এক নজরে নির্বাচন
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩![ARCHIV - Ein Stimmzettel zur Bundestagswahl wird am Sonntag (27.09.2009) in Berlin in einem Wahlraum in eine Urne gesteckt. Das Bundesverfassungsgericht hat zentrale Bestimmungen des Wahlrechts für Bundestagswahlen mit sofortiger Wirkung für ungültig erklärt. Damit muss noch vor der Bundestagswahl im kommenden Jahr ein neues Wahlrecht beschlossen werden. Foto: Jens Wolf dpa +++(c) dpa - Bildfunk+++](https://static.dw.com/image/16311813_800.webp)
প্রতিদ্বন্দ্বীর পক্ষে নির্বাচনি লড়াইটি সহজ কাজ নয়৷ আসলে তিনিই হলেন সঠিক সময়ে সঠিক মানুষ৷ অর্থনীতিতে বিশেষজ্ঞ স্টাইনব্রুক জার্মানির কোষাগারের অবস্থাটা ভালোভাবে জানেন৷ গত সরকারের আমলে আঙ্গেলা ম্যার্কেলের বৃহৎ কোয়ালিশনে অর্থমন্ত্রী ছিলেন তিনি৷ এবার তিনি নিজের বসকেই পরাজিত করতে চান৷ তাঁর তেজোদীপ্ত কণ্ঠেও শোনা যায় সেকথা: ‘‘আমি সারা জার্মানির চ্যান্সেলর হতে চাই৷''
তবে এই ‘ডুয়েল'-টি অসম বলেই মনে হচ্ছে সবার কাছে৷ জরিপে দেখা গেছে, চ্যান্সেলর ম্যার্কেল সব দিক দিয়েই এগিয়ে আছেন স্টাইনব্রুকের চেয়ে৷
সব দিক দিয়েই এগিয়ে আছেন ম্যার্কেল
এর অনেকগুলি কারণ রয়েছে৷ ম্যার্কেল এখন তাঁর ক্ষমতার শিখরে৷ নিজের দলও এখন তাঁর হাতের মুঠোয়৷ ইউরো সংকট ও ঋণ সমস্যা ‘ম্যানেজ' করছেন তিনি দৃঢ়তার সাথে৷ প্রভাবিত করছেন ব্রাসেলস-এর রাজনীতিকে৷ এ কারণে অধিকাংশ জার্মানই সম্মানের চোখে দেখে তাঁকে৷ বিরোধী এসপিডি এক্ষেত্রে তেমন সমালোচনা করতে পারছে না৷ এই প্রসঙ্গে কমিউনিকেশন বিজ্ঞানী ক্রিশ্টোফ মোস বলেন, ‘‘এসপিডি বলে সব কিছুই খারাপ চলছে৷ কিন্তু জার্মানরা তো এখন বেশ সন্তুষ্ট৷''
ভোটাররা শুধু সমালোচনা শুনতে চায় না৷ তারা জানতে চায় স্টাইনব্রুক জয়ী হলে ম্যার্কেলের চেয়ে কী ভালো করবেন৷
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও জার্মানি যে আজ শক্ত অবস্থানে থাকতে পারছে, তার ভিত রচনা হয়েছে কিন্তু এসপিডি-র শাসনামলেই৷ চ্যান্সেলর গেয়ারহার্ড শ্র্যোডারের সংস্কার প্রকল্প ‘অ্যাজেন্ডা ২০১০' সেসময় জনপ্রিয় না হলেও আজ তার ইতিবাচক ফল ভোগ করছে জার্মানরা৷ শ্রমিক বান্ধব পার্টি সামাজিক গণতন্ত্রী দলের সরকারের পক্ষে এই অপ্রিয় পদক্ষেপ নেওয়া সহজ ছিল না৷ জনকল্যাণমূলক অনেক কিছুই কাটছাঁট করা হয়েছে ‘অ্যাজেন্ডা ২০১০'-এ৷ সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে, বেকারভাতা কমানো হয়েছে, পেনশনের বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছে৷ এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ওপর আর্থিক চাপ কমানো হয়েছে৷ অন্যদিকে এই চাপটা জনগণের ঘাড়ে এসে পড়েছে৷ বিশেষ করে এসপিডির অনুসারীরা বিরাগভাজন হয়ে ওঠেন এই কারণে এবং অনেকেই দল ত্যাগ করেন৷
এসপিডি নিজেই দূরে সরে এসেছে
