২০২০ সালের রিপোর্ট প্রকাশ করল এফবিআই। অ্যামেরিকায় বেড়েছে খুন এবং অস্ত্রের বিক্রি।
বিজ্ঞাপন
শুধুমাত্র ২০২০ সালে অ্যামেরিকায় খুন হয়েছে ২১ হাজার ৫০০। ২০১৯ সালের তুলনায় যা প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। সোমবার এমনই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে এফবিআই। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, শুধু খুন নয়, অ্যামেরিকায় অস্ত্র বিক্রির পরিমাণও আগের চেয়ে বেড়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে খুনের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে এফবিআই।
রিপোর্ট প্রকাশের সময় অবশ্য এফবিআই আরো একটি বিষয় জানিয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় ২০২০ সালে অ্যামেরিকায় খুনের সংখ্যা বাড়লেও তা ১৯৮০-৯০ সালের খুনের সংখ্যার ধারেকাছে নেই। সে সময় সংখ্যাটি কয়েকগুণ বেশি ছিল বলে তারা জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে ৬ তথ্য
ফ্লোরিডার স্কুলে বন্দুকধারীর হামলার পর ফের মার্কিন মুলুকে বন্দুক ব্যবহারের প্রচলন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কীভাবে বন্দুক কেনা যায় সে দেশে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Breed
বন্দুকের শিকার
অ্যামেরিকায় সাধারণ নাগরিকের বন্দুক ব্যবহার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ চলছে৷ রাজনীতিতেও এর ঢেউ লেগেছে বহু সময়৷ তথ্য বলছে, প্রতিবছর বন্দুকের লড়াইয়ে অ্যামেরিকায় মৃত্যু হয় ৩৩ হাজার মানুষের৷ এর সঙ্গে অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে লড়াই, আত্মহত্যা, হত্যার চেষ্টার ঘটনা ধরলে সংখ্যাটি হবে ৩ গুণেরও বেশি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/L. Sladky
১৮ বছর হলেই বন্দুক
মার্কিন আইন অনুযায়ী বয়স ১৮ বছর হলেই সে দেশের যে কোনো নাগরিক বন্দুকের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন৷ শটগান বা রাইফেলও কিনতে পারেন৷ সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণ কার্তুজ৷ তবে হ্যান্ড গান, লিভলভার কিনতে হলে অপেক্ষা করতে হয় ২১ বছর বয়স পর্যন্ত৷
সকলকে অবশ্য বন্দুক কেনার ছাড়পত্র দেওয়া হয় না৷ অতীতে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, দাগী অপরাধী কিংবা রাষ্ট্র যাদেরকে আশঙ্কাজনক বলে মনে করে, তাদের লাইসেন্স দেওয়া হয় না৷ যদিও অভিযোগ, অস্ত্রের খোলা বাজার থাকায় অনেকেই বেআইনি অস্ত্র সংগ্রহ করে নেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Krzaczynski
চাইলেই কি বিক্রি করা যায় বন্দুক
অস্ত্রের দোকান বা বন্দুকের দোকান খোলার জন্য আলাদা করে লাইসেন্স নিতে হয়৷ ২১ বছর না হলে এ ধরনের দোকান খোলার অনুমতি মেলে না৷ সকলকে বন্দুকের দোকান তৈরির ছাড়পত্রও দেওয়া হয় না৷ সেক্ষেত্রেও দেখা হয় আবেদনকারীর ট্র্যাক রেকর্ড৷
ছবি: DW/I. Pohl
আবেদনকারীর অতীত পরীক্ষা
যাঁরা দোকান খুলতে চান, কিংবা যাঁরা বন্দুকের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন, সকলেরই অতীত সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয়া হয়৷ স্থানীয় প্রশাসন ঠিক করে কারা সেই তদন্ত করবে৷ সাধারণত এফবিআই এই কাজটি করে থাকে৷ তবে অনেক সময় স্থানীয় প্রশাসনও একটি তদন্ত চালায় আলাদা ভাবে৷
ছবি: picture-alliance/AP Images/R. Barrera
খোলা রাস্তায় বন্দুক
বন্দুক কেনা গেলেও খোলা রাস্তায় বন্দুক নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আছে৷ কোনো কোনো রাজ্যে বন্দুক খাপে ভরে ঘোরা যায়৷ অধিকাংশ জায়গায় হ্যান্ড গান সঙ্গে রাখলে তার লাইসেন্সও সঙ্গে রাখতে হয়৷ তবে অধিকাংশ রাজ্যেই শট গান সঙ্গে নিয়ে যত্রতত্র ঘোরা যায়৷ তার জন্য কোনো বিধিনিষেধ নেই৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Breed
6 ছবি1 | 6
এফবিআইয়ের রিপোর্ট বলছে, ৭৭ শতাংশ মানুষ খুন হয়েছেন বন্দুকের গুলিতে। ২০১৯ সালে যা ৭৪ শতাংশ ছিল। সহিংস অপরাধের পরিমাণ ২০১৯ সালের চেয়ে পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
রিপোর্টে দেখা গেছে, অ্যামেরিকার দক্ষিণাংশে অপরাধের প্রবণতা আগের চেয়ে বেড়েছে। অস্ত্র বিক্রির হার সবচেয়ে বেশি টেক্সাসে।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, করোনাকালে মানুষের হতাশা বেড়েছে। সে কারণেই অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ একদিকে যেমন বেড়েছে, তেমন বেড়েছে সহিংসতার পরিমাণ। কিন্তু কীভাবে এই প্রবণতাকে বদলানো সম্ভব, তা নিয়ে কোনো স্পষ্ট অভিমতে পৌঁছাতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা।
ভোটপ্রচারের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, অস্ত্র বিক্রি নিয়ে তার প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেবে। ক্ষমতায় আসার পরে এখনো সে বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এফবিআইয়ের রিপোর্ট সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করে কি না, সেটাই এখন দেখার।