মায়েরাই সবচেয়ে ভালো জানেন৷ এই কথাটি কে না শুনেছেন৷ অনেকে মানেন, অনেকে মানেন না৷ মা সন্তানের প্রতি কঠোর হন কেন? কারণ, তিনি তাঁর সন্তানের ভালো চান৷ এমনই এক বিজ্ঞাপনের ভিডিও ফেসবুক মাতিয়ে বেড়াচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
মায়েরা কেন যেন এমনই হন৷ সন্তানের জন্য কী না করেন৷ কখনো ভালোবাসার চাদরে আগলে রাখেন৷ কখনো হন ইস্পাত কঠিন৷
সন্তানের কোনো কোনো ভুল এমনিই ভুলে যান৷ আবার কোনো কোনো ভুলের জন্য শক্ত হয়ে প্রতিবাদ করেন৷ শুধরে দিতে যা করার তা-ই করেন৷ তা সন্তানের কাছে নিষ্ঠুর মনে হতেই পারে৷ কিন্তু সেই নিষ্ঠুরতার জন্য মা নিজেই কতটা কষ্ট পান তা কি আর কেউ উপলব্ধি করতে পারেন?
শিশুর চোখে ঘুম নেই কেন?
শিশুর ভালো ঘুম না হলে ওর স্বাস্থ্যের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি মা-বাবা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারে না৷ ঘুম তো সকলের জন্যই জরুরি৷ আর ভালো ঘুমের জন্য প্রয়োজন অভ্যাস গড়ে তোলা এবং তা একেবারে শিশু বয়স থেকেই৷ কীভাবে করবেন তা জেনে নিন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শিশু বয়স থেকেই ঘুমের ‘ট্রেনিং’ প্রয়োজন
ঘুমের সমস্যা নিয়ে কোনো কথা হলে মানুষ ধরেই নেয় যে, তা বড়দের ব্যাপার৷ তবে ঘুমের অভ্যাস কিন্তু তৈরি করতে হয় শৈশবেই৷ না হলে পরে বা বড় হলে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়৷ কারণ, সুস্থ থাকার জন্য ঘুম অত্যন্ত জরুরি৷ তাই যে কোনো মানুষেরই ভালো ঘুমের জন্য শৈশব থেকেই ‘ট্রেনিং’ বা নিয়মিত অভ্যাস করা প্রয়োজন বলে জানান জার্মানির শিশু বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: YouTube/BruBearBaby
নিরিবিলি পরিবেশ
একেবারে অন্ধকার ঘরে শিশুরা ঘুমোতে বা একা থাকতে ভয় পায়৷ তাই শিশুর ঘরে রাতে একটি ‘ডিম লাইট’ জ্বালিয়ে রাখা কিংবা দরজা একটু ফাঁক রাখা জরুরি৷ দরজাটা ফাঁক করে রাখলে পাশের ঘর থেকে কিছুটা আলো বা হালকা শব্দ আসতে পারে৷ এর ফলে শিশু ভয় না পেয়ে সেভাবেই ঘুমাতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
টেডি বেয়ার বা কাপড়ের খেলনা
শিশুর জন্মের পর থেকেই ওর বিছানার পাশে একটি টেডি বেয়ার বা কাপড়ের তৈরি কোনো খেলনা রাখুন৷ ইচ্ছে করলেই যেন শিশুটি তা ওর বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে ধরতে পারে৷ তবে খেলনার কাপড় যেন ‘অ্যান্টি অ্যালার্জি’ হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মিউজিক বা গান
ফিতা ধরে হালকা টান দিলেই মিউজিক বা গান বাজে, এরকম একটি রঙিন খেলনা ঘড়ি শিশুর বিছানার ওপর ঝুলিয়ে রাখতে পারেন৷ ঘুম ভেঙে গেলে যে শিশু কান্না শুরু করে, তা থেকে তাকে দূরে রাখার জন্য বেশ কাজে দেয় এই খেলনা ঘড়ি৷
ছবি: Horst Krauth
প্রথমেই কোলে তুলবেন না
