1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মরণকূপে খেলা দেখানো

২৫ নভেম্বর ২০১৬

দেশে বলে মরণকূপ, ইংল্যান্ডে ওয়াল অফ ডেথ৷ তেলের পিপের আকৃতির কাঠের কুয়োটিতে মোটরসাইকেলে চড়ে চক্কর দেবে এক বা একাধিক আরোহী৷ মেলা বা সার্কাসের পুরনো খেল, ইউরোপেও আজ পর্যন্ত যার চল৷

DW Euromaxx 13.09.2016 Demon Drome
খেলা দেখাচ্ছেন বাবা ও ছেলেছবি: DW

কুয়ায় মোটর সাইকেলে খেলা দেখান তিনি ও তাঁর ছেলে

04:30

This browser does not support the video element.

দেশের মেলা কিংবা সার্কাসেও হয়ত দেখে থাকতে পারেন৷ সেখানে এর নাম মরণকূপ৷ ইংরেজিতে ওয়াল অফ ডেথ, অর্থাৎ মরণের দেয়াল৷ কুয়োর আকৃতির সেই দেয়াল বেয়ে কাত হয়ে ঘুরছে মোটরসাইকেল৷

ডেভ সিমুর পরিচিত ‘ডিনামাইট ডেভ' নামে৷ তিনি আর তাঁর ছেলে ডিউক এই মরণকূপকেই তাদের পেশা করেছেন, নাম রেখেছেন ডেমন ড্রোম, অর্থাৎ শয়তানের ঘাঁটি৷ খাড়া দেয়ালের গায়ে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে মোটরসাইকেল চালালে শরীরের উপর মাধ্যাকর্ষণের পাঁচগুণ বেশি চাপ পড়ে৷ ডেভ বলেন, ‘‘দেখতে সোজা মনে হলেও, কাজটা সোজা নয়৷ জোরে চালালে প্রথমেই বোঝা যায়, রক্তটা মাথার দিক থেকে পায়ে গিয়ে জমা হচ্ছে৷ আরো বেশি জোরে চালালে চোখে সর্ষেফুল দেখতে হয়৷'' ডিউক সিমুর যোগ করলেন, ‘‘টানেল ভিশন হয়, যেন সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে দেখছি৷ যেন জুম করা হচ্ছে৷ ভালো ব্যাপার নয়৷ আবার বড্ড স্লো চালালে পড়ে যাবার ভয় থাকে৷’’

সিমুর পরিবার প্রতিবছর গোটা ইউরোপ জুড়ে সফর করেন৷ এবার তারা দক্ষিণ ইংল্যান্ডের গুডউড রিভাইভাল শো নামের ওল্ডটাইমার ফেস্টিভালে তাঁবু গেড়েছেন৷ মরণকূপ খেলাটির জন্ম ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে৷ গোড়ায় হতো সাইকেলে চড়ে! গত শতাব্দীর বিশের দশকে সাইকেলের বদলে মোটর সাইকেল ব্যবহার শুরু হয়৷ তারপর ওয়াল অফ ডেথ খেলাটা ক্রমেই আরো বেশি পিলে-চমকানো হতে থাকে৷ ত্রিশের দশকে ইউরোপে প্রায় শ'খানেক ওয়াল অফ ডেথ মানুষের মনোরঞ্জন করছিল৷

দন্তহীন সিংহ?

ডেভ সিমুর জানালেন, ‘‘ওয়াল অফ ডেথ-এর সংখ্যা বাড়ে, কাজেই প্রতিযোগীদের চেয়ে আরো ভালো শো দেখাতে হবে, আরো বিপজ্জনক সব ক্যায়দা-কেরামতি৷ এমনকি ওরা সিংহ আনাতে শুরু করে৷ তাদের বসিয়ে রাখার জন্য আফিম দেওয়া হতো কিনা কে জানে৷ অধিকাংশ সিংহের দাঁত ছিল না বলেই আমার ধারণা৷''

১৯২৭ সালে তৈরি ডেমন ড্রোম ২০০০ সালে বিক্রি করা হচ্ছিল৷ ডেভ সিমুর শুধু মোটরসাইকেলগুলো কিনতে চেয়েছিলেন, মরণকূপটি সাথে ফ্রি-তে পান৷ ডেভ আর তাঁর ছেলে কিন্তু ইতিমধ্যে সেই মরণকূপের ফ্যান হয়ে পড়েছেন৷ ডিউক সিমুর বললেন, ‘‘১৪ বছর বয়স থেকে এই করছি৷ মোটরসাইকেল চালাতে চালাতে লোকের দিকে তাকাতে পারি, হাসতে পারি৷'' ডেভ সিমুর যোগ করলেন, ‘‘মোটরসাইকেল চালাতে পারা এক কথা৷ কিন্তু চালাতে চালাতে হাসা, দর্শকদের সাথে কথা বলা, রীতিমতো পারফরমেন্স দেওয়া আরেক কথা৷''

ক্লাইম্যাক্স হলো, ডেভ সিমুর তাঁর কন্যাকে স্টিয়ারিং-এর ওপর বসিয়ে মরণকূপে চক্কর দেবেন৷ রোমহর্ষক খেলা দেখার পর দর্শকরা মরণকূপে পয়সা ছুঁড়ে দেয়, দুর্ঘটনা হলে চিকিৎসার খরচ, কেননা কোনো বীমা কোম্পানি সিমুরদের ইনসিওর করবে না৷ ডেভ আর ডিউক ইতিমধ্যেই একাধিকবার হাত-পা ভেঙেছেন৷ কিন্তু সিমুর পরিবার এই বিপজ্জনক পেশা ছেড়ে দেবার কথা ভাবেন না৷ একটানা নিজেদের কোরিওগ্রাফি বাড়িয়ে চলেছেন তারা৷ স্বহস্তে তৈরি একটি রেসিং কার নিয়ে মরণকূপে চক্কর দেবার পরিকল্পনা আছে, তাই কূপের কাঠের দেয়ালগুলোকে আরো শক্ত করা হয়েছে৷

প্রায় নব্বই বছরের পুরনো ডেমন ড্রোমে ডেভ আর ডিউক সিমুর আজও মোটরসাইকেলে চড়ে চক্কর কেটে চলেছেন...

প্রতিবেদন: গেরহার্ড সনলাইটনার/এসি

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