1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এক ভোটার, দুটি ভোট!

২৪ জানুয়ারি ২০২০

ভোটার প্রতি দু-দুটো ভোট! এমন ‘আজব' ব্যবস্থা থাকলেও জার্মানিতে ভোটগ্রহণ সাধারণত শান্তিপূর্ণ হয়৷ ফলাফল নিয়েও তেমন উত্তেজনা দেখা যায় না৷ কারচুপির সুযোগ নেই বললেই চলে৷

Deutschland Sachsen Bürgermeisterwahl in Görlitz | Stimmabgabe in Wahllokal
ছবি: Getty Images/S. Gallup

জার্মানিতে নির্বাচনের দিনে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের আশেপাশে বিভিন্ন দলের পতাকা, দলীয় কর্মীদের জটলা, শক্তি প্রদর্শন, ভোটারদের উপর প্রচ্ছন্ন চাপের কোনো চিহ্ন নেই৷ ঠিক কোথায় যে ভোট হচ্ছে, চট করে সেটাও চোখে পড়বে না৷ কয়েক সপ্তাহ আগেই প্রত্যেক তালিকাভুক্ত ভোটার লেটারবক্সে কর্তৃপক্ষের চিঠি পেয়ে যান৷ সেটি সঙ্গে নিয়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছতে হয়৷ সঙ্গে অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা চাই৷ সেই দুটি যাচাই করার পর হাতে ব্যালট পেপার আসে৷ ঘেরাটোপের মধ্যে বসে পছন্দের প্রার্থী ও দলের নামের পাশে কলম দিয়ে ক্রস চিহ্ন দিয়ে সেটি নির্ধারিত বাক্সে ঢুকিয়ে দিলেই হলো৷

ভোটের দিন কোনো কারণে ব্যস্ত থাকলে আগেভাগেই ব্যালট সংগ্রহ করে খামে করে ভোট দেবার সুযোগও রয়েছে৷ বিদেশে বসবাসরত জার্মান নাগরিকরাও ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্গত করার আবেদন করে এভাবে ভোট দিতে পারেন৷ 

সঞ্জীব বর্মন, ডয়চে ভেলেছবি: DW

জার্মানির নির্বাচন ও ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া বাংলাদেশ-ভারতের তুলনায় অনেকটাই আলাদা৷ ইউরোপের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হওয়া সত্ত্বেও ভোটারদের সংখ্যা ছয় কোটি ১০ লাখের মতো৷ প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার কারণে এবং তাদের বাসস্থানের পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে নিজেদের নাম-ঠিকানা নথিভুক্ত করা আবশ্যিক হওয়ায় নির্বাচন কর্তৃপক্ষের কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়৷ জার্মানিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ব্যবহার নেই৷ ভোটগ্রহণের শেষে হাতে করে কাগজের ব্যালট গোনা হয়৷ তাই ফলাফল সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাষ পেতে একটু সময় লেগে যায়৷

ফেডারেল কাঠামোর কারণে জার্মানির সঙ্গে ভারতের কিছু তুলনা করা যেতে পারে৷ দুই দেশেই জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়৷ তবে জার্মান নাগরিকরা সেইসঙ্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনেও জনপ্রতিনিধি বেছে নেন৷ বাংলাদেশ বা ভারতের মতো জার্মানিতেও পৌর স্তরে নির্বাচন হয়৷ তবে জার্মানির জাতীয় নির্বাচনের একটি বৈশিষ্ট্য সত্যি অভিনব৷ একটি নয়, ভোটারদের দু-দুটি করে ভোট দিতে হয়৷ একটি ভোট পছন্দের প্রার্থীর জন্য, অন্যটি পছন্দের দলের জন্য৷ সংসদের আসনগুলিও সেভাবে বিভক্ত৷ যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ভোট পান, তিনি সরাসরি সংসদে নির্বাচিত হন৷ দ্বিতীয় ভোটের শক্তির ভিত্তিতে দলগুলি নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন পায় এবং পছন্দমতো প্রার্থীদের সংসদে পাঠাতে পারে৷ তবে কমপক্ষে ৫ শতাংশ ভোট না পেলে কোনো দলই সংসদে স্থান পায় না৷ ফলে সংসদসহ নির্বাচিত ব্যক্তিদের অন্যান্য মঞ্চে রাজনৈতিক দলের সংখ্যা সীমিত থাকে৷ জার্মানির ইতিহাসের কালো অধ্যায়ের প্রেক্ষাপটে সংসদে অসংখ্য দলের উপস্থিতি এড়াতে এমন নিয়ম চালু করা হয়েছিল৷ 

এমন ‘যান্ত্রিকতা-সর্বস্ব' ব্যবস্থা সত্ত্বেও জার্মানির নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনার অভাব নেই৷ তবে পথেঘাটে অরাজকতা সৃষ্টি করে বা জনগণের সম্পত্তি নষ্ট করে সেই উত্তেজনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে না৷ সংবাদপত্র, রেডিও-টেলিভিশন, জনসভায় সেই সব বিষয় নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা চলে৷ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও দলীয় রাজনীতির মঞ্চ হয়ে উঠেছে৷ এক ইউটিউব তারকা সরাসরি চ্যান্সেলরের সাক্ষাৎকার নিয়ে তরুণ প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি তুলে ধরেছিলেন৷

সাম্প্রতিক কালে বিশ্বের অনেক প্রান্তের মতো জার্মানিতেও মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলি কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে৷ চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দল সংসদে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে৷ ফলে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক তর্কবিতর্ক চলছে৷ অনেকে বলছেন, ‘নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ' হিসেবে উদারপন্থি মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ না করলে এমন সংকীর্ণ ভাবধারার দলগুলির শক্তিবৃদ্ধি হয়৷ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে ঘরে বসে না থেকে ভোট দেবার আবেদন বাড়ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