সচেতন যাত্রীদের আবার ফিরিয়ে আনতে নতুন নিয়ম ঘোষণা করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রাইড শেয়ারিং সার্ভিস উবার৷ এই নিয়ম অনুযায়ী সব যাত্রীকে মাস্ক পরে সেলফি তুলতে হবে৷
বিজ্ঞাপন
সানফ্রান্সিসকো ভিত্তিক টেকনিক্যাল রাইড সার্ভিস উবার মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, কোনো যাত্রীকে উবার ব্যবহারের জন্য মাস্কসহ সেলফি তুলতে হবে৷ গত মে মাসে এই নতুন নীতি আরোপ করা হয়েছে এবং এই নিয়ম বাস্তবায়নের পর থেকে ৩৫ লাখেরও বেশি উবার চালক ১০ কোটিরও বেশি যাত্রীকে চেক করেছে৷
উবারে যাত্রীদের ছবি শনাক্তকরণ সিস্টেমটি অটোমেটিক তবে তা যাত্রীদের বায়োমেট্রিক তথ্য দেয় না৷ কোম্পানি আরো জানায়, যাত্রীর মাস্ক পরা না থাকলে সেক্ষেত্রে যাত্রী এবং চালক দুই পক্ষের কোনো জরিমানা ছাড়াই ট্রিপ বাতিল করা সম্ভব৷
অ্যামেরিকা এবং ক্যানাডায় চলতি মাসের শেষদিক থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হবে এবং তারপর অন্যান্য দেশেও চালু করা হবে৷
করোনা মহামারির শক্ত ছোবলে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উবার৷ স্যোশাল ডিসটেন্সিং বজায় রাখতে অনেক বার, রেস্তোরাঁ বা অন্যান্য অনুষ্ঠান বন্ধ ছিলো ফলে তখন অনেক যাত্রী উবার ব্যবহার করেনি৷
উবারের সাম্প্রতিক ট্রিপের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় শতকরা ৫৬ ভাগ কমে গেছে৷ যে কারণে সচেতন যাত্রীদের আবার ফিরিয়ে আনার জন্য উবারের নতুন করোনা সুরক্ষা ব্যবস্থা খুবই জরুরি৷ নতুন নিয়ম অনুযায়ী করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত উবার চালকদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার একটি প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখা হচ্ছে৷
এনএস/কেএম(এপি, ডিপিএ)
টিকা আবিষ্কারের দৌড়ে কে কত এগিয়ে
করোনা ভাইরাসের কার্যকর ভ্যাকসিন আবিষ্কারে অন্তত দশটি দেশে চলছে ১৭০টিরও বেশি প্রচেষ্টা৷ তবে এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ছয়টি পৌঁছাতে পেরেছে পরীক্ষার শেষ ধাপে৷
ছবি: Reuters/J. Akena
পৌনে দুইশ’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দৌড়ে আছে ১৭০ টির বেশি উদ্যোগ৷ একেকটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষা-পর্ব সারতেই সাধারণত বছরের পর বছর সময় লাগে৷ তবে কোভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে তা ১২ থেকে ১৮ মাসে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা৷
ছবি: Reuters/B. Guan
প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্ব
বেশিরভাগ প্রচেষ্টাই এখনো প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে রয়েছে৷ এই ধাপে বিজ্ঞানীরা ভাইরাস বা তার কোনো একটি অংশ তৈরি করেন৷ সেটি অন্য প্রাণীদের উপর প্রয়োগ করে দেখেন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঠিকঠাক সাড়া দিচ্ছে কিনা৷ ১৩৯ টি প্রচেষ্টা এখনো এই ধাপে আটকে আছে৷
ছবি: Imago/blickwinkel
প্রথম ধাপ
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার প্রথম ধাপে সীমিত সংখ্যক মানুষের মধ্যে টিকাটি প্রয়োগ করা হয়৷ দেখা হয়, প্রাক ক্লিনিক্যাল পর্বে পশুর দেহে যেভাবে প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে, মানুষের শরীরেও তা একইভাবে কাজ করছে কিনা৷ বর্তমানে ২৫টি টিকা রয়েছে এই ধাপে৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Gobet
দ্বিতীয় ধাপ
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপে আছে ১৫টি ভ্যাকসিন৷ সম্ভাব্য টিকাটি কতটা নিরাপদ আর তা কী মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে, এই ধাপে মূলত সেটি দেখেন বিজ্ঞানীরা৷ এজন্য কয়েকশ’ মানুষের শরীরে টিকাটি পরীক্ষা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/University of Oxford
তৃতীয় ধাপ
তৃতীয় ধাপে ভ্যাকসিন পরীক্ষার আওতায় আসেন কয়েক হাজার মানুষ৷ কার্যকরীতা, শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার দিকগুলোতে এই পর্যায়ে বিজ্ঞানীরা মনযোগ দেন৷ এই ধাপটিতে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯-এর মাত্র সাতটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন পৌঁছাতে পেরেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Pochard-Casabianca
অনুমোদন
পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন বাজারজাতের অনুমোদন দেয় দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ৷ গত জুনে ক্যানসিনো বায়োলোজিক্স এর ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে চীনের সামরিক বাহিনী৷ অন্যদিকে পরীক্ষায় সফল হয়েছে দাবি করে সরকারি প্রতিষ্ঠান গামালিয়া ইন্সটিটিউটের ভ্যাকসিনের অনুমোদন করেছে রাশিয়া৷ যদিও তাদের এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতে নিয়ে বিতর্ক চলছে৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
শেষ ছয়
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে পৌঁছানো সাতটি ভ্যাকসিনের তিনটি চীনের৷ এর মধ্যে নিষ্ক্রিয় ভাইরাস থেকে টিকা তৈরি করেছে সাইনোভেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান৷ জুলাইতে আরব আমিরাতে চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু করেছে সাইনোফার্ম নামে দেশটির আরেকটি কোম্পানি৷ শেষ ধাপের এই দৌড়ে আরো আছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানিও৷
ছবি: Reuters/J. Akena
আলোচনায় অক্সফোর্ড
করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে শুরু থেকে আলোচনায় যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়৷ ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে তারা৷ পৌঁছে গেছে তাদের উদ্ভাবিত টিকা পরীক্ষার শেষ ধাপে৷ দক্ষিণ আফ্রিকা আর ব্রাজিলে চলছে তার ট্রায়াল৷