1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উদ্বাস্তুদের জন্য আরো চাকরি চাই

২৮ ডিসেম্বর ২০১৭

জার্মানিতে উদ্বাস্তু বা অভিবাসীদের দায়িত্ব প্রধানত স্থানীয় পৌর পরিষদগুলির উপর ন্যস্ত৷ উদ্বাস্তুদের কর্মসংস্থানের জন্য তারা ফেডারাল সরকার ছাড়া শিল্প ও বাণিজ্য সংস্থাগুলির বর্ধিত সহযোগিতা কামনা করে৷

Deutschland Flüchtlinge Jobs Arbeitsangebote Internet
ছবি: Getty Images/J.Macdougall

জার্মানির স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ হলো এই যে, উদ্বাস্তু-অভিবাসীদের সমাজে অন্তর্ভুক্ত করার দায়িত্ব প্রধানত তাদেরই বহণ করতে হয়৷ এবং যেহেতু ‘ইন্টেগ্রেশন' বা সমাজে অন্তর্ভুক্তির প্রথম সোপান হলো চাকরি, সেহেতু স্থানীয় পৌর প্রশাসনগুলির কর্মকর্তারা উদ্বাস্তুদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ফেডারাল সরকারের কাছ থেকে আরো বেশি সাহায্য চান৷

২০১৭ সালের মাঝামাঝি জার্মানিতে প্রায় ছ'লাখ উদ্বাস্তু বেকার ভাতা পাচ্ছিলেন, যদিও ২০১৬ সালের মাঝামাঝি বেকার ভাতার উপর নির্ভর উদ্বাস্তুদের সংখ্যা ছিল আড়াই লাখ – বলে জানিয়েছেন জার্মান শহর ও পৌর এলাকাগুলির সমিতি ডিএসটিজিবি-র প্রধান গ্যার্ড লান্ডসব্যার্গ৷ বাস্তবে দু'লাখের কম উদ্বাস্তু কাজ পেয়েছেন ও নিজেদের স্বাস্থ্য বীমার প্রিমিয়াম ও অন্যান্য সোশ্যাল সিকিউরিটি অনুদানগুলি দিতে শুরু করেছেন, বলে লান্ডসব্যার্গ জানান৷

জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার বিভিন্ন ধাপ

01:04

This browser does not support the video element.

‘‘এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায় যে, উদ্বাস্তুদের শ্রম বাজারে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমাদের এখনও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে,'' ফুঙ্কে মিডিয়া গ্রুপের একটি সাক্ষাৎকারে লান্ডসব্যার্গ বলেন ও যোগ করেন যে, জার্মানি ‘‘সমাজে অন্তর্ভুক্তির বাঁধাগতে'' আটকা পড়ে রয়েছে৷

জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর তথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েলকেও অনুরূপ কথা বলতে শোনা গেছে৷ গত সপ্তাহে গাব্রিয়েল একটি সাক্ষাৎকারে এই মত প্রকাশ করেন যে, উদ্বাস্তুদের ‘ইন্টেগ্রেশন'-এ সাহায্য করার জন্য স্থানীয় সরকারের আরো বেশি অর্থ পাওয়া উচিত৷ ‘‘শহর ও পৌর এলাকাগুলিকে উদ্বাস্তু নেওয়ার জন্য পুরস্কৃত করা উচিত,'' ফুঙ্কে মিডিয়া গ্রুপকে বলেন গাব্রিয়েল৷ ‘‘ফেডারাল সরকারের উচিত উদ্বাস্তুদের সমাজে অন্তর্ভুক্তির খরচ পরিশোধ করা৷ এছাড়া (শহর ও পৌর এলাকাগুলির) নিজের বাসিন্দাদের জন্য সমপরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা উচিত,'' বলে গাব্রিয়েল মন্তব্য করেন৷

উদ্বাস্তু আবাসন খালি পড়ে রয়েছে

২০১৫ সালের শেষের দিকে ও ২০১৬ সালের গোড়ায় উদ্বাস্তুরা বিপুল সংখ্যায় জার্মানিতে আসেন; তখন তাঁদের থাকার জায়গা দিতে জার্মান পৌর এলাকাগুলিকে হিমশিম খেতে হয়েছিল – বিশেষ করে বার্লিনের মতো বড় শহরে, যেখানে পৌর কর্তৃপক্ষের আর্থিক ক্ষমতা সীমিত; কাজেই সে সব শহরে স্পোর্টস হল ইত্যাদি সাময়িকভাবে দখল নিয়ে নবাগত উদ্বাস্তুদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷

বর্তমানে সেই সমস্যা পুরেপুরি পালটে গেছে৷ সার্বিয়া, হাঙ্গেরি ও অস্ট্রিয়ার সীমান্ত বস্তুত অভিবাসীদের জন্য বন্ধ হওয়ায় তথাকথিত বলকান রুট দিয়ে উদ্বাস্তুরা জার্মানি অভিমুখে আসতে পারছেন না৷ কাজেই ২০১৭ সালে নবাগত উদ্বাস্তুদের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে গেছে – যার একটি ফল হয়েছে এই যে, বহু উদ্বাস্তু আবাস খালি পড়ে রয়েছে৷

