বাংলাদেশে ক্রকেট ছাড়া আর কোনো খেলায় দর্শকদের যেন কোনো আগ্রহ নেই৷ তাই নেই স্পন্সরও৷ এভাবে চললে, কয়েক বছর পর হয়ত বাংলাদেশে একটাই খেলা থাকবে৷ আর বাকিগুলোর? তাদের জায়গা হবে শুধুমাত্র ইতিহাসের পাতায়৷
বিজ্ঞাপন
১.
১৯৮৫-র এশিয়া কাপ হকির ফাইনাল দেখতে কত লোক এসেছিল?
- কত ঠিক বলতে পারব না৷ তবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের গ্যালারি পুরো ভর্তি ছিল মনে আছে৷
হুঁ, আনুমানিক ৫০ হাজার৷ তখন গ্যালারির সেরকমই ধারণ ক্ষমতা ছিল৷
- আচ্ছা৷
আর এবারের ফাইনালের দর্শক কত হবে?
তখনো ফাইনাল শুরু হতে ঘণ্টাখানেক বাকি৷ পরিচিত এক সিনিয়র সাংবাদিকের সঙ্গে কথোপকথনের এই পর্যায়ে গ্যালারিটা একটু ভালো করে দেখি৷ মনে হয় সব মিলিয়ে হাজারখানেক দর্শক হবে৷ বললাম সংখ্যাটা৷ তিনি মানলেন না৷ তাঁর দাবি, সংখ্যাটা হলো ‘৫০'৷
হ্যাঁ, ৫০৷ ১৯৮৫-তে ছিল ৫০ হাজার আর এবার ৫০ জন৷
- কীভাবে? এই ভিআইপি গ্যালারিতেই তো শ'পাঁচেক লোক আছে৷
বাংলাদেশের কম জনপ্রিয় খেলার তারকারা
একসময় বাংলাদেশে ফুটবলারদের তারকাখ্যাতি ছিল৷ এখন সেটি পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা৷ তবে অপেক্ষাকৃত কম জনপ্রিয় খেলা খেলেও স্বমহিমায় উজ্জল হয়েছেন, তারকার মর্যাদাও পেয়েছেন কয়েকজন৷
ছবি: Khandakar Tarek
জোবেরা রহমান লিনু
এক-দুইবার নয়, মোট ১৬ বার জাতীয় টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন লিনু৷ তাই ২০০৩ সালে গিনেস বুকে নাম ওঠে তাঁর৷
ছবি: Khandakar Tarek
রানী হামিদ
তিনি দাবায় বাংলাদেশের প্রথম মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টার৷ জাতীয় মহিলা দাবায় ১৮ বার সেরা হয়েছেন ৭৩ বছর বয়সি রানী হামিদ৷ এখনও খেলছেন তিনি৷ ২০১৮ সালে মেয়েদের দাবা বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন রানী হামিদ৷ দাবার প্রসারেও ভূমিকা রেখেছেন তিনি৷ তাঁর লেখা ‘মজার খেলা দাবা’ বইটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ রানী হামিদের সন্তান কায়সার হামিদ আশির দশকের তারকা ফুটবলার৷
ছবি: Khandakar Tarek
বিদ্যুৎ কুমার রায়
তাঁকে বাংলাদেশের কিংবদন্তি ভারোত্তোলক বলা যায়৷ কারণ, জাতীয় প্রতিযোগিতায় টানা ২৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ময়মনসিংহের এই ছেলে৷ ২০১৪ সালে তিনি অবসর নেন৷
ছবি: Khandakar Tarek
মাবিয়া আক্তার সীমান্ত
২০১৬ সালের দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে মেয়েদের ৬৩ কেজি ওজন শ্রেণির ভারোত্তলনে স্বর্ণ জয় করেন মাবিয়া৷ সেই সময় পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত বাজার সময় তাঁর কান্না কাঁদিয়েছিল অনেককে৷
ছবি: Khandakar Tarek
নিয়াজ মোরশেদ
