দু'বছর আগে উদ্বাস্তু সংকট যখন চরমে, তখন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘‘আমরা সামলাতে পারবো৷'' ম্যার্কেলের এই উক্তি জার্মান মনোভাবের দর্পণ, বলে মনে করেন ক্রিস্টফ স্ট্রাক৷
বিজ্ঞাপন
‘‘এমন একটি বছর আর কোনোদিন ঘটা উচিত নয়'', ২০১৫ সালের উদ্বাস্তু স্রোত সম্পর্কে আজ দেশ জুড়ে একটির পর একটি নির্বাচনি প্রচার সভায় তাঁর সমর্থকদের বলছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ সে বছর উদ্বাস্তু সংকট যখন চরমে, তখন লক্ষ লক্ষ মানুষ জার্মানিতে এসে পৌঁছান৷ সে ধরনের আর একটি বছর ঘটতে পারে না ও ঘটা উচিত নয় – গত এক সপ্তাহের মধ্যে ম্যার্কেলকে এ কথা বলতে শোনা গেছে বাভেরিয়া রাজ্যের বায়রয়েথ ও বাড কিসিংগেন, হেসে রাজ্যের ফুলডা, উত্তর জার্মানির ফেশ্টা, হার্ৎস পর্বতাঞ্চলে অবস্থিত কোয়েডলিনবুর্গ ও স্যাক্সনি রাজ্যের আনাব্যার্গ শহরে৷ উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম, এক কথায় জার্মানির সর্বত্র একই কথা বলে চলেছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷
তাঁর এই নতুন ভূমিকায় ম্যার্কেল নিজেকে খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী সিডিইউ দলের স্পষ্টভাষী নেতা হিসেবে পেশ করতে চাইছেন৷ দেখলে মনে হবে, রক্ষণশীল দলের নেত্রী যেন সেই চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের কথা ভুলিয়ে দিতে চাইছেন, যিনি ২০১৫ সালের ৩১শে আগস্ট তারিখে সেই সাহসী – কেউ কেউ হয়ত বলবেন দুঃসাহসী বার্তা দিয়েছিলেন: ‘‘জার্মানি একটি শক্তিশালী দেশ৷ আমরা কত কিছু করেছি – এটাও আমরা সামলাতে পারব৷'' তাঁর এই কথাগুলি হাজার হাজার মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিল, আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল কী করা প্রয়োজন এবং সম্ভব; স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল আমাদের যৌথ মূল্যবোধের কথা৷
জার্মানির জাতীয় নির্বাচন ২০১৭: কবে, কী হচ্ছে
তিনটি রাজ্যে নির্বাচনের পাশাপাশি জার্মানির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০১৭ সালে৷ চলুন জেনে নেই জাতীয় নির্বাচনের টাইমলাইন৷
ছবি: picture-alliance/R. Goldmann
জার্মানির বড় নির্বাচনের বছর
জার্মানিতে চলতি বছর আয়োজন করা হচ্ছে একের পর এক নির্বাচন৷ একদিকে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল চতুর্থবারের মতো চ্যান্সেলর পদে লড়ছেন, অন্যদিকে পপুলিস্ট পার্টি অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) অভিবাসীবিরোধী অবস্থানের কারণে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে৷ বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এটা নিশ্চিত যে, ২০১৭ সালের শেষে জার্মানির রাজনৈতিক অবস্থা এখনকার মতো থাকবে না৷
ছবি: Getty Images
জুন ১৯: দলের মনোনয়ন জমা দেয়ার দিন ছিল
জার্মানির সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য আবেদনের শেষ দিন ছিল জুন ১৯৷ সেদিন সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে আগ্রহী দলগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আবেদন জানাতে হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Burgi
জুলাই ৭: কোন কোন দল লড়ছে?
সংসদ নির্বাচনে কোন কোন দল অংশ নিতে পারবে তা ঘোষণা করা হবে এই দিনে৷ যদি কোন দল নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হয় তাহলে পরবর্তী চারদিনের মধ্যে জার্মানির সাংবিধানিক আদালতে নালিশ করতে পারবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/U. Deck
জুলাই ১৭: কারা কারা থাকছেন?
চলতি বছরের ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের কোন কোন প্রার্থী কোন কোন এলাকায় লড়বেন, তা চূড়ান্ত করতে হবে৷ জার্মানিতে একসঙ্গে দু’টি ভোট দেয়ার সুযোগ রয়েছে৷ প্রথমটি প্রার্থীকে, দ্বিতীয়টি দলকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg
জুলাই ২৭: ব্যালটে নাম উঠানোর লড়াই
যেসব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে সাংবিধানিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে, তাদের বিষয়ে রায় ঘোষণা করা হবে এই দিনে৷ ২০১৩ সালে এই পন্থা চালু করা হয়েছিল৷ সেবছর এগারোটি দল আদালতের স্মরণাপন্ন হলেও কেউই মামলা জেতেনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/W. Steinberg
আগস্ট ১৩: আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা
জার্মানিতে নির্বাচন শুরুর ছয় সপ্তাহ আগ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো আনুষ্ঠানিক প্রচারণার পোস্টার বা টেলিভিশন বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারে না৷ চলতি বছরের জাতীয় নির্বাচনের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর তারিখ ১৩ আগস্ট৷ এই দিন থেকে দলগুলো তাদের প্রচারণায় কোনো ঘাটতি রাখবে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Balk
আগস্ট ২০: কে ভোট দিতে পারবেন?
নির্বাচনের মাসখানেক আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তালিকা চূড়ান্ত হবে৷ ভোটার লিস্ট ঘোষণা করবে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ৷ জার্মানিতে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সি যে কোনো জার্মান নাগরিক ভোট দিতে পারবেন৷ সে হিসেবে চলতি বছর ভোটারের সংখ্যা সাড়ে ৬১ মিলিয়ন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K.-D. Gabbert
সেপ্টেম্বর ৩: তিন সপ্তাহ বাকি
এই সময়ের মধ্যে সকল ভোটার পোস্টে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে ভোট দেয়ার সার্টিফিকেট পাবেন৷ যারা তখন অবধি ভোটার লিস্টে নিজেদের নাম পাননি, তারা রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ পাবেন৷ আর যারা পোস্টের মাধ্যমে ভোট দিতে চান, তারা ব্যালট পেপার চাইতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/R. Goldmann
সেপ্টেম্বর ২৪: নির্বাচনের দিন
অবশেষে সেই মহেন্দ্রক্ষণ৷ জার্মানির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৪ সেপ্টেম্বর৷ সেদিন সকাল আটটায় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হবে, চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত৷ ভোটগণনা সেদিনই শেষ হবে এবং নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ রাতে প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সেপ্টেম্বর ২৫: বিজয়ী এবং বিজিত
সকল প্রতিনিধি এবং দলগত ভোট গণনা শেষে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা দেয়া হবে ২৫ সেপ্টেম্বর৷ যদি কোনো প্রার্থী তাঁর নির্বাচনী এলাকায় জিততে ব্যর্থ হন, তা সত্ত্বেও দলগত জয়ের কারণে তিনি সংসদে একটি আসন পেতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
অক্টোবর ২৪: নতুন সাংসদরা সংসদে
নির্বাচন শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে নতুন সাংসদদের সংসদে মিলিত হওয়ার নিয়ম রয়েছে৷ এ বছর সেই দিনটি হচ্ছে অক্টোবর ২৪৷ সেদিন গোপন ব্যালটের মাধ্যমে জার্মানির পরবর্তী চ্যান্সেলর নির্বাচিত হবেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নভেম্বর ২৪: সবকিছু কি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হয়েছে?
যদি কেউ জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চান, তাহলে তার হাতে সময় থাকে নির্বাচন পরবর্তী দুই মাস৷ ভোটাররাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট যে কেউ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার রাখেন এই সময়ের মধ্যে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Dedert
12 ছবি1 | 12
কথার কথা?
‘আমরা এটা সামলাতে পারবো' শীঘ্রই একটি চালু কথা হয়ে দাঁড়ায়, যদিও তার পরে ম্যার্কেলকে উক্তিটি খুব বেশিবার ব্যবহার করতে শোনা যায়নি – বড়জোর কোনো গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতায়৷ অপরদিকে লোকমুখে ম্যার্কেলের কথাগুলি তাদের অর্থ ও তাৎপর্য হারাতে থাকে – অন্য প্রসঙ্গে, কিংবা ব্যঙ্গ অথবা সমালোচনা হিসেবে ব্যবহার করার ফলে৷ অবশেষে বছর খানেক আগে ম্যার্কেল নিজেই তাঁর সুবিখ্যাত উক্তিটি সম্পর্কে মন্তব্য করেন: ওটা তো একটা ‘ক্লিশে' বা বাঁধাগত হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
দু'বছর আগে তাঁর প্রথাগত গ্রীষ্মকালীন সংবাদ সম্মেলনে ম্যার্কেল তাঁর আবেগপূর্ণ আবেদনটি করেছিলেন – দু'বছর পরে এ বছরের গ্রীষ্মকালীন সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে বিষয়টি উল্লেখ পর্যন্ত করতে শোনা যায়নি৷ পরিবর্তে ম্যার্কেল তাঁর স্বভাবসিদ্ধ বাস্তবধর্মী পদ্ধতিতে উদ্বাস্তু সংকটের বিভিন্ন দিকের কথা বলেছেন, কী করে মানুষ পাচার বন্ধ করা যায় অথবা নিয়ন্ত্রিত অভিবাসনের কি আয়োজন করা যেতে পারে৷
জার্মান নির্বাচনের প্রচারণা প্ল্যাকার্ড
আসল? বিদেশিবিদ্বেষী? সেকেলে? জার্মানির নির্বাচনের জন্য তৈরি পোস্টারে এ রকম আরো অনেক শব্দ দেখা যাচ্ছে৷ ভোটারদের দলে ভেড়াতে বড় দলগুলোর পোস্টারে কী দেখা যাচ্ছে দেখে নেই চলুন৷
ছবি: picture alliance/dpa/B.Pedersen
খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল (সিডিইউ)
টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকা জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল নির্বাচনি পোস্টারে এখন আর কোনো অপরিচিত মুখ নন৷ তাঁর দল সিডিইউ ২০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে গোটা জার্মানিতে ২২,০০ প্ল্যাকার্ড বসাচ্ছে৷ এতে জার্মান চ্যান্সেলরের ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে জার্মান পতাকা ব্যবহারে করে দলটির দেশপ্রেম বোঝানো হয়েছে৷ আর স্লোগানে প্রাধান্য পেয়েছে নিরাপত্তা, পরিবার এবং কাজের মতো বিষয়৷
ছবি: picture alliance/dpa/B.Pedersen
সামাজিক গণতন্ত্রী (এসপিডি)
সামাজিক গণতন্ত্রীরা তাদের দীর্ঘদিনের লাল আর বর্গাকারের লোগোকে পোস্টারে প্রাধান্য দিয়েছে৷ তাদের পোস্টারে শিক্ষা, পরিবার, পেনশন, বিনিয়োগ এবং বেতন বৈষম্যের মতো বিষয়াদি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ ২৪ মিলিয়ন ইউরোর নির্বাচনি প্রচারণার পর নির্বাচনের ঠিক আগে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নাকি একটি বোমা ফাটাতে পারে এসপিডি, তবে সেসম্পর্ক কিছু এখনো জানা যায়নি৷
মুক্তগণতন্ত্রী দল (এফডিপি)
মুক্তগণতন্ত্রীদের নির্বাচনি প্রচারণায় খরচ হচ্ছে পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ সাদাকালো ফটোশুটের মাধ্যমে পোস্টারে আধুনিক মার্কেটিংয়ের ছাপ ফুটিয়ে তুলেছে সেদেল৷ তাদের পোস্টারে শোভা পাচ্ছেন একজন: ক্রিস্টিয়ান লিন্ডার৷ তবে পোস্টারে ছোট করে লেখা নানা কথা পড়তে ভোটারদের বেশ কষ্টই করতে হবে৷ ‘অস্থিরতাও একটা গুণ’, লেখা হয়েছে পোস্টারে৷
সবুজ দল
সবুজ দল তাদের দলীয় নীতিকেই নির্বাচনের পোস্টারে তুলে ধরছেন৷ সেদলের স্লোগানে জায়গা করে নিয়েছে পরিবেশ, ইন্টিগ্রেশন এবং শান্তির মতো বিষয়৷ তাদের স্লোগান হচ্ছে, ‘‘পরিবেশই সবকিছু নয়, তবে পরিবেশ ছাড়া সবকিছুই অর্থহীন৷’’
