ভারতে আসন্ন নির্বাচনের সময় একজন ভোটারের ভোট গ্রহণ করতে মাইলের পর মাইল পাহাড় চড়বেন ১০ জন নির্বাচন কর্মী৷ আর অন্য আরেকজন ভোটারের ভোট সংগ্রহ করতে ভোটকর্মীদের গভীর জঙ্গল পাড়ি দিতে হবে৷
বিজ্ঞাপন
এই দুই ভোটারের একজন হলেন সকেলা তায়াং৷ তিনি থাকেন চীন, মিয়ানমার ও ভুটানের সীমান্তবর্তী অরুণাচল প্রদেশে৷ অন্য ভোটার ভারতদাস দর্শনদাসের বাস পাকিস্তান লাগোয়া গুজরাট রাজ্যের গির অভয়ারণ্যে৷
এই দুই ভোটারের মধ্যে ব্যবধান প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার৷ তাঁরা একজন আরেকজনকে চেনেন না৷ কিন্তু ৯০ কোটি ভোটারের দেশে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের উৎসবে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে একই ভূমিকায় দেখা যাবে দুই প্রান্তের দুই ভোটারকে৷
১১ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের সাধারণ নির্বাচন৷ এবার নির্বাচন কমিশনের স্লোগান, ‘কেউ বাদ নয়, কারও ভোট বাদ নয়৷’ এই স্লোগানকে বাস্তবায়িত করে তুলতে অরুণাচল প্রদেশ ও গুজরাট রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিকের দপ্তর বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে৷
সকেলার জন্য
অরুণাচলের রাজধানী ইটানগর থেকে ৩০০ মাইল দূরে আনজাও জেলা৷ সেখানকার একটি গ্রামের নাম মালোগাম৷ প্রধান সড়ক থেকে সেখানে যেতে ২৪ মাইল পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে হয়৷ এই পথ যেতে ভোটকর্মীদের প্রায় ১১ ঘণ্টা সময় লাগবে৷
৩৯ বছর বয়সি সকেলা একজন গৃহবধূ৷ স্বামী, সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন চীন, মিয়ানমার ও ভুটান লাগোয়া ওই গ্রামে৷ গতবার তাঁর স্বামীও ভোট দিয়েছিলেন৷ এবার যে-কোনো কারণেই হোক অন্য বুথে স্ত্রীর নাম স্থানান্তর করিয়েছেন তাঁর স্বামী৷ তবে, আগের মতোই ভোট দেবেন সকেলা৷
অরুণাচল রাজ্য নির্বাচন দপ্তরের নোডাল অফিসার লর্ড তাকার ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘‘একজন ভোটার বলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের আয়োজন কম হবে, এমনটা নয়৷ কমিশনের নির্দেশিকা মেনে সব ব্যবস্থাই করতে হচ্ছে৷ ‘একজন ভোটারও যেন বাদ না পড়ে’ কমিশনের এই স্লোগানকে সামনে রেখে আমরা সব ব্যবস্থা করছি৷ ১০ থেকে ১৮ জন ভোটকর্মী মালোগামে গিয়ে সকেলার ভোট গ্রহণ করবেন৷’’
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের খুঁটিনাটি
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে৷ ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে সাত ধাপে ১৯ মে পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Dey
আসনসংখ্যা
সাধারণ নির্বাচন মানে ভারতের লোকসভা সদস্যদের নির্বাচন করার পদ্ধতি৷ লোকসভায় মোট আসন সংখ্যা ৫৪৫ হলেও নির্বাচন হয় ৫৪৩টি আসনে৷ বাকি দুটি আসন ভারতের অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত৷ তাদের দুই প্রতিনিধি কে হবেন, তা ঠিক করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি৷
ছবি: picture alliance/dpa
ভোটার সংখ্যা
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৮৩ কোটিরও বেশি, যা বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে বাড়বে এই সংখ্যা৷ নতুন ভোটারের সংখ্যা এবছর প্রায় সাড়ে চার কোটি হতে চলেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কয়টি দল?
গত নির্বাচনে মোট ৮,২৫১ জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়েছিলেন৷ সেবার মোট ৪৬০টি রাজনৈতিক দল ভোটের ময়দানে নেমেছিল৷ ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশনই জানাচ্ছে এই তথ্য৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
মোট প্রার্থী
জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, প্রতিটি আসনে গড়ে ১৪ জন প্রার্থী থাকে ভারতে৷ এখন পর্যন্ত একটি আসনে সর্বোচ্চ ৪২ জন প্রার্থী হয়েছেন!
