1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘জনপ্রিয় লেখকদের অনেকে ফেসবুকে লিখেই দুই বাংলায় পাঠকপ্রিয়'

৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সৃজনশীল বই, প্রকাশনার চ্যালেঞ্জ, তরুণ লেখকসহ অমর একুশে গ্রন্থমেলার নানা বিষয় নিয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন অন্যপ্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম৷

বইমেলায় একটি স্টলে বই পড়ছেন এক পাঠিকা
ফেসবুকের মাধ্যমে লেখকেরা পাঠকের রুচি আগে থেকে বুঝতে পারছেন বলে মনে করেন প্রকাশক মাজহারুল ইসলামছবি: Habibur Rahman/aal.photo/IMAGO

ডয়চে ভেলে: বইমেলা তো শুরু হয়ে গেছে৷ কী রকম নতুন বই এসছে বা আসার সম্ভাবনা আছে?
এবার মেলার দ্বিতীয়দিন ছিল প্রথম শুক্রবার৷ সাধারণত মেলার প্রথম শুক্রবারে বা বন্ধের দিনে ভিড় হয় না৷ দ্বিতীয় শুক্রবারে হয়৷ কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম৷ প্রথম শুক্রবারেই মেলায় পাঠকদের উপচেপড়া ভিড়- এটা ভালো লক্ষণ৷ মেলায় সাধারণত চার থেকে সাড়ে চার হাজারের মতো নতুন বই প্রকাশ হয়৷ এখন প্রশ্ন হলো, এর মধ্যে মানসম্পন্ন বই কতগুলো, কতটা বইয়ের প্রতি আগ্রহ থাকে পাঠকের আর সম্পাদনা ছাড়া, ভুলে ভরা নিম্ন মানের বই প্রকাশ হওয়া উচিত কিনা- এটা নিয়ে ভাবার এখন সময় এসেছে৷  

প্রকাশিত বইয়ের কত ভাগ নিম্নমানের?

আমি মনে করি, যা প্রকাশ হয় তার শতকরা  ৫০ ভাগের বেশি বই একেবারেই মানসম্পন্ন নয়৷

আপনি কি বইয়ের মান নির্ণয়ের জন্য কোনো কমিটি বা বডির প্রস্তাব করছেন?

না, একেবারেই না৷ বইয়ের মান কমিটি করে ঠিক করা যায় না৷ একটি ট্রেড লাইসেন্স করেই প্রকাশক হবেন- এটা দেখা উচিত৷ প্রকাশক হতে গেলে কী যোগ্যতা থাকতে হবে তা-ও ভাবা উচিত৷ প্রকাশক হতে গেলে তো পাণ্ডুলিপি বুঝতে হবে৷ না বুঝলে তার এডিটর্স প্যানেল থাকতে হবে৷ এখানে হাতে গোনা চার-পাঁচটি প্রকাশনা সংস্থার বাইরে আর কারোর তো এডিটর্স প্যানেল নেই৷ অনেক ভুইফোঁড় প্রকাশক আছেন মেলাকেন্দ্রিক৷ তারা পাইরেটেড বই বা নিম্নমানের বই নিয়ে আসেন৷ এবারও তারা আছেন৷ বাংলা একাডেমির একটা টাস্কফোর্স আছে৷ তারা এগুলো দেখেন৷ তারা প্রতিবছরই এদের চিহ্নিত করেন, রিপোর্ট দেন৷ কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিতে আমরা দেখি না৷

এই ধরনের প্রকাশকদের তো ব্যবসা করতে হয়৷ তাহলে কি তারা কোনো কোনো লেখকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের বই ছাপেন?

ওই ধরনের একটা প্রবণতা আছে৷ যারা নতুন লেখক, তাদের কেউ কেউ নিজেরাই প্রকাশককে টাকা দিয়ে বই ছাপেন৷ এটা যে শুধু নিম্নমানের প্রকাশকরা করেন, তা নয়, অনেক প্রকাশকই আজকাল এটা করেন৷ তবে আমি নামসর্বস্ব লেখকদের কথা বলছি, যাদের আপনি নামও শোনেননি৷ বাংলাবাজারে রেডিমেড বইয়ের ট্রেসিং পেপার কিনতে পাওয়া যায়৷ আপনি আপনার নামে ১০টি বই বের করতে চান৷ একটি উপন্যাস, একটি কবিতার বই, একটি ভৌতিক, শিশুদের ওপর বই ইত্যাদি৷ আপনি টাকা দেবেন আপনার নামে রেডিমেড বই ছেপে দেবে- এরকম অনেক নামসর্বস্ব লেখক আছে৷

কেউ কেউ নিজেরাই প্রকাশককে টাকা দিয়ে বই ছাপেন: মাজহারুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

সৃজনশীল বই প্রকাশের ক্ষেত্রে আর কী চ্যালেঞ্জ আছে?

