1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

৫০ কোটি টাকার ‘মানহানি', কিরণ এখনো কারাগারে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৮ মার্চ ২০১৯

প্রধানমন্ত্রীকে ‘কটূক্তির' মামলায় কারাগারে আটক বাফুফে এবং ফিফার সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণ৷ মামলার বাদী ক্রিকেট বোর্ডের এক সাবেক কর্মকর্তা৷ কী বলেছিলেন কিরণ? তাতে ক্রিকেট কর্মকর্তার কেন ৫০ কোটি টাকার মানহানি হলো?

Bangladesh Sheikh Hasina Regierungschefin
ছবি: Oli Scarff/Getty Images

অপরাধ কী তাই এখনো জানতে পারেননি তাঁর আইনজীবী৷ গত তিন দিনেও তিনি জামিন আবেদনের জন্য মামলার নথি পাননি৷

প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির অভিযোগে দায়ের করা মানহানির মামলায় কিরণকে আটক করা হয় গত ১৬ মার্চ৷ ওইদিনই মূখ্য মহানগর হাকিম তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠান৷

এর আগে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কটূক্তি করার অভিযোগে ১২ মার্চ কিরণের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা করেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্স৷ ওই দিনই ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারী মামলাটি আমলে নিয়ে কিরণের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন৷ আর ১৬ মার্চ সকালে পুলিশ তাঁকে তাঁর ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়৷ কিরণ বাফুফে'র নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান ও ফিফার সদস্য৷

মামলার অভিযোগ প্রকাশ করাও আরেক ধরণের মানহানি তাই করছিনা: রেফায়েতুল করিম লেলিন

This browser does not support the audio element.

কিরণের বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের করা মামলায় কী অভিযোগ করা হয়েছে তা প্রকাশ করতে চাননি মামলার বাদী আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্সের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেফায়েতুল করিম লেলিন৷ তবে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গত ৮ মার্চ বাফুফে কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কিরণ বলেন, ‘‘পিএম হিসেবে সব খেলাই তাঁর কাছে সমান৷ সেখানে কেন দু'চোখে দেখবে? মেয়েরা ব্যাক টু ব্যাক চ্যাম্পিয়ন৷ গিফট তো পরের কথা, অভিনন্দন তো দিতে পারে! মিডিয়াতে কি কোনো অভিনন্দন জানাইছে? বিএফএফের টাকা  কেন প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে দেয়াবো? বিসিবির অনেক স্বার্থ আছে, বিসিবি সরকারের অনেক ফ্যাসিলিজিট নেয়, চুন থেকে পান খসলেই প্লট পেয়ে যায়, গাড়ি পেয়ে যায়, বিএফএফ সরকারের কাছ থেকে কোনো ফ্যাসিলিটিজ নেয় না৷'' এই বক্তব্য কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন, অনলাইন এবং দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে৷ মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে হীন মানসিকতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও বাংলাদেশ ফুটবল সংগঠকদের মানহানির উদ্দেশ্যে কিরণ ওইসব কথা বলেছেন৷'' তাঁর এই বক্তব্যে বাদীর ৫০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে৷

দন্ডবিধির ৫০০ ধারায় করা জামিনযোগ্য মামলা হলেও জামিন দেয়া হয়নি: লিয়াকত হোসেন

This browser does not support the audio element.

কিরণের আইনজীবী অ্যাডভোকেট লিয়াকত হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মামলাটি দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় করা৷ এটা জামিনযোগ্য মামলা৷ কিন্তু জামিন দেয়া হয়নি৷ জামিন না দেয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মামলার মূল নথি পাওয়া যায়নি৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো ন্যায়বিচার পাচ্ছি না৷ তাঁর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, তিনি জামিন পেলে বাদীর কোনো ক্ষতি করতে পারেন কিনা, তিনি পালিয়ে যাবেন কিনা, তাঁর সামাজিক অবস্থান কেমন– জামিনে এসব বিবেচনা করা হয়৷ এসব বিবেচনায় তো তিনি জামিন পান৷''

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপারে কটূক্তি৷ কিন্তু তাতে কার মানহানি হলো? মামলার বাদী, না প্রধানমন্ত্রীর? কী মানহানি হলো? তার কিছুই আমরা এখনো জানতে পারিনি৷ কারণ, আমরা এখনো মামলার নথিই পাইনি৷ আমরা নথির জন্য নানা টেবিলে ঘুরছি৷ আজ (সোমবার) সিএমএম আদালতেও আমরা বিষয়টি উল্লেখ করেছি৷''

বাদীর আইনজীবী ব্যারিস্টার রেফায়েতুল করিম লেলিন বলেন, ‘‘মামলার অভিযোগে কী আছে তা প্রকাশ করাও আরেক ধরনের মানহানি৷ তাই তা আমি প্রকাশ করছি না৷ তবে মামলাটি জামিনযোগ্য৷ এখন আদালত কী কারণে জামিন দেননি তা তো আমি বলতে পারবো না৷ হয়ত পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন থাকতে পারে৷ অথবা বাদী কোনো ধরনের থ্রেটের মুখে আছেন কিনা, তা আমি এখনো জানি না৷'' নূর খানকারকর্মী  এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যৌক্তিক সমালোচনাকে আমলে না নিয়ে মামলা করে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া আইনের শাসনের পরিপন্থি৷ এটা এক ভয়ার্ত পরিবেশের সৃষ্টি করে বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করে৷ কিছু মানুষ এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে৷ তারা চারপাশে থেকে এমন পরিবেশ তৈরি করছে, যাতে যৌক্তিক সমালোচনার পথও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে৷ তারা এমন অবস্থার তৈরি করছে, যাতে কিছু মানুষের ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না৷ যৌক্তিক কথাও বলা যাবে না৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘চারপাশের কিছু মানুষ এখন স্তাবকে পরিণত হয়েছে৷ তারাই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করছেন৷''

যৌক্তিক সমালোচনাকে আমলে না নিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া আইনের পরিপন্থী: নূর খান

This browser does not support the audio element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