১৯৮৭ সালে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দাবাড়ু হিসেবে মাত্র ২১ বছর বয়সে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব অর্জন করেছিলেন বাংলাদেশের নিয়াজ মোরশেদ৷ মাত্র নয় বছর বয়সে জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি৷ মোট পাঁচবার তিনি জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ন হন৷ আর ছয়বার দাবা অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন৷
ছবি: Khandakar Tarek
জিয়াউর রহমান
বাংলাদেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার তিনি৷ ২০০২ সালে এই খেতাব পান৷ ছেলে ১২ বছর বয়সি তাহসিন তাজওয়ার জিয়াও প্রতিযোগিতামূলক দাবা খেলছে৷ গত বছর প্রিমিয়ার দাবা লিগে বাবার মুখোমুখি হয়েছিল সে৷
ছবি: Khandakar Tarek
সাবরিনা সুলতানা
১৯৯৭ সালে কমনওয়েলথ গেমসের শ্যুটিংয়ে সোনা জেতেন সাবরিনা৷ এছাড়া সাফ গেমসে তিনটি ও সাফ শ্যুটিংয়ে দুটি সোনা জেতেন বাংলাদেশের শ্যুটিংয়ের এই অন্যতম তারকা৷ তাঁর স্বামী সাইফুল আলম রিংকিও সাফ গেমসে ব্যক্তিগত ও দলীয় মিলে পাঁচটি আর সাফ শ্যুাটিংয়ে ছয়টি সোনার পদক জেতেন৷
ছবি: Khandakar Tarek
কামরুন নাহার ডানা
জাতীয় ব্যাডমিন্টনে তিন বার সেরা হন তিনি৷ ব্যাডমিন্টন খেলা ছাড়ার পর থেকে ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন৷ ২০০৪ সালে মৌলবাদীদের আন্দোলনের ভয়ে যখন কেউ মহিলাদের ফুটবল মাঠে নামানোর সাহস পাচ্ছিলেন না, মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদিকার দায়িত্বে থাকা ডানা তখনই মেয়েদের প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল চালু করেন৷
ছবি: Khandakar Tarek
ঈসা মিয়া
বড় ভাই মুসা মিয়াকে নিয়ে একসময় হকিতে ঢাকার মাঠ কাঁপিয়েছেন ঈসা মিয়া৷
ছবি: Khandakar Tarek
9 ছবি1 | 9
তা আছে, কিন্তু এরা সবাই হকির সঙ্গে কোনো-না-কোনোভাবে সম্পৃক্ত৷ কোনো সাব-কমিটির সদস্য বা খেলোয়াড়দের পরিবার-পরিজন৷ শুধু খেলার টানে এসেছে সাধারণ দর্শক – এই যদি হয় বিবেচনা, তাহলে সংখ্যাটা পঞ্চাশের বেশি না৷
ভালো করে তাকালাম৷ সত্যি, যাঁদের দেখছি তাঁরা হকির চেনামুখই৷ এর বাইরে কিছু যে খেলোয়াড় বা কর্তাদের পরিবার-পরিজন সেটা বোঝা যায়৷ বাদ দিয়ে খেলার টানে আসা নিছক দর্শকের সংখ্যা হয়ত ৫০ নয়, কিন্তু এমন কিছু বেশিও নয়৷
ঘটনাটা বলছি এ কারণে যে, একটা আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট, যেটা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলার একটা মহাদেশীয় আসর, সেটার প্রতি এই হলো দর্শকের আগ্রহ৷ আর এই আগ্রহ বা অনাগ্রহই জানিয়ে দেয় ক্রিকেট বাদ দিলে বাংলাদেশের বাকি খেলাগুলোর কী হাল!
