করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছে ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ৷ এমন সময়েও মহাশূন্যে জায়গা দখলের চেষ্টা করছে দেশটি৷ এর প্রতিবাদ জানিয়েছে রাশিয়া৷
বিজ্ঞাপন
মহাশূন্যের 'সম্পদ’ আহরণের জন্য প্রণয়ন করা নীতিমালায় স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘‘মহাশূন্যের সম্পদের বাণিজ্যিক অন্বেষণ, উদ্ধার ও ব্যবহারের অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের থাকা উচিত৷’’ সেখানে বিশ্বের সবার অধিকার থাকতেই হবে এমন বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের নজরে নেই বলেও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়৷
যুক্তরাষ্ট্রের মহাশূন্য নীতিমালা ১৯৬৭ সালে স্বাক্ষর করা মহাশূন্য চুক্তি অনুসরণ করে৷ যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ৫৩ বছর আগের ওই চুক্তি এই গ্রহের বাইরে মহাশূন্যের সব সম্পদ কাজে লাগানোর অধিকার দেশটিকে দিয়েছে৷
রাশিয়ার প্রতিবাদ
এদিকে মহাশূন্যের 'সম্পদ' আহরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগের কঠোর সমালোচনা করেছে রাশিয়া৷ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাক্ষর করা নির্বাহী আদেশকে 'অগ্রহণযোগ্য' আখ্যা দিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ৷ একই প্রসঙ্গে রসকসমসের ডেপুটি ডিরেক্টর সের্গেই সাবলিয়েভ বলেছেন, ‘‘মহাশূন্য নিয়ে এই উদ্যোগ এবংঅন্যান্য গ্রহের জায়গা দখলের এই আগ্রাসী পরিকল্পনা সব দেশের মধ্যে কার্যকর সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক হবে না৷''
লুইস সেন্ডার্স ফোর/ এসিবি
মহাকাশ নিয়ে ইউরোপের পরিকল্পনা
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এসা আগামী দশকে মহাকাশে কী করবে সেই পরিকল্পনা ইতিমধ্যে করে ফেলেছে৷ ছবিঘরে থাকছে সেসব কথা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F.Gambarini
পৃথিবীকে ভালোভাবে দেখা
বিশ্বে এমন অনেক পরিবর্তন হয়, যার সম্পর্কে ভূমি থেকে তেমন ধারণা পাওয়া যায় না৷ কিন্তু মহাকাশ থেকে দেখলে ভালোভাবে পরিবর্তনটি বোঝা যায়৷ যেমন, সাগরে পিএইচ-এর পরিমাণ কমে যাওয়া, দাবানলের প্রসার, প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব ইত্যাদি৷ ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা, এসা আগামী দশকে মহাকাশে গিয়ে এসব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়ার পরিকল্পনা করছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/NASA
নতুন প্রজন্মের তারহীন যোগাযোগ
এসা আকাশে নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চাইছে৷ ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের পাশাপাশি এটি ব্যবহৃত হবে বলে দাবি করছে সংস্থাটি৷ তারা বলছে, এটি হবে নতুন প্রজন্মের তারহীন যোগাযোগ, যেখানে সবকিছু, সব জায়গায়, সবসময় যুক্ত থাকবে৷ এটি ভালো হবে, নাকি আশঙ্কার, সেই সিদ্ধান্ত আপনার৷
ছবি: picture-alliance/imagebroker/O. Maksymenko
মহাকাশ পরিষ্কার
১৯৫৭ সালে মহাকাশে ভ্রমণ শুরু হয়েছিল৷ সেই থেকে মহাকাশে অনেক স্যাটেলাইট পাঠানো হয়েছে, যার একটি অংশের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও সেগুলো ফিরিয়ে আনা হয়নি৷ ফলে বর্তমানে আমাদের পৃথিবীর চারপাশে ৩৪ হাজারের বেশি পদার্থ ঘোরাফেরা করছে, যেগুলোর ব্যাস ১০ সেন্টিমিটারের বেশি৷ এসা একটি সক্রিয় মিশনের মাধ্যমে কিছু পদার্থ সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করছে৷
ছবি: ESA
চাঁদের কাছে স্পেস স্টেশন
আগামী দশকে গেটওয়ে নামে একটি স্পেস স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে এসা৷ সেটি চাঁদের চারপাশে ঘুরবে৷ ফলে আরও ভালোভাবে চাঁদ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করা সম্ভব হবে৷ এছাড়া মহাকাশের আরো গভীরে যাওয়ার জন্য গেটওয়ে থেকে যাত্রা শুরু করতে পারবেন নভচারীরা৷ এদিকে, ২০২২ সালে বৃহস্পতি গ্রহের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে জুস নামের একটি মহাকাশযান৷
ছবি: ESA
গ্রহাণুপুঞ্জের পথ পরিবর্তন
অ্যাস্টেরয়েড বা গ্রহাণুপুঞ্জের পথ পরিবর্তন করা সম্ভব কিনা তা জানতে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এসা একটি মিশন পরিচালনা করবে৷ এক্ষেত্রে ডিডুমস অ্যাস্টেরয়েড ও তার চাঁদ ডিডিমুনকে বেছে নেয়া হয়েছে৷ নাসা প্রথমে ডিডিমুনের দিকে সেকেন্ডে ছয় কিলোমিটার বেগে ডিএআরটি নামের একটি প্রোব ছুড়ে মারবে৷ এরপর এসার এইচইআরএ মিশন এই সংঘর্ষের প্রভাব বিশ্লেষণ করবে৷
ছবি: ESA
লঞ্চ ভেহিকল ও স্পেসপ্লেন
২০২০ সালের শেষ নাগাদ লঞ্চ ভেহিকল ‘আরিয়ান ৬’ কাজ শুরু করবে৷ আর ‘স্পেস রাইডার’ নামের একটি চালকহীন স্পেসপ্লেন ২০২২ সালে যাত্রা শুরু করার কথা৷
ছবি: ESA
গন্তব্য চাঁদ
আগামী দশকে প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় নভচারীদের চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনা হচ্ছে৷ এছাড়া এসার সব নভচারী দ্বিতীয়বারের মতো মহাকাশে যাবেন৷ নাসার পাশাপাশি এসার নভচারীরা মঙ্গলেও যাবেন৷