ছোট্ট একটি প্রাণী, অথচ তার কারণে কিনা একটি পুরো দেশ বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ল৷ কেনিয়ার একটি বৈদ্যুতিক চুল্লিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়েছিল একটি বানরের কারণে৷
বিজ্ঞাপন
ছোট কোনো এলাকা বা শহর নয়, পুরো দেশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল ঐ বানরের কারণে৷ হ্যাঁ ঘটনাটি ঘটেছিল কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে৷ সেখানে একটি হাইড্রো পাওয়ার প্ল্যান্ট বা পানি বিদ্যুৎ চুল্লীর ট্রান্সফর্মারে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলে বানরটি৷ এতে গ্রিডে ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দেয়৷
কেনিয়ার ইলেকট্রিসিটি জেনারেটিং কোম্পানি কেনজেন জানায়, গিতারু পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটে ৮ জুন সকাল ১১টায়৷ তারা জানায়, একটি বানর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাদে উঠে ট্রান্সফর্মারের উপর লাফিয়ে পড়ে৷ বানরটি বেঁচে গেলেও ততক্ষণে যা হওয়ার তাই হয়েছে৷ ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরিত হওয়ায় যন্ত্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়, সেইসাথে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ উৎপাদন৷ ফলে ১৮০ মেগাওয়াটেরও বেশি বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দেয়৷ আর ফলাফল দেশজুড়ে লোডশেডিং৷
বেচারা ওরাংউটান
ইন্দোনেশিয়ায় বনভূমি উধাও আর দাবানলের শিকার শুধু মানুষই হচ্ছে না, ওরাংউটানরাও পড়েছে বিপদে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Fully Handoko
সংখ্যা কমছে
২০০৮ সালের হিসেবে বোর্নিও ওরাংউটানের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫৬ হাজার৷ কিন্তু সেই সংখ্যাটা কমে ৩০ থেকে ৪০ হাজার হয়েছে বলে ধারণা করা হয়৷ অবৈধভাবে গাছ কেটে বনভূমির এলাকা কমিয়ে ফেলা ও দাবানল – এই দুটি অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও বোর্নিওতেই মূলত ওরাংউটানদের বাস৷
ছবি: picture alliance/dpa
দাবানলের শিকার
সাম্প্রতিক সময়ে ইন্দোনেশিয়ার বনাঞ্চলগুলোতে দাবানলের সংখ্যা বেড়ে গেছে৷ ফলে সেখানকার পরিবেশ প্রায়ই কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে৷ ‘বোর্নিও ওরাংউটান সার্ভাইভ্যাল ফাউন্ডেশন’ (বিওএসএফ) বলছে, বিরূপ পরিবেশের কারণে অন্তত ১৬টি শিশু ওরাংউটানের স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ তবে কতটি ওরাংউটান মারা গেছে সেই সংখ্যা জানাতে পারেনি সংস্থাটি৷
ছবি: Reuters/FB Anggoro/Antara Foto
বেশি ঘুমাচ্ছে
কুয়াশাচ্ছন বনের কারণে ওরাংউটানদের ঘুমের সময়ে পরিবর্তন হয়েছে৷ সাধারণ সময়ে তারা বিকাল ৫টায় ঘুমিয়ে ভোর সাড়ে চারটা থেকে ৫টার মধ্যে উঠে গেলেও এখন তারা দুপুর আড়াইটা-তিনটায় ঘুমিয় পরদিন সকাল ৬টার দিকে ঘুম থেকে উঠছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Burgi
বাসা বানানোতেও পরিবর্তন
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওরাংউটানদের অনেক কিছুই পাল্টেছে৷ আগের চেয়ে একটু নীচু করে অর্থাৎ ভূমির কাছাকাছি বাসা তৈরি করছে তারা৷ এছাড়া খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন এসেছে৷
ছবি: picture-alliance/WILDLIFE
মানুষের এলাকায় ঢুকে পড়ছে
ওরাংউটানরা সাধারণত লাজুক স্বভাবের হয়ে থাকে৷ মানুষের সংস্পর্শে আসতে চায়না তারা৷ কিন্তু দিন দিন বাসস্থানের এলাকা কমে যাওয়ায় খাদ্য ও বাসস্থানের খোঁজে তারা প্রায়ই মনুষ্য অঞ্চলে ঢুকে পড়ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Fully Handoko
5 ছবি1 | 5
বেশ কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার ফলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়৷ বিভিন্ন খাতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়৷ নষ্ট হয়ে যায় অনেক দ্রব্য-পণ্য৷ কেনজেন জানায়, নিরাপত্তা সত্ত্বেও বন্য প্রাণী কিভাবে সেখানে ঢুকে পড়ল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ আর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বন্য প্রাণীদের চলাফেরা রোধে তারা আরো কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)
এমন মজার একটা প্রতিবেদন আপনাদের কেমন লাগলো? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