দর্শক দেখে না৷ ফলে আগ্রহ নেই৷ নেই বলে স্পন্সরের আগ্রহ নেই৷ ফলে নেই টাকা-পয়সা৷ তাই ভুগছে এবং ডুবছে৷ এভাবে চললে, কে জানে কয়েক বছর পর হয়ত বাংলাদেশে একটাই খেলা থাকবে – ক্রিকেট৷ আর বাকিগুলোর জায়গা হবে ইতিহাসের পাতায়৷ পরের প্রজন্ম জানবে, বাংলাদেশে একসময় ফুটবল-হকি-টেনিস এ সব খেলাও হতো!
২.
এবার এশিয়া কাপ নিয়ে মিডিয়ার একটা অংশের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ছিল৷ মানুষের মনে টুর্নামেন্টটাকে পৌঁছাতে প্রচার-প্রচারণাও কম হয়নি৷ বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রথম ম্যাচটার পটভূমিতে ১৯৮৫ সালের কীর্তি টেনে রং দেওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা করা হয়েছিল৷ তাতে একটু কৌতূহল নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম৷ মানুষ মাঠমুখী হয় কিনা...৷ প্রথম ম্যাচে হাজার পাঁচেক দর্শক হয়েছিল৷ কিন্তু বাংলাদেশের বড় হারে সেই যে মানুষের বিমুখ হওয়া, সেখান থেকে ভারত-পাকিস্তানের তারকারাও আর তাদের ফেরাতে পারেননি৷ একজন ব্যাখ্যায় বললেন, ‘‘বাংলাদেশ ভালো না করলে মানুষ আসবে কেন? নিজের দল যখন পারে না...৷''
এটা হয়ত একটা কারণ৷ কিন্তু এই কারণ বা মনস্তত্ত্বটাই আসলে তৈরি করছে একটা ঘোর বিভ্রান্তি৷ খেলা মানেই যেন বাংলাদেশ এবং খেলা মানেই সাফল্য৷ দু'টোই ভুল৷ অবশ্যই বাংলাদেশি হিসেবে বাংলাদেশের সাফল্য আমরা আর দশটা ক্ষেত্রের মতো খেলাতেও চাইব, কিন্তু খেলাকে পুরো জাতীয়তাবাদের মোড়কে ঢেকে ফেলাই ভুল৷ ‘‘বাংলাদেশ পারলে খেলা দেখব, নইলে নয়'', ‘‘এই খেলা খেলে বা দেখে কী হবে যাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নেই'' – এই ভুল ভাবনার ঘোরেই আসলে তলিয়ে যেতে বসেছে দেশের সব খেলা৷ ক্রিকেটের সাফল্য যেখানে গৌরবের ব্যাপার, সেখানে এটাই ব্যবহৃত হচ্ছে অন্য খেলাগুলোকে ডুবিয়ে দিতে৷ সব কিছুতে উদাহরণ ক্রিকেট৷ ক্রিকেট আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারছে, কাজেই অন্যদেরও তাদের মতো পারতে হবে, যেহেতু পারছে না, কাজেই সেগুলো বাদ৷ এভাবে সব বাদ দিয়ে দিয়ে বাকি খেলাগুলোকে আমরা নিয়ে যাচ্ছি প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের দিকে আর বঞ্চিত হচ্ছি নিখাদ ক্রীড়ানন্দ থেকে৷
যেসব টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ
সেই ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৪৩ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা৷ তার মধ্যে জয় এসেছে ২১টিতে৷ চলুন জেনে নিই সেই টেস্টগুলোর কথা৷
ছবি: Anjum Naveed/AP/picture alliance
আগস্ট ৩০-সেপ্টেম্বর ০৩, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী
পরপর ২ টেস্ট পাকিস্তানকে নিজেদের মাটিতে হোয়াইট ওয়াশ করেছে বাংলাদেশ৷ রাওয়ালপিন্ডিতে বাবর আজমদের দুই ইনিংসে ২৭৪ ও ১৭২ রানে অলআউট করে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেন শান্তরা৷ লিটনের সেঞ্চুরি, মিরাজের অর্ধশতক ও ৫ উইকেট, হাসান মাহমুদের ৫ উইকেট এই জয়ে বড় ভূমিকা রাখে৷ এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মধ্য সিরিজ জয় পায় বাংলাদেশ৷
ছবি: Anjum Naveed/AP Photo/picture alliance
আগস্ট ২১-২৫, ২০২৪, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান
টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ১০ উইকেটের জয়। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ১৪তম টেস্টে ঐতিহাসিক জয়। টেস্টে নবম দল হিসেবে পাকিস্তানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বাকি থাকলো শুধু ভারত ও সাউথ আফ্রিকা। দেশের বাইরে বাংলাদেশের এটা সপ্তম জয়। ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। জবাবে বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ৫৬৫ রানের বড় সংগ্রহ তোলে। পাকিস্তানের ২য় ইনিংস গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানে।
ছবি: Farooq Naeem/AFP/Getty Images
২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর, ২০২৩, প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫০ রানের বিশাল এক জয় পায় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দল। বাংলাদেশের হয়ে ৬ উইকেট নেন তাইজুল। নিউজিল্যান্ড : ৩১৭ ও ১৮১, বাংলাদেশ:৩১০ ও ৩৩৮৷
ছবি: Munir uz Zaman/AFP
জুন ১৪-১৮ (২০২৩), প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান
মিরপুরে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ৷ ৫৪৬ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ, যা টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জয়ের তিন নম্বরে আছে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৩৮২ রানে অল-আউট হয়। পালটা ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান ১৪৬ রান তুলেছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে ব্যাটিং ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ। শেষ ইনিংসে আফগানিস্তান অল-আউট হয় ১১৫ রানে।
ছবি: Munir uz Zaman/AFP
এপ্রিল ৩-৭ (২০২৩), প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ৭ উইকেটের জয় পায় টাইগাররা৷ আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংসে ২১৪ এবং ২য় ইনিংসে ২৯২ করে৷ বাংলাদেশ ১ম ইনিংসে ৩৬৯ এবং ২য় ইনিংসে ৩ উইকেটে ১৩৮ রান করে ৭ উইকেটের জয় পায়৷
ছবি: Farooq Naeem/AFP/Getty Images
জানুয়ারি ১-৫ (২০২২), প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে টেস্টে ঐতিহাসিক এক জয় পায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে যেকোনো ফরম্যাটেই এটি বাংলাদেশের প্রথম জয়। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম টেস্টের শেষ দিনে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে মুমিনুলবাহিনী।
ছবি: Marty Melville/Photospor/AP/picture alliance
জুলাই ৭-১১ (২০২০) প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে
হারারের একমাত্র টেস্ট ২২০ রানে জিতেছে সফরকারীরা। বাংলাদেশের দেওয়া ৪৭৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে পঞ্চম দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবোয়ে অলআউট হয় ২৫৬ রানে। এই জয়ের অন্যতম রূপকার মেহেদী হাসান মিরাজ।
মুশফিকুর রহিমের দ্বিশতক (২০৩) আর মুমিনুলের শতকে (১৩২) ভর করে বাংলাদেশ জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে এক ইনিংস ও ১০৬ রানের জয় পায়৷ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবোয়ে ২৬৫ রান করেছিল৷ এরপর বাংলাদেশ খেলতে নেমে ছয় উইকেটে ৫৬০ রান তোলে৷ পরের ইনিংসে জিম্বাবোয়ে ১৮৯ রান করে অলআউট হয়ে যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
নভেম্বর ৩০-ডিসেম্বর ২, ২০১৮ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ
মিরপুর টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ১৮৪ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ৷ এই প্রথম প্রতিপক্ষকে ফলো অন করানো ও ইনিংস ব্যবধানে জয়ের অনির্বচনীয় দুটি স্বাদ দল পেল একদিনেই৷ দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০তে জয়৷ ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ৷ ১১৭ রানে ১২ উইকেট, বাংলাদেশের হয়ে এক ম্যাচে সেরা বোলিংয়ের কীর্তি৷ ম্যান অব দা ম্যাচ মেহেদী হাসান মিরাজ৷ ম্যান অব দা সিরিজ সাকিব আল হাসান৷
ছবি: Picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad
