এখনো জারদারির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে চান না গিলানি
১৯ জানুয়ারি ২০১২আদালতে গিলানির বক্তব্য
প্রশ্ন উঠেছে, গিলানির সরকার কেন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করতে প্রস্তুত নয়? এর আওতায় কেনই বা সুইজারল্যান্ডকে তদন্ত আবার শুরু করার অনুরোধ করছেন না তিনি৷ বৃহস্পতিবার আদালতে গিলানি আবার বলেছেন, যে বিশ্বের যে কোনো দেশের মতো পাকিস্তানেও ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের আইনি রক্ষাকবচ রয়েছে৷ ফলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর পক্ষে জারদারির বিরুদ্ধে তদন্ত করা সম্ভব নয়৷ বিশেষ করে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেয়ে যিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলে সেই বার্তা মোটেই মঙ্গলজনক হবে না, বলেন গিলানি৷ উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডের কৌঁসুলিও বলেছেন, এই রক্ষাকবচের কারণে জারদারির বিরুদ্ধে সেদেশে তদন্ত করা অসম্ভব৷
এই অবস্থার জন্য গিলানি ক্ষমাও চাইতে প্রস্তুত নন৷ তিনি বলেন, শীর্ষ আদালতের প্রতি সম্মান দেখাতেই তিনি সেখানে হাজির হয়েছেন৷ কিন্তু সমস্যা হলো, আদালত তাঁর বক্তব্যে সন্তুষ্ট না হলে শাস্তি হিসেবে তাঁর ৬ মাস পর্যন্ত জেল এবং কোনো সরকারি পদে তাঁর ফেরার পথ বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে৷ গিলানি ও জারদারিকে শপথবাক্য অমান্য করার দায়েও বরখাস্ত করতে পারে শীর্ষ আদালত৷ আপাতত গিলানির আইনজীবীর আবেদনে শুনানি ১লা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে৷
সরকারের ভবিষ্যৎ
মনে রাখতে হবে, পাকিস্তানে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার কোনো ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীকে তলব করলো আদালত৷ গিলানির সরকার চারিদিক থেকে প্রবল চাপের মুখে রয়েছে৷ জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও ‘মেমোগেট' কেলেঙ্কারির জের ধরে সেনাবাহিনী ও বিচার বিভাগ সরাসরি সরকারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কেরও বেশ অবনতি ঘটেছে৷ রাজনৈতিক মঞ্চেও কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন গিলানি ও জারদারি৷ অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এই অবস্থায় সরকার আর বেশিদিন টিকবে না, পাকিস্তানে আগাম নির্বাচন অনিবার্য৷
ক্ষমতাকেন্দ্রে শূন্যতার আশঙ্কা
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ ৩ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষ করে চলতি মাসের শেষে দেশে ফিরে আবার হাল ধরতে চান৷ কিন্তু তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল বিপদের আশঙ্কা প্রকাশ করে ফেরার পরিকল্পনা স্থগিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে৷ মুশাররফ নিজেও বিপদের কথা স্বীকার করেছেন৷ দেশে ফিরলে সরকার তাকে গ্রেপ্তার করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক৷ অন্যদিকে গণতন্ত্রের প্রতি বিশেষ আনুগত্য দেখিয়ে তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের নেতা ইমরান খান বলেছেন, সম্ভাব্য আগাম নির্বাচনে যথেষ্ট জনসমর্থন না পেলে তিনি সানন্দে সংসদে বিরোধী আসনে বসতে প্রস্তুত৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক