1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উদ্ভিদ ও প্রাণী রক্ষায় জার্মানি

২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

জেলেরা হঠাৎ মাছ ধরা ছেড়ে কুমিরের খামার অথবা ঝিনুকের চাষ করলে, সেটা বোধগম্য৷ এই পদ্ধতিতে রোজগার বাড়ে, পরিবেশও বাঁচে৷ কিন্তু সামুদ্রিক কাছিমদের বাঁচিয়ে রাখাটা শুধু পরিবেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে৷

মেক্সিতে প্রাণী সংরক্ষণে কাজ করছে জিআইজেড
ছবি: Getty Images/AFP/E. Castro

মেক্সিকোতে কুমির চাষ

05:33

This browser does not support the video element.

কুমিরের চামড়ার খুব কদর৷ ক্রোকোডাইল লেদারের জিনিসপত্র লাক্সারি আইটেম হিসেবে বেশি দামে বিক্রি হয়৷ সরকারিভাবে ১৯৭৫ সাল যাবৎ এখানে কুমির মারা নিষেধ৷

মেক্সিকোর সিনোলোয়া প্রদেশের এই খামারটিতে কুমিরের চাষ করা হয়৷ তবে শুধু বিক্রির জন্যই নয়, যদিও একটি কুমিরের চামড়া ৫০০ ইউরো মূল্যে বিক্রি করা যায়৷ অপরদিকে মুক্ত প্রকৃতিতে কুমিরদের সংখ্যা বাড়ানোও এই প্রকল্পের একটি উদ্দেশ্য৷ ‘কুমিরচাষি' উমব্যার্তো মন্তোয়া ইনজুনজা জানালেন, ‘‘প্রকল্পটা অর্থকরী, এ থেকে আমাদের বেশ রোজগার হবে৷ আমাদের কুমিরের চামড়া বিক্রির অনুমতি আছে৷''

জিআইজেড-এর ‘বায়োমার' কর্মসূচি

জার্মানির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জিআইজেড জানার চেষ্টা করছে, কোন প্রকল্প দিয়ে টেকসইভাবে প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতিদের বাঁচানো যায়৷ এখানে শুধু বিক্রিবাটার কথা ভাবলে চলবে না৷ ব্রিডাররা শুধু তখনই বিক্রি করতে পারবেন, যদি তারা তার আগে কিছু প্রাণীকে মুক্তি দিয়ে থাকেন৷ ততদিন অবধি খামারটা চলবে মেক্সিকোর সংরক্ষিত এলাকা পরিষদের অর্থানুকুল্যে৷

জিআইজেড-এর ‘বায়োমার' কর্মসূচির কর্মী সোনিয়া গত্রো জানালেন, ‘‘এই প্রকল্পের কিছু ইতিবাচক ফলশ্রুতি আছে৷ যেমন যে সব পরিবার আগে মাছ ধরত, কুমিরের খামার করে তাদের একটা বিকল্প রোজগারের পথ খুলবে৷ পরিবার চালানোর মতো না হলেও, এর ফলে পরিবেশের ওপর চাপ কমবে৷ এছাড়া স্থানীয় কুমিরদের সংখ্যা বাড়বে৷''

মেক্সিকোর সংরক্ষিত এলাকা পরিষদ সদ্য ক্যালিফর্নিয়া উপসাগরের উপকূলবর্তী খাড়িগুলোতে ১২০টি জীয়ন্ত কুমির ছেড়েছে৷ কুমিরের ডিম পাড়ার মতো বয়স হতে দশ বছর সময় লেগে যায়৷ এলাকার জেলেরা কুমিরদের ভয় পেলেও, পরিবেশ সুরক্ষায় কুমিরদের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে৷

