পশ্চিমবঙ্গের বেসরকারি হাসপাতালের বিল নিয়ে ফের প্রশ্ন রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনের৷ চিকিৎসা পরিষেবায় দক্ষিণ ভারতের হাসপাতালের সঙ্গে খরচের তুলনা টেনেছে তারা৷
বিজ্ঞাপন
বেসরকারি হাসপাতাল কমিশনের বক্তব্য নস্যাৎ করেছে৷ এই চাপানউতোরে জনতার প্রশ্ন, তাদের চিকিৎসার খরচ কমবে কীভাবে?
চিকিৎসার ক্ষেত্রে বাঙালির দাক্ষিণাত্য প্রীতি আজকের নয়৷ বহু বছর ধরেই বাঙালি রোগীরা দক্ষিণের হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে যান৷ যদিও পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসা পরিষেবায় অনেক উন্নতি হয়েছে৷ সরকারি আর বেসরকারি মিলিয়ে প্রচুর হাসপাতাল৷ তা সত্ত্বেও ফি বছর বাঙালি চিকিৎসা করাতে দাক্ষিণাত্যে যায়৷ কেন? স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যানের মন্তব্যে সামনে এসেছে খরচ নিয়ে বিতর্ক৷ তামিলনাড়ুর ভেলোরে অবস্থিত ক্রিশ্চান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নজির টেনেছেন চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তার মন্তব্য, "ভেলোরে এত রোগীর ভিড় করার উত্তর লুকিয়ে আছে ওই হাসপাতালের বিলে৷” কী কারণে এমন মন্তব্য কমিশনের?
ডাঃ কুণাল সরকার
রাজ্যের সব বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ভেলোর হাসপাতালের বিল৷
ঘটনার সূত্রপাত
বারাকপুরের বিকাশ মণ্ডল বেসরকারি হাসপাতালের লাগামছাড়া বিলিং নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য কমিশনে৷ বাইক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তিনি আনন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন৷ ১০ দিনে বিল হয় চার লাখ ৯৭ হাজার টাকা৷ পা বাদ যেতে পারে বলেও জানান ডাক্তাররা৷ এরপরেই বিকাশের পরিজনেরা তাকে তড়িঘড়ি ভেলোরের সিএমসি হাসপাতালে নিয়ে যান৷ ভেলোরে ১৯ দিনে বিল হয় ১ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা৷ পা বাদ যায়নি৷ অবশেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বিকাশ৷ তার অভিযোগই কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের বিল নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে৷
ভেলোরে বিকাশের চিকিৎসার বিল স্বাস্থ্য কমিশন কলকাতার নানা বেসরকারি হাসপাতালে পাঠাচ্ছে৷ কমিশন চাইছে, ভেলোরের বিল দেখে বেসরকারি হাসপাতালগুলি শিক্ষা নিক৷ যদিও বেসরকারি হাসপাতালগুলি স্বাস্থ্য কমিশনের এই উদ্যোগে প্রবল আপত্তি জানিয়েছে৷
কেনদক্ষিণ ভরসা?
কল্যাণীর সুