ঢাকায় মূর্তিমান আতঙ্ক যানজট৷ কর্মঘণ্টার পাশাপাশি অপচয় হচ্ছে মূল্যবান জ্বালানি৷ ঢাকা মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই মুহূর্তে হাত দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ছাড়া উপায় নেই৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে: রাজধানী ঢাকার যানজট পরিস্থিতির কথা তো আমরা সবাই জানি, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কি কোনো পথ নেই?
মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ: ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ৪ হাজারের বেশি ট্রাফিক পুলিশ সদস্য যানজট নিয়ন্ত্রণে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি৷ এর জন্য আমাদের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়৷ ঢাকার রাস্তায় গাড়ি চলাচলের জন্য উপযুক্ত তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ৷ অথচ এখানে গাড়ি চলছে ১০ লাখেরও বেশি৷ এই রাস্তায় একই সঙ্গে ইঞ্জিন চালিত ও অ-ইঞ্জিন চালিত যান একসঙ্গে চলে৷ তাছাড়া বেশ কিছু ইন্টারসেশনে আমাদের গঠনগত ত্রুটি আছে৷ এরপর চার রাস্তার ইন্টারসেকশন হলে একটি চালু রাখলে তিনটি বন্ধ করতে হয়৷ ফলে এসব রাস্তায় গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়৷ এই ধরনের অনেক চ্যালেঞ্জ আমাদের আছে৷ আমরা রাস্তায় প্রসিকিউশন বাড়িয়েছি৷ আগে যেখানে দুই থেকে আড়াই হাজার প্রসিকিউশন হতো এখন সেখানে চার থেকে সাড়ে চার হাজার প্রসিকিউশন হচ্ছে প্রতিদিন৷ আমরা ভিডিও মামলার প্রচলন করেছি৷
‘ট্রাফিক আইনটি যত না বেশি এনফোর্স করার বিষয়, তার চেয়ে বেশি মানার বিষয়’
জনগণের অভিযোগ ট্রাফিক অব্যস্থাপনার কারণেই যানজট৷ আপনি কী মনে করেন?
এই অভিযোগ সত্য নয়৷ ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো অব্যবস্থাপনা নেই৷ সামনে কোনো খালি জায়গা পেলেই সেদিকে আমরা গাড়ি যেতে দিচ্ছি, রাস্তাটা চালু রাখছি৷ কোনো গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে সঙ্গে সঙ্গে রেকার দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ যত্রতত্র পার্কিং করলে মামলা দিচ্ছি৷ এনফোর্সমেন্টের পাশাপাশি রাজধানীর গাড়ির মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে আমরা প্রতিনিয়ত মিটিং করছি৷
হাত দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করার যে প্রথা, সেটা কি কার্যকর না ক্ষতিকর?
রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থায় অনেকগুলো ত্রুটি আছে৷ আগেই বলছিলাম এই রাস্তায় একই সঙ্গে ইঞ্জিন চালিত ও অ-ইঞ্জিন চালিত যান একসঙ্গে চলে৷ তাছাড়া বেশ কিছু ইন্টারসেকশনে আমাদের গঠনগত ত্রুটি আছে৷ এছাড়া একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়৷ অন্যদিকে উন্নয়নমূলক অনেকগুলো কাজ চলছে৷ মেট্রোরেলের কাজ হচ্ছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসের কাজ হচ্ছে৷ এ সব কারণে আমাদের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে৷ আমাদের ১০০টি পয়েন্টে সিগন্যাল লাইট আছে৷ এই প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে কিন এয়ার এন্ড সাসটেনেবল এনভারমেন্ট নামে একটি প্রকল্প৷ বিশ্বব্যাংক ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন যৌথভাবে এটা নিয়ে কাজ করছে৷ এটা রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে পরিচালিত হবে৷ এখন সেটার কাজ চলছে৷ কয়েকমাসের মধ্যেই আমরা রিমোট কন্ট্রোল হয়ত হাতে পেয়ে যাব৷ তখন রিমোট কন্ট্রোলে ট্রাফিক সিগন্যাল চলবে৷ এখন সাময়িক সময়ে জন্য আমরা হাতে চালাচ্ছি৷ আগামী সেপ্টেম্বর থেকে সেন্সর সিস্টেমে এটা করার ব্যাপারে একটা কাজ শুরু হবে৷ জাইকা ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এটা করছে৷ চারটি সিগন্যালে তারা পরীক্ষামূলকভাবে এটা করবে৷ এটি কার্যকর বলে প্রতীয়মান হলে পরে সবগুলো সিগন্যালে সেটার বাস্তবায়ন করা হবে৷
রাস্তায় নৈরাজ্য, যেন আইন ভাঙার হিড়িক
১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা৷ শুধু রাজধানীই নয়, দেশের আইন-শাসন-বিচার বিভাগ এখান থেকেই পরিচালিত হয়৷ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্যসহ নানা কাজের কেন্দ্রও এটাই৷ অথচ কোনো সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নেই ঢাকায়৷
ছবি: bdnews24.com
উলটো পথে চলাচল
ঢাকা শহরে নানা ট্রাফিক অব্যবস্থপনার মধ্যে উলটো পথে চলা অন্যতম৷ বাইকার, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ভিআইপি – অনেকেই নিজের তাড়াতাড়ি যাওয়া নিশ্চিত করতে উলটো পথে গাড়ি ছোটান৷ তাতে আরো বেশি বিড়ম্বনায় পড়েন রাস্তায় নামা সাধারণ মানুষ৷
ছবি: bdnews24.com
বেপরোয়া ড্রাইভিং
এমনিতে হয়ত যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অনেক গাড়িকে৷ তবে রাস্তা ফাঁকা পেলে যেন দেরি সয় না অনেক চালকের৷ বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে দেন তাঁরা৷ এর ফলে অনেক সময়ই প্রাণ যায় মানুষের৷ প্রিয়জন হারানোর আহাজারিতে ভারী হয় আকাশ বাতাস৷ কেবল ঢাকার রাস্তাতেই প্রতি বছর কয়েক শত মানুষের প্রাণ যায়৷
ছবি: bdnews24.com
যত্রতত্র পার্কিং
ঢাকা মহানগরের সড়কগুলো আর যাই হোক, বিপুল পরিমাণ মানুষ আর যান বাহনের চাপ সামলানোর মতো নয় বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত৷ সরু সেই সব রাস্তার অবস্থা আরো করুণ হয়ে যায়, যখন যত্রতত্র পার্কিংয়ে এই রাস্তা আরো সরু হয়ে যায়৷
ছবি: bdnews24.com
অননুমোদিত ড্রাইভিং
গত মে মাসে এক স্কুলছাত্র এই গাড়িটি নিয়ে বের হয়ে পড়ে রাস্তায়৷ অননুমোদিত এই ড্রাইভিংয়ে আহত হয় আরেক শিশু৷ অবৈধ ড্রাইভিংয়ে কেবল শিশু নয়, বড়রা জড়িয়ে পড়েন৷ লাইসেন্স ছাড়াই অনেকে নেমে পড়েন রাস্তায়৷ লাইসেন্স থাকলেও মাদক গ্রহণের পর, শারিরীক বা মানসিকভাবে অনুপযুক্ত অবস্থায়ও গাড়ি চালানো আইনে নিষেধ৷ সড়কে বিপজ্জনকভাবে গাড়ি চালানো, রেসে অংশ নেয়াও নিষিদ্ধ৷ বীমার বাধ্যবাধকতাও অনেকে মানেন না৷
ছবি: bdnews24.com
উলটো পথে চললে চাকা ফুটো
উলটো পথে গাড়ির চলাচল বন্ধ করতে একটি যন্ত্র বসিয়েছিল ট্রাফিক পুলিশ৷ কথা ছিল গাড়ি উলটো পথে চললে তাতে চাকা ফুটো হয়ে যাবে৷ কিছুদিন পর এই যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যায়৷ ঢাকা শহরের গাড়িকে স্বয়ংক্রিয় সংকেত বাতির উপর নির্ভরশীল করে দিতে সর্বশেষ ২০১৫ সালে একটি উদ্যোগ নেয়া হয়৷ কিন্তু পুলিশের অসহযোগিতায় সেই উদ্যোগ ভেস্তে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে৷ এই শহরে ট্রাফিক আইন ভাঙা মামলাও হয় গতানুগতিকভাবে, হাতে লিখে৷
ছবি: bdnews24.com
যত্রতত্র পথচারীদের চলাচল
ঢাকার রাস্তায় আরেক যন্ত্রণা সৃষ্টি করে খোদ পথচারীরাই৷ নির্ধারিত জায়গার পরিবর্তে যেখানে সেখানে রাস্তা পার হয়ে যান তাঁরা৷ রাজধানীতে পথচারীদের আইন না মানার প্রবণতাও এখানকার দুর্ঘটনার একটা কারণ৷
ছবি: bdnews24.com
আইন প্রয়োগে ফাঁকি
ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ঠিক করতে নানা আইন থাকলেও, সেটা প্রয়োগে ফাঁকি রয়েছে৷ প্রায়ই খোদ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনেক সদস্যকেই আইন ভাঙতে দেখা যায়৷ লেগুনা নামের এই ‘আনফিট’ গাড়ি ব্যবহার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷
ছবি: bdnews24.com
ব্যক্তিগত গাড়ির আধিক্য
রাজধানী ঢাকায় যে সব গাড়ি চলে তার অধিকাংশই ব্যক্তিগত৷ এ সব গাড়িকে যত্রযত্র যানজট সৃষ্টির জন্যও দায়ী করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গণপরিবহনে নৈরাজ্য
ঢাকার সমস্যা গণপরিবহন ব্যবস্থায় নৈরাজ্য৷ মানসম্মত গণপরিবহনের অভাব তো রয়েছেই৷ যে গাড়িগুলো রয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল৷ যেখানে সেখানে থামিয়ে যাত্রী তোলা যেন নগরীর নিত্যদিনের চিত্র৷
ছবি: bdnews24.com
9 ছবি1 | 9
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের জরিপ বেরিয়েছে, ঢাকায় গাড়ির গতি হাঁটার গতির প্রায় সমান৷ এতে ট্রাফিক ব্যবস্থা দুর্বলতা সম্পর্কেও বলা হয়েছে?
এখানে আমাদের কোনো দুর্বলতা নেই৷ ট্রাফিক ব্যবস্থার তিনটা সিস্টেম৷ এনফোর্সমেন্ট, এডুকেশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং৷ এনফোর্সমেন্টের কাজটা আমরা করি৷ এডুকেশনের কিছু কিছু কাজ আমরা করি৷ লিফলেট বিতরণ, মাইকিং করে জনগণকে সচেতন করা হয়৷ এখানে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কিছু ফল্ট থাকতে পারে৷ এর সঙ্গে অনেকগুলো স্টেকহোল্ডার জড়িত৷ এনফোর্সমেন্টে আমাদের কোন গাফিলতি বা অমনোযোগ নেই৷
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান সম্পৃক্ত, তাদের সঙ্গে আপনাদের সমন্বয়টা কেমন?
আমাদের সমন্বয় ভালো৷ সিটি কর্পোরেশন, বিআরটিএ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সঙ্গে আমরা প্রতিনিয়ত সমন্বয় করে কাজ করছি৷ মাঝে মধ্যে কাজের গতি হয়ত কম-বেশি হয়৷ তবে সার্বিকভাবে আমাদের সমন্বয় ভালো৷
ঢাকা শহরে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা যেটা আছে সেটা কি পর্যাপ্ত, তারা কত ঘণ্টা ডিউটি করেন?
আমাদের চার হাজার সদস্য আছেন৷ আমরা তিন শিফটে কাজ করি৷ একজন সদস্য ৮ ঘণ্টা করে ডিউটি করেন৷ জনবলের সমস্যার কারণে তাদের অনেক সময় ১২ ঘণ্টাও কাজ করতে হয়৷ এখন যে পদ্ধতিতে কাজ করছি তাতে আমাদের জনবল আরো বেশি হলে ভালো হয়৷ কিন্তু রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেম চলে এলে এই জনবল দিয়েই আমরা দায়িত্ব পালন করতে পারবো৷
অনেক সময় ট্রাফিক সদস্যদের অবহেলার চিত্র মিডিয়ায় দেখি৷তাদের বিরুদ্ধে কি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়?
শুধু অবহেলা নয়, বীরত্বপূর্ণ কাজের খবরও আমরা মিডিয়াতে দেখি৷ যাদের বিরুদ্ধে অবহেলার খবর আসে, তাদের ক্ষেত্রে মিডিয়ার এই খবরগুলোকে আমরা রিপোর্ট হিসেবে বিবেচনা করে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি করি৷ এরপর সেখানে সে দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়৷ আর যারা ভালো কাজ করেন তাদেরও আমরা পুরস্কার দিয়ে উৎসাহিত করে থাকি৷
ইউরোপের কিছু কঠিন ও মজার ট্রাফিক আইন
খুব সাবধানে গাড়ি চালাতে হয় ইউরোপে৷ পথচারীর গায়ে কাঁদা বা পানি ছিটালে জরিমানা, বেশি জোরে বা বেশি আস্তে চালালে জরিমানা, এমনকি নিজের গাড়ি পরিষ্কার না করলেও রেহাই নেই৷ ছবিঘরে থাকছে এমনই কিছু ট্রাফিক আইনের কথা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Förster
পানি ছিটাবেন না
ইউরোপের রাস্তায়ও বৃষ্টি হলে একটু-আধটু পানি জমে৷ অনেক সময় জলাবদ্ধতাও সৃষ্টি হয়৷ তবে জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ সদা তৎপর৷ এমনকি কোনো চালক অসতর্কতাবশত কারো গায়ে পানি ছিটিয়ে দিলে, সঙ্গে সঙ্গেই আইন দাঁড়ায় ভুক্তভোগীর পাশে৷ ব্রিটেনে এ অপরাধে ১০০ পাউন্ড জরিমানা হয় চালকের৷ ‘ওভারটেক’ করে মাঝের লেন দখল করে চালাতে শুরু করলে আরো বিপদ৷ জরিমানার অঙ্কটা তখন ১ হাজার পাউন্ড বা ১,৪০০ ইউরো!
ছবি: imago/Petra Schneider
গাড়ি পরিষ্কার না করলেও জরিমানা!
রুমানিয়ার রাস্তায় ভুলেও কখনো নোংরা গাড়ি নিয়ে নামবেন না৷ আপনার গাড়ি শহরের সৌন্দর্য হানির কারণ হলে কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ আপনাকে ছাড়বে না৷ এমনকি শুধু নাম্বারপ্লেট, হেডলাইট বা পেছনের লাইট পরিষ্কার না করলেও গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Imaginechina
বেশি ধীরে চালালেও মুশকিল
সুইজারল্যান্ডে কখনো কখনো একটু বেশি আস্তে গাড়ি চালালেও সমস্যা৷ বিশেষ করে তিন লেনের রাস্তার একেবারে বাঁ দিকের লেন দিয়ে কেউ নিজের খুশিমতো শামূকের গতিতে গাড়ি চালাবে, তা হবে না৷ এমন ক্ষেত্রে কোনো গাড়ির গতিবেগ যাতে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল)-এর কম না হয়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে৷ আগামী ২০১৬ সাল থেকে দেশে এমনই একটি আইন কার্যকর করবে সুইস সরকার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বরফ হইতে সাবধান
শীতে গাড়ির দিকে বিশেষ নজর দিতে হয়৷ নভেম্বর থেকে এপ্রিল – এই পাঁচমাস আইসল্যান্ডে রাস্তায় রাস্তায় বরফের কথা মাথায় রাখতেই হয়, লাগাতে হয় বিশেষ চাকা৷ অস্ট্রিয়া, এস্টোনিয়া, ফিনল্যান্ড এবং জার্মানিতে শীতের সময় এমন চাকা ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক নয়, তবে নিজের স্বার্থেই বেশির ভাগ মানুষ শীত এলে চাকা বদলে নেন৷ আসলে বরফ পড়লে ওই ধরনের চাকা ছাড়া গাড়ি চালানো কখনো কখনো অসম্ভব হয়ে পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Heimken
পার্কিং
ফিনল্যান্ডে রাস্তাঘাট নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়৷ কখন কোন রাস্তা পরিষ্কার করা হবে, তা নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় কিংবা ইন্টারনেটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে, এমনকি অনেকক্ষেত্রে এসএমএস-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়৷ গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা কোথাও রেখে দেবেন সে উপায়ও নেই৷ কতক্ষণের মধ্যে সরাতে হবে তা প্রথমে জানানো হয় এসএমএস-এ, তারপরও না সরালে নগর কর্তৃপক্ষই সরিয়ে দেবে! তবে আপনার গাড়ি সরানোর খরচটা কিন্তু আপনার!
