1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘এই পরিস্থিতিতে কোরবানি হলে কিছুটা ঝুঁকি তো থাকবেই’

সমীর কুমার দে ঢাকা
১৭ জুলাই ২০২০

করোনা পরিস্থিতিতে কোরবানি কি আবশ্যিক? হজের মতো সীমিত আকারে কি কোরবানিও করা সম্ভব? ডয়চে ভেলের সঙ্গে আরো অনেক বিষয়ে কথা বলেছেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ৷

Bangladesch | Anwalt und ehemaliger Generalstaatsanwalt, A. F. Hassan Ariff
ছবি: Privat

ডয়চে ভেলে : কোরবানি ফরজ, না ওয়াজিব? 

এ এফ হাসান আরিফ : আমরা আসলে মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের না৷ তাই এটা নিয়ে ডিটেল বলা আমাদের সাজেও না, সম্ভবও না৷ আমরা আলেমদের কাছ থেকে বয়ানে-বক্তৃতায় শুনি, মক্কায় গিয়ে যে হজ করা হয় সেটা যাদের সামর্থ্য আছে তাদের জন্য৷ কোরবানিও যাদের আর্থিক সামর্থ্য আছে তাদের জন্য৷ হুজুরদের কাছ থেকে আমরা শুনেছি এটা ওয়াজিব৷

কোরবানি পালন করা কি আবশ্যিক, নাকি নয়?

ফরজ হলো আবশ্যিক৷ আর যদি সেটা না হয় তাহলে সেটা ওয়াজিব৷ এর অনেক ব্যাখা বিশ্লেষন আছে৷ আলেম বা ইসলামিক স্কলার যারা তারা হয়তো এই বিষয়গুলো আরো ব্যাখা করে বলতে পারবেন৷ মোটা দাগে আমরা যেটা বুঝি এটা আবশ্যিক না, ওয়াজিব৷

বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কেউ যদি মনে করে এবার কোরবানি দেবে না, তাহলে কি হতে পারে?

আলেমদের কাছ থেকে আমরা যে নির্দেশনা পেয়েছি, সেটা হলো, শুক্রবারের জুম্মার নামাজ কিছুদিন বন্ধ ছিল৷ পরে একটা সামাজিক দূরত্ব মেনে মসজিদে পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়৷ এবারও কোরবানির যে জামাত সেটা বাইরে হচ্ছে না, মসজিদে হবে৷ সেখানেও স্বাস্থ্য বিধি মেনে এই নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ কোরবানি দেওয়ার ব্যাপারে আমরা এখনো আলেমদের কাছ থেকে দিকনির্দেশনা পাইনি৷কারণ, কোরবানির সময় সামাজিক দূরত্ব কিভাবে বজায় রাখা যাবে, বা বজায় রাখা হবে কিনা? ধরেন, বাড়ির কর্তা কোরবানির সময় থাকলেন না৷ কিন্তু যারা কোরবানি দেবেন, তাদের পক্ষে তো সমাজিক দূরত্ব মেনে কাজ করা সম্ভব না৷ তাহলে কি এই জায়গাটাই কিছুটা ছাড় দিতে হবে বা ঝুঁকি নিতে হবে? একটা বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে গিয়ে কিছুটা ঝুঁকি নিতে হবে? এ ব্যাপারে তাদের কাছ থেকে আমরা হয়ত একটা দিক নির্দেশনা পাবো৷

আপনি কোরবানি দেওয়া নিয়ে কিছু ভেবেছেন? আপনি কি কোরবানি দিচ্ছেন?

এই মুহুর্ত পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি৷ আগামীতে কী হয় দেখা যাক৷ এখনো তো সময় আছে৷ ফলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে৷

আপনি কি মনে করেন এই পরিস্থিতিতে কোরবানি ঝুঁকিপূর্ণ?

একটু আগেই বললাম, আমি হয়তো শারিরিকভাবে সেখানে থাকলাম না৷ কিন্তু যারা জবাই করবেন বা প্রসেস করবেন, তাদের তো দৈহিক সংযোগ থাকবে৷ যে ৫-৬ জন লোক কাজ করবেন তারা তো ঝুঁকির মধ্যেই থাকবেন৷

হজ যেমন সীমিত আকারে হচ্ছে, কোরবানিও কি সীমিত আকারে হতে পারে?

