বুধবার ভিয়েনা সংসদ যে নতুন রাজনৈতিক আশ্রয় আইন পাশ করেছে, তা অনুযায়ী উদ্বাস্তুদের সংখ্যা অতিমাত্রায় বাড়লে সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন ও সীমান্ত বস্তুত বন্ধ করে দিতে পারবেন৷
বিজ্ঞাপন
সরকারি জোটের সামাজিক গণতন্ত্রী ও রক্ষণশীল সাংসদরা সহ মোট ৯৮ জন সাংসদ নতুন আইনের সপক্ষে ভোট দেন, বিপক্ষে পড়ে ৬৭টি ভোট৷ নতুন আইন অনুযায়ী, উদ্বাস্তু বা শরণার্থীদের আগমন হঠাৎ বাড়ার ফলে বা অতিমাত্রায় বাড়ার ফলে যদি ‘‘জাতীয় নিরাপত্তা'' বিপন্ন হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষ সংসদের অনুমতি নিয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন৷ এই জরুরি অবস্থা প্রাথমিকভাবে জারি হবে ছ'মাসের জন্য ও পরে আরো তিনবার, অর্থাৎ মোট দেড় বছর বাড়ানো চলবে৷
অজানা গন্তব্যের দিকে ছুটছেন শরণার্থীরা
অন্তত দু’হাজারের মতো শরণার্থী গ্রিসের ইডোমেনি ক্যাম্প ছেড়ে চার ঘণ্টার মতো হেঁটে ম্যাসিডোনিয়ায় প্রবেশে সক্ষম হয়েছে৷ এ জন্য তাদের একটি নদী পাড়ি দিতে হয়েছে, যেখানে তলিয়ে গেছেন অন্তত তিনজন শরণার্থী৷
ছবি: DW/D.Tosidis
কোনো এক উপায়ের সন্ধানে
শিশু, পরিবারসহ শত শত শরণার্থী ইডোমিনি শরণার্থী শিবির থেকে পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করেন সোমবার সকালে৷ উদ্দেশ্য গ্রিস-ম্যাসিডোনিয়া সীমান্তের কোন অরক্ষিত অংশ থেকে ম্যাসিডোনিয়ায় প্রবেশ করা৷
ছবি: DW/D.Tosidis
সাহসিকতার পরিচয়
ম্যাসিডোনিয়ায় প্রবেশের আশায় এক উত্তাল নদী এভাবে পাড়ি দিয়েছেন শরণার্থীরা৷ কাঁটাতারের বেড়া নেই সীমান্তের এমন অংশ খুঁজে পেতে তাদের প্রানান্ত চেষ্টা৷
ছবি: DW/D.Tosidis
ভয়, আতঙ্ক
উত্তাল নদী পাড় হতে গিয়ে ভয় পাওয়া এক অল্প বয়সি শরণার্থীকে সাহায্যে এগিয়ে আসেন অন্য শরণার্থীরা৷
গ্রিক সীমান্তের গ্রাম চামিলোর, যেটি কিনা সীমান্ত থেকে মাত্র এক দশমিক পাঁচ কিলোমিটার দূরে, বাসিন্দারা এভাবেই পানি দিয়ে সহায়তা করেছেন লম্বা পথ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করা শরণার্থীদের৷
ছবি: DW/D.Tosidis
চরম দুর্দশা
ক্লান্ত এবং দুর্বল শরণার্থীরা নদী পাড় হতে গিয়ে চরম দুর্দশায় পতিত হন৷
ছবি: DW/D.Tosidis
সতর্ক বার্তা
শরণার্থীদের মিছিল দেখার পর সম্ভবত পুলিশকে ফোন করেন ডানের এই স্থানীয় বাসিন্দা৷
ছবি: DW/D.Tosidis
সেনাবাহিনীর হুমকি
ম্যাসিডোনিয়া সীমান্তে শরণার্থীদের প্রথমাংশ প্রবেশের কিছু পরেই সেখানে হাজির হন সেদেশের সেনাবাহিনী৷
ছবি: DW/D.Tosidis
মার খাওয়া এবং পোড়া
এক আফগান শরণার্থী দাবি করেছেন, ম্যাসিডোনিয়ার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তারের পর পিটিয়েছে এবং গাল পুড়ে দিয়েছে৷
ছবি: DW/D.Tosidis
9 ছবি1 | 9
গত গ্রীষ্ম যাবৎ অস্ট্রিয়ায় প্রায় এক লক্ষ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর আগমন ঘটেছে৷ পরে অস্ট্রিয়া সরকার ঘোষণা করেন যে, ২০১৬ সালে মোট ৩৭,৫০০০ রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণ করা হবে৷ বছরের প্রথম চার মাসে জমা পড়েছে প্রায় ১৬ হাজার আবেদন৷ সরকারের সর্বাধুনিক পদক্ষেপের পিছনে চলতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কট্টর দক্ষিণপন্থি এফপিএ বা স্বাধীনতা দলের প্রার্থীর বিপুল সাফল্যের একটা ভূমিকা থাকতে পারে, বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা৷
