বাংলাদেশে ষাটটি জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন৷ এখনও সংক্রমণ ধরা পড়েনি শুধু চার জেলায়৷
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩০৯ জন, মারা গেছেন নয়জন৷ মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৯৯৮ জনে৷ এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ১৪০ জন৷
শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশে আক্রান্তের তালিকায় ছিল ৫৮টি জেলা৷ শনিবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আরো দুই জেলায় সংক্রমিত রোগী ধরা পড়েছে৷ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা জানান, ‘‘২৪ এপ্রিলের তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে দেখছি আমাদের এখন আক্রান্ত জেলা ৬০টি৷ নতুনভাবে আক্রান্ত হয়েছে বরিশাল বিভাগের ভোলা এবং রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলা৷ এখন শুধু বাকি আছে চারটি জেলা৷ সেগুলো হল, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, ঝিনাইদহ ও সাতক্ষীরা৷ এই চারটি ছাড়া সারা বাংলাদেশের সব জেলাতেই কোভিড আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে৷’’
তবে ঝিনাইদহে শনিবার করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম৷ ঝিনাইদহের সাংবাদিক শাহারিয়ার রহমান রকি ডয়চে ভেলেকে জানান বেলা দশটার দিকে সেলিনা বেগম দুইজন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য ফোনে নিশ্চিত করেছেন৷ তাদের একজন পুরুষ ও একজন নারী৷ আপাতত তারা হোম কোয়ারান্টিনে রয়েছেন৷
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে ঢাকা জেলায়৷ এরপরেই রয়েছে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী৷
ঢাকায় সামাজিক দূরত্ব কতদূর?
করোনার সময়ে বাংলাদেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নানা চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ পুলিশও মাঝেমধ্যে তৎপরতা দেখাচ্ছে৷ কিন্তু বাস্তবে তা কতটুকু সফল হচ্ছে, দেখুন এই ছবিঘরে৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
১.কারওয়ান বাজারে খুচরা বিক্রি বন্ধ
সকালবেলায় এই বাজারে শত শত মানুষের উপস্থিতির ছবি প্রকাশ হওয়ার পর সেখানে এখন খুচরা বিক্রি বন্ধ আছে৷ ঐ বাজারের অন্তত সাত ব্যবসায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
২. কাজ হচ্ছে না
খুচরা বেচাকেনা বন্ধ হয়ে গেলেও কারওয়ান বাজারে আগের মতোই মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
৩. রাস্তার পাশে বাজার
তেজগাঁওসহ আরো অনেক এলাকায় রাস্তার পাশে খুচরা কেনাবেচার বাজার বসানো হয়েছে৷ উদ্দেশ্য- সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
৪. কতটা কার্যকর?
কিন্তু শেষ পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব আর বজায় থাকেনি৷ ক্রেতা, বিক্রেতারা প্রায়ই করোনার কথা ভুলে যাচ্ছেন৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
৫. দাগ কেটে সামাজিক দূরত্ব
বৃহস্পতিবার কলাবাগানে টিসিবি যেখানে চাল বিক্রি করছে সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য দাগ কেটে দেয়া হয়৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
৬. শেষ পর্যন্ত যা হয়
চালের লাইনে মাঝে বা শেষের দিকে সেই দূরত্ব আর থাকে না৷ সবাই গা ঘেঁষে দাঁড়ান৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
৭. পুলিশের উপস্থিতি
সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত হচ্ছে কিনা, তা দেখতে মাঝেমধ্যে পুলিশ উপস্থিত হয়৷ কিন্তু তাতেও কি কাজ হচ্ছে?
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
৮. চেষ্টা আছে
অনেক জায়গায় ত্রাণ দেয়ার সময় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে৷ তারা স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টা করছেন৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
৯. করোনা পরীক্ষা
এসব জায়গায় ত্রাণের লাইন তৈরির পর শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখা হচ্ছে৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
১০. ব্যাংক
ব্যাংকের লাইনে সামাজিক দূরত্ব রাখার চেষ্টা করা হয়৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি তা বজায় রাখা যায়?
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
১১. ওষুধের দোকানে ব্যর্থ চেষ্টা!
ওষুধের দোকানে বৃত্ত এঁকে দেয়া থাকলেও অনেককে তা মানতে দেখা যায় না৷ সবাই ওষুধ কিনতে যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েন৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
১২. পাড়ার দোকান
পাড়ার দোকানে কোথাও কোথাও সামজিক দূরত্ব মানার চেষ্টা করা হয়৷ ওষুষের দোকানের গেট আটকে রাখা হয়৷ দোকানে দড়ি দিয়ে সৃষ্টি করা হয় দূরত্ব৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
১৩. গলির আড্ডা চলছে
পাড়ার হোমড়া-চোমড়াদের কাছে করোনা যেন কোনো ব্যাপারই নয়! তারা রাস্তার মধ্যেই আড্ডা আর দেন-দরবার নিয়ে বসেন৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
১৪. আন্দোলনে সচেতনতা!
অটোরিকশা চালকদের করোনায় আর্থিক সহায়তার দাবিতে এই মানববন্ধনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা দেখা যায়৷
ছবি: DW/H.U.R.Swapan
১৫. সড়কে যানবাহন বাড়ছে
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সড়কে বাড়ছে যানবাহন৷ ঘরে থাকার আহ্বান মানতে চান না কেউ কেউ৷
ছবি: DW/H.U.R.Swapan
১৬. কে থামাবে এদের!
বৃহস্পতিবার মহাখালী এলাকার দৃশ্য এটি, যা দেখে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, বাংলাদেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কতটা সম্ভব?
ছবি: DW/H.U.R.Swapan
16 ছবি1 | 16
বাংলাদেশে গত আট মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে৷ তিনজন রোগীকে শনাক্ত করার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল সেদিন৷ পরের ছয়দিন নতুন কোন রোগী ধরা পড়েনি৷
এরপর তিনদিন ছাড়া প্রতিদিন রোগী শনাক্ত হয়েছে৷ তবে পরীক্ষার মাত্রা বাড়ায় চার এপ্রিলের পর থেকে আক্রান্তদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে৷ সর্বোচ্চ ৫০৩ জন সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৪ এপ্রিল৷ শনিবার ৩০৯ জন আক্রান্তের খবর দিলেও নাসিমা সুলতানা জানান, আগের দিন শুক্রবার থাকায় বেসরকারি কিছু হাসপাতালের পরীক্ষার ফলাফলের তথ্য তাদের কাছে পৌঁছেনি৷