নভেম্বর ২২-২৪, ২০১৮ প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ
প্রতিপক্ষকে দুই ইনিংস মিলিয়ে সবচেয়ে কম বলে দুবার অলআউট করে জেতা ম্যাচের নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ৷ আড়াই দিনে টেস্ট জিতেছিল টাইগাররা৷ সাড়ে সাত সেশনের মতো খেলা হয়েছে এই টেস্টে৷ এটিই টেস্টে বাংলাদেশের দ্রুততম জয়৷ নাঈম হাসান প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন ৫ উইকেট৷ দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুল পেয়েছেন ৬ উইকেট৷ মুমিনুল হক পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
নভেম্বর ১১-১৫, ২০১৮ প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে
জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ২১৮ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ৷ সিরিজ ১-১ ড্র৷ ৪৪৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় সেশনে জিম্বাবুয়ে থামে ২২৪ রানে৷ ৩৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সফলতম বোলার মেহেদী হাসান মিরাজ৷ দ্বিশত হাঁকিয়ে ম্যাচ সেরা মুশফিকুর রহিম৷ সিরিজ সেরা হয়েছেন তাইজুল ইসলাম৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
জানুয়ারি ৬-১০, ২০০৫, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ২২৬ রানে জয়ী
টাইগাররা প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় চট্টগ্রামে৷ ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৪৮৮ রান তোলে স্বাগতিকরা৷ আর দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৯ উইকেটে ২০৪ রান করে৷ প্রথম ইনিংসে জিম্বাবোয়ের স্কোর ছিল ৩১২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৪ রান৷
ছবি: Getty Images/AFP
জুলাই ৯-১৩, ২০০৯, প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ: বাংলাদেশ ৯৫ রানে জয়ী
দেশের বাইরে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জয়ের দেখা পায় ২০০৯ সালের ১৩ জুলাই৷ কিংসটাউনে সেই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯৫ রানে হারায় টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Samad
জুলাই ১৭-২০, ২০০৯, প্রতিপক্ষ ওয়েস্টইন্ডিজ: বাংলাদেশ চার উইকেটে জয়ী
সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ছিল সাফল্যে ঠাসা৷ দ্বিতীয় টেস্টে সেন্ট জর্জেসে স্বাগতিকদের হারায় টাইগাররা, সেবার জিতেছিল চার উইকেটে৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Brooks
এপ্রিল ২৫-২৯, ২০১৩, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৪৩ রানে জয়ী
জিম্বাবোয়ের হারারেতে স্বাগতিকদের আবার ‘বধ’ করে টাইগাররা৷ প্রথম ইনিংসে ৩৯১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৯১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ৷ জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৮২ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৭ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবোয়ে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Njikizana
অক্টোবর ২৫-২৭, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ তিন উইকেটে জয়ী
ঢাকায় বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়৷ তিন দিনে শেষ হওয়া সেই টেস্টে শুরুতে ব্যাট করতে গিয়ে প্রথম ইনিংসে ২৪০ রান করে জিম্বাবোয়ে৷ আর দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ছিল ১১৪৷ অন্যদিকে, প্রথম ইনিংসে ২৫৪ আর দ্বিতীয় ইনংসে ৭ উইকেটে ১০৭ রান তুলে জিতে যায় স্বাগতিকরা৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
নভেম্বর ৩-৭, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৬২ রানে জয়ী