এই সময়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কাগজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বইয়ের দাম বেড়ে যাচ্ছে, ছাপার খরচ বেড়ে যাচ্ছে৷ তবে খরচ যত বাড়ছে সেইভাবে আমরা বইয়ের দাম বড়াচ্ছি না৷ সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করছি৷ কোভিড, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সিন্ডিকেট করে কাগজের দাম বাড়ানো হচ্ছে৷ আর আন্তর্জাতিক বাজারে পাল্পের দাম যে হারে বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি এখানে কাগজের দাম বাড়ানো হয়েছে৷ এটা দেখা দরকার ৷ আমরা সৃজনশীল প্রকাশকরা বই ছাপার জন্য শুল্কমুক্ত কাগজের দাবি করছি৷ একটি আলোকিত এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজের জন্য এটা দরকার৷

প্রতিষ্ঠিত লেখকদের পাশাপাশি নতুন তরুণ লেখকদের বই আপনারা কতটা ছাপছেন?

অবশ্যই আমরা নবীন লেখকদের বই ছাপছি৷ তাদের উৎসাহিত করছি৷ এই যে বইমেলায় প্রতিবছর চার সাড়ে চার হাজার বই ছাপা হচ্ছে তার সিংহভাগই নবীন লেখকদের৷ তরুণদের মধ্যে অনেকে খুবই ভালো করছেন৷ কেউ কেউ খুবই ভালো করছেন৷ একজন আছেন, যার বই দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয়৷ ঢাকার মতো কলকাতায়ও এবার বই মেলায় তার বই পাঠকরা দীর্ঘ লাইন ধরে কিনেছে৷

রাজনীতি, প্রযুক্তি, বিশ্ব ব্যবস্থায় পরিবর্তন এসেছে৷ আমরা করোনা মহামারি পার হয়ে এসেছি৷ ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে৷ এতে পাঠকের  রুচিতে কোনো পরিবর্তন দেখছেন?

প্রযুক্তির একটা ছোঁয়া আছে৷ লেখকের একটা বই সম্পর্কে না জেনে কেউ কিনতে চান না৷ এখন ফেসবুক সেই সুবিধা করে দিয়েছে৷ এই সময়ের জনপ্রিয় লেখক যারা, তারা কিন্তু ফেসবুকে লিখে জনপ্রিয় হয়েছেন৷ দুই বাংলার পাঠকের কাছেই তারা ফেসবুকের মাধ্যমে যেতে পেরেছেন৷ তাই লেখকরা পাঠকের রুচিও আগে থেকেই বুঝতে পারছেন৷

সেক্ষেত্রে -বুক, অডিও বুকের বাজার কতটা তৈরি হচ্ছে?

ই-বুক আরো আগেই শুরু হয়েছে৷ বাজারও তৈরি হয়েছে৷ তারা অনেক লেখকের ই-বুক তৈরি করেছে৷ এখন অডিও বুক শুরু হয়েছে৷ এবার বই মেলায় অডিও বুকের একটি স্টলও আছে৷ তারা বেশ ভালো করছে৷

সাহিত্যে এই সময়ের রাজনীতি,  মহামারি, যুদ্ধের প্রভাব কতটা পড়েছে? আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনের প্রভাব দেখেছি-

হ্যাঁ, সাহিত্য সময়কে ধরে রাখে৷ পরের প্রজন্ম ওই সময়কে সাহিত্যে জানতে পারে৷ যেমন, মুক্তিযুদ্ধকে জানছে৷ এই সময়ে প্রযুক্তির প্রভাব আছে সাহিত্যে৷

কোন ধরনের বইয়ের চাহিদা এখন বেশি? হুমায়ূন আহমেদের মতো শক্তিশালী লেখক আসার সম্ভাবনা কতটা দেখছেন?

উপন্যাসের চাহিদা সব সময়ই বেশি ছিল৷ এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে৷ এখনো উপন্যাসের চাহিদাই বেশি৷ আর হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণের ১২ বছর পরও আমাদের বিক্রি হওয়া বইয়ের বড় একটি অংশ তার৷ তার পুরোনো বইয়ের পুনর্মূদ্রণ হচ্ছে৷ তবে কয়েকজন তরুণ উঠে আসছেন৷ তাদের বই পাঠকপ্রিয় হচ্ছে৷ তারা পাঠকের কাছে যেতে ফেসবুকের সহায়তা পাচ্ছেন৷

পাঠক কি বাড়ছে? অনেকে বলছেন মানুষ হার্ড টেক্সট পড়বে না৷ অনলাইনে পড়বে৷
না, পাঠক বাড়ছে৷ এই বিতর্ক ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায়ও হয়েছে৷ কিন্তু পাঠক বাড়ছে৷ বাড়ছে বলেই বইমেলা বড় হচ্ছে, বই প্রকাশ বাড়ছে৷ বিক্রিও হচ্ছে৷

ছাপা বইয়ের আরামটি কোথায়?
কাগজে ছাপা বইয়ের পাতা উল্টে পড়ার যে আনন্দ, তা আর কোনো কিছুতে নেই৷ তবে প্রয়োজনে মানুষ অনলাইনে পড়বে, ই-বুক পড়বে, গাড়িতে অডিও বুক শুনবে৷ হাতে সময় না থাকলে দ্রুত মেবাইল ফোনে দেখে নেবে৷ এটা একটা নতুন দিক৷

-বুক,  অডিও বুকের সামনে চ্যালেঞ্জ কী?

আমি কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছি না৷ আমি মনে করি, এখন তাদের এগিয়ে যাওয়ার সময়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