গা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী এবং শরণার্থীদের নেটওয়ার্ক এসপিআরএআর’এর সহায়তায় ৩৫ অভিবাসীকে গ্রামের আটটি খালি ফ্ল্যাট ভাড়া দেয়া হয়৷ ছবিতে অভিবাসীরা রান্নার ক্লাসে অংশ নিচ্ছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Solaro
‘একটু নড়াচড়া ভালো’
গ্রামের একমাত্র বারে স্থানীয় এবং অভিবাসীরা একত্রে সময় কাটান৷ বারটির মালিক ক্যালেস্টিনা বোরেলো, যার ছেলে ভালো কাজের আশায় গ্রাম ছেড়ে বেলজিয়ামে চলে গেছেন কয়েকবছর আগে৷ ক্যালেস্টিনা জানান, গ্রামটি ক্রমশ জনশূণ্য হয়ে যাচ্ছিল, তবে এখন যে অল্পবিস্তর ‘নড়াচড়া’ সৃষ্টি হয়েছে তা অবশ্যই ভালো৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Solaro
অভিবাসীদের দেয়া হচ্ছে সব সুযোগ
গ্রামটিতে বর্তমানে ইরাকি কুর্দিদের এক পরিবার, ঘানা, নাইজেরিয়া, মালি, সেনেগাল এবং গাম্বিয়ার কয়েকজন অল্পবয়সি অভিবাসী বসবাস করছেন৷ তাদের সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে৷ বিশেষ করে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে কাজের সুযোগ, ভাষা শেখার ব্যবস্থা, আইনি সহায়তা, এমনকি প্রয়োজনে মানসিক চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে৷ সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডেও স্থানীয়দের সঙ্গে অভিবাসীদের যুক্ত করা হচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Solaro
আশাবাদী মেয়র
গ্রামের মেয়র স্টেফেনো কালাবোরো মনে করেন, অভিবাসীদের আশ্রয় দেয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সুবিধাও নিশ্চিত হচ্ছে৷ এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১৬ জনের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হয়েছে, যারা পার্টটাইম বা ফুলটাইম কাজ করছেন৷ ষোল জনের মধ্যে সাতজন স্থানীয় বাসিন্দা৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Solaro
খেলার মাঠে সখ্যতা বাড়ানো
স্থানীয় এবং অভিবাসীদের মধ্যে সখ্য বাড়ানোর এক উপায় এই ফুটবল খেলার মাঠ৷ পাশাপাশি গ্রামের অধিবাসীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেখানকার বার, সুপারমার্কেট, চিকিৎসকের চেম্বার, যেগুলো কিনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, সবই এখন চালু রাখা যাবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Solaro
7 ছবি1 | 7
জরিপে আরো দেখা যায় যে, গবেষণায় যে সব মিডিয়া বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তারা সাধারণত উদ্বাস্তুদের সরাসরি সাক্ষাৎকার নেয় না অথবা তাদের বক্তব্য পেশ করে না৷ অবশ্য এটা একটা ভাষাগত সমস্যা হতে পারে, বলে হেস্টারমান স্বীকার করেছেন৷ তবুও এ ব্যাপারে জার্মান সাংবাদিকদের নিরাসক্তি তাঁকে আশ্চর্য করেছে৷
২০১৫-য় আর ২০১৬ সালের গোড়ার দিকে যখন প্রায় দশ লাখ উদ্বাস্তু জার্মানিতে আসেন, সেই সময় জার্মান মিডিয়া বিষয়টি সম্পর্কে কিরকম রিপোর্ট করেছি্ল, তা নিয়ে অটো ব্রেনার ইনস্টিটিউটের একটি প্রামাণ্য জরিপে অভিযোগ করা হয়েছে যে, জার্মানির মুখ্য দৈনিকগুলির রিপোর্টিং একপেশে ছিল ও সরকারি নীতির বাস্তবসম্মত বিশ্লেষণ করেনি৷
মেইনস্ট্রিম মিডিয়া তখন জার্মান জনগণ ও সরকারের উদ্বাস্তুদের স্বাগত জানানোর নীতিকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেয় ও উদ্বাস্তুদের নিয়ে নানা মর্মস্পর্শী কাহিনি পেশ করে৷ বহু জার্মান যে এই ‘উদ্বাস্তু স্রোত’ সম্পর্কে অস্বস্তি বোধ করছেন, সে কথাটি পুরোপুরি ঢাকা পড়ে যায়, বলে জরিপের অভিযোগ৷
অটো ব্রেনার ইনস্টিটিউটের জরিপের জন্য জার্মান পত্র-পত্রিকার ৩০,০০০ রিপোর্ট যাচাই করে দেখা হয়৷ গবেষকরা দেখেন, জার্মান মিডিয়া ‘উইলকমেন্সকুল্টুর’ বা ‘স্বাগতিক সংস্কৃতি’-র দোহাই দিয়ে জনসাধারণের উপর উদ্বাস্তুদের সাহায্য করার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে দ্বিধা করেনি৷ জরিপটির মতে, মেইনস্ট্রিম মিডিয়া যে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে, এ ধরনের রিপোর্টিং তার আরো একটি কারণ৷