প্রশ্নটা শুনেই নিশ্চয়ই আপনার মনে বহু উত্তর ঘোরাঘুরি করছে৷ এই প্রশ্নের উত্তর আপনি পেতে পারেন বলিউড অভিনেত্রী বিদ্যা বালানের কাছ থেকেও৷ তাঁর একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে৷ আর সেখানেই রয়েছে এই প্রশ্নের উত্তর৷
বিজ্ঞাপন
ভিডিওটিতে বিদ্যা বলেন, অনেকের মনেই নিশ্চয়ই এ প্রশ্নটা আসে যে একজন ক্ষমতাশালী নারী আসলে কেমন হয়? বা তাঁদের কী কী গুণ থাকে, ব্যক্তি জীবনে কী করতে হয় তাঁদের? এটার কি নির্দিষ্ট কোনো গুণাবলী বা প্রণালী আছে? নারীর ক্ষমতায়নের পথটা কেমন হওয়া উচিত বা নারীবাদীরা কেমন হন?
সেখানে প্রথমে তিনি সবাইকে বলতে চান যে তার কাছে ক্ষমতাশালী নারীর সঠিক ‘রেসিপি' বা প্রণালী আছে৷ তিনি জানান যে একজন আধুনিক নারী হতে হলে কিছু কিছু গুণ সমপরিমাণে থাকা উচিত৷ আসলে এই ভিডিওতে তুলে ধরা হয়েছে নারীবাদী বা নারীর ক্ষমতায়ন বলতে সাধারণত মানুষ কী বোঝে৷ তারা বোঝে এ ধরনের নারীরা সিগারেট খায়, যে কারো সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে, খোলামেলা পোশাক পরেন, ব্রা পরে না, কারণ এটাকে তারা নিজের স্বাধীনতা হরণ মনে করে, এঁরা ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলেন, মাতৃভাষায় যারা কথা বলে তাদের হেয় করে এবং নারীবাদী লেখিকাদের বই নিয়ে তর্ক করে, এরা পরিবারের চেয়ে ক্যারিয়ারকেই প্রাধান্য দেয়....এমন নানা বিষয় তুলে ধরা হয়৷ কিন্তু সত্যিই কি তাই? নারীর ক্ষমতায়ন বলতে আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন বিদ্যা, সেটা জানতে হলে পুরো ভিডিওটা আপনাকে দেখতে হবে৷
ভিডিওতে এমন শক্তিশালী বার্তা রয়েছে, যে তা ছুঁয়ে গেছে লাখো মানুষের মন৷ ১৩ নভেম্বর ‘ব্লাস চ্যানেল' তাদের ফেসবুক পাতায় ভিডিওটি পোস্ট করে৷ আর গত কয়েকদিনেই এটি দেখা হয়েছে ৬ লাখ বার৷ শেয়ার হয়েছে ৮ হাজারেরও বেশি৷ শত শত মন্তব্যে সবাই যে ভিডিওটিকে সমর্থন করেছেন তা কিন্তু নয়, এর মধ্যে কয়েকটা বিষয়ে অনেকের দ্বিমতও রয়েছে৷
এপিবি/ডিজি
যেখানে নারীরা দেশ শাসন করেন
বিশ্বের স্বাধীন রাষ্ট্রের সংখ্যা ১৯৫টি৷অধিকাংশ দেশই শাসন করছেন পুরুষরা৷ তবে, নারী সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধানের সংখ্যা হাতেগোনা হলেও যারা আছেন তারা বেশ ক্ষমতাধর৷ চলুন দেখে নিই তাঁদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O.Hoslet
আঙ্গেলা ম্যার্কেল
বর্তমানে ৬২ বছর বয়সি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সরকারপ্রধান হিসেবে প্রথম নিয়োগ পান ২০০৫ সালে৷ তিনিই জার্মানির প্রথম নারী সরকার প্রধান৷ চতুর্থবারের মতো এই পদে থেকে যেতে পারেন তিনি৷ সাবেক পূর্ব জার্মানিতে বেড়ে ওঠা এক যাজকের মেয়ে ম্যার্কেল রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছিলেন৷ টাইম ম্যাগাজিন তাঁকে ২০১৫ সালে ‘‘পারসন অফ দ্য ইয়ার’’ ঘোষণা করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O.Hoslet
টেরেসা মে
টেরেসা মে হচ্ছেন মার্গারেট থ্যাচারের পর যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী৷ ৬০ বছর বয়সি সাবেক এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত বছরের জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন৷ ঐতিহাসিক ব্রেক্সিট গণভোটের পক্ষে সে দেশের জনগণ রায় দেয়ার পর তিনি ক্ষমতায় আসেন৷ তিনি ঠিক কতদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেন তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন রয়েছে৷ চলতি মাসে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে হারলে তাঁকে বিদায় নিতে হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Tyagi
সাই ইং-ভেন