শিশু বিছানায় একটু কাঁদলেই অনেকে সাথে সাথে কোলে তুলে নেয়৷ আসলে তা না করে প্রথমে শিশুর গায়ে বা মাথায় একটু হালকাভাবে হাত বুলিয়ে দিন, কিংবা ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে আদর করে কিছু বলুন, দেখবেন তাতেই হয়তো শিশু আবার ঘুমিয়ে যাবে৷ এভাবে কাজ না হলে অবশ্যই কোলে তুলে নিতে হবে৷
ছবি: imago/imagebroker
সুশৃঙ্খল জীবন যাপন
জার্মানরা বিশ্বে সুশৃঙ্খল জাতি হিসেবে পরিচিত৷ জার্মানিতে একটা কথা প্রচলিত আছে যে, ‘অর্ডনুং ইস্ট ডাস হালবে লেবেন’, যার অর্থাৎ নিয়মমাফিক চললে জীবন অনেক সহজ হয়ে যায়৷ প্রতিদিন একই সময়ে একই কাজ করা হলে মানুষ সেভাবেই কিন্তু অভ্যস্ত হয়ে যায়৷ তাই শিশু বয়স থেকেই ঘুম, খাওয়া-দাওয়া বা বই পড়ার মতো জরুরি কিছু বিষয়ে অভ্যাস তৈরি করা উচিত৷ পরবর্তী জীবনে এসবের সুবিধা পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/ZB/P. Pleul
শিশুকে ‘পান’ করান
শিশু যেন দিনের বেলায় যথেষ্ট ক্যালোরিযুক্ত খাবার খায় এবং তরল পান করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷ কারণ, ক্যালোরি ও পানির অভাবেও অনেক সময় শিশুর ঘুম ভেঙে যেতে পারে বা সময়মতো ঘুম না আসতে পারে৷ তাছাড়া দিনের বেলায় ভীতিকর কোনো ঘটনা দেখলেও রাতে শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa-Zentralbild
জার্মানিতে যা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়
জার্মানিতে গ্রীষ্মকালে রাত দশটা- সাড়ে দশটার দিকে, অর্থাৎ বেশ দেরিতে অন্ধকার হয়৷ অনেক মা-বাবা অন্ধকার হওয়ার আগেই বাচ্চার ঘরের জানালার শাটার ফেলে দিয়ে শিশুকে ঘুম পাড়িয়ে দেয়৷ এর ফলে শিশুর পর্যাপ্ত ঘুম হয় এবং পরের দিন সকালে সময়মতো উঠে কিন্ডারগার্টেনে যেতে পারে৷
ছবি: Fotolia/auremar
8 ছবি1 | 8
সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপনচিত্রটি ভারতের৷ একটি মশক নিধন পণ্যের প্রস্তুতকারক কোম্পানি বানিয়েছে৷ এটি ফেসবুকে পোস্ট করার দু'দিনের মধ্যে এর ভিউ এক কোটির কাছাকাছি চলে যায়৷ শেয়ার করা হয় প্রায় আড়াই লাখ বার৷ কমেন্ট পড়েছে প্রায় নয় লাখ৷ বিজ্ঞাপনচিত্রটি প্রায় চার মিনিটের৷ সেখানে দেখা যায়, একটি যৌথ পরিবারের সবাই একসঙ্গে খেতে বসেছেন৷ পরিবারের ছেলের স্ত্রী নিজে না খেয়ে সবাইকে খাওয়াচ্ছেন৷ সেই টেবিলে তাঁর ছেলে শিশু সন্তানটিও রয়েছে, যে কিনা বারবার খাবারের থালাটি সরিয়ে দিচ্ছে৷
মা কয়েকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পরে থালাটি সরিয়ে রাখেন৷ মায়ের এমন ‘নিষ্ঠুর’ আচরণে পরিবারের সবাই তাঁকে ভালোমন্দ বলতে থাকেন৷
কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যায়, শিশুটি তার মায়ের ব্যাগ থেকে দশ টাকা চুরি করেছে৷ এত ছোট অপরাধের জন্য কেন এত কঠিন সাজা দেয়া হচ্ছে তা নিয়ে সবাই কথা শোনাচ্ছেন শিশুটির মা’কে৷
ঠিক তখনই বাড়ির সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ লোকটি সবাইকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, শিশুটির মা যা করছেন, তা ঠিকই করছেন৷
ভিডিওটির মূল মেসেজটি হলো, ‘‘যখন আপনি দেখবেন একজন মা কঠোর হচ্ছেন, তাঁর পাশে দাঁড়ান৷’’