ফিচার অফ দ্য উইক
৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩![epa03491220 Christophe David, from France, performs during a 'Clowns Sans Frontieres' show at a poor community in Manila, Philippines, 30 November 2012. Talented artists from Clowns Without Borders are in Manila to offer laughter and joy to street children and residents living in very poor conditions. EPA/FRANCIS R. MALASIG +++(c) dpa - Bildfunk+++](https://static.dw.com/image/16418788_800.webp)
ক্লাউন উইদআউট বর্ডার্স-এর যাত্রা শুরু হয় স্পেন থেকে ১৯৯৩ সালে৷ বছর ছয়েক ধরে জার্মানিতেও কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে সংস্থাটি৷ জার্মান ক্লাউনরা বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন শিশুদের আনন্দ দিতে৷ সম্প্রতি তাঁরা ভারতেও ঘুরে এসেছেন৷
‘‘আমরা কিছু হিন্দি শব্দও শিখতে চেষ্টা করেছি৷ তবে তা একেবারেই ভাঙা ভাঙা৷ খুব সহজ দুই একটা কথা৷ মূলত আকারে ইঙ্গিতেই কাজ চালাতে হয়'', বলেন হ্যারবার্ট টমাস, জার্মানির মিউনিখ শহরে আইনজীবী হিসাবে কর্মরত তিনি৷ ক্লাউন উইদআউট বর্ডার্স-এর সঙ্গে ভারতের এক গ্রামে বাচ্চাদের একটুখানি আনন্দ দেয়ার চেষ্টা করেছেন এই আইনজীবী৷ সেখানকার বাচ্চারা ইংরেজি তেমন জানে না৷ কিন্তু জার্মানি থেকে আসা বিদেশিদের হাসি তামাশা তারা উপভোগ করেছে৷
হ্যারবার্ট টমাস বলেন, ‘‘আসল কথা হলো, বাচ্চাদের একটু খানি হাসি উপহার দেওয়া৷ যেখানে খুশি হওয়ার মতো তেমন কিছুই নেই৷''
উত্তর ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের এই গ্রামের স্কুলে ১০০ ছেলে মেয়ের অধিকাংশই হতদরিদ্র খেত মজুর পরিবার থেকে এসেছে৷ দেখলেই বোঝা যায়, সবসময় পেট ভরে খেতে পায় না ওরা৷ দ্রুত প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে উঠতে হয় তাদের, মা-বাবার কাজে খেতে বা বাড়িতে সাহায্যের হাত বাড়াতে হয়৷
জার্মান ক্লাউনরা সেখানে ভেলকিবাজি দেখান, হৈ হুল্লোড় করেন বাচ্চাদের সাথে৷ এইসব হাসি তামাশার মূলমন্ত্র হলো: ‘হাওয়ায় ভেসে যাও, হাসতে হাসতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলো'৷
বাঘের মতো শক্তিধর হতে হবে: এই ‘রোল প্লেয়িং গেম'-এ প্রশিক্ষণকারী ও বাচ্চারা রণরঙ্গিণী বাঘের মূর্তি ধারণ করে৷ ১১ বছরের নিধির মন ভেলকিবাজির জগৎ থেকে যেন বের হয়ে আসতে চায় না৷ সে জানে ক্লাউনরা সারা দুনিয়া ঘুরে বেড়াচ্ছে বাচ্চাদের মুখে হাসি ফোটাতে৷ তার মতে, এটা একটা সুন্দর ‘আইডিয়া'৷
ভারতের উত্তরাঞ্চলের এই গ্রামটির স্কুলে প্রতি পাঁচ ছাত্রে একজন মাত্র ছাত্রী৷ মা-বাবারা চান, কন্যা সন্তানকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে দিতে৷ তাদের জন্ম না হলেই যেন বাঁচেন তারা৷ কেননা মোটা অঙ্কের পন দিয়ে মেয়েদের জন্য পাত্র জোগাড় করতে হয়৷
জার্মানি থেকে আসা অতিথিরা বাচ্চাদের দুঃখ দারিদ্র্যপূর্ণ জীবনে যেন এক মুঠো মুক্ত বাতাস৷ ক্লাউন গেওর্গিয়া হুবার ও শ্টেফান ক্নল বাচ্চাদের এই স্বতঃস্ফূর্ত উত্সাহ উদ্দীপনা দেখে মুগ্ধ৷
হুবার জানান, ‘‘বাচ্চাদের চোখে মুখে যে আনন্দোল্লাস ফুটে ওঠে, তা আমাকেও আনন্দিত করে৷ এই উচ্ছ্বাস যেন অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আসা৷ এজন্যই আমি এখানে৷ আর এখানেই আমার সার্থকতা৷''