এই প্রসঙ্গে হাইডেলব্যার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ এডগার্ড ভলফ্রুম বলেন, ‘‘সমস্যাটা হলো এসপিডি নিজেই তার আগের সরকারের আমলের এই সংস্কার প্রকল্পের ধ্যানধারণা থেকে দূরে সরে এসেছে৷''
পেয়ার স্টাইনব্রুক এই সংস্কার প্রকল্পের একজন সমর্থক ছিলেন৷ বিস্ময়কর হলো, আজ এসপিডি-র চেয়ে সিডিইউ, সিএসইউ এবং এফডিপি-তে অ্যাজেন্ডা ২০১০-এর সমর্থক বেশি পাওয়া যায়৷ আঙ্গেলা ম্যার্কেলও এই সংস্কার থেকে লাভবান হচ্ছেন৷
এছাড়া নির্বাচনি কর্মসূচিতে দুই বড় দলের মধ্যে খুব কমই পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়৷ এর ফলে স্টাইনব্রুকের চ্যালেঞ্জটা আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারছে না৷ এসপিডি চায় শ্রমের নূনতম মজুরি ৮.৫০ ইউরো ধার্য করতে৷ খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ও খ্রিষ্টীয় সামাজিক ইউনিয়ন এর বিরুদ্ধে৷ তাদের মতে, আইনগত বিধিবিধানে আবদ্ধ না রেখে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের হাতেই পারিশ্রমিকের ব্যাপারটা ছেড়ে দেওয়া উচিত৷ সামাজিক গণতন্ত্রীরা চায় বিত্তশালীদের করের পরিমাণ বাড়াতে৷ ইউনিয়নের পরিকল্পনা রাষ্ট্রের ঋণ কমানো৷ কর না বাড়ানো৷ এই অল্প কিছু পার্থক্য ছাড়া জার্মানির রাজনৈতিক অঙ্গন এখন মধ্যপন্থাতেই আবর্তিত হচ্ছে৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের কণ্ঠেও এই রকম সুর শোনা যায়৷ ‘‘কর্মসূচিটা হলো পরিমিতি ও মধ্যস্থান৷ নাগরিক ও অর্থনীতির ওপর অতিরিক্ত কোনো চাপ দেওয়া হবে না৷''
নির্বাচনের মাঠ গরম হচ্ছে না
নির্বাচনের মাঠকে গরম রাখার মতো তেমন কোনো বিষয়ই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এবার৷ ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর আণবিক শক্তি কেন্দ্রগুলি ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সিডিইউ-সিএসইউ এবং এফডিপি৷ তাই এক্ষেত্রেও বিতর্ক নেই৷
আঙ্গেলা ম্যার্কেল কথা বলেন কম৷ বিস্ময়কর তেমন কিছু বলেন না৷ আবেগের প্রকাশ সীমিত৷ সংযত ও মার্জিত৷ এসব কারণেও ভোটারদের কাছে পয়েন্ট অর্জন করতে পারছেন তিনি৷ ইতিহাসবিদ ভলফ্রুম বলেন, ‘‘তিনি একেবারে স্বাভাবিক৷ নিজেকে জাহির করার চেষ্টা করেন না৷ আবার ছোটও করেন না৷ সব দিক দিয়ে মাঝামাঝি৷ যে কেউ মিল খুঁজে পাবে তাঁর সাথে৷ আর এটাই ম্যার্কেলের সাফল্যের চাবিকাঠি৷''
নির্বাচনি আবহাওয়া দেখে মনে হয়, শুধু কোয়ালিশন সহযোগী এফডিপি-র কারণে আঙ্গেলা ম্যার্কেল হয়ত হোঁচট খেতে পারেন৷ এফডিপি পাঁচ শতাংশের বাধা পার হতে না পারলে এবং লাল-সবুজের জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে বৃহৎ কোয়ালিশন গঠন করা ছাড়া উপায় থাকবে না৷ ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত আঙ্গেলা ম্যার্কেল চ্যান্সেলর ও স্টাইনব্রুক অর্থমন্ত্রী হয়ে সাফল্যের সাথেই সরকার পরিচালনা করেছিলেন৷