1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বানরের জন্ম নিয়ন্ত্রণ

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২২ ডিসেম্বর ২০১৩

দিল্লি ও তার আশপাশ এলাকায় বানরের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে৷ সেইসঙ্গে পথে-ঘাটে বাড়ছে মানুষের ওপর আক্রমণের ঘটনা৷ দিল্লি পুরসভা বাঁদরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ৷ তাই বিকল্প হিসেবে ভাবা হচ্ছে বানরের জন্ম নিয়ন্ত্রণ৷

মহাসড়কের ধারে গাছে খেলা করছে বানরছবি: DW/A. Chatterjee

দিল্লি মহানগরী ও তার আশপাশের রাজ্যে উত্তর ভারতের রীস্যাস জাতীয় বানরের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে রাস্তাঘাটে, লোকালয়ে নিরাপদে চলাফেরা করা দুষ্কর৷ হাতে ব্যাগ দেখলেই নিঃশব্দে এসে চড়াও হবে৷ বাধা দিতে গেলে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে আঁচড়ে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করে ছাড়ে৷ বাঁদরের কামড়ে জলাতঙ্ক, মারাত্মক হার্পিস এবং ত্বকে সংক্রমণ হয়৷

শুধু কী রাস্তাঘাটে? বাড়ির ব্যালকনি, ছাদ ও সিঁড়িতে পর্যন্ত চড়াও হয় খাবারের সন্ধানে৷ খাবার না পেলে জামাকাপড় নিয়ে পালায়৷ ২০০৭ সালে বানরের আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মারা যান দিল্লির ডেপুটি মেয়র৷ তার বছর খানেক পরে ১৪ বছরের এক কিশোরী বাঁদরের তাড়া খেয়ে ভয়ে পালাতে গেলে বহুতল একটি আবাসন থেকে পড়ে মারাত্মকভাবে জখম হয়৷

তাহলে এই মর্কটকুলের সংখ্যা কমানোর উপায় কী? উত্তরাঞ্চলের দেরাদুন-ভিত্তিক ভারতের বন্যপ্রাণী প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ হলো, এদের জন্ম-নিয়ন্ত্রণ৷ টিউবেক্টমি, ভ্যাসেক্টমি আর ওরাল কন্ট্রাসেপটিভস খাওয়াতে হবে খাবারের মধ্যে মিশিয়ে৷ আর ভ্যাসেক্টমি ও টিউবেক্টমি বা নির্বীজকরণ করতে হবে বাঁদরদের ধরে অজ্ঞান করে৷ এই প্রক্রিয়া লাগাতার চলতে থাকলে দুই-তিন বছরের মধ্যে সুফল পাবার আশা করা যেতে পারে বলে মনে করেন ভারতীয় বন্যপ্রাণী প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ৷

২০০৭ সালে বানরের আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মারা যান দিল্লির ডেপুটি মেয়রছবি: DW/A. Chatterjee

হিমাচল প্রদেশে বাঁদরের নির্বীজকরণে সুফলও নাকি পাওয়া গেছে৷ বানরের নির্বীজকরণের চারটি কেন্দ্র রয়েছে সেখানে৷ প্রায় ৭০ হাজার বাঁদরের নির্বীজকরণ হয়৷ পাশাপাশি, অভয়ারণ্যে এমন গাছ গাছড়া রোপণ করতে হবে যাতে বানর পরিবারের খাদ্যের অভাব না হয়৷ এই নিয়ে ধারাবাহিক গবেষণা চলেছে৷

দিল্লির পশু হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, বানরকুলের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণটা সহজেই অনুমেয়৷ হিন্দুদের ধর্মীয় বিশ্বাস, বাঁদর হলো ভগবান রামের ভক্ত হনুমানের উত্তরসূরি৷ হিন্দুরা প্রতি মঙ্গল ও শনিবার ভক্তি ভরে এদের খেতে দেয়, বিশেষ করে উত্তর ভারতে৷ ফলে বানরকুল শহর ছেড়ে যাবার নাম করে না৷

দিল্লির পুর কর্তৃপক্ষ বাঁদর ধরার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে বলেছে, ২০০৭ সাল থেকে ১৩ হাজারেরও বেশি বাঁদর ধরা হয়, কিন্তু সংখ্যা কমেনি, বরং বেড়েছে৷ পুরসভার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়৷

বানর তাড়াতে হনুমান

একটি বেসরকারি সংস্থা শহর থেকে বাঁদর তাড়াবার জন্য কিছু লোক নিয়োগ করে৷ তাঁরা দড়ি বেঁধে কালোমুখো বড় হনুমান নিয়ে আসে৷ বানরের দৌরাত্ম রুখতে এরা বাড়ির ছাদে, বারান্দায় হনুমানকে পেচ্ছাপ করায়৷ সেই পেচ্ছাপের বিশেষ গন্ধে লালমুখো রীস্যাস বাঁদর ঐসব বাড়িতে অন্তত বেশ কিছুদিন ঢোকে না৷

বাঁদর ধরার কর্মীর মাসিক বেতন প্রায় ১৪-১৫ হাজার টাকা৷ বন্যপ্রাণী দপ্তরের কর্মকর্তারা দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে বাঁদর ধরে অভয়ারণ্যে ছেড়ে আসে৷ কিন্তু কিছুদিন পরে আবার তারা ফিরে আসে লোকালয়ে, খাবারের সন্ধানে৷ কাজেই শহরে খাবার দেয়া বন্ধ না হলে এই সমস্যা থাকবে৷

দ্বিতীয়ত, শহরের পরিধি বাড়ার ফলে বাঁদরকুলের প্রাকৃতিক আবাসভূমিতে অনুপ্রবেশ ঘটছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