বিশ্ব ক্রিকেটে নবীন দল আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টটিতে হেরেছে টাইগাররা৷ ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ২২৪ রানের ব্যবধানে হারে স্বাগতিকরা৷

এখন পর্যন্ত বড় যে দলগুলোকে টেস্টে হারাতে পেরেছে টাইগাররা, তাদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া অন্যতম৷ ২০১৭ সালে ঘরের মাঠে একটি টেস্ট জিততে সক্ষম হয় টাইগাররা৷ তবে, অন্য ম্যাচে অসিরা জয় নিশ্চিত করায় সিরিজটি ড্র হয়৷ দু’দল এখন অবধি মোট ছয়বার মুখোমুখি হয়েছে৷ এরমধ্যে পাঁচবারই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া৷

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মোট দশটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ৷ এরমধ্যে হরেছে নয়টিতে৷ ২০১৬ সালে ঢাকায় একটি টেস্টে ইংলিশদের ১০৮ রানে হারাতে সক্ষম হয় টাইগাররা৷

টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর বাংলাদেশ প্রথম টেস্টটি খেলে ভারতের বিপক্ষে৷ সে খেলায় প্রথম ইনিংসে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুললেও শেষ অবধি তা হয়নি৷ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর অবধি ১০টি টেস্ট খেলেছে টাইগাররা৷ এরমধ্যে হেরেছে আটটিতে, ড্র হয়েছে বাকি দু’টি৷

কিউয়িদের বিরুদ্ধে ১৫টি টেস্ট খেললেও এখন অবধি জয়ের মুখ দেখেনি টাইগাররা৷ তবে, তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে৷ কিউয়িদের বিরুদ্ধে অবশ্য সাকিব আল হাসান একাধিক রেকর্ড গড়েছেন৷ ২০১৭ সালে ওয়েলিংটন টেস্টে এক ইনিংসে ২১৭ রান করেন তিনি৷ টেস্টে এটাই তাঁর সর্বোচ্চ রান৷ বোলিংয়ে এক ইনিংসে ৩৮ রানের বিনিময়ে সাত উইকেট নেয়ার রেকর্ডটিও তিনি গড়েছেন কিউয়িদের বিরুদ্ধেই৷

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অংশ নেয়া দশটি টেস্ট ম্যাচের নয়টিতেই হেরেছে টাইগাররা৷ একটি ম্যাচ ড্র হয়েছে৷ দলটির বিরুদ্ধে তামিম ইকবালের একটি দ্বিশতক রয়েছে৷ ২০১৫ সালে খুলনা টেস্টে এক ইনিংসে ২০৬ রান করেন তিনি৷ টেস্টে এটাই তামিমের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড৷

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১২টি টেস্ট খেলেছে টাইগাররা, হেরেছে ১০টিতে৷ তবে দু’টি ম্যাচ ড্র হয়েছে৷ দলটির বিপক্ষে শাহাদাত হোসেনের এক ইনিংসে ২৭ রানের বিনিময়ে ছয় উইকেট নেয়ার রেকর্ড রয়েছে৷

দক্ষিণ এশিয়ার টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে একমাত্র শ্রীলঙ্কাই এখন অবধি বাংলাদেশের কাছে হেরেছে৷ দু’দলের মধ্যে আয়োজিত ২০টি টেস্টের ১৬টিতে হরেছে টাইগাররা, জিতেছে একটিতে, আর ড্র হয়েছে বাকি তিনটি৷ টেস্টে মুশফিকুর রহিমের দু’টি দ্বিশতকের একটি এসেছে এই দলের বিরুদ্ধে৷ ২০১৫ সালে গল টেস্টে এক ইনিংসে ২০০ রান করেন তিনি৷ সেই টেস্টে মোহাম্মদ আশরাফুল করেছিলেন ১৯০ রান৷

এখন অবধি যেসব দলের বিরুদ্ধে টেস্টে জিতেছে বাংলাদেশ, তার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ দলটির বিরুদ্ধে ১৬ টেস্টের মধ্যে চারটিতে জিতেছে টাইগাররা, হেরেছে দশটিতে৷ মেহেদি হাসান মিরাজের টেস্টে সবচেয়ে ভালো বোলিংয়ের রেকর্ডও এই দলের বিরুদ্ধে৷ ২০১৮ সালে ঢাকায় ৫৮ রানের বিনিময়ে সাত উইকেট নেন তিনি৷

জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে খেলা ১৬ টেস্টের মধ্যে ছয়টিতে জিতেছে টাইগাররা৷ হেরেছে সাতটিতে, আর ড্র তিনটি৷ টেস্টে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি হয়েছে এই দলের বিরুদ্ধে৷ ২০১৯ সালে ঢাকায় এক টেস্টে ২১৯ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিকুর রহিম৷

সেরা একাদশের নেতৃত্ব নির্দ্বিধায় মাশরাফি বিন মর্তুজার হাতে তুলে দিয়ে সুমন বলেছেন, ‘‘এত জোরে বল করতে আমি দেশের খুব কম বোলারকেই দেখেছি৷ সুইংও ছিল৷ অত্যন্ত বুদ্ধিমান বোলার৷’’

‘সেরা পারফর্মার‘ হিসেবেই ওপেনিংয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তামিম ইকবাল৷ লর্ডসে সেঞ্চুরি করা এই খেলোয়াড়কে একাদশে রাখার পেছনে দেশ ও দেশের বাইরে পারফর্ম্যান্সকেই বড় করে দেখেছেন হাবিবুল বাশার৷ তিনি বলেন, ‘‘পেস ও স্পিন সমান ভালো খেলে৷ সবচেয়ে বড় কথা, ওর ব্যাটিং অন্য ব্যাটসম্যানদেরও আত্মবিশ্বাস দেয়৷ ওকে এক নম্বরে রাখতে তাই একদমই সময় লাগেনি৷’’

৪০টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা এবং টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের হাবুডুবু খাওয়ার সময়ে উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকার মানসিকতাকে গুরুত্ব দিয়ে জাভেভ ওমরকে দলে রেখেছেন সুমন৷

তিন নম্বর পজিশনে স্থান পেয়েছেন তিনি৷ সুমন বলছেন, মুমিনুলকে বাছতে কষ্ট হয়নি তার৷ তবে এই পজিশনে মুমিনুলকে বাদ দিলে নিজেকে জায়গা দিতেন তিনি৷ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মুমিনুলকে একাদশে রাখার ব্যাখ্যায় সুমন বলছেন, ‘‘রান করার দক্ষতা অনেক এবং ব্যাকফুটে শক্তিশালী৷’’

বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে একাদশে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরো অনেক কিছুই দেওয়ার ছিল তাঁর৷’’ মাত্র ১৩ টেস্ট ক্যারিয়ারেও বুলবুল সর্বকালের সেরা একাদশে থাকার মতো ঝলক দেখিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস করেন হাবিবুল বাশার সুমন৷

১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফিজয়ী অধিনায়ক আকরাম খানকে সেরা একাদশে জায়গা দিয়ে সুমন বলছেন, ‘‘যে-কোনো বোলিং আক্রমণকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে ফেলার ক্ষমতা ছিল উনার৷ পেস ও স্পিন খেলার সামর্থ্যের দিক থেকে অত্যন্ত উঁচু দরের ব্যাটসম্যান তিনি৷’’

অলরাউন্ডার হিসেবে একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান৷ সব ফরম্যাটে বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড়ও তিনি৷

সুমন বলছেন, মুশফিক অলরাউন্ডার, কারণ, তিনি উইকেটের পেছনেও দাঁড়াবেন৷ বিশেষজ্ঞ উইকেটরক্ষক হিসেবে খালেদ মাসুদ অপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও মুশফিককে দিয়ে কিপিং করালে বাড়তি একজন ব্যাটসম্যান খেলাতে পারার চিন্তা থেকেই তাঁর ওপর আস্থা রেখেছেন সুমন৷

এই সি্পন বোলারকে একাদশে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘রফিক আমার দলে সব সময়ই থাকবে৷ আমি অধিনায়ক থাকাকালে সে আমাকে খুব কমই বঞ্চিত করেছে৷ রান আটকানোর পাশাপাশি উইকেট তুলে নেওয়ায় ওর চেয়ে ভালো আর কেউ নয়৷’’

ভীতিকর পেসার হিসেবে একাদশে শাহাদাত হোসেনকে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়ক যে রকম আক্রমণাত্মক বোলার চায়, শাহাদাত সে রকমই একজন৷ সত্যিকারের টেস্ট বোলার৷’’

টেস্ট ক্যারিয়ারে এখনো বলার মতো কিছু না করলেও মুস্তাফিজকে যে-কোনো উইকেটে উইকেট নেওয়ার মতো বোলার বলেই মনে করেন সুমন৷ এজন্য তাঁর সেরা টেস্ট একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন তরুণ এই বোলার৷