বাংলাদেশে এমন ঘটনা একটু অবাক করার মতোই বটে৷ উলটো পথে আসা এক ভিআইপির পতাকাবাহী গাড়ির সামনে বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা৷ নির্দেশ দিচ্ছেন গাড়ি ঘুরিয়ে সঠিক পথে যাওয়ার৷
বিজ্ঞাপন
ঘটনাটার মূল ব্যক্তির নাম তারিকুল আলম সুমন৷ বাংলাদেশ পুলিশের একজন ইন্সপেক্টর৷ প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকলে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন তিনি৷
নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন তারিকুল৷ সাথে উলটো পথে আসা গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযানের কয়েকটি ছবি ও ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে৷
তারিকুল লিখেছেন, ‘‘গত বছরের মতো এ বছরও রমযানে গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় উল্টো পথে যাত্রা, সিএনজি ষ্টেশনে লাইন দিয়ে মূল রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা, অবৈধ পার্কিং এসব বিষয়ে আমাদের সিনিয়র অফিসারদের টনক নড়ায় স্বভাবতই এসব অভিযান পরিচালনার জন্য আমার ডাক পড়লো৷ আমিও নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়লাম৷ কারণ, এসব অভিযানে ঝামেলা হলে পরবর্তিতে কেউ সহায়তা করে না৷’’
প্রায় প্রতিটি গাড়িতে ৯০০ টাকা করে জরিমানার মামলা করার কথা জানিয়েছেন তিনি৷ প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব, এমপি শাওন, প্রাক্তন এমপি পাপিয়া, ঢাকা জেলা জজ, বিচারপতি, মিডিয়ার ছোট মাইক্রোবাস, সিএনজি, প্রাইভেটকার ও মোটরবাইকসহ অনেক ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের কথাই এসেছে সেখানে৷
নাম উল্লেখ না করে একজন সিনিয়র মন্ত্রীর কথাও বলেছেন স্ট্যাটাসে৷ উলটো পথে গাড়ি চলতে না দেয়ায় তাঁকে ‘রাবিশ’ বলে গালি দেয়া হয়েছে বলেও দাবি এই পুলিশ কর্মকর্তার৷
ভিআইপিদের সবসময় ছাড় দিয়ে আমজনতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে আফসোস তারিকুলের৷ ফেসবুক স্ট্যাটাসে সবাইকে পাশে থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের এই কর্মকর্তা৷
ভিআইপিদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সাহস দেখানোর জন্য অনেকেই প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তরিকুলকে৷ ফেসবুকে পোস্ট করা তাঁর একটি ভিডিও দেখা হয়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ বারের বেশি৷
এডিকে/এসিবি
গতবছরের ডিসেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...
পুলিশের জানা-অজানা কয়েকটি সেবা
নাগরিকদের সহায়তা দিতে বাংলাদেশ পুলিশের বেশ কয়েকটি সেবা কার্যক্রম চালু আছে৷ তবে অনেকেই হয়ত এ সব সেবার সঙ্গে পরিচিত নন৷ তাই ছবিঘরে থাকছে বাংলাদেশ পুলিশের জানা-অজানা কয়েকটি সেবা৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
মোবাইল অ্যাপ
এটি পুলিশের চালু করা ‘বিডি পুলিশ হেল্পলাইন’ অ্যাপের একটি স্ক্রিনশট৷ গতবছর অ্যাপটি চালু করা হয়৷ সেখানে নাম প্রকাশ না করেও অভিযোগ বা মতামত জানানো যায়৷ এছাড়া সেখানে সব থানার সঙ্গে যোগাযোগের নম্বরও আছে৷ ১৭ নভেম্বর অ্যাপটিতে ঢুকে দেখা যায়, নাগরিকরা সাধারণ তথ্য জানতে চাওয়া থেকে শুরু করে নিজ নিজ এলাকার সমস্যার কথা জানিয়েছেন৷ সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা সেগুলোর উত্তরও দিয়েছেন৷
ছবি: BD Police Helpline
হ্যালো সিটি অ্যাপ
‘সিটি’ মানে হচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ‘কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম’ ইউনিট৷ তাদেরকে তথ্য দেয়ার জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে৷ এই অ্যাপ সম্পর্কে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বলছে, ‘‘জঙ্গিবাদ/উগ্রবাদ, সাইবার ক্রাইম, বোমা/ বিস্ফোরক/ অস্ত্র/মাদক, আন্তঃদেশীয় অপরাধ/জালিয়াতি, মোস্ট ওয়ান্টেড ব্যক্তি সর্ম্পকে নিজের পরিচয় গোপন রেখে পুলিশকে তথ্য প্রদান করা যাবে৷’’
ছবি: Google Store
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো
পুলিশ সদরদপ্তরে স্থাপিত ‘আইজিপি’স কমপ্লেন সেল’ ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকে৷ পুলিশ সদস্যের যে কোনো অপেশাদার ও অনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে এই সেলকে জানানো যায়৷ সরাসরি, কুরিয়ার সার্ভিস কিংবা ডাকযোগে তথ্য জানানো যায়৷ এছাড়া ০১৭৬৯-৬৯৩৫৩৫ ও ০১৭৬৯-৬৯৩৫৩৬ মোবাইল নম্বরে এবং complain@police.gov.bd এই ই-মেলেও অভিযোগ জানানো যায়৷
ছবি: Facebook/Bangladesh Police
ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার
নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের আশ্রয় বা থাকার জন্য ঢাকার তেজগাঁও থানা চত্বরে এই সেন্টারটি স্থাপন করা হয়েছে৷ পুলিশের পাশাপাশি ১০টি বেসরকারি সংস্থা সেখানে আইনি সহায়তাসহ অন্যান্য কাজ করছে৷
অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে ‘পুলিশ ক্লিয়ারেন্স’ সার্টিফিকেট দেয়া শুরু করেছে পুলিশ৷ ঐ সময় পুলিশ সদর দপ্তরে থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, এখন থেকে জনগণ ঘরে বসেই অনলাইন ‘পুলিশ ক্লিয়ারেন্স’ সেবা পাবেন৷ ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে পরে তা সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে সংগ্রহ করতে হবে৷ ফরম পেতে যেতে হবে এই ঠিকানায় http://pcc.police.gov.bd/en/৷
ছবি: pcc.police.gov.bd/en/
প্রবাসী সহায়তা সেল
বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকরা দেশে কোনো সমস্যার সমাধানে পুলিশের সাহায্য চাইতে পারেন৷ এ জন্য পুলিশ সদরদপ্তরে ‘প্রবাসী সহায়তা সেল’ চালু আছে৷ ফোনে (+৮৮ ০১৭৬৯ ৬৯০০১৯) কিংবা ইমেলে expatriatehelp@police.gov.bd যোগাযোগ করা যাবে৷
ছবি: Bangladesh Police
সচেতনতা কার্যক্রম
জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করে তোলা, ট্রাফিক আইন মেনে চলতে শিক্ষার্থীসহ অন্যদের আগ্রহী করে তোলা, হেলমেট পরে মোটর সাইকেলে ওঠা – ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে পুলিশ৷