সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেন তাঁর ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে এই কথাটি লিখেছেন৷ পিটারসেনের ভিডিওটি ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
বল ট্যাম্পারিংয়ের অভিযোগে সদ্য নিষিদ্ধ হওয়া অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার স্টিভ স্মিথ দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফিরেছেন৷ তবে ভিডিওটি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ বিমানবন্দরের৷ এতে দেখা যাচ্ছে, হেঁটে যাওয়া স্মিথকে ঘিরে আছেন কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী৷ এর মধ্যে দু'জন তাঁকে প্রায় ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যাচ্ছেন৷ পিটারসেনের কাছে বিষয়টি ভালো ঠেকেনি৷ তাই ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘এটা ঠিক নয়, স্টিভ স্মিথ কোনো দাগি আসামি নন৷’’
অস্ট্রেলিয়ার প্রখ্যাত রেডিও ভাষ্যকার অ্যালান জোন্সেরও বিষয়টি পছন্দ হয়নি৷ তিনি মনে করছেন, বিমানবন্দরে স্মিথের সঙ্গে গণ হত্যাকারীর মতো আচরণ করা হয়েছে৷
থেও ডোরোপুলাস নামে অস্ট্রেলিয়ার আরেক ক্রিকেটার মনে করছেন, স্মিথের সঙ্গে মাদক পাচারকারীর মতো আচরণ করা হয়েছে৷
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে বল ট্যাম্পারিংয়ের অভিযোগ উঠেছিল৷ টেলিভিশন ক্যামেরায় ঘটনাটি ধরা পড়েছিল৷ এতে দেখা গেছে, ফিল্ডার ক্যামেরন ব্যানক্রফট হলুদ রঙের কিছু একটা ট্রাউজারের ভেতরে ঢুকাচ্ছেন৷ পরে সেটি দিয়েই নাকি তিনি বল ঘষেছিলেন৷
স্মিথ এই অভিযোগ স্বীকার করেন৷ এজন্য ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা তাঁকে এক টেস্টের জন্য নিষিদ্ধ করে৷ তবে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ড তাঁকে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে৷ সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারকেও এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ আর ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে নয় মাসের জন্য৷
জেডএইচ/এসিবি
ক্রিকেটে ‘বল ট্যাম্পারিং’
দক্ষিণ আফ্রিকায় অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ব্যানক্রফটের বদৌলতে আবারো আলোচনায় বল ট্যাম্পারিং৷ ক্রিকেটে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা নতুন নয়৷ এসব নিয়ে ঝড় বয়ে গেছে আগেও৷ ছবিঘরে দেখুন তেমন কয়েকটি ঘটনা৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
মাইক আথার্টন, লর্ড’স ১৯৯৪
ইংলিশ অধিনায়ক থাকাকালে ১৯৯৪ সালে বল ট্যাম্পারিংয়ের অভিযোগ মাথায় নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন আথার্টন৷ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে স্বাগতিকরা টেস্ট খেলছিল লর্ড’সে৷ ধুলো দিয়ে বল ঘষায় তিনি অভিযুক্ত হয়েছিলেন৷ তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, বল ও হাত শুষ্ক রাখতে উইকেট থেকে ধুলো নিয়ে পকেটে রেখেছিলেন তিনি৷ অস্ট্রেলিয়ান ম্যাচ রেফারি পিটার বার্জের কল্যাণে অবশ্য ২ হাজার পাউন্ড জরিমানা গুনেই নিষ্কৃতি পান তিনি৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
শচীন টেন্ডুলকার, পোর্ট এলিজাবেথ ২০০১
শচীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আম্পায়ারকে না জানিয়ে বল থেকে ঘাস পরিষ্কার করেছেন৷ সেজন্য তাঁকে পরের ম্যাচে নিষিদ্ধ করেন ইংলিশ ম্যাচ রেফারি মাইক ডেনিস৷ এমনকি ম্যাচে অতিরিক্ত আপিল করায় পরের ম্যাচে আরো পাঁচ ভারতীয় ক্রিকেটারকে নিষিদ্ধ করেন৷ ভারতের আপিলে সেই সাজা শুধু বাতিল হয়৷ ডেনিসকে আম্পায়ারের দায়িত্বে রেখে ক্রিকেট খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত৷ বিতর্ক এড়াতে আইসিসি পরের ম্যাচটি ‘আনঅফিসিয়াল’ ঘোষণা করে৷
ছবি: Reuters
ইনজামাম উল-হক, ওভাল ২০০৬
ব্যাপক আলোচিত সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ইনজামামের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বল ট্যাম্পারিংয়ের৷ চতুর্থ দিনে দুই ফিল্ড আম্পায়ার ড্যারেল হেয়ার ও বিলি ডকট্রোভ হঠাৎ করে বল পরিবর্তন করেন এবং ইংল্যান্ডের পক্ষে পাঁচ রান পেনাল্টি দেন৷ কিন্তু ইনজামাম তাঁর দলকে নিয়ে ফিল্ডিং করতে অস্বীকৃতি জানালে ইতিহাসে প্রথমবার কোনো টেস্ট বাজেয়াপ্ত (ফোরফিট) হয়৷ পরে ইংলিশদের জয়ী ঘোষণা করা হলেও হেয়ারের ক্যারিয়ার সেখানেই শেষ হয়ে যায়৷
ছবি: Getty Images
শহীদ আফ্রিদি, পার্থ ২০১০
পার্থে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে ঘটে এ ঘটনা৷ টেলিভিশন ক্যামেরায় দেখা যায়, আফ্রিদি বল কামড়ে ধরেছেন৷ টিভি আম্পায়ার ফিল্ড আম্পায়ারদের বিষয়টি জানালে বল পরিবর্তন করা হয়৷ পাকিস্তান সিরিজটি ৫-০-তে হারে৷ আফ্রিদির ব্যাখ্যা ছিল, বলের ‘ঘ্রাণ’ নিচ্ছিলেন তিনি৷ তাঁকে পরের দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
ভের্নন ফিল্যান্ডার, গল ২০১৪
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার এই পেসার নখ দিয়ে আঁচড়ে বলের ছাল তুলে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন৷ ক্যামেরায় তা ধরাও পড়েছিল৷ পরে স্বাগতিকদের অভিযোগের মুখে ম্যাচের ৭৫ শতাংশ ফি জরিমানা গোনেন ফিল্যান্ডার৷
ছবি: Imago/Colorsport/A. Cowie
ডু প্লেসিস, হোবার্ট ২০১৬
মুখের চুইংগামের রস দিয়ে বল ‘শাইন’ করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক৷ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে ঘটেছিল ঘটনাটি৷ সে কারণে তাঁকে পুরো ম্যাচ ফি জরিমানা গুণতে হয়৷ অবশ্য এই ম্যাচসহ সিরিজটিই জিতে নিয়েছিল ডু প্লেসিসের দল৷ ডু প্লেসিস এর আগেও ২০১৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে বল ট্যাম্পারিং করেছিলেন৷