খুলনায় জিম্বাবোয়েকে হারায় বাংলাদেশ৷ সেই টেস্ট পাঁচ দিন পর্যন্ত গড়ালেও শেষমেশ তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি জিম্বাবোয়ে৷ ফলাফল স্বাগতিকদের ১৬২ রানের জয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
নভেম্বর ১২-১৬, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবোয়ে: বাংলাদেশ ১৮৬ রানে জয়ী
আবারো চট্টগ্রামে জিম্বাবোয়েকে হারায় টাইগাররা৷ সেবার ব্যবধান ছিল ১৮৬ রানের৷
ছবি: Getty Images/AFP/Strdel
অক্টোবর ২৮-৩০, ২০১৬, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড: বাংলাদেশ ১০৮ রানে জয়ী
এখন পর্যন্ত বড় কোনো ক্রিকেট শক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একমাত্র টেস্ট জয় এটি৷ ঢাকায় ইংল্যান্ডকে নাস্তানাবুদ করে টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
মার্চ ১৫-১৯, ২০১৭, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী
একদিকে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের শততম ম্যাচে জয়, অন্যদিকে প্রথমবারের মত শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয়-দুই দিক দিয়েই ঐতিহাসিক বাংলাদেশের এই টেস্ট ম্যাচটি৷ পঞ্চম দিনে ৪ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা৷ ম্যাচ সেরা হয়েছেন তামিম ইকবাল৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
আগস্ট ২৭-৩০, ২০১৭, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া: বাংলাদেশ ২০ রানে জয়ী
প্রথমবারের মত অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশ ইতিহাস গড়ে৷ এটা ছিল সাকিব ও তামিমের ৫০তম টেস্ট। সাকিব মোট ১০ উইকেট নিয়ে এবং তামিম দুই ইনিংসেই অর্ধশত করে স্মরণীয় করে রাখলেন এই টেস্টকে৷ ম্যাচ সেরা সাকিব আল হাসান৷ দ্রষ্টব্য: ইএসপিএন ক্রিকইনফো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ছবিঘরটি তৈরি করা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
21 ছবি1 | 21
জাতীয়তা বা দেশের সাফল্য ক্রীড়া অনুসরণে একটা বিবেচনা হতে পারে, কোনোভাবেই একমাত্র নয়৷ ইংল্যান্ড আন্তর্জাতিক ফুটবলে এমন কিছু সাফল্য পায় না, তাই বলে তাদের মানুষরা ফুটবল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি৷ আজও তাদের ক্লাব ফুটবল প্রতি সপ্তাহে জুগিয়ে চলেছে অনন্ত বিনোদন৷ বাংলাদেশেও তো বিষয়টা এই সেদিনও এরকমই ছিল৷ বছর ত্রিশেক আগের কথা মনে করুন৷ ফুটবল এক নম্বর খেলা, সবাই তাতে মেতে থাকতো৷ কিন্তু ক্রিকেট বা হকি মাঠেও কি মানুষ যেতো না? কিংবা ধরুন টেবিল টেনিস, টেনিস, কুস্তি?
স্মৃতিচারণ করুন, দেখবেন টিটি তারকা কচি, রচি, সাদী, কিসলু; টেনিসের শোভন জামালী, সরদার ইফতেখার; কুস্তির টাইগার জলিল, ব্যাডমিন্টনের ডানা-মরিয়ম এঁদের কথা মনে পড়বে৷ কিন্তু চেষ্টা করেও মনে করতে পারবেন না গত বছরের টেনিসের জাতীয় চ্যাম্পিয়নের নাম৷ কুস্তি এখন কারা খেলে তা কি আপনি জানেন? জানেন না এবং এই নিয়ে কোনো গ্লানিবোধও আপনার নেই৷ মনে করেন, এসব তুচ্ছদের চিনতে হবে কেন? আর এভাবে ওদের তুচ্ছ বানিয়ে, ছোট খেলাগুলোকে ‘ছোটলোকের খেলায়' পরিণত করে কোন স্বর্গে যে যাচ্ছি আমরা, আসলে হয়ে যাচ্ছি একটা ক্রীড়াবিমুখ জাতি৷ খেলার মধ্যে দেশ-রাজনীতি-সাফল্যক্ষুধা ঢুকিয়ে আমরা আসলে সত্যিকারের ক্রীড়াপ্রেমী জাতি একটুও নই৷ আমরা আসলে অদ্ভুত রকমের জাতীয়তাবাদী, যারা আসলে খেলাকে বানিয়ে নিয়েছি দেশপ্রেম দেখানোর মঞ্চ৷ কে জানে হয়ত এটা দেখানো খুব সহজ বলে! অন্য কোনোভাবে দেশপ্রেম প্রকাশ করতে হলে কিছু করতে হয়৷ কিছু ত্যাগ, কিছু পরিশ্রম, কিছু কষ্ট৷ এখানে কিচ্ছু না৷ শুধু লাফালেই হয়৷ আর জটিল অঙ্কের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে ক্রীড়াবোধ৷ এবং ক্রীড়া৷
৩.
