1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাকিস্তান-অ্যামেরিকা

২২ মে ২০১২

আশা ছিল আলাদাভাবে বৈঠকে বসবেন দু’জন আলোচনা হবে ন্যাটোর সরবরাহ লাইন, আল-কায়েদা নিধনের পদ্ধতি নিয়ে৷ কিন্তু তেমন কিছু হয়নি৷ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জারদারিকে একরকম প্রত্যাখানই করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷

ছবি: Reuters

ওবামার নিজের শহর শিকাগোতে অনুষ্ঠিত হলো দু'দিনব্যাপী ন্যাটো সম্মেলন৷ পাকিস্তান ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র নয়৷ কিন্তু আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় পাকিস্তানের গুরুত্ব সবসময়ই আলাদা৷ মোটের উপর আফগানিস্তানে নিযুক্ত বিদেশি সেনাদের জন্য রসদ পরিবহনের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুট এই পাকিস্তানের মধ্য দিয়েই৷ তাই আফগানিস্তান ইস্যুতে পাকিস্তানকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই৷

প্রত্যাখিত পাকিস্তানি প্রেসিডেন্টছবি: Reuters

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য পাকিস্তানকে ‘খুশি' রাখার কম চেষ্টা করেনি৷ তালেবান, আল-কায়েদার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে বিভিন্ন সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পেয়েছে পাকিস্তান৷ কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদেশগুলো যাকে বছরের পর বছর হন্যে হয়ে খুঁজেছে, সেই ওসামা বিন লাদেন ‘আত্মগোপন' করে ছিল পাকিস্তানেই৷ মার্কিন সেনারা অবশ্য গত বছর লাদেনকে পাকিস্তানের মাটিতে হত্যায় সক্ষম হয়৷ কিন্তু সেই ঘটনা পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বিশ্বাসে এক বড় ধাক্কা ছিল৷

অন্যদিকে সেবছরের শেষের দিকেই আরেক অঘটন ঘটালো মার্কিন সেনারা৷ পাকিস্তানের ভেতরে মার্কিন হামলায় প্রাণ হারায় ২৪ পাকিস্তানি সেনা৷ প্রতিবাদ হিসেবে ন্যাটোর রসদ সরবরাহের লাইন বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান৷ ধারণা করা হচ্ছিল, শিকাগো সম্মেলনে পাকিস্তানি প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানালে সরবরাহ লাইন পুনরায় চালুর পথ প্রশস্ত হবে৷ কিন্তু তা আর হলো কোথায়? বরং পাকিস্তান এখন রসদ সরবরাহের লরি প্রতি বিপুল অর্থ দাবি করছে৷ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তার বরাতে বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, আগে লরি প্রতি ট্রানজিট ফি ছিল ২৫০ মার্কিন ডলার, সেটা এখন ৫০০০ ডলার করতে চায় পাকিস্তান৷ শুধু তাই নয়, গত বছর মার্কিন হামলায় পাকিস্তানি সেনা নিহতের ঘটনায় ক্ষমা চাইতে হবে সেদেশকে, এমনটাও দাবি  পাকিস্তানের৷ বলাবাহুল্য, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের এসব দাবির কোনটি মানতে সম্মত নয়৷ ট্রানজিট ফি বড়জোর ৫০০ ডলার করতে চায় সেদেশ৷ আর পাকিস্তানি সেনা মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করলেও ক্ষমা চাইবে না যুক্তরাষ্ট্র৷

ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের অতিথীরাছবি: picture-alliance/dpa

দুই দেশের মধ্যকার এই কঠোর অবস্থানের ছায়া পড়ল শিকাগো সম্মেলনে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর ভাষণে পাকিস্তানকে পরিষ্কারভাবে এড়িয়ে গেলেন৷ বরং স্বাগত জানালেন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইকে, এশিয়ার কেন্দ্রীয় অঞ্চলের এবং রাশিয়ার প্রতিনিধিদের৷ জারদারির সঙ্গে আলাদা কোন বৈঠকেও অংশ নেননি ওবামা৷ সোমবার একটি বড় গ্রুপ বৈঠকের এক ফাঁকে ওবামা, কারজাই এবং জারদারিকে আলোচনা করতে দেখা গেছে৷ যদিও কারজাই পরিবর্তীতে সিএনএন'এর কাছে আলোচনার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন, বরং জানিয়েছেন সেটা ছিল শুধু ‘ছবি তোলা'র ব্যাপার৷

ওবামার এই প্রত্যাখানে অবশ্য বিস্মিত নয় পাকিস্তান৷ জারদারির মুখপাত্র ফারহাতুল্লাহ বাবর সাংবাদিকদের এই বিষয়ে বলেন, গত ছয় মাস ধরে পাকিস্তান অংশে ন্যাটোর সরবরাহ লাইন বন্ধ আছে৷ এমতাবস্থায় আমাদের তরফ থেকে এমন কোন প্রত্যাশা ছিল না যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ন্যাটোর সরবরাহ লাইন বন্ধের প্রশংসা এবং তারিফ করবেন৷

এদিকে, ন্যাটো জানিয়েছে আফগানিস্তানে তাদের কম্ব্যাট মিশন অর্থাৎ সামরিক অভিযান ২০১৩ সালের মাঝামাঝি নাগাদ শেষ হবে এবং সেনা প্রত্যাহার শেষ হবে ২০১৪ সালের মধ্যে৷ তবে সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানকে বিপুল অর্থ সহায়তা প্রদান করবে বিভিন্ন দেশ৷ এসংক্রান্ত চূড়ান্ত প্রতিশ্রুতি আসতে পারে আগামী জুলাইয়ে টোকিও সম্মেলন থেকে৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম (এপি/এএফপি)
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