এইচআইভি আক্রান্তদের সম্পর্কে সামাজিক ভীতি দূর করতে অভিনব এক উদ্যোগ নিয়েছে নিউজিল্যান্ড৷ এই ভাইরাস বহন করছে এমন মানুষদের জন্য তৈরি করেছে স্পার্ম বা বীর্য ব্যাংক৷
বিজ্ঞাপন
নিউজিল্যান্ডে বিশ্বের প্রথম এইচআইভি-পজেটিভ স্পার্ম ব্যাংক চালু করা হয়েছে বুধবার৷ উদ্দেশ্য, এমন ভাইরাস আক্রান্তদের সম্পর্কে সমাজে যে ভীতি কাজ করছে তা দূর করা৷
এখন অবধি তিনজন এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি স্পার্ম ব্যাংকে বীর্য দান করেছেন৷ তাদের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধারাবাহিকভাবেই ‘অসনাক্তযোগ্য পর্যায়ে’ রয়েছে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অর্থ হচ্ছে, নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করছেন এমন একজন এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে শরীরে থাকা ভাইরাস অন্য কারো মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব নয়৷
সংক্রামকব্যাধি বিশেষজ্ঞ এবং অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্ক টমাস এই বিষয়ে বলেন, ‘‘এই এইচআইভি পজেটিভ স্পার্ম ব্যাংক পুরোপুরি নিরাপদ৷ যখন একজন আক্রান্ত ব্যক্তি নিয়মিত কার্যকর চিকিৎসা গ্রহণ করেন, তখন তার রক্তে এইচআইভি ভাইরাসের পরিমাণ প্রায় সবসময়ই অসনাক্তকর পর্যায়ে নেমে যায়৷''
আর এই পরিস্থিতিতে সেই ব্যক্তির পক্ষে অরক্ষিত যৌনমিলন বা সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে এই ভাইরাস অন্যের শরীরে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হয় না বলে জানান টমাস৷
তবে, চিকিৎসকরা যা-ই বলুন না কেন এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিরা এখনো প্রকাশ্যে তাদের রোগ নিয়ে কথা বলতে সংকোচবোধ করেন৷ ফলে এইচআইভি পজেটিভ স্পার্ম ব্যাংকের জন্য পর্যাপ্ত বীর্যদাতা পাওয়া গেলেও তাদের কেউই প্রকাশ্যে এই বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী নন৷
এআই/এসিবি (ডিপিএ)
২০১৬ সালে বিজ্ঞানের কিছু অভিনব ও বিস্ময়কর উদ্ভাবন
চলতি বছর বিজ্ঞানীরা এমন কিছু আবিষ্কার করেছেন, যা দীর্ঘদিন মানুষের উপকারে আসবে, মানুষকে দীর্ঘজীবন লাভে সহায়তা করবে৷ আবিষ্কারগুলো সম্পর্কে জেনে নিন ছবিঘর থেকে৷
ছবি: imago/Science Photo Library
মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গের খোঁজ
জুন ২০১৬-তে মানুষ প্রথমবারের মত মাধ্যাকর্ষণ তরঙ্গ রেকর্ড করতে পেরেছে৷ বিজ্ঞানীরা ১৯৯২ সাল থেকে এই তরঙ্গের খোঁজ করছিলেন৷ তাঁদের ধারণা, এই তরঙ্গ নিয়ে গবেষণা করার ফলে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের উৎপত্তি ও বিস্তার সম্পর্কিত অনেক রহস্যের সমাধান করা যাবে৷
ছবি: imago/Science Photo Library
তিন বাবা-মায়ের সন্তান
২০১৬ সালের মে মাসে বিশ্বে প্রথমবারের মতো এমন এক সন্তান জন্ম নেয়, যে দুই নারীর ডিম্বাণু এবং এক পুরুষের শুক্রাণু নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে৷ মেক্সিকোতে জন্ম নেয়া এই সন্তান একদম সুস্থভাবে ভূমিষ্ঠ হয়৷ বিজ্ঞানীরা জানান, মায়ের শরীরে যদি জিনগত কোনো রোগ থাকে, তবে এই উপায়ে শিশুটি সেই রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Carl Court