ছবি: DW/M. Krishnan
ভোটকেন্দ্র কতগুলি?
২০১৪ সালের নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ৯,২৭,৫৫৩টি৷ কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি বুথে গড়ে ৯০০ জন ভোটার ভোট দেন৷ উল্লেখ্য, ভারতের নির্বাচনি আইন বলে, যে-কোনো ভোটারের বাসস্থানের দুই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে অন্তত একটি ভোটকেন্দ্র থাকতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
নির্বাচনি দায়িত্ব পালন
ভারতের সাধারণ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, তার দায়িত্ব পড়ে সরকারী কর্মচারীদের ওপর৷ গত নির্বাচনে এই দায়িত্ব পান প্রায় ৫০ লক্ষ আধিকারিক ও নিরাপত্তাকর্মী৷ শুধু তাই নয়, এই কর্মীরা পায়ে হেঁটে, বাসে-ট্রামে-ট্রেনে-নৌকায়, এমনকি হাতির পিঠে চড়েও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছেছেন বলে জানাচ্ছে নির্বাচন কমিশন৷
ছবি: Reuters/A. Abidi
একজন ভোটারের জন্যও রয়েছে বুথ!
২০০৯ সালের নির্বাচনের সময় গুজরাটের গির অঞ্চলের জঙ্গলেও ছিল ভোটগ্রহণ কেন্দ্র৷ এই ভোটকেন্দ্রের আওতায় যদিও ছিলেন মাত্র একজন ভোটার৷ তবুও বুথ চালু রাখা হয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Reuters/Danish Siddiqui
ভোটের পর...
২০১৯ সালের নির্বাচন মোট সাতটি পর্যায়ে সম্পন্ন হবে৷ এই প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লেগে যাবে একমাসেরও বেশি৷ ২০১৯ সালের নির্বাচন হবে ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত৷ আগে যদিও ব্যালট পেপারে ভোট হবার ফলে ফলপ্রকাশ হতে কয়েকদিন লেগে যেত, আজকাল ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম আসার ফলে ফলাফল বেরোতে সময় লাগে মাত্র একদিন৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/P. Gill
কত খরচ?
ভারতের মতো বিশালাকারের দেশের নির্বাচন যে খরচসাপেক্ষ হবে, তা বলাই বাহুল্য৷ নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত তথ্য বলছে, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে খরচ হয় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার সমান অর্থ, ভারতীয় মুদ্রায় যা দাঁড়ায় ৩,৮৭০ কোটি রুপির কাছাকাছি৷
ছবি: Fotolia/ARTEKI
কতগুলি ইভিএম?
২০১৪ সালের নির্বাচনে আনুমানিক ১৮ লক্ষ ইভিএম ব্যবহৃত হয়েছিল৷ ইভিএম আসায় নির্বাচনের কাজ দ্রুত শেষ করা গেলেও অনেক রাজনৈতিক দল মনে করে যে এখানেও কারচুপি সম্ভব৷ বিভিন্ন মহল থেকে ব্যালট পেপার ফিরিয়ে আনার দাবি থাকলেও আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তা হবার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ৷
ছবি: picture alliance/NurPhoto/D. Chakraborty
10 ছবি1 | 10
রাজ্যের ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার লিয়েন কোয়ু জানিয়েছেন, ‘‘রাজ্যে মোট ২,২০২ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের মধ্যে সাতটি এমন ভোটগ্রহণ কেন্দ্র এমন আছে, যেখানে মোট ভোটারের সংখ্যা ১০ জনের চেয়ে কম৷ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ভোট গ্রহণের দিন, ১১ এপ্রিল সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্র খুলে রাখতে হবে৷ নির্বাচন কর্মী ও অফিসাররা আগের দিন, অর্থাৎ ১০ এপ্রিল রওনা হবেন৷ জানা নেই, সকেলা কখন ভোট দিতে আসবেন৷ আগেভাগে ভোট দেয়ার জন্য কাউকেই চাপ দেয়া চলে না৷’’
