রবিবার জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে ১০ বছর পূর্ণ করছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ কিছু দিন আগে পর্যন্ত তাঁর আধিপত্য নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠতো না৷ অথচ আজ তিনি উদার শরণার্থী নীতির কারণে নিজের শিবিরেই চাপের মুখে পড়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
সাবেক পূর্ব জার্মানির এক যাজকের সন্তান থেকে জার্মানির প্রথম নারী চ্যান্সেলর এবং ইউরোপ তথা বিশ্বের প্রথম সারির শক্তিশালী নেতাদের অন্যতম৷ এই জয়যাত্রা এই প্রথম প্রতিরোধের মুখে পড়েছে৷ শরণার্থীদের ঢলের সামনে তিনি যে উদারতা দেখিয়েছেন, সেই কারণে এমনকি নিজের দল তথা রাজনৈতিক শিবিরের মধ্যে তিনি খোলামেলা সমালোচনার মুখে পড়ছেন৷ অথচ কিছুকাল আগে পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলার মতো কোনো নেতা থাকতে পারেন – এমনটা কল্পনাই করা যেত না৷ এই প্রতিরোধ সামলে উঠে ম্যার্কেল কি তাঁর হারানো জায়গা ফিরে পেতে পারবেন? এই বিষয়ে চলছে তুমুল জল্পনা-কল্পনা৷
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সম্পর্কে নানা তথ্য তুলে ধরেছে জার্মানির ‘ডি ভেল্ট' সংবাদপত্র৷ তাতে একটি ব্যঙ্গচিত্রও ব্যবহার করা হয়েছে৷
সংবাদ সংস্থা ডিপিএ শরণার্থী নীতির প্রশ্নে ম্যার্কেল-এর বর্তমান চ্যালেঞ্জ নিয়ে এক বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷
চ্যান্সেলর হিসেবে ম্যার্কেল-এর এক দশক সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এএফপি-ও৷
ম্যার্কেল-এর ১০ বছরের ক্ষমতাকাল মেঘাচ্ছন্ন – লিখেছে ‘দ্য লোকাল জার্মানি'৷
শরণার্থীদের প্রিয় জার্মানি, আরো প্রিয় ম্যার্কেল
শরণার্থীদের নিয়ে একটা ছবি সবারই নজর কেড়েছে৷ প্ল্যাকার্ড হাতে এক শিশু, প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘‘উই ওয়ান্ট জার্মানি’’৷ অনেকেই এসে পৌঁছেছেন তাঁদের কাঙ্খিত ঠিকানা জার্মানিতে৷ পছন্দের মানুষ ম্যার্কেলের দেশে এসে খুশি তাঁরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Bernd von Jutrczenka
জার্মানিকে চাই...
সেই ছবি৷ বুদাপেস্টে তখন শরণার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে৷ অস্ট্রিয়া বা জার্মানির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করতে না পারায় তাঁরা ক্ষুব্ধ৷ সবাই ছুটছিলেন প্ল্যাটফর্মের দিকে৷ পুলিশ ফিরিয়ে দিলো৷ স্টেশনের বাইরে শুরু হলো বিক্ষোভ৷ কারো কারো হাতে তখন ট্রেনের টিকিট৷ কেউ ক্ষোভ জানালেন কোলের সন্তানকে নিয়ে৷ অনেক শিশুর হাতে দেখা গেল, ‘উই ওয়ান্ট জার্মানি’ লেখা কাগজ৷ ইউরোপে এত দেশ থাকতে কেন জার্মানি?
ছবি: Reuters/L. Foeger
আছে নব্য নাৎসি, পুড়েছে শরণার্থী শিবির, তবুও...
জার্মানির কোথাও কোথাও শরণার্থীবিরোধী বিক্ষোভ দেখা গেছে৷ অনেক জায়গায় রাতের অন্ধকারে আশ্রয় শিবিরে লেগেছে আগুন৷ তারপরও অভিবাসনপ্রত্যাশীরা জার্মানিকেই বেছে নিতে চায়৷
ছবি: Getty Images/M. Rietschel
বড় কারণ ম্যার্কেল এবং...
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ব্যাপারে শুরু থেকেই উদার জার্মানি৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেল সবসময়ই অভিবাসী এবং অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পাশে ছিলেন৷ পেগিডা আন্দোলনের সময়ও সরকারের অভিবাসীদের পাশে থাকার কথা স্পষ্ট করেই বলেছেন ম্যার্কেল৷ পাশে থেকেছেও৷ জার্মানির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষও ছিল তাঁর পাশে৷ এখনও আছে৷ এই বিষয়গুলোও মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মনে জার্মানির প্রতি আরো আস্থাশীল করেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NDR
তোমাদের স্বাগত
অভিবাসনপ্রত্যাশীরা জার্মানিতে পা রেখেই দেখেছে অবাক হওয়ার মতো দৃশ্য৷ এখানে তাঁরা অনাহূত নয়৷ নিজের দেশ থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসে জার্মানিতে পাচ্ছেন সাদর সম্ভাষণ!
ছবি: Getty Images/A. Beier
জার্মানির নেতৃত্বে ম্যার্কেল, ইউরোপের নেতৃত্বে জার্মানি
বৃহস্পতিবার আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, শরণার্থীদের বিষয়ে জার্মানির ভূমিকা হতে হবে অনুসরণীয়, দৃষ্টান্তমূলক৷ জার্মানির সংসদের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগে বক্তব্য রাখার সময় তিনি আরো বলেন, অভিবাসন সংকট মোকাবেলায় ইউরোপকেও সফল হতে হবে৷
দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর মানুষটিকে শরণার্থীরা নিজেদের একজন হিসেবেই বরণ করে নিয়েছিলেন৷ শরণার্থীদের সঙ্গে বন্ধুর মতোই সময় কাটিয়েছেন ম্যার্কেল৷ কয়েকজন শরণার্থী তাঁর সঙ্গে সেলফি তুলতে চেয়েছিলেন৷ সানন্দে তাঁদের আশা পূরণ করেছেন ম্যার্কেল৷