সরকারি ডাব্লিউডিআর টেলিভিশন সংস্থা এ মাসের গোড়ায় একটি জরিপ চালিয়ে দেখে যে, নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের যাবতীয় উদ্বাস্তু আবাসগুলির এক-তৃতীয়াংশ খালি পড়ে রয়েছে, অথচ সেগুলির দেখাশোনায় পূর্বাপর লক্ষ লক্ষ ইউরো ব্যয় হচ্ছে৷

সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের সাবেক নেতা গাব্রিয়েল বলেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উদ্বাস্তুদের আবাসনের ব্যবস্থা করবেন নাকি সর্বসাধারণের জন্য খোলা একটি সুইমিং পুলের সংস্কারের ব্যবস্থা করবেন – তাঁরা যাতে এই দ্বন্দ্বের মধ্যে না পড়েন, সেটা দেখা অতীব জরুরি৷ তাঁর প্রস্তাব অনুযায়ী, পৌর কর্তৃপক্ষ নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, তাঁরা কতজন উদ্বাস্তু নেবেন: ‘‘এই পন্থায় আমরা নিশ্চিত করতে পারব যে, মানুষজন ভাববেন না, উদ্বাস্তুদের জন্য সব কিছু করা হচ্ছে, অথচ তাঁদের (শহরের আদত বাসিন্দাদের) জন্য কিছুই করা হচ্ছে না৷''

ইউরোপীয় সমাধান – নাকি ডেনমার্কের পন্থা?

উদ্বাস্তুদের সমাজে অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি ইউরোপব্যাপী পরিকল্পনার কথাও কল্পনা করতে পারেন গাব্রিয়েল: ‘‘ইইউ অপেক্ষাকৃত দরিদ্র সদস্যদেশগুলির পৌর এলাকাসমূহকে অর্থ প্রদানের একটি কর্মসূচি চালু করতে পারে'' – অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট ইইউ দেশগুলিকে উদ্বাস্তু নেওয়ার জন্য আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হবে৷

গত সপ্তাহে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী জার্মানির ফেডারাল অভিবাসন ও উদ্বাস্তু কার্যালয় (বিএএমএফ বা বাম্ফ) এ বছর তাদের নিজেদের ‘ইন্টেগ্রেশন টার্গেট' বা উদ্বাস্তুদের সমাজে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না৷ ডিসেম্বরের মাঝামাঝি অবধি মাত্র ২ লাখ ৮০ হাজার উদ্বাস্তু-অভিবাসী ‘বাম্ফ'-এর আয়োজিত ‘ইন্টেগ্রেশন কোর্স'-এ অংশগ্রহণ করেছেন৷ তার একটা কারণ সম্ভবত এই যে, ‘বাম্ফ'-এর স্বঘোষিত লক্ষ্য ছিল, উদ্বাস্তুরা আবেদনপত্র জমা দেওয়ার ছ'সপ্তাহের মধ্যে ‘ইন্টেগ্রেশন কোর্স'-এ স্থান পাবেন; বস্তুত নভেম্বর মাসের শেষে সেই অপেক্ষার সময় গিয়ে দাঁড়ায় সাড়ে ১২ সপ্তাহে৷ এমনকি ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসেও এই অপেক্ষার সময় ছিল ১১ সপ্তাহ৷ এছাড়া ২০১৭ সালে ৪ লাখ ৩০ হাজার উদ্বাস্তু ‘ইন্টেগ্রেশন কোর্স'-এ অংশগ্রহণ করবেন – এই ছিল ‘বাম্ফ'-এর লক্ষ্য৷ আগেই বলা হয়েছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি অবধি সেই সংখ্যা ২ লাখ ৮০ হাজার ছাড়ায়নি৷

এই প্রসঙ্গে ডিএসটিজিবি-র লান্ডসব্যার্গ ডেনমার্কের উদাহরণ দেন, যেখানে উদ্বাস্তুরা ডেনিশ ভাষা শেখার সঙ্গে সঙ্গে কাজ করতেও শুরু করেন৷ এক্ষেত্রে জার্মানিতে বড় বড় কোম্পানিগুলিও উদ্বাস্তুদের চাকরি দেওয়া ব্যাপারে আরো অনেক কিছু করতে পারে, বলে লান্ডসব্যার্গের অভিমত৷ নবাগত উদ্বাস্তুদের প্রশিক্ষণ ও পেশাগত দক্ষতা জার্মান কোম্পানিগুলিরও কাজে লাগবে, বলে তিনি মন্তব্য করেন৷

বেন নাইট/এসি

বন্ধু, প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে লিখুন আমাদের, নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