আবার রাজ্যে এমন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রও আছে, যেখানে ভোটারদের ভোট দিতে যেতে ৩০ মাইল পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে হয়৷ এমন বুথের সংখ্যা ৫১৮৷ এই হেঁটে পাহাড়ি পথ বেয়ে সংবাদ আদান-প্রদানের জন্য বেশ কয়েকজন ‘রানার'কে ভাড়া করেছে নির্বাচন কমিশন৷ বলে রাখা ভালো, ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকের সেই মোঘল আমল থেকেই ভারতে হাঁটা পথের সংবাদ বাহকের চল আছে৷
ভারতদাসের জন্য
গুজরাটের সোমনাথ জেলার গির অভয়ারণ্য সিংহের জন্য বিখ্যাত৷ সেই গভীর জঙ্গলে একা বাস করেন এক সাধু৷ তাঁর নাম ভারতদাস দর্শনদাস৷ তাঁর জন্যও ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট নিয়ে গভীর জঙ্গলের উদ্দেশে রওনা হবেন জনা দশেক ভোটকর্মী৷ সেখানে ভোটগ্রহণ হবে ২৩ এপ্রিল৷
গির সোমনাথের ডেপুটি জেলা নির্বাচন অফিসার ভি এম প্রজাপতি জানান, ‘‘রাজ্যের উনা জেলার বানেজ এলাকার একমাত্র ভোটার ভারতদাস৷ কারও ভোট যেন বাদ না পড়ে, সেই লক্ষ্যে তাঁর ভোটগ্রহণ করতে তাঁর কাছে পৌঁছবেন ভোটকর্মীরা৷ অতীতেও একইভাবে তাঁর ভোটগ্রহণ করা হয়েছে৷ প্রতিবারই তিনি ভোট দেন৷’’
‘নৌকায় তৈরি হয়েছিল ভোটগ্রহণ কেন্দ্র’
নির্বাচনি বন্দোবস্তের এমন হাজারো অভিজ্ঞতার সাক্ষী থেকেছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক দেবাশিস সেন। বর্তমানে তিনি রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব হিসেবে কর্মরত। ডয়চে ভেলেকে তিনি জানালেন, ‘‘সারা ভারতে নির্বাচন হচ্ছে। প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে রয়েছে। এবার ‘নো ভোটার টু বি লেফ্ট বিহাইন্ড’ ক্যাম্পেন চালাচ্ছে। আমার অভিজ্ঞতা আছে অতীতে বর্ধমানে কালনায় বন্যা হয়েছিল। অথচ ভোটগ্রহণ করতে হবে। তাই নৌকায় তৈরি হয়েছিল ভোটগ্রহণ কেন্দ্র।’’
আরও একটি অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর সময়ে দার্জিলিংয়ের সান্দাকফুতে ফালুটের কাছে একটি বুথে ভোটগ্রহণ করা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। আদিম কালের মতো ফ্ল্যাগ উড়িয়ে সিগন্যাল দিয়ে তথ্য আদান-প্রদান করতে হতো। প্রাক্তন এই নির্বাচন আধিকারিকের কথায়, ‘‘ভারতে ৯৩ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট দেন মানুষ। দল বেঁধে মানুষ ভোট দেন। এই জন্যই বুকার বিজয়ী প্রখ্যাত লেখক অরবিন্দ আদিগা তাঁর ‘দ্য হোয়াইট টাইগার’ বইয়ে লিখেছেন, ভারতে তিনটি উৎসব হয়। জ্বরের উৎসব, পুজো পার্বনের উৎসব এবং নির্বাচনের উৎসব।’’
ভারতে নির্বাচনে অনিয়ম রুখতে অ্যাপ, চিপ
১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত সাত পর্যায়ে ভারতের সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ এবারের নির্বাচনে অনিয়ম রুখতে নানান ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷
ছবি: Reuters/A. Dave
ছবিসহ ভোট
এতদিন পর্যন্ত ‘ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন’ বা ইভিএম-এ শুধু প্রার্থীর নাম ও দলীয় চিহ্ন থাকত৷ এবারের নির্বাচনে প্রার্থীর নামের পাশে থাকবে প্রার্থীর ছবিও থাকবে৷ নির্বাচন কমিশন বলছে, ভোটারদের মধ্যে প্রার্থী সম্বন্ধে সচেতনতা বাড়াতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/NurPhoto/D. Chakraborty
ইভিএম-এর গায়ে চিপ!
এবারের নির্বাচনে ব্যবহৃত ইভিএমে থাকবে ‘জিপিএস’ চিপ, যার সাহায্যে বোঝা যাবে কোনো ইভিএম নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সরেছে কি না৷ এতে করে ইভিএমের কারচুপি রোখা যাবে বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/P. Gill
হ্যাকিং রুখতে...
গত নির্বাচনের পর অভিযোগ ওঠে যে ইভিএম ‘হ্যাক’ করা সম্ভব৷ এই অভিযোগের মোকাবিলা করতে এবার পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ ভোটদানের পর প্রতি ভোটারের নির্বাচিত প্রার্থীর বিবরণী আপনা থেকেই ইভিএম থেকে প্রিন্ট হয়ে বের হবে৷ দান করা ভোটের বিবরণী ভোটার নিজে চেক করে নেবার পর তা ভাঁজ করে পুরে দিতে হবে ব্যালট বাক্সে৷ এভাবেই ইভিএমের কারচুপি রুখতে দুই দফায় ভোট যাচাইয়ের সমাধান করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/S. P. Chaudhury
অপরাধী সাংসদ রুখতে...
বর্তমান লোকসভার ১৮৬ জন সাংসদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে খুন, ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগও৷ এবারের নির্বাচনে ভোটাররা যাতে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ সম্পর্কে অবগত হয়েই তাঁদের ভোট দেন, তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ প্রতি প্রার্থীকে টিভি চ্যানেল ও পত্রিকায় তাদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করতে হবে৷
ছবি: Reuters/A. Dave
মোবাইল অ্যাপ দিয়ে নজরদারি
প্রায় ৫,০০০ ভোটদান কেন্দ্র ও গণনাকেন্দ্রে থাকবে ‘লাইভ স্ট্রিমিং’ বা সরাসরি সম্প্রচারের সুবিধা, যার সাহায্যে ভোটাররা নিজেদের ঘরে বসে দেখতে পারেন কেমন হচ্ছে ভোটগ্রহণ ও গণনা প্রক্রিয়া৷ এছাড়াও, আসতে চলেছে নতুন মোবাইল ‘অ্যাপ’, যার মাধ্যমে ভোটাররা ভোটপ্রক্রিয়ার ওপর নজর রাখতে পারবেন৷ এই প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে ‘সিটিজেন মনিটর’৷
ছবি: Reuters/J. Prakash
নারীদের জন্য
ভারতে বরাবরই নির্বাচনে নারীদের প্রতিনিধিত্ব কম৷ কিন্তু মোট ভোটার সংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারীরা৷ তাই এবারের নির্বাচনে রয়েছে ‘নারীবান্ধব’ ভোটগ্রহণ কেন্দ্র, যেখানে ভোটদান থেকে ভোটগ্রহণ সব কাজ করবেন নারীরাই৷ উল্লেখ্য, শুধু কর্নাটকেই ইতিমধ্যে মোট ৬০০টি নারীবান্ধব ভোটকেন্দ্র ঘোষিত হয়েছে৷
ছবি: Bahujan Samaj Party
তৃতীয় লিঙ্গের জন্য
২০১৪ সালে একটি ঐতিহাসিক রায় ঘোষণার পর থেকে ভারতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বা ‘হিজড়া’দের দেয়া হয়েছে সম্পূর্ণ ভোটাধিকার৷ এবারের নির্বাচনে তাঁদের মোট ভোটারের সংখ্যা ৩৯,০০০ - যা গতবারের তুলনায় অনেক বেশি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Nath
ফেসবুকের ভূমিকা কী?
নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হবার পর থেকেই ফেসবুকে শুরু হয়েছে পক্ষ-বিপক্ষের নানা আলোচনা৷ কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কড়া নির্দেশ, প্রতি প্রার্থীকে কমিশনের কাছে দিতে হবে তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত খুঁটিনাটি, যাতে কোনো প্রার্থীর প্রোফাইল থেকে বিভ্রান্তিকর তথ্য না ছড়ায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Kiran
সামাজিক মাধ্যমে সততা
শুধু ফেসবুক নয়, অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপরেও রয়েছে নির্বাচন কমিশনের কড়া নজর৷ সামাজিক মাধ্যমে আইনগতভাবে প্রচার চালাতে পারেন প্রার্থীরা, কিন্তু সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের গায়ে থাকতে হবে ‘পাবলিশড বাই’ বা ‘পেড ফর বাই’ তকমা৷ এতে করে সাধারণ জণগনের বুঝতে সুবিধা হবে, ঠিক কোন দলের বা গোষ্ঠীর হয়ে কোন প্রচার চালানো হচ্ছে৷ এতে মিথ্যা প্রচারণার ধারা কমবে বলে মনে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