এক সিটিতে দু’জন মেয়র
২০ জুন ২০১৩![unser Korrespondent in Dhaka, Herr Harun Ur Rashid Swapan hat die angehängten Bilder am 07.02.12 aufgenommen, und stellt sie der DW zur Verfügung. Titel: Bangladesh Election Commission Bildbeschreibung: The search committee, formed to suggest names for election commissioners of Bangladesh, has recommended that either former cabinet secretary Ali Imam Majumder or ex-home secretary Kazi Rakib Uddin Ahmed be the chief election commissioner. The picture shows the secretariat of Bangladesh Election Commission in Dhaka.](https://static.dw.com/image/15725511_800.webp)
প্রধান নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার জানান, ‘‘আইনি জটিলতা নিরসন না করে নবনির্বাচিতদের শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলে এক সিটিতে দু'জন মেয়র আর প্রতিটি ওয়ার্ডে দু'জন করে কাউন্সিলর হবেন৷' স্বাভাবিকভাবেই প্রধান নির্বাচন কমিশনের এই বক্তব্যের পর নতুন করে জটিলতা দেখা দিয়েছে৷
শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলররা তাঁদের দায়িত্ব গ্রহণ করে থাকেন৷ কিন্তু আগামী অক্টোবরের আগে এই শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলে একই সিটি করপোরেশনে ওয়ার্ড কাউন্সিলর থাকবেন দু'দল৷ একদল নবনির্বাচিত, আরেক দল বিদায়ী৷ অন্যদিকে একই কর্পোরেশনে একজন থাকবেন নবনির্বাচিত মেয়র ও অন্যজন বিদায়ী প্যানেলের মেয়র৷ এ কারণে পুরাতনদের মেয়াদ শেষ না হওয়ার পর শপথ অনুষ্ঠান করতে হলে আইন সংশোধন করতে হবে৷
নবনির্বাচিতদের শপথের বিষয়টিকে আইনের ‘মারাত্মক ত্রুটি' হিসাবে উল্লেখ করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা৷ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, আমলাতন্ত্রের কারণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না৷ সাধারণত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে মেয়াদ শেষের পরবর্তী ৯০ বা ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের রেওয়াজ রয়েছে৷ কিন্তু নতুন করে মেয়াদ শেষের আগের ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের বিধান করা হয়েছে৷
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা দেখছি সরকারি কর্মকর্তারা এসব প্রতিষ্ঠান চালাতে গিয়ে নানা জটিলতা তৈরি করেন৷ যদিও সংবিধানে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে যে, স্থানীয় সরকারের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দ্বারা পরিচালিত হবে৷''
গত ১৫ জুন রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ এতে মেয়র পদে চারটি সিটি কর্পোরেশনেই বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা বিজয়ী হন৷ রাজশাহীতে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, খুলনায় মনিরুজ্জামান মনি, বরিশালে আহসান হাবিব কামাল ও সিলেটে আরিফুল হক চৌধুরী জয়লাভ করেন৷
এদিকে, আইনি জটিলতা এড়াতে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইন সংশোধন করা হলে নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথে আর বাধা থাকবে না৷ এসব বিষয়ে মতামত নিতে স্থানীয় সরকার বৃহস্পতিবারই আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে৷ আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর, নির্বাচন কমিশনকে স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে৷ আর তারপর শপথের উদ্যোগ নেবে নির্বাচন কমিশন৷ এমনটাই হওয়ার কথা৷ কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত আসার আগেই নির্বাচিতদের নাম গেজেটে প্রকাশ করার উদ্যোগ নেয়ায়, দেখা দিয়েছে সংকট৷
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু আলম শহীদ খান জানিয়েছেন, যেহেতু মেয়ররা পদত্যাগ করেই নির্বাচন করেছেন সেজন্য তাঁদের পদ শূন্য হয়েছে৷ এখন শূন্য পদে নবনির্বাচিতদের দায়িত্ব প্রদানে আইনগত জটিলতা থাকার কথা নয়৷ তবে আইনে যেহেতু মেয়রের মেয়াদকাল পাঁচ বছর উল্লেখ আছে, সেক্ষেত্রে তার আগে কাউকে দায়িত্ব দেয়ার বিষয়ে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া হচ্ছে৷ অবশ্য তিনি এও বলেন যে, অকারণে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বের বাইরে রাখা হবে না৷
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ডয়চে ভেলেকে বলেন, আইন অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দিয়ে দায়িত্ব দেয়ার কথা৷ কিন্তু হঠাত্ করে এ ধরনের জটিলতা সৃষ্টির নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের উচিত দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান করা এবং নবনির্বাচিতদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া৷
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনের পূর্ববর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন অনুযায়ী, এ বছরের ৭ অক্টোবরের মধ্যে বরিশাল, ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজশাহী ও সিলেট, ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে খুলনার নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা ছিল৷