1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এইচআইভি প্রতিরোধে গাভির দুধ

ক্যামিলা গ্রেসন/এআই১১ ডিসেম্বর ২০১২

গাভির দুধ পুষ্টির গুরুত্বপূর্ণ উৎস৷ এটা সকলের জানা৷ কিন্তু এই দুধের আরেক উপকারিতার কথা এবার বেরিয়ে এসেছে গবেষণায়৷ অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা বলছেন, এইচআইভি ভাইরাস প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখতে পারে গাভির দুধ৷

ছবি: picture-alliance/dpa

এইচআইভি/এইডস নিয়ে মানুষের চিন্তার অন্ত নেই৷ গত পহেলা ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবসে জানা গেছে যে, গত এক বছরে বাংলাদেশে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১০৩ জন৷ আর মারা গেছেন ৬৫ জন৷ বিশ্ব এইডস দিবসে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক৷

এখানে বলা প্রয়োজন, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে এইচআইভি সংক্রমণ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আইপিএস৷ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে এইচআইভি সংক্রমণের হার কম থাকলেও বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন এটি ধীরে ধীরে চুপিসারে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে৷

অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা বলছেন, এইচআইভি ভাইরাস প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখতে পারে গাভির দুধছবি: AP

আশার কথা হচ্ছে, এইডস আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার কমাতে বিজ্ঞানীদের চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে৷ এই নিয়ে গবেষণা চলছে৷ আসছে সফলতাও৷ অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা সম্প্রতি জানিয়েছেন, অ্যান্টিবডি উৎপাদনে গাভির দুধ ব্যবহার করা যেতে পারে, যা এইচআইভি সংক্রমণ রোধে সহায়ক হবে৷ আন্টিবডি হচ্ছে রক্তে উৎপন্ন পদার্থ বিশেষ যা ক্ষতিকর জীবাণু ইত্যাদিকে প্রতিরোধ বা ধ্বংস করে৷

মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একপাল গর্ভবতী গাভির উপরে তাদের গবেষণা পরিচালনা করেছেন৷ তাঁরা গাভির ‘শালদুধ' পরীক্ষা করেছেন৷ স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং নারীর গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায়ে এই দুধ উৎপন্ন হয়৷

গবেষক দলের প্রধান এবং মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডামিয়ান পার্সেল এই বিষয়ে বলেন, শালদুধে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষমতা গর্ভবতী গাভির রয়েছে৷ তবে শালদুধের পর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপে যে দুধ গাভি উৎপন্ন করে তাতে অ্যান্টিবডির মাত্রা কম থাকে৷

পার্সেল বলেন, ‘‘বাছুর যদি জন্মের পরপরই এই শালদুধ না পায়, তাহলে সেটি সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকে এবং সাধারণত মারা যায়৷''

সমস্যা হচ্ছে, এইচআইভি ভাইরাসের বিভিন্ন গোত্র রয়েছে৷ পার্সেলের কথায়, ‘‘প্রত্যেকটি গোত্রের এইচআইভি ভাইরাসের এত জিনগত রূপান্তর আছে, যা এই পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে যাবে৷'' তিনি বলেন. ‘‘খুব কম মানুষের দেহই এসব গোত্র শনাক্ত এবং প্রতিরোধে সক্ষম আন্টিবডি তৈরি করতে পারে৷ তবে গাভি এটি করতে পারে৷''

বিজ্ঞানীদের ভাষ্য হচ্ছে, গাভির দেহে এইচআইভি সংক্রমণ সম্ভব নয়৷ বিজ্ঞানীরা তাই গাভির শালদুধ ব্যবহার করে এইচআইভি প্রতিরোধক তৈরি করতে চাচ্ছেন৷ এক্ষেত্রে তাঁরা পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইমিউরনের সঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন৷

আপাতত, বিজ্ঞানীদের যে আবিষ্কার, তা দিয়ে ক্রিম বা জেল তৈরির দিকেই মনোযোগী হচ্ছেন তাঁরা৷ এই ক্রিম যোনিতে ব্যবহারের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধ আরো সহজ হবে৷ এছাড়া গর্ভনিরোধক রিংয়েও এটি যোগ করা যেতে পারে, যা দীর্ঘ সময় ধরে এইচআইভি প্রতিরোধক প্রোটিন মানবদেহে সরবরাহ করতে সক্ষম হবে৷

মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মারিট ক্রামস্কি (বামে), ডামিয়ান পার্সেল (মাঝে) এবং রবার্টছবি: Damian F.J. Purcell

গাভির শালদুধ ব্যবহার করে এসব পণ্য তৈরিতে খরচও হবে কম৷ পার্সেলের দলের এক সদস্য মারিট ক্রামস্কি এই বিষয়ে বলেন, ‘‘গাভির শালদুধে থাকা অ্যান্টিবড ব্যবহার করে সত্যিকার অর্থেই খুব কম খরচে অনেক বেশি পরিমাণ প্রতিরোধক তৈরি সম্ভব৷ আমরা আশা করছি, সবশেষে আমরা এমন একটি পণ্য তৈরিতে সক্ষম হব, যেটি দামে সস্তা হবে৷''

প্রসঙ্গত, গোটা বিশ্বে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪ মিলিয়ন৷ গরুর দুধ গবেষণার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেন৷ সেক্ষেত্রে এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে এটি হবে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