রাশিয়া কি এবার কিয়েভ দখল করবে? মঙ্গলবার সকালে উপগ্রহচিত্রে ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া গাড়ির বিরাট কনভয়ের ছবি ধরা পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
প্রায় ৪০ মাইল লম্বা একটি রাশিয়ার সাঁজোয়া কনভয়ের ছবি ধরা পড়েছে উপগ্রহচিত্রে। কনভয়টি ধীরে ধীরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে এগোচ্ছে বলে ইউক্রেনের প্রশাসন জানিয়েছে। ওই কনভয়ে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধের ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া গাড়ি আছে। আছে প্রচুর সেনা। বিশাল ওই কনভয় নিয়ে কী উদ্দেশ্যে রাশিয়া কিয়েভের দিকে এগোচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন, কার কত শক্তি
তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে। একনজরে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সামরিক শক্তি।
ছবি: Carlos Barria/REUTERS
যুদ্ধরত সেনা
ইউক্রেনের হাতে আছে দুই লাখ যুদ্ধরত সেনা। যারা সরাসরি লড়াইয়ে যোগ দিয়েছে। রাশিয়ার হাতে আছে আট লাখ ৫০ হাজার যুদ্ধরত সেনা। যারা যে কোনো সময় লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। এদেরই একটি অংশ এখন লড়াইয়ের ময়দানে আছে।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP Photo/picture alliance
সংরক্ষিত সেনা
ইউক্রেনের হাতে সংরক্ষিত বা রিজার্ভড ব্যাটেলিয়ন আছে আড়াই লাখ। যারা প্রয়োজনে লড়াইয়ের ময়দানে নামবে। রাশিয়ার হাতেও সংরক্ষিত সেনার সংখ্যা আড়াই লাখ।
ছবি: Aris Messinis/AFP
প্যারামিলিটারি বাহিনী
রাশিয়ার প্যারামিলিটারি বাহিনীর সংখ্যা আড়াই লাখ। এর বাইরে স্পেশাল ফোর্স আছে। যারা ইউক্রেন হামলায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ইউক্রেনের প্যারামিলিটারি বাহিনীর সংখ্যা মাত্র ৫০ হাজার।
ইউক্রেনের হাতে সাজোয়া গাড়ি বা আর্মার্ড ভেহিক্যালের সংখ্যা ১২ হাজার ৩০৩। রাশিয়ার হাতে এই ধরনের গাড়ির সংখ্যা ৩০ হাজার ১২২। বস্তুত, সম্পূর্ণ বুলেটপ্রুফ এই গাড়িগুলিতে করেই সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছায়। এর সাহায্যে প্রতিপক্ষের উপর আঘাতও হানা যায়।
ইউক্রেনের হাতে ফাইটার জেট বা যুদ্ধবিমান আছে ৬৯টি। রাশিয়ার কাছে সেখানে ফাইটারের সংখ্যা ৭৭২।
ছবি: Erik Romanenko/Tass/imago images
যুদ্ধের হেলিকপ্টার
যুদ্ধ করার মতো হেলিকপ্টার ইউক্রেনের কাছে আছে মাত্র ৩৪টি। রাশিয়ার কাছে সেখানে এই হেলিকপ্টারের সংখ্যা ৫৪৪। ইউক্রেন হামলার প্রথম দিন রাশিয়া এই হেলিকপ্টার প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করেছে। হেলিকপ্টারের সাহায্যে বোমা ফেলা হয়েছে। গুলি চালানো হয়েছে।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP Photo/picture alliance
এবং নৌবহর
নৌবহরেও রাশিয়ার থেকে অনেক পিছিয়ে আছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা ৩৮টি। রাশিয়ার হাতে সেখানে ৬০৫টি যুদ্ধজাহাজ। কৃষ্ণসাগরে যার অনেকগুলিকে স্ট্যান্ডবাই করে রাখা হয়েছে।
ছবি: Iranian Army/AP Photo/picture alliance
পরমাণু শক্তি
ইউক্রেনের হাতে একটিও পরমাণু অস্ত্র নেই। অন্যদিকে রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম পরমাণু শক্তিধর দেশ। ছয় হাজার ২৫৫টি পরমাণু অস্ত্র আছে তাদের হাতে।
ছবি: AP Photo/picture-alliance
10 ছবি1 | 10
এই ছবি প্রকাশ্যে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই কিয়েভ সংলগ্ন অঞ্চলে বোমা মারতে শুরু করেছে রাশিয়া। কিয়েভে হামলার সাইরেন বাজানো হয়েছে। সকলকে নিরাপদ আশ্রয়ে ঢুকে পড়তে বলা হয়েছে। অন্যদিকে, ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল খারকিভের পরিস্থিতিও ভালো নয়। সোমবার সেখানে লাগাতার মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। শহরের মেয়র জানিয়েছেন, হামলায় বহু সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নাগরিকদের বেসমেন্টে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। খারকিভে খাদ্য এবং জল ক্রমশ কমে আসছে বলেও মেয়র জানিয়েছেন।
দক্ষিণ ইউক্রেনের বন্দর শহর বারদিয়ানস্ক রাশিয়া সম্পূর্ণভাবে দখল করে ফেলেছে বলে ইউক্রেনের অভিযোগ। সেখানেও রাশিয়ার ট্যাঙ্কের বিশাল কনভয় মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। সেখান থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরে মারিউপলেও প্রবল যুদ্ধ চলছে। রাশিয়া ওই অঞ্চলটিও দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে ইউক্রেন জানিয়েছে।
রাশিয়া পাল্টা দাবি করেছে ইউক্রেনও বহু জায়গায় সাধারণ মানুষের উপর হামলা চালাচ্ছে। রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অঞ্চল দোনেতস্কে ইউক্রেন লাগাতার শেলিং করছে বলে অভিযোগ। সাধারণ মানুষের ঘর ভাঙছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। রাশিয়া দাবি করেছে, বহু সাধারণ মানুষেরও মৃত্যু হয়েছে সেখানে।