ডিএনএ কাটাছেঁড়া
এ বছর মার্কিন বিজ্ঞানীরা শুকরের শরীরে মানুষের অঙ্গের বিকাশে সফল হন৷ ‘জিন এডিটিং’ বা ডিএনএ কাটাছেঁড়ার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা শুকরের ভ্রুণে মানুষের স্টেমসেল প্রতিস্থাপিত করেন, এর ২৮ দিন পরে মানুষের সেই স্টেমসেল শুকরের দেহে বিকশিত হতে শুরু করে৷
ছবি: picture-alliance/Chromorange/Bilderbox
কার্বন ডাই-অক্সাইডকে পাথরে রূপান্তর
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্ব যে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, তা থেকে বাঁচতে উত্তর মেরুর কাছে আইসল্যান্ডে বিজ্ঞানীরা কার্বন ডাই-অক্সাইডকে চুনাপাথরে রূপান্তর করতে সফল হন৷
ছবি: imago/blickwinkel
হিলিয়ামের সম্ভার
তানজানিয়ায় হিলিয়াম গ্যাসের বিশাল সম্ভারের খোঁজ পাওয়ায় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন৷ বিমানের টায়ারে ব্যবহৃত এই গ্যাসের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় এমআরআই এবং স্ক্যানিং মেশিনে৷
ছবি: CHROMORANGE
এইচআইভি-র ভ্যাকসিন
এইডস-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ২০১৬ সালে বিজ্ঞানীরা সফলতা দেখিয়েছেন৷ প্রথমবারের মত বিজ্ঞানীরা এইচআইভি ভাইরাস নির্মূল করতে পারে এমন ভ্যাকসিন বানিয়েছেন৷ ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বেশ কয়েকটি দেশে এই মুহূর্তে এই ভ্যাকসিনের ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ চলছে৷
ছবি: AP
অন্তহীন তথ্য ভাণ্ডার
ন্যানো স্ট্রাকচার ব্যবহার করে মার্কিন বিজ্ঞানীরা একটি ছোট গ্লাস ডিস্ক বানিয়েছেন৷ ভীষণ ছোট একটি ডিস্কে ৩৬০ টেরাবাইট ডাটা বা তথ্য সংরক্ষণ করা যায়৷ ১,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপামাত্রায় ডিস্কটি গলে না বা নষ্ট হয় না৷ আর বড় ডিস্কে অসংখ্য তথ্য জমা রাখা যায়৷
ছবি: Getty Images
রকেটের পুনর্ব্যবহার
যুক্তরাষ্ট্রের রকেট কোম্পানি স্পেসএক্স প্রথমবারের মতো আবারও ব্যবহারযোগ্য রকেট এনেছে৷ সমুদ্রে ‘ফ্যালকন ৯’ লঞ্চ প্যাড থেকে উৎক্ষেপিত এই রকেট আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছে আবার সফলভাবে ফিরে আসে৷
ছবি: SpaceX
সুপারসনিক গতি
মার্কিন স্টার্টআপ কোম্পানি ‘হাইপারলুপ’ এ বছর এক অভিনব প্রযুক্তি বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করেছে৷ এর ফলে ভবিষ্যতে মানুষের পক্ষে ভ্যাকুয়াম টিউবের মধ্য দিয়ে ঘণ্টায় এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে ছোটা সম্ভব হবে৷
ছবি: Hyperloop Technologies
চালকবিহীন গাড়ি
মানুষের কল্পনায় ছিলো এমন গাড়ি, যা নিজে থেকেই চলবে৷ সেই কল্পনাকে বিজ্ঞানীরা বাস্তব রূপ দেন এই বছর৷ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে চালকবিহীন গাড়ি পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে৷