জার্মানির জন্য বিকল্প (এএফডি)
তবে আসন্ন নির্বাচনের সবচেয়ে বিতর্কিত প্ল্যাকার্ড তৈরি করেছে ডানপন্থি এএফডি পার্টি৷ আপাত দৃষ্টিতে এই পোস্টারটি দেখলে মনে হবে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী হাসছেন৷ কিন্তু স্লোগান কী বলছে জানেন? ‘‘নতুন জার্মান? তাদের আমরাই তৈরি করবো৷’’ দলটির আরেক পোস্টারে বিকিনি পরা তিন নারীকে দেখা গেছে৷ আর তাতে লেখা: ‘‘বোরকা? আমরা বিকিনি পছন্দ করি৷’’
বামদল
বামদলের পোস্টারে বিভিন্ন ফস্টের বর্ণিল উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে৷ ‘‘[বর্নিল] মানুষ৷ স্পষ্টভাবে ডানপস্থি ঘৃণার বিরোধী’’, বলছে তাদের স্লোগান৷ দলটির নির্বাচনি প্রচারণায় গুরুত্ব পাচ্ছে সাশ্রয়ী ভাড়া, আরো স্বচ্ছ পেনশনের নিশ্চয়তা এবং অস্ত্র রপ্তানি বন্ধের মতো বিষয়৷
6 ছবি1 | 6
‘ইন্টেগ্রেশন' বা সমাজে অন্তর্ভুক্তি
২০১৫ সালের ঘটনাবলীর সঙ্গে যুক্ত একটি সমস্যা ছিল এই যে, নবাগতদের শীঘ্রই জার্মান সমাজে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে, হয়তো কয়েক বছরের মধ্যেই, বলে অনেকে ধরে নিয়েছিলেন৷ কিন্তু বহিরাগতদের ‘ইন্টেগ্রেশন' বা সমাজে অন্তর্ভুক্তি কয়েক বছর নয়, কয়েক প্রজন্মের কাজ৷ সেজন্য স্বাগতিক সমাজ এবং বিদেশি-বহিরাগত, দু'তরফেই পরিবর্তনের প্রস্তুতি, মনোবৃত্তি ও সক্রিয় পদক্ষেপ প্রয়োজন৷
‘ইন্টেগ্রেশন' ঘটে স্থানীয় পর্যায়ে, সেই সব শহরে ও এলাকায় যেখানে অভিবাসীরা বাস করেন৷ বড় বড় উদ্বাস্তু শিবিরের দিন শেষ হয়েছে৷ এবং সব বাধা সত্ত্বেও, ইতিমধ্যেই নানা সাফল্যের কাহিনি শোনা যাচ্ছে, বিশেষ করে অভিবাসীদের তরুণ প্রজন্ম এখানে ধীরে ধীরে নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে৷ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে উদ্বাস্তুদের মধ্যে সূচনায় বেকারত্বের হার বেশি হলেও, তিন থেকে দশ বছরের মধ্যে অর্থনীতির উপর তাদের ইতিবাচক প্রভাব সামগ্রিকভাবে দৃষ্টিগোচর হবে, বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷ জার্মানির অবসরভাতা প্রণালীর উপর অভিবাসীদের ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা গোড়া থেকেই নিশ্চিত ছিলেন৷
অপরদিকে জনসাধারণের একাংশ প্রতিটি সন্ত্রাসী আক্রমণের ঘটনার পর অভিবাসনের উপর দোষারোপ করে থাকে, সন্ত্রাসীদের পটভূমি যা-ই হোক না কেন৷ ম্যার্কেলের উন্মুক্ত দুয়ার নীতি, তাঁর ‘আমরা পারব' মন্ত্র জার্মানিকে বিভক্ত না করলেও, খণ্ডিত করেছে বৈকি৷
‘আমরা পারবো', এই উদ্ধৃতিটি ইতিহাসের পাতায় উঠে গেছে এবং প্রমাণ করেছে যে, প্রয়োজন পড়লে সাধারণত ঠান্ডা মাথার, সংযত জার্মানরাও কথার দ্বারা, বাক্যের দ্বারা, শব্দের দ্বারা অনুপ্রাণিত হতে পারেন৷ ভবিষ্যতে কী ঘটবে, তা কেউ জানে না: বালটিক অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষ যদি হঠাৎ দেশ ছাড়ার তাগিদ অনুভব করেন? যদি ইউরোপের কোথাও ফুকুশিমা গোত্রীয় কোনো পরমাণু বিপর্যয় ঘটে? ‘‘এমন একটি বছর আর কোনোদিন ঘটতে পারে না ও ঘটা উচিত নয়'', এ আশা ব্যক্ত করে তখন আর কোনো লাভ হবে না৷ অন্যদিকে ‘‘আমরা পারবো'' ডাকে সেই পরিস্থিতিতেও কিছুটা প্রেরণা পাওয়া যেতে পারে৷
ক্রিস্টফ স্ট্রাক/এসি
শরণার্থী সংকটে ম্যার্কেলের গ্রহণ করা নীতি কি আপনি সমর্থন করেন? লিখুন নীচের ঘরে ...