এই প্রথম তাদের দেশে করোনায় একজনের আক্রান্ত হওয়ার কথা জানালো উত্তর কোরিয়া। তারপরই দেশজুড়ে লকডাউনের সিদ্ধান্ত কিম জং উনের।
বিজ্ঞাপন
এতদিন ধরে উত্তর কোরিয়ার সরকারি অবস্থান ছিল, সেখানে কেউ করোনায় আক্রান্ত হননি। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এই দাবি সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সরকার তাদের দাবি থেকে একচুলও সরেনি। সেই উত্তর কোরিয়াই এবার স্বীকার করলো যে, তাদের দেশে একজন ওমিক্রনে আক্রান্ত।
সংবাদসংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, এই ঘোষণার পরেই দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
পিয়ংইয়ং শহরেই ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে। তবে সরকারি কর্মকর্তারা তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। কী করে তিনি ওমিক্রনে আক্রান্ত হলেন, সেটাও জানানো হয়নি।
কেএনসিএ জানিয়েছে, গত দুই বছর ধরে উত্তর কোরিয়ার এমার্জেন্সি কোয়ারান্টিন ফ্রন্ট নিখুঁতভাবে কাজ করছিল। কিন্তু এবার করোনায় আক্রান্ত একজনের খোঁজ পাওয়া গেল। এটা দেশের সবচেয়ে বড় ঘটনা।
উত্তর কোরিয়ায় অনাড়ম্বর প্যারেডের কারণ
উত্তর কোরিয়ার ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বুধবার মাঝরাতে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সেখানে কিম জং উন উপস্থিত থাকলেও কোনো বক্তব্য দেননি৷ এছাড়া এবার প্যারেডে কোনো ব্যালিস্টিক মিসাইলও ছিল না৷
ছবি: KCNA/REUTERS
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্যারেড
উত্তর কোরিয়ার ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বুধবার মাঝরাতে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সেখানে কিম জং উন উপস্থিত থাকলেও কোনো বক্তব্য দেননি৷
ছবি: KCNA/REUTERS
করোনার চিহ্ন
আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তর কোরিয়া করোনা শনাক্তের কোনো তথ্য দেয়নি৷ তবে সংক্রমণ রোধে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়াসহ কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল৷ প্যারেডে যারা অংশ নিয়েছেন তারা হ্যাজম্যাট স্যুট (হ্যাজার্ডাস ম্যাটেরিয়ালস স্যুট) পরেছিলেন৷ মুখে ছিল মেডিকেল-গ্রেড মাস্ক৷
ছবি: KCNA via REUTERS
তবে দর্শকরা মাস্ক পরেননি
প্যারেডে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের অনেকে মাস্ক পরলেও প্যারেডের দর্শকরা মাস্ক পরেননি৷ এমনকি কিম জং উনের খুব কাছে অনেককে মাস্কহীন অবস্থায় দেখা গেছে৷ মাস্ক ছাড়াই তাদের উনকে ছুঁতে এবং হাত মেলাতে দেখা গেছে৷
ছবি: KCNA/REUTERS
ব্যালিস্টিক মিসাইল ছিল না
এবারের প্যারেডে কোনো ব্যালিস্টিক মিসাইল ছিল না৷ যদিও গত অক্টোবরে এক প্যারাডে প্রথমবারের মতো আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল দেখানো হয়েছিল৷ এছাড়া সেসময় কিম জং উন তার বক্তব্যে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ক্ষমতা সম্পর্কে বক্তব্য দিয়েছিলেন৷
ছবি: KCNA/REUTERS
অনেকদিন পর ‘রেড গার্ডসের’ উপস্থিতি
১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের পর চীনা বাহিনী উত্তর কোরিয়া ছেড়ে যাওয়ার পর ‘ওয়ার্কার-পিজেন্ট রেড গার্ডস’ নামে একটি জননিরাপত্তা বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল৷ ২০১৩ সালের পর এবার আবার তারা প্যারেডে অংশ নিয়েছেন৷
ছবি: KCNA/REUTERS
অনাড়ম্বর প্যারেডের কারণ
সৌলের নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়াং মু-জিন বলছেন, প্যারেডে ব্যালিস্টিক মিসাইল না থাকা এবং রেড গার্ডসের উপস্থিতির অর্থ হচ্ছে কিম জং উন অভ্যন্তরীণ ইস্যু যেমন করোনা, অর্থনীতি, জাতীয় ঐক্য ও সংহতির বিষয় দেখাতে চেয়েছেন৷ এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ভবিষ্যতে আলোচনায় ভালো অবস্থানে থাকতে চাওয়ার লক্ষ্যে হয়ত ব্যালিস্টিক মিসাইল দেখানো হয়নি৷
ছবি: KCNA/REUTERS
আলোচনা বন্ধ আছে
উত্তর কোরিয়া যেন পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করে সেই লক্ষ্যে আলোচনা ২০১৯ সাল থেকে বন্ধ আছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন কূটনীতির মাধ্যমে এ ব্যাপারে সফলতা পেতে চান৷ গত জুলাই মাসে আন্তঃকোরীয় হটলাইন চালু হওয়ার পর আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল৷ তবে গতমাসে যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ মহড়া শুরুর পর উত্তর কোরিয়া আর ফোন ধরছে না৷
ছবি: KCNA/REUTERS
7 ছবি1 | 7
উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানেই ঠিক হয়েছে, এই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে জরুরি অবস্থা জারি করতে হবে।
কঠোর লকডাউনের ঘোষণা
কেএনসিএ জানিয়েছে, কিম নির্দেশ দিয়েছেন, পুরো দেশে কঠোরভাবে লকডাউন জারি করা হবে। পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থাকে প্রস্তুত রাখা হবে।
দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের মিডিয়া জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ায় সব মানুষকে ঘরবন্দি থাকতে বলা হয়েছে।