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Wennström
দিনেও জ্বালাতে হবে আলো
সুইডেন, নরওয়ে আর ডেনমার্কে গাড়ি চালানো শেখানোর সময়ই বলে দেয়া হয়, ‘যখনই আঁধার নামবে, তখনই আলো জ্বালাতে হবে৷’ তার মানে, দিনের বেলায় মেঘ করলে, কিংবা শীতের কুয়াশাঢাকা আকাশের নীচেও গাড়ির লাইট জ্বালানোটা বাধ্যতামূলক৷ ২০১১ সাল থেকে সব ইইউভুক্ত দেশেই গাড়িতে ‘ডে-টাইম রানিং লাইট’ রাখার আইন কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ ‘ডে-টাইম রানিং লাইট’ এমন এক বাতি, যা গাড়ির চাকা ঘুরলেই টুক করে জ্বলে ওঠে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Heimken
চশমা একটা কেন?
চোখে সমস্যা আছে? স্পেনে গাড়ি চালাতে যান, ড্রাইভিং লাইসেন্সেই তা লিখে দেয়া হবে৷ আর একবার লিখে দিলে সবসময় আপনাকে দু-দু’টো চশমা সঙ্গে রাখতে হবে৷ একটা চোখে, অন্যটা গাড়ির ড্যাশবোর্ডে৷ চশমা না পরার কোনো অজুহাত দেখানোর পথ বন্ধ করতেই এই ব্যবস্থা৷ ‘চশমাটা বাসায় রেখে চলে এসেছি’ বললেও মাফ নেই৷ জরিমানা গুনতেই হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সময় আর জায়গা অনুযায়ী গতি
জার্মানির অটোবান, অর্থাৎ হাইওয়েতে গাড়ির নির্দিষ্ট কোনো গতিসীমা নেই৷ তবে যেভাবে খুশি চালানোর উপায়ও নেই৷ গাড়ি চালাতে হয় জায়গা এবং সময় বুঝে৷ সে অনুযায়ী নির্ধারিত গতিসীমা লেখা থাকে রাস্তার পাশে৷ লোকালয়েও স্থান এবং সময়টাই গুরুত্বপূর্ণ৷ স্কুলের সামনে নির্ধারিত গতিসীমা অতিক্রম করলে জরিমানা তো হবেই, বাড়তি শাস্তি হিসেবে ‘পেনাল্টি পয়েন্ট’-ও যোগ হবে আপনার রেকর্ডে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Förster
8 ছবি1 | 8
ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতি করতে আপনার কোনো সুপারিশ আছে কি?
কয়েকটা বছর আমাদের ট্রাফিক আইনটাকে বেশি করে মান্য করতে হবে, কারণ মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসের কাজ শুরু হয়েছে৷ এই সময়টা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের৷ আমাদের আইন মানার সংস্কৃতি চালু করতে হবে৷ যারা আইন ভাঙছেন তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান কিন্তু অব্যাহত আছে৷ আমার মনে হয় ট্রাফিক আইনটি যত না বেশি এনফোর্স করার বিষয়, তার চেয়ে বেশি মানার বিষয়৷ আমাদের জনগন যদি সচেতন হন, আইন মান্য করেন তাহলে এই মধ্যবর্তী সময়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা আমরা আরো ভালো করতে পারব৷ আমাদের তো অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে৷ আমরা তো এখনই ঢাকা শহরকে যানজটমুক্ত করতে পারব না৷ তবে যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখার যে প্রক্রিয়া সেটা কিন্তু শুরু হয়ে গেছে৷
আপনি কি সবসময় ট্রাফিক আইন মেনে চলেন? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