২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ৪২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন৷ মোট মৃ্ত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮৮ জনে৷
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ৫২ টি ল্যাবে ১৩ হাজার ১৩৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়৷ তার মধ্যে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৭৪৩ জন৷ এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত ৬৫ হাজার ৭৬৯ জন৷ মোট পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২১ শতাংশে৷
সবশেষ মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩৫ জন ছিলেন পুরুষ আর সাতজন নারী৷ তাদের ২৭ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন৷ চট্টগ্রামের ছিলেন আটজন, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনার ২ জন করে আর ময়মনসিংহ বিভাগের ছিলেন একজন৷
এদিকে নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ৫৭৮ জন৷ সব মিলিয়ে কোভিড-১৯ থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১৩ হাজার ৯০৩ জন৷ সুস্থতার হার ২১.১৪ শতাংশ৷
এফএস/এডিকে
যেভাবে মানবদেহে আক্রমণ করে করোনা ভাইরাস
শুধু ফুসফুস নয় বরং করোনা ভাইরাসের আক্রমণে মানুষের হৃৎপিণ্ড, স্নায়ু, মস্তিষ্ক, কিডনি, ধমনি এবং ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷ ঘটতে পারে মৃত্যু৷
ছবি: picture-alliance/dpa/imageBROKER
হৃৎপিণ্ড
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে করোনা ভাইরাসের কারণে হৃৎপিণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ থাকা ব্যক্তিদের কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর হার অনেক বেশি৷ কিন্তু যাদের হৃদরোগ নেই তারাও আক্রান্তের পর হৃৎপিণ্ডের পেশির কোষ মারা যায়৷ তবে ভাইরাসের আক্রমণে কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় নাকি ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের তৈরি রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার কারণে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/imageBROKER
ফুসফুস
কোভিড-১৯ এ ফুসফুস সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ ফুসফুস জটিলতাতেই বেশির ভাগ মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ যারা সুস্থ হয়ে উঠেন তাদের ফুসফুসও দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ কারণ, সুস্থদের ফুসফুসে ঘোলাটে সাদা মেঘের মত বস্তু দেখতে পেয়েছেন চীনের গবেষকরা৷ যেটা ফুসফুসের স্থায়ী ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Gollnow
শ্বাসকষ্ট
ফুসফুসের এই অবস্থা হলে রক্তে অক্সিজেন পৌঁছাতে বাধা পাবে৷ ফুসফুস আড়ষ্ট হয়ে পড়বে এবং শ্বাসপ্রশ্বাস ছোট ও দ্রুত গতির হবে৷ ফলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট এবং শুকনো কফ দেখা দেবে৷ ফুসফুসের কোষ একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটা আর ঠিক হয় না৷
ছবি: Reuters/D. Siddiqui
স্নায়ুতন্ত্র
কোভিড-১৯ আক্রান্ত ৮০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে দেখা গেছে তাদের স্বাদ এবং ঘ্রাণ শক্তি নষ্ট হয়ে গেছে৷ সংক্রমণের একেবারে শুরুর দিকেই এ উপসর্গ দেখা দেয়৷ সাধারণ ফ্লুর ক্ষেত্রে যেটা রোগের চূড়ান্ত পর্যায়ে হয়৷ ঘ্রাণ শক্তি বা অলফ্যাক্টরি নার্ভ অনুনাসিক ঝিল্লি থেকে খুলির হাড়ের মাধ্যমে সরাসরি মস্তিষ্কে পৌঁছায়৷
ছবি: Colourbox
ধমনি
জুরিখের একদল প্যাথলোজিস্ট করোনায় মারা যাওয়া কয়েকজনের ময়নাতদন্ত করে দেখেছেন কারো কারো রক্তনালি এবং লাসিকা গ্রন্থি ফুলে গিয়ে সেগুলোতে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ যার ফলে হৃৎপিণ্ড, কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এক সঙ্গে বিকল হয়ে মানুষ মারা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Burgi
মস্তিষ্ক
মার্স এবং সার্স ভাইরাসের সময়ও মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখা গেছে৷ নতুন করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও আক্রান্ত অনেকের খিচুনি এবং মৃগীরোগের চিকিৎসা দিতে হয়েছে৷ এ কারণেই হয়তো আক্রান্ত অনেকের মধ্যে কোনো পূর্ব লক্ষণ ছাড়াই তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়৷ তবে করোনা ভাইরাসের কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ার বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কিছু জানা যায়নি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Prefeitura Manaus/I. Anne
কিডনি
কোভিড-১৯ আক্রান্ত অনেকের শরীরে মারাত্মক নিউমোনিয়ার লক্ষণ থাকে এবং ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন হয়৷ ফুসফুসে জমা তরল বের করতে ওই রোগীদের যে ওষুধ দেওয়া হয় তাতে তাদের পুরো শরীর থেকে তরল বের হয়ে যায়৷ ফলে কিডনিতে রক্ত সরবরাহ কমে যায় এবং কিডনি ঠিকমত কাজ করতে না পেরে অকেজো হয়ে পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Murat
রক্তপিণ্ড
কোভিড-১৯ এ গুরুতর আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে অনেক সময় রক্ত জমাট বেধে রক্তনালি বন্ধ হয়ে যায়৷ এটার কারণেও অনেক সময় কিডনিতে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে এ অঙ্গটি অকেজো হয়ে পড়ে৷
করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষের ত্বকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ অনেক দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের ত্বকে ক্ষত বা র্যাশ সৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে৷ রক্ত জমাট বাধার কারণে ত্বকের নিচে এ ধরনের র্যাশ দেখা যায়৷