সেদিনই পত্রিকায় ছাপা হয়েছে ছবিটা৷ জাতীয় জুনিয়র সাঁতার প্রতিযোগিতায় সাঁতারুদের খাবার দেওয়া হচ্ছে৷ লঙ্গরখানার মতো লাইন করে ওরা খাবার নিচ্ছে৷ পাতে শুধু ভাত আর সবজি৷ এক টুকরো মাছ বা মাংস নেই৷ এসব খেলার আয়োজকদের প্রশ্ন করলে তাঁরা বলবেন, মানুষ দেখে না, মিডিয়া কভারেজ দেয় না বলে তাঁরা প্রয়োজনীয় স্পন্সর পান না৷ টাকা-পয়সার অভাব তাই!
কথাগুলো যে ঠিক সেটা আগেই বলেছি৷ কিন্তু সেই অবস্থাটা বদলানোর জন্য কী করেছেন তাঁরা? কোনো লক্ষ্য নেই, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেই৷ বাংলাদেশ এমনিতে হুজুগের দেশ বলে যেখানে প্রচার, সেখানেই সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দৌড়াবে স্বাভাবিক, কিন্তু এই বিমুখ মানুষগুলোকে নিজেদের দিকে আনাই তো সংগঠকদের দায়িত্ব৷ এই কাজের জন্যই তো ওরা ওখানে বসে৷ কিন্তু নির্বাচনের সময় কমিটিতে ঢোকার জন্য যে শক্তি ব্যয় করেন, মেয়াদের পুরো সময় খেলার জন্য এর অর্ধেক ব্যয় করলেও অন্তত শাক-ভাত খেয়ে খেলোয়াড়দের খেলতে হতো না৷ আমাদের সামাজিক বাস্তবতা, সাফল্যমুখী হুজুগ সব ঠিক আছে, কিন্তু সেগুলো বদলানোর মতো দূরদর্শী মানুষও নেই এই ছোট খেলাগুলোতে৷ এখানেও রাজনীতি-বাণিজ্য আর দলবাজির ত্রিধারা মিলিত হয়ে সত্যিকারের সংগঠকদের গলা টিপে রাখছে৷
সংগঠক বলতে যাঁদের আমরা বুঝতাম, যাঁরা জীবন-যৌবন সঁপে দিতেন খেলা আর খেলোয়াড় তৈরির জন্য, তাঁরা আজ হারিয়ে যাওয়া প্রজাতি৷ এখন নির্বাচনের মাধ্যমে জিতে আসেন দুটো পক্ষ৷ একটা দল ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের আশীর্বাদপুষ্ট, আরেকটা হচ্ছে হালের টাকাওয়ালা মানুষ৷ এই দুটো হাত ধরাধরি করে এমন একটা শক্তির বলয় তৈরি করেছে যে, সত্যিকারের সংগঠকরা জেনে গেছেন তাঁদের পক্ষে কোনো ফেডারেশনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাওয়া সম্ভব নয়৷ তাঁরা হাত গুটিয়ে নিয়েছেন৷ তরুণ সংগঠকরাও এই অন্ধকার ভবিষ্যৎ দেখে চলে যাচ্ছেন অন্য লাইনে৷ তাই তৃণমূলে খেলা আয়োজন, খেলোয়াড় তৈরি– এসবের লাইনটাই হারিয়ে গেছে৷ ছোট খেলা খেলেও যে বড় হওয়া যায় সেই স্বপ্ন দেখানোর মানুষই আর নেই৷ তবু যে এই খেলাগুলো কিছু কিছু