সীমিত আকারে প্রশ্নটা সুন্দর৷ কিন্তু সীমিত আকারে কোন জায়গায় টানা যাবে? একটা হতে পারে কিছু লোক করবে, কিছু লোক করবে না৷ এটা তো তাহলে সীমিত আকারে হলো না৷ যেমন নামাজ হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে৷ তাহলে এখানে এটা কিভাবে কার্যকর করা যাবে, সেটা চিন্তার বিষয়৷ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন বলছে, হজের সময় যেমন কোরবানি হয় তারা সেভাবে করে দেবেন৷ যারা হজে গেছেন, তারা তো জানেন, আমরা টাকা দিয়ে দিলে কোরবানি হয়ে যাচ্ছে৷ আমরা কিন্তু চোখে দেখি না৷ মেকানিক্যাল প্রোসেসে৷ মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ওই প্রসেসে তারা কোরবানি দিয়ে বাসায় বাসায় কোরবানির গোস্ত পৌঁছে দেবেন৷ এটা একটা পদ্ধতি হতে পারে৷ এখানে ঝুঁকিটা আর থাকবে না৷ এটা কত ব্যাপক আকারে করা যাবে সেটা একটা বিষয়৷ কারণ, তাদের ক্যাপাসিটি কত? কারণ, ঢাকা শহরে তো হাজার হাজার পশু কোরবানি হয়৷ তবে উনার পদক্ষেপটা ভালো৷ এটা আগামীতে আরো বিরাট আকারে হতে পারে৷ তাহলে রাস্তায় আর পশু জবাই করতে হবে না৷

‘ফরজ হলো আবশ্যিক, আর যদি না হয় তাহলে সেটা ওয়াজিব’: এ এফ হাসান আরিফ

This browser does not support the audio element.

কোরবানি উপলক্ষে গরিব ও দুঃস্থ মানুষ বছরের একটা সময় মাংস খাওয়ার সুযোগ পান৷কিন্তু এবার সীমিত আকারে কোরবানি হলে তারা কি বঞ্চিত হবেন না?

এটার তো একটা বড় সামাজিক দিক আছে৷ কোরবানির যে বিলি-বন্টন ব্যবস্থা সেটা হচ্ছে, এক তৃতীয়াংশ গরিব দুঃস্থ মানুষকে দিতে হয়৷ আর এক তৃতীয়াংশ আত্মীয় স্বজনকে দিতে হয়৷ বাকি যে একাংশ থাকে সেটা নিজের পরিবার ও স্বজনরা পান৷ তবে এখানে কোনো বিধিনিষেধ নেই, যে কেউ চাইলে আরো বেশি গরিব দুঃস্থদের দিতে পারবেন৷ আমি সব সময় গ্রামে কোরবানি দেওয়ার পক্ষে৷তাহলে গ্রামের গরিব দুঃস্থ মানুষ তাতে অংশগ্রহন করতে পারে৷ এখন ঝুঁকির কারণে অনেকেই যদি সিদ্ধান্ত নেন, তারা কোরবানি দেবেন না, তাহলে তো নিশ্চিতভাবে একটা বড় দুঃস্থ অংশ যারা সচরাচর মাংস খেতে পারেন না, তারা বঞ্চিত হবেন৷

কোরবানিকেন্দ্রিক পশু ব্যবসার একটা বড় অর্থনীতি দেশে সৃষ্টি হয়েছে৷ এবার সেই অর্থনীতি কি ধাক্কা খাবে না?

করোনা ভাইরাসের কারণে হাটগুলোতে একটা বিধিনিষেধের কথা বারবারই বলা হচ্ছে৷ আগে তো সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কোরবানি দেবেন কিনা৷ তারপর কেনার বিষয়৷ আমরা দেখছি, বিগত কয়েকবছর ধরে আমাদের দেশে গরুর ফার্মিং ভালোভাবে উন্নত হয়েছে৷ ক্রমান্বয়ে এটা ব্যপকতা লাভ করছে৷ এর ফলে আমাদের বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে না, স্বাবলম্বী হওয়ার একটা চেষ্টা আছে৷ এক্ষেত্রে তো অবশ্যই একটা বিরাট ধাক্কা খাবে৷ নানা কারণেই এবার গবাদি পশুর ব্যবসা একটা ঝুঁকির মধ্যে আছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