সাই ইং-ভেন হচ্ছেন ‘রিপাবলিক অফ চায়না’ বা তাইওয়ানের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট৷ ২০১৬ সালের মে মাসে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর দ্বীপটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বেইজিং, কেননা চীন মনে করে দ্বীপটি স্বাধীন নয়৷ তবে সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সে দেশের কাছে নতি স্বীকার করবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন সাই৷
ছবি: Reuters/T. Siu
এলেন জনসন সার্লিফ
৭৮ বছর বয়সি এই নারী ২০০৬ সাল থেকে লাইবেরিয়ার রাষ্ট্রপতি৷ তিনি আফ্রিকার প্রথম নারী রাষ্ট্রপ্রধান৷ ২০১১ সালে সার্লিফ এবং লাইবেরিয়া ও ইয়েমেনের আরো দুই নারী শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার জয় করেন৷ অহিংস পথে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সংগ্রাম এবং শান্তিপ্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করায় এই সম্মাননা দেয়া হয় তাঁদের৷
ছবি: Reuters/N. Kharmis
দালিয়া গ্রেবাউসকাইতি
লিথুনিয়ার প্রথম নারী রাষ্ট্রপ্রধান দালিয়া গ্রেবাউসকাইতি৷ কারাতে ব্লাক বেল্ট থাকায় এবং কথাবার্তায় কঠোর মনোভাব প্রকাশ করায় তাঁকে অনেকেই ‘আয়রন লেডি’ বলেন৷ ৬১ বছর বয়সি গ্রেবাউসকাইতি ২০০৯ সালে প্রথমে দায়িত্ব নেন এবং ২০১৪ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন৷
ছবি: Reuters/E. Vidal
এর্না সোলব্যার্গ
নরওয়ের সরকারপ্রধানও একজন নারী৷ ২০১৩ সালে দ্বায়িত্ব পান তিনি৷ তবে সোলব্যার্গ দেশটির দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী৷ রাজনৈতিক আশ্রয় বিষয়ে কঠোর নীতির কারণে তাঁকে ‘আয়রন এর্না’ বলা হয়ে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Wivestad Groett
বেয়াটা শিডউয়ো
পোল্যান্ডের তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী বেয়াটা শিডউয়ো৷ ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে দায়িত্বে আছেন তিনি৷ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি মেয়র এবং সংসদ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/W. Dabkowski
সারা কুগোনগেলওয়া-আমাথিলা
নামিবিয়ার চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী সারা কুগোনগেলওয়া-আমাথিলা ২০১৫ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন৷ তরুণ বয়সে সিয়েরা লিয়নে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শেষে ১৯৯৪ সালে দেশে ফেরেন ৪৯ বছর বয়সি এই নারী৷ তিনি সে দেশের প্রথম নারী সরকারপ্রধান৷
ছবি: Imago/X. Afrika
মিশেল বাচিলেট
২০১৪ সাল থেকে দায়িত্বে রয়েছেন চিলির প্রেসিডেন্ট মিশেল বাচিলেট৷ তবে এটাই তাঁর প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হওয়া নয়৷ সে দেশের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০৬ থেকে ২০১০ অবধিও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/C. Reyes
শেখ হাসিনা ওয়াজেদ
ফোর্বস ম্যাগাজিনে ২০১৬ সালে প্রকাশিত বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাশালী নারীর মধ্যে স্থান পেয়েছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ ২০০৯ সাল থেকে জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম রাষ্ট্রটি শাসন করছেন তিনি৷ তবে রাজনীতিতে তিনি আছেন কয়েক দশক ধরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Bildfunk
কোলিন্দা গ্রাবার-কিটারোভিচ
৪৯ বছর বয়সি এই নারী ২০১৫ সালে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ অবধি সরকারের বিভিন্ন পদে, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর দেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন৷ তিনি সেদেশের প্রথম নারী রাষ্ট্রপ্রধান৷
ছবি: Reuters/D. Sagolj
সালম চুবারবিশভিলি
জর্জিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন৷ ২০১৮ সালের নভেম্বরে ৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি৷