1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিশরে এইডস

২৩ মার্চ ২০১২

বর্তমান বিশ্বে এইচআইভি'র মতো এত ভয়ংকর, এত ক্ষতিকর ভাইরাস আর নেই৷ এ ভাইরাস এতটাই শক্তিশালী যে, সঠিক চিকিৎসা না হলে, এটা মরণব্যাধী এইডস রোগে পরিণত হতে পারে৷ যেমনটা হচ্ছে মিশরে৷

ছবি: picture-alliance/dpa

এইডস রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সচেতনতা৷ অথচ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ যৌন আচরণের ফলে মিশর, সুদান, তিউনিসিয়ার মতো ইসলামি রাষ্ট্রগুলোতে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে এইচআইভি ভাইরাস৷ এরপরও সমকামিতা বা এইচআইভি/এইডস নিয়ে কথা বলার কোন মানসিকতাই নেই এই দেশগুলোতে৷ ফলত সচেতনতার অভাবই মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার সমকামী ও উভকামী পুরুষদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের প্রধান কারণ৷

মাজিদ এল রাবেইছবি: DW/M.Paul

তাই গবেষকরা এইচআইভি পর্যবেক্ষণ এবং সমকামী পুরুষদের জন্য এইচআইভি পরীক্ষা, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিলেও, শুধুমাত্র এভাবে সংক্রমণের হার কমানো যাচ্ছে না৷ বলা বাহুল্য, আরব বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই এইচআইভি/এইডস একটি নিষিদ্ধ বিষয়৷ তারপরও অবশ্য ইউএনডিপি'র হারপাস নামের একটি প্রোগ্রাম এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছে৷ এমনকি আঞ্চলিক কিছু ব্লগারও সম্প্রতি এইচআইভি/এইডস'এর ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাব নিয়ে বেশ কয়েকটি রিপোর্ট করেছেন৷ বিশেষ করে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হলে যে লজ্জা ও অসম্মানের শিকার হন, তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন তাঁরা৷ আর এ কাজে যোগ দিয়েছেন মাজিদ এল রাবেই'এর মতো মানুষ, যিনি নিজেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত৷

মাজিদ এল রাবেই'এর কথায়, ‘‘মিশরে আমিই বোধ হয় প্রথম ব্যক্তি, যে নিজের এইচআইভি পজিটিভ হওয়ার বিষয়টিকে সবার সামনে, খোলাখুলি স্বীকার করেছিল৷ আসলে এখানে অনেকেই আছেন, যাঁরা এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত৷ আমি তাদেরই একজন৷ এ কথা বলতে আমার কোন দ্বিধাবোধ নেই, নেই কোন ভয়৷''

আফ্রিকা মহাদেশের অনেক প্রান্তে এইডস মারাত্মক সমস্যাছবি: picture alliance / dpa

ইউনিসেফ'এর তথ্য অনুযায়ী, মিশরে নিবন্ধিত এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা কম৷ ২৯০০ থেকে ১৩০০০'এর মধ্যে৷ তবে যাঁরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন, তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যের সরবরাহ রয়েছে খুব সীমিত আকারের৷ তাছাড়া যাঁরা এইচআইভি নিয়ে বাস করছেন, তাঁদের জন্য ব্যবস্থাও রয়েছে অপ্রতুল৷ অবাক করার বিষয়, সরকারি সূত্র কিন্তু বলছে অন্য কথা৷ মাজিদ জানান,

‘‘মিশরের বহু মানুষই যে এইচআইভি'তে আক্রান্ত – এ কথা সরকারের তরফ থেকে কিন্তু স্বীকারই করা হয় না৷ উল্টে মিশরে এইচআইভি সংক্রমণের কোন ঘটনা নেই বলে জাহির করতে চায় তারা৷''

জানা যায়, আক্রান্তদের বেশি ভাগেরই এইচআইভি সংক্রমণ হয়েছে অনিয়ন্ত্রিত স্বাভাবিক যৌন কর্মের দ্বারা৷ আর ৯০ শতাংশ মিশরীয় মহিলা যাঁরা এইচআইভি নিয়ে বাস করছেন, তাঁরা আক্রান্ত হয়েছে বিবাহের মাধ্যমে৷ মাজিদ বললেন, ‘‘মিশর একটি ইসলামি রাষ্ট্র৷ তাই অন্যান্য ইসলামি দেশের মতো এখানেও একজন পুরুষের সঙ্গে অপর একজন পুরুষের যৌন মিলনকে অপরাধ বলেই বিবেচনা করা হয়৷ দেখা হয় ‘পাপ' হিসেবে৷ আসলে এটা ইসলামি মোল্লা বা ধর্মীয় নেতাদের একটা কট্টরপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি মাত্র!''

তাই মিশরীয় ব্লগারদের একটা দল এবং প্রচার মাধ্যম বা মিডিয়া জগতের ব্যক্তিরা একটি ‘ওপেননেস (উন্মুক্ত হওয়া)' উদ্যোগে হাত মিলিয়েছেন৷ এঁদের লক্ষ্য এই ভাইরাসে আক্রান্ত এবং এইডস রোগীদের সমাজ থেকে বিতাড়িত করার পরিবর্তে আবারো সমাজে সম্পৃক্ত করা৷ তাঁদের সঙ্গে মেশার জন্য লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করা৷

মাজিদ এল রাবেই জানালেন, ‘‘আসলে মিশরের আপামর জনতা অত্যন্ত ধর্ম বিশ্বাসী৷ ধর্মীয় আচার-আচরণ, তার শিক্ষা, কোন খাবারটা হালাল, কোনটা হারাম – এ'সব বিষয়ে তারা খুবই সচেতন৷ তাছাড়া, তাদের ওপর ধর্মীয় নেতাদের একটা প্রভাব মিশরে লক্ষ্য করার মতো৷ সাধারণ মানুষের কাছে ঈশ্বরের ডান হাত ইসলামি ধর্মগুরুরা৷ তাই ধর্মীয় নেতারা যাই বলেন, তাই বেদবাক্য বলে মেনে নেয় মানুষ৷''

স্বাভাবিকভাবেই, কাজটা এত সহজ নয়৷ তারপরও ‘ফ্রেন্ডস অব লাইফ' নামের একটি এনজিও খুলে এইচআইভি'র বিরুদ্ধে লড়াই'ই সোচ্চার মাজিদ এল রাবেই৷

প্রসঙ্গত জাতিসংঘের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে বিশ্বব্যাপী এইডস রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন প্রায় ১,৮ মিলিয়ন মানুষ৷

প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