২০২৩-এ যারা 'হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ' (হাব)-এর সদস্য কোনো এজেন্সির মাধ্যমে হজে যেতে চান, তাদের খরচ করতে হবে প্রায় পৌনে ৭ লাখ টাকা৷ কোরবানির খরচও যোগ করতে হবে তার সঙ্গে৷
বিজ্ঞাপন
হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বৃহস্পতিবার পল্টনের হোটেল ভিক্টোরিতে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের 'হজ প্যাকেজ' ঘোষণা করেন৷
তিনি বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এবছর হজে যেতে মাথাপিছু খরচ পড়বে সর্বনিম্ন ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা৷ কোরবানির খরচ হাবের এই প্যাকেজের মধ্যে ধরা হয়নি৷ কোরবানি বাবদ অর্থ প্রত্যেক হজযাত্রীকে আলাদাভাবে সঙ্গে নিতে হবে৷
গতবছর বেসরকারিভাবে হজের খরচ পড়েছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা৷ সেই হিসাবে এ বছর খরচ বাড়ছে প্রায় দেড় লাখ টাকা৷
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেসরকারি হজ প্যাকেজে বিমান ভাড়া ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা৷ মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া ২ লাখ ৪ হাজার ৪৪৪ টাকা৷ পরিবহন ভাড়া ৩৫ হাজার ১৬২ টাকা ধরা হয়েছে৷ খাওয়ার খরচ হিসেবে ৩৫ হাজার টাকার পাশাপাশি ১ লাখ ৬০ হাজার ৬৩০ টাকা দিতে হবে ‘সার্ভিস চার্জ' হিসেবে৷
তসলিম বলেন, ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে বেসরকারি হজ যাত্রীদের নিবন্ধন শুরু হবে৷ হজযাত্রীদেরকে নিজ উদ্যোগে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে; পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত৷
আগের বছর প্যাকেজ ছিল দুটি৷ এর মধ্যে প্যাকেজ-১ এর খরচ ছিল ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৪০ টাকা আর প্যাকেজ-২ এ ৫ লাখ ২১ হাজার ১৫০ টাকা৷
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের প্যাকেজ থাকছে একটিই৷ গতবারের প্যাকেজ-১ এর তুলনায় এবার সরকারিভাবে বেশি পড়বে ৯৬ হাজার ৬৭৮ টাকা৷ প্যাকেজ-২ এর তুলনায় খরচ বেশি হবে ১ লাখ ৬১ হাজার ৮৬৮ টাকা৷
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন সৌদি আরবে হজ হবে৷ সৌদি সরকারের সঙ্গে করা হজ চুক্তি অনুযায়ী এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পাবেন৷
এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন৷
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, এ বছর শতভাগ হজযাত্রীর প্রি-এরাইভাল ইমিগ্রেশন ‘মক্কা রোড চুক্তি' অনুযায়ী ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই হবে আর থাকবে না কোন ৬৫ বছরের বয়সসীমা৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
বিভিন্ন দেশ থেকে হজে যাওয়ার খরচ
বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে একজন হজ যাত্রীকে এবার সর্বনিম্ন ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা খরচ করতে হবে৷ এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার হজ যাত্রীরা মাত্র দুই লাখ ৩৮ হাজার ৪৫৩ বাংলাদেশি টাকা খরচ করে হজ করতে পারবেন৷ বাকিটা সরকার ভর্তুকি দিবে৷
ছবি: dapd
বাংলাদেশ
এবার সরকারিভাবে হজে যেতে প্যাকেজ-১ এ ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা ৷ ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানএসব তথ্য জানান৷
ছবি: bdnews24.com
ভারত
আনন্দবাজার পত্রিকা ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে হজে যেতে জনপ্রতি খরচ হয়েছিল প্রায় তিন লাখ বাংলাদেশি টাকা৷ তবে ঐ সময় পশ্চিমবঙ্গ হজ কমিটি ২০২১ সালের হজের খরচ অনেক বাড়িয়ে চার লাখ ২৩ হাজার ৫৭১ টাকা নির্ধারণ করেছিল৷ আর এবছর হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত খরচের হিসাব জানানো হয়নি৷ ২০১৮ সালে ভারতে হজ ভর্তুকি বন্ধ করে দেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Al-Rubaye
পাকিস্তান
এখনও চূড়ান্ত খরচ জানানো হয়নি৷ তবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ উমর বাট গত শনিবার জানান, এবার জনপ্রতি খরচ তিন লাখ ১১ হাজার ৭৪২ বাংলাদেশি টাকা থেকে প্রায় সাড়ে চার লাখ বাংলাদেশি টাকা হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Saudi Press Agency
ইন্দোনেশিয়া
এ বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে হজে যেতে একজন মুসল্লিকে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৪৫৩ বাংলাদেশি টাকা (৩,৯৮,৮৬,০০৯ ইন্দোনেশীয় রুপি) দিতে হবে বলে গত ১৪ এপ্রিল জানান দেশটির ধর্মমন্ত্রী ইয়াকুত ছলিল৷ যদিও মুসল্লি প্রতি খরচ হবে চার লাখ ৮৮ হাজার ২৬০ টাকা৷ বাকি টাকাটা ‘হজ ফাণ্ড ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি’ বা বিপিকেএইচ এর মাধ্যমে ভর্তুকি হিসেবে দেবে সরকার৷ বিস্তারিত জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: REUTERS
মালয়েশিয়া
গত ২২ এপ্রিল হজে যাওয়ার খরচ ঘোষণা করা হয়৷ বি৪০ গ্রুপের (যে পরিবারের মাসিক আয় সাড়ে ৯৬ হাজার টাকার কম) মুসল্লিদের জন্য খরচ দুই লাখ ১৮ হাজার ৭৫৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে৷ আর যাদের আয় বেশি তাদের খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা৷ দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ধর্ম বিভাগের মন্ত্রী ইদ্রিস আহমাদ সম্প্রতি জানান, প্রতিবছর হজ ভর্তুকি হিসেবে সরকার প্রায় ছয়শ থেকে আটশ কোটি টাকা খরচ করে থাকে৷
ছবি: REUTERS
আসিয়ানে সর্বনিম্ন খরচ ইন্দোনেশিয়ায়?
২০১৯ সালে ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন ধর্মমন্ত্রী লুকমান হাকিম দাবি করেছিলেন, আসিয়ান অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে হজে যেতে একজন মুসল্লিকে সবচেয়ে কম টাকা খরচ করতে হয়৷ ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ব্রুনাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে হজে যাওয়ার খরচ উল্লেখ করে তিনি এই দাবি করেছিলেন৷ ইন্দোনেশিয়ার মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়ের এ সংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পড়তে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