দিন দশেক আগে ভিয়েনার রাজপথে নাগরিকদের বিক্ষোভের ছবি: তারা একটি নতুন উদ্বাস্তু আবাস তৈরির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন৷ এভাবেই অস্ট্রিয়ার জনমানস ও সরকারে উদ্বাস্তু সংক্রান্ত মনোভাবের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন অথবা হিউমান রাইটস ওয়াচ-এর মতো মানবাধিকার সংগঠনগুলি যে ব্যাপারে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন৷ এমনকি বুধবারের অপর একটি খবর হল এই যে, অস্ট্রিয়া সম্ভবত দক্ষিণ ইউরোপ থেকে উত্তর ইউরোপ অভিমুখে মাল ও যাত্রী চলাচলের মূল পথ ব্রেনার পাসেও নিয়ন্ত্রণ আরো বাড়াতে পারে৷
ব্রেনার পাসে নাকি সপ্তাহ দুয়েক আগেই কনস্ট্রাকশনের কাজ শুরু হয়েছে৷ এখানে নাকি একটি ৩৭০ মিটার লম্বা ‘সিকিওরিটি ফেন্স' বা নিরাপত্তা বেড়া সৃষ্টির পরিকল্পনা আছে৷ উদ্দেশ্য হলো, ইটালি থেকে আসা গাড়ি ইত্যাদি কন্ট্রোল করা, কেননা তথাকথিত বলকান রুট বন্ধ হওয়ার পর উদ্বাস্তুরা আরো বেশি করে উত্তর আফ্রিকা থেকে ভূমধ্যসাগর পার হয়ে ইটালিতে পৌঁছে, সেখান থেকে উত্তরে আসার চেষ্টা করবে, বলে ভিয়েনা কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা৷
সিরিয়া থেকে যেভাবে জার্মানিতে এসেছে একটি পরিবার
জীবন বাঁচাতে সিরিয়া থেকে জার্মানিতে এসেছেন অনেক শরণার্থী৷ জার্মানির ইমিগ্রেশন সেন্টার সেসব মানুষের সংগ্রাম নিয়ে আয়োজন করেছে একটি প্রদর্শনীর৷ সেখানেই জানা গেলো কোটো পরিবারের বেঁচে থাকার গল্প৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
আলেপ্পোয় সুখি সংসার
২০১৬ সালে তোলা কোটা পরিবারের ছবি৷ খলিল, তাঁর স্ত্রী হামিদা, সন্তান মান্নান, ডোলোভান, আয়াজ এবং নের্ভানা৷ তখন সিরিয়ায় কোনো গৃহযুদ্ধ ছিল না, ছিল না ধ্বংসলীলা৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
দেশত্যাগের সিদ্ধান্ত
সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর সময় খলিল কোটো সেদেশের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের একটি শাখার প্রধান ছিলেন৷ গৃহযুদ্ধ শুরুর পর চাকুরি হারান এই ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার৷ একসময় খাদ্য এবং পানির অভাব প্রকট হতে থাকে৷ ২০১৪ সালের এপ্রিলে পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, তারা তুরস্ক চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, যেখানে খলিলের মা বাস করতেন৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
ধাপে ধাপে আগানো
খলিল তুরস্কে কোনো কাজ খুঁজে পাননি৷ তাই ২০১৪ সালের জুলাইয়ে তাঁর পরিবার জার্মানিতে আসার সিদ্ধান্ত নেন৷ খলিলের ভাই ইউরোপে বাস করেন৷ তিনিই পরিবারটিকে জার্মানিতে আসতে উৎসাহ যোগান৷ শরণার্থী হিসেবে জার্মানিতে আসার পথে বুলগেরিয়ায় একটি শরণার্থী শিবিরে ছয় মাস কাটান কোটো পরিবার৷ এই চামচটি সেই শিবিরের এক স্মৃতিচিহ্ন৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
জার্মানিতে স্বাগতম