মেক্সিকোর সংরক্ষিত এলাকা পরিষদ ‘কনানপ'-এর আলব্যার্তো মেন্দোথা ফ্লোরেস বললেন, ‘‘কুমিররা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ ওরা শিকারি জীব, ওরা অন্যান্য প্রাণীদের সংখ্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখে৷ কুমিররা বিশেষ করে অসুস্থ জন্তু-জানোয়ার শিকার করে৷ শুধুমাত্র সুস্থ পাখি,সরীসৃপ বা মাছেরা যাতে এই পরিবেশে বাঁচে, সেটা নিশ্চিত করে কুমিররা৷''

ঝিনুক চাষ

প্রাণীবৈচিত্র্যে গাল্ফ অফ ক্যালিফর্নিয়াকে বিশ্বের সমৃদ্ধতম সামুদ্রিক এলাকাগুলির মধ্যে ফেলা যায়৷ শুধু এখানেই ১৮টি সংরক্ষিত এলাকা আছে৷ যার ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বিরোধ লেগেই থাকে৷ এখানকার মানুষ ঝিনুকের চাষ করেন৷ আগে তার জন্য ডাল কাটা হতো উপকূলের ম্যানগ্রোভ বা শ্বাসমূল অরণ্য থেকে৷ ঝিনুকের চাষ আবার জলের উৎকর্ষ বাড়ায়, কেননা ঝিনুক হানিকর পদার্থ ছেঁকে বার করে নেয়৷ কিন্তু ঝিনুক চাষে কিছু কিছু পরিবর্তন আনতে হয়েছে৷ ঝিনুকচাষি হোসে আঙ্খেল সেখা গনসালেস জানালেন, ‘‘আগে অনেকে ম্যানগ্রোভ থেকে ডাল কাটত, ফলে গাছগুলো আর বাড়তেই পারত না৷ মারিমাস একটা সংরক্ষিত এলাকা হবার পরে আমরা আর ম্যানগ্রোভের গাছ কাটি না৷''

ঝিনুক চাষ এই এলাকার একটা সফল প্রকল্প৷ মেক্সিকোর কর্তৃপক্ষ ও জিআইজেড সংস্থা ঠিক এই ধরনের সব প্রকল্প খুঁজছেন, যা অন্যান্য এলাকাতেও চালু করা যেতে পারে৷ সোনিয়া গত্রো বললেন, ‘‘জলাভূমি অঞ্চলে পরিবেশের হানি না ঘটিয়ে যে কী করা সম্ভব, তা এখানে দেখা যায়৷ আমাদের ‘বায়োমার' কর্মসূচিতে আমরা অন্যান্য এলাকাতেও এদের উদাহরণ দেখিয়েছি৷''

দানিয়েল রিয়স অলমেদা ক্যালিফর্নিয়া উপসাগরের সবচেয়ে পুরনো সংরক্ষণ প্রকল্পটির পরিচালক৷ গত ৪১ বছর ধরে তিনি সামুদ্রিক কাছিমদের রক্ষাকর্তা৷ এই কাছিমরা যাতে বিলুপ্ত না হয়, সেটা নিশ্চিত করাই তাঁর লক্ষ্য৷ দানিয়েল বললেন, ‘‘এই ৪১ বছরে আমি ৪০ থেকে ৪৫ লাখ কাছিমদের সাগরে ছেড়ে দিতে পেরেছি৷''

আজ তিনি স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলের ছেলে-মেয়েদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন: সকলে মিলে একসঙ্গে বেবি কাছিমদের মুক্তি দেবেন৷ ক্ষুদে কাছিমরা তাদের আদিম প্রবৃত্তি অনুযায়ী সোজা সাগরের দিকে দৌড় দেয় আর এই স্কুলের বাচ্চারাই তখন তাদের বাবা-মায়েদের বলে, ‘না বাবা, তুমি আর কাছিম ধরতে পারবে না৷' বেবি কাছিমদের মধ্যে অতি অল্পই এতদিন বেঁচে থাকবে যে, তারা আবার ডিম পাড়ার জন্য এই বেলাভূমিতে ফিরে আসবে৷ তবুও এই সংরক্ষণ প্রকল্প কাজ দিয়েছে বৈকি৷

ইওয়ানা গটশাল্ক/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