‘এখনো কাঁদে ইলিয়াস কাঞ্চন'
১৭ জুন ২০১৪গত ১৩ জুন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ব্লগার ‘স্বর্গের মেঘ পরী'৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, নিহত ব্লগারের প্রকৃত নাম তানিশা৷ কুমিল্লার মেয়ে তানিশার অকাল মৃত্যুতে শোকাহত শাহ আলম বাদশাহ সামহয়্যারইন ব্লগে একটি কবিতা লিখেছেন৷ কবিতার নাম, ‘এখনো কাঁদে ইলিয়াস কাঞ্চন'৷
পাঠকদের মনে আছে নিশ্চয়ই চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন নিজে একবার সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন৷ ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর আরেক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তাঁর স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন৷ সে বছরই সড়ক দুর্ঘটনা রোধ এবং সড়ক চলাচল সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য এবং দাবি নিয়ে ‘নিরাপদ সড়ক চাই' (নিসচা) নামের একটি সংগঠন গঠন করেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেতা৷ সংগঠনের বয়স ২১ বছর হয়ে গেলেও বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কিন্তু কমেনি৷
তাই ‘নিরাপদ সড়ক-'এর দাবি নিয়ে এখনো কাজ করে যাচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন৷ বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা হলেই চলে আসে তাঁর নাম৷ ‘স্বর্গের মেঘ পরী'-স্মরণে কবিতা লেখা কবিতাতে সে কারণেই এসেছে ‘নিরাপদ সড়ক'-এর প্রধান উদ্যোক্তার নাম৷ কবিতায় শাহ আলম বাদশাহ লিখেছেন,
‘‘মৃত্যু অমোঘ তবু কি কাম্য অনাকাঙ্ক্ষিত মরণ
যে ফুল ফুটলো না, কেউ যদি করে তা হরণ;
অজানার দেশে ঠেলে দেয় একান্ত অনিচ্ছায়?
অথবা পিচঢালা পথে পিষে যায় ফুটন্ত ফুল
দুমড়ে-মুচড়ে দেয় সকল হাড়-পাঁজর –
কেন তবে ছোটে আমার কান্নার ঢেউ!
....এখনো কাঁদে ইলিয়াস কাঞ্চন, বিচিত্র দেশ
লোহুভেজা পথে করি হাঁটাহাঁটি, কী নির্দয় –
সারিসারি গাড়ি, খুঁজে পাইনে কোথায় সড়ক,
মড়ক দেখে দেখে খানখান আমার হৃদয়!''
ইদানীং র্যাব নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে৷ নারায়নগঞ্জের সাত খুনের মামলার পর বাংলাদেশের এই বিশেষ বাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আর নেই বললেই চলে৷ আমার ব্লগে শাহানুর ইসলাম সৈকতের লেখার শিরোনাম, ‘‘র্যাবের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, এত সহজ?''
নিজেকে একজন মানবাধিকার আইনজীবী হিসেবে তুলে ধরে শাহানুর জানিয়েছেন, সাধারণ আদালতে র্যাবের বিরুদ্ধে করা মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন তিনি৷ তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী, ‘‘মামলাটি করেছিলেন শরিয়তপুর জেলার পালং থানা নিবাসী অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুর রহমান খান, তাঁর একমাত্র পুত্র ফল ব্যবসায়ী আফজাল হোসেনকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে৷ শরিয়তপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) অশোক কুমার অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিষয়টি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করতে পালং থানাকে থানাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ মামলাটি হয়েছিল ২০০৯ সালের ২৫শে মে৷ এএসপি মর্যাদা সম্পন্ন র্যাবের একজন কর্মকর্তাসহ সাত র্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল৷''
মামলা পরিচালনার অভিজ্ঞতা অবশ্য ভালো হয়নি৷ আমার ব্লগের এই ব্লগার জানিয়েছেন, ‘‘(আইনজীবীর) দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে র্যাবের হয়রানির শিকারও হতে হয়েছিল অনেকবার৷ এমনকি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতারের হুমকি, হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছিল আমাকে, যা শুরু হয়েছিল শরিয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করে বের হওয়ার পর থেকেই৷''
শেষ পর্যন্ত কী পরিনাম হয়েছিল মামলার? শাহানুর ইসলাম সৈকত জানিয়েছেন, ‘‘পরবর্তীতে থানা ঘটনার সাথে র্যাব সদস্যরা জড়িত না মর্মে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল এবং বিষয়টি উচ্চ আদালত হয়ে এখনো ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে৷''
এ অভিজ্ঞতা থেকেই শাহানুর ইসলাম সৈকতের প্রশ্ন, ‘‘র্যাবের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা এত সহজ?'' তাছাড়া মামলা করে লাভই বা কী?
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