একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় গাইবান্ধায় মানবতাবিরোধী গুরুতর অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা, সাবেক সাংসদ আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়াসহ ছয় জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বুধবার এ রায় ঘোষণা করে৷ আসামীদের বিরুদ্ধে আনা অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়৷
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ভয়ংকর কিছু উপায়
গিলোটিনে মাথা কাটা, হাতির পায়ে পিষ্ট করা- প্রাচীনকালে এ ধরনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পদ্ধতি অনেককে আতঙ্কিত করে৷ কিন্তু এরচেয়েও নৃশংস কিছু পদ্ধতি রয়েছে, যার কথা হয়ত আপনাদের জানা নেই৷ সেগুলো দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: fotolia
শরীরকে দ্বিখণ্ডিত করা
বহু বছর আগে ইংল্যান্ডে এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো৷ অপরাধী দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে সাজা দেয়ার স্থানে নিয়ে যাওয়া হতো৷ তারপর দুই পা’র মাঝ বরাবর কেটে ফেলা হতো৷
ছবি: picture-alliance/Godong/C. Leblanc
শূলে চড়ানো
রোমান সাম্রাজ্যে এ পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ছিল৷ যীশু খ্রীস্টকেও এভাবেই মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল৷ কাঠের তক্তার সঙ্গে হাত ও পায়ে পেরেক ঠুকে সেই তক্তা দাঁড় করিয়ে দেয়া হতো৷ এভাবে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ত ব্যক্তিটি৷
ছবি: Reuters/J. Costa
কলম্বিয়ার টাই
কলম্বিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশে প্রথমে অপরাধীর মাথা কেটে ফেলা হতো৷ তারপর জিভ টেনে বের করে মাথাটা গাছে বেঁধে রাখা হতো৷
ষাঁড়ের পেটে
সিসিলিতে অ্যাক্রাগাসের শাসনামলে এই ভয়াবহ পদ্ধতির প্রচলন শুরু হয়৷ লোহার ষাঁড় বানানো হতো৷ অপরাধীকে ঐ ষাঁড়ের পেটে ঢুকিয়ে এর নীচে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হতো৷ ষাঁড়ের মুখ দিয়ে বের হতো অপরাধীর আর্তনাদ৷ মনে হতো ষাঁড়টিই চিৎকার করছে৷
ছবি: picture alliance/Blickwinkel/W. G. Allgoewer
সেপুকু
জাপানী যোদ্ধা সামুরাই এই পদ্ধতি ব্যবহার করতেন৷ নিজের হাতেই অপরাধীর অন্ত্র বের করে আনতেন, আর যখন অপরাধী ছটফট করতো, তখন সামুরাইয়ের কোনো সহযোগী তরবারি দিয়ে অপরাধীর শিরচ্ছেদ করে দিতো৷
ছবি: Museum Kunstpalast, Düsseldorf, Graphische Sammlung
লিং চি
চীনে বিংশ শতাব্দিতে এসে এই পদ্ধতি বাতিল করা হয়৷ এ ধরণের মৃত্যুদণ্ডে অপরাধীর প্রতিটি অঙ্গ একে একে ছিন্ন করা হতো৷ আর চেষ্টা করা হতো, যাতে সে দীর্ঘ সময় এ অবস্থায় জীবিত থাকে৷
ছবি: Fotolia/D. Presti
জীবন্ত পুড়িয়ে মারা
১৯৩৭ সালে জাপানের সৈন্যরা বন্দি চীনাদের এই শান্তি দিয়েছিল৷
ছবি: Getty Images/U. Ifansasti
স্প্যানিশ থাবা
প্রাচীন কালে স্পেনে লোহা দিয়ে বিড়ালের থাবার মতো ধারালো হাতিয়ার বানানো হতো৷ আর অপরাধীর চামড়া ঐ হাতিয়ার দিয়ে খুবলে নেয়া হতো৷ চামড়ায় সংক্রমণের কারণে ঐ ব্যক্তির মৃত্যু ছিল অবধারিত৷
ছবি: fotolia
ক্যাথরিন হুইল
অপরাধীকে চাকার সঙ্গে বেঁধে দেয়া হতো৷ আর জল্লাদ ঐ চাকা ঘুরাতে থাকত, পাশাপাশি লাঠি দিয়ে প্রহার করতো৷ ফলে হাড্ডি ভেঙে ঐ ব্যক্তির মৃত্যু হতো৷
ছবি: Reuters/J. Young
9 ছবি1 | 9
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন আব্দুল আজিজ মিয়া, মো. রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু, আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী, মো. নাজমুল হুদা ও মো. আব্দুর রহিম মিঞা এবং আব্দুল লতিফ৷ তবে রায় ঘোষণার সময় শুধু আব্দুল লতিফ কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন৷ বাকিরা এখন পলাতক৷ ট্রাইব্যুনালের রায়ে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করে সাজা কার্যকর করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে৷
নিয়ম অনুযায়ী রায় ঘোষণার এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে৷
আদালতে উপস্থিত একমাত্র আসামি আব্দুল লতিফের আইনজীবী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি আপিল করবেন৷ পলাতক পাঁচ আসামিকে আপিল করতে হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হবে৷
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত ২৯টি মামলার রায় হয়েছে৷ মামলাগুলোর ৬২ জন আসামির মধ্যে তিন জন বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান৷ বাকি ৫৯ জনের সাজা হলেও ৩৬ জন যুদ্ধাপরাধীকে সর্বোচ্চ সাজা, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে৷