অবশেষে জার্মানিতে কোটো পরিবার৷ জার্মানির উত্তরের শহর ব্রেমেনে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে৷ সেখানকার এক নারী খলিলকে এই জিন্সের প্যান্টটি দিয়েছেন, জার্মানিতে পাওয়া তাঁর প্রথম পোশাক এটি৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
অনিশ্চিত ভবিষ্যত
খলিলের সন্তানরা এখন জার্মান স্কুলে যাচ্ছেন৷ আর খলিল এবং তাঁর স্ত্রী হামিদা শিখছেন জার্মান৷ ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার জার্মানিতে একটি চাকরি পাবেন বলে আশা করছেন৷ সিরিয়ায় ফেলে আসা অতীত মাঝে মাঝে মনে করে আনন্দ খোঁজেন তারা৷ আয়াজের সিরিয়ার স্কুলের আইডি কার্ড এটি৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
5 ছবি1 | 5
নতুন আইন অনুযায়ী জরুরি অবস্থা ঘোষিত হলে, সিরীয় উদ্বাস্তুদেরও সীমান্ত থেকে ফেরৎ পাঠানো চলবে – তবুও শিশুসন্তান সহ নারী উদ্বাস্তু, ও অভিভাবকবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক উদ্বাস্তুদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ উদ্বাস্তুর স্রোত সম্পর্কে মতামত যাই হোক না কেন, শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক উদ্বাস্তুদের ভাগ্য যে ইউরোপের বিবেককে বিশেষভাবে নাড়া দিয়েছে ও দিচ্ছে, তার প্রমাণ বুধবার ব্রিটিশ সংসদের একটি বিতর্ক৷
এসি/ডিজি (রয়টার্স, ডিপিএ)
উদ্বাস্তুদের জন্য এমন কঠর আইন করাকে কি আপনি সমর্থন করেন? লিখুন নীচের ঘরে৷
শরণার্থী শিবিরে জীবন যেমন
শরণার্থী সংকট নিরসনের জন্য নেয়া হচ্ছে নতুন নতুন পদক্ষেপ৷ আসলে কোথায় কেমন আছে শরণার্থীরা? শরণার্থী শিবিরে তাদের জীবন কেমন? চলুন দেখা যাক৷
ছবি: picture-alliance/AP/R, Adayleh
ফ্রান্সে আন্তর্জাতিক মানের শরণার্থী শিবির
এ মাসেই খুলেছে ফ্রান্সের ডুনকিন শহরের কাছের গ্রান্ডে-সিন্থের এই শরণার্থী শিবির৷ ৩৭৫টি ক্যাবিন তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু হলেও শিবিরে এ পর্যন্ত ২০০টি ক্যাবিনের কাজ শেষ হয়েছে৷ ২৫০০ শরণার্থীর জন্য তৈরি এ শিবিরটিতে স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধাই আছে৷
আলজেরিয়ার এক শরণার্থী শিবিরেরই স্কুলে শিশুদের পড়াচ্ছেন এক শিক্ষক৷ আলজেরিয়ার পাঁচটি শিবিরে এখন ১ লক্ষ ৬৫ হাজার শরণার্থী রয়েছে৷
ছবি: Reuters/Z. Bensemra
ভয় আর আতঙ্ক
গ্রিসের ইডোমেনি গ্রামের শিবিরের এক কিশোরী৷ চোখে-মুখে তার ভয় আর আতঙ্ক৷
ছবি: Reuters/A. Avramidis
আনন্দ
ইডোমেনির শরণার্থী শিবিরে শিশুদের খেলা দেখিয়ে আনন্দ দিচ্ছে এক পারফর্মার৷ চিকিৎসকদের পরামর্শেই শিশুদের মন ভালো রাখার জন্য মাঝে মাঝে এমন আনন্দানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷
ছবি: Getty Images/D. Kitwood
পরিবর্তনের আশা
সিরিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার কয়েকটি দেশ থেকে তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ২৭ লাখ শরণার্থী৷ তুরস্কের সুরুক শহরের শিবিরে তাঁবুর সারির মাঝখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এক মাঝবয়সি শরণার্থী৷ তাকে অনুসরণ করছে এক শিশু৷ দু’জনই চায় পরিস্থিতির পরিবর্তন৷
ছবি: Getty Images/C. Court
বিশ্রাম
উত্তর-পূর্ব সুদানের এক আশ্রয় কেন্দ্রে বিশ্রাম নিচ্ছেন কয়েকজন ইরিত্রীয় অভিবাসনপ্রত্যাশী৷