খেলোয়াড় খেলে তাই দেখে মাঝেমধ্যে বিস্ময় লাগে! এসবের ফল যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে৷ এসএ গেমস পর্যায়ে যা ছিলাম, তার চেয়ে আরো পিছিয়ে যাচ্ছি৷ শ্যুটিং, আর্চারি, সাঁতার এ সব জায়গায় বিচ্ছিন্ন দু-একটি সাফল্য হয়তো আসে, কিন্তু সামগ্রিক অর্থে বলার মতো কিছু না৷ ফুটবলের মতো খেলা মানুষের মন থেকে হারিয়ে গিয়ে এখন লড়াই হয় আক্ষরিক অর্থেই ফাঁকা মাঠে; পৃথিবীর কোথাও বোধ হয় এতটা নিরাসক্তির মধ্য দিয়ে লিগ আয়োজিত হয় না৷ সেই লিগে আবার যখন-তখন বিরতি৷ এসবের কারণে জাতীয় দলের ফলও যাচ্ছেতাই৷ তবে ঘোর অন্ধকারে এটাই আশার কথা যে, যুব ফুটবলে বেশ কিছু ভালো পারফরম্যান্স দেখা গেছে সম্প্রতি৷ অনূর্ধ্ব-১৬ এবং অনূর্ধ্ব-১৮ কয়েকটি প্রতিযোগিতায় দেখিয়েছে, সম্ভাবনা তাদের মধ্যে আছে৷ তাই দেখে কেউ কেউ নতুন দিনের স্বপ্ন দেখেন৷ কিন্তু খুব একটা আশাবাদী হতে পারি না৷ কারণ, এর পরে ওদের বিকাশের যে সময় সেই সময়টা কাটবে খুব অযত্নে৷ ওরা চলে যাবে ক্লাবে, বাংলাদেশের সেই ক্লাবগুলোতে, যেখানে খেলোয়াড় তৈরির চেয়ে ধ্বংসের পরিবেশই বেশি৷ আশা নেই কোথাও৷ হতাশার অন্ধকারই চারদিকে৷
৪.
ছবি বদলানোর উপায়? খুব সম্ভব ক্রীড়াবোধ থেকে উগ্র সাফল্যের ক্ষুধা ছেঁটে ফেলা৷ এই খেলা খেললে আন্তর্জাতিক সাফল্য পাওয়া যাবে না, কাজেই এটা খেলার দরকার নেই – এই তত্ত্ব বাদ দিলেই সব বদলে যাবে৷ তখন ছোট্ট একটা বাচ্চা মনের আনন্দে টেবিল টেনিস খেলতে চাইলে কেউ বলবে না, এই খেলা খেলে লাভ কী! লাভ-ক্ষতির অঙ্ক না ভেবে সে মেতে থাকবে ক্রীড়ানন্দে৷ সেই আনন্দ হয়তো সঞ্চার হবে আরো অনেকের মধ্যে৷ কেউ আবার খেলবে ভলিবল৷ কেউ হকি৷ এটাই ক্রীড়াচর্চার নিয়ম৷ এভাবেই খেলা বেঁচে থাকে আনন্দের অফুরন্ত ঝরনা হয়ে৷
আর লাভ-ক্ষতি, সাফল্য-আন্তর্জাতিক খ্যাতি – এই অঙ্ক নিয়ে পড়ে থাকলে সবাই ক্রিকেটই খেলতে চাইবে৷ সেখানেই সব স্পন্সররা দৌড়াবে৷ এই ক্রিকেটীয় লড়াইয়ে কেউ কেউ শীর্ষে পৌঁছাবে৷ সাফল্য আনবে৷ আর বাকিরা পরাজিত হয়ে, নিজেদের ব্যর্থ মেনে পালিয়ে যাবে খেলার জগৎ থেকে৷ এবং তখন এ দেশের ভবিষ্যৎ মানুষরা ইতিহাস বইয়ে পড়বে, ‘‘একসময় বাংলাদেশে ফুটবল-হকি এসব খেলাও হতো!''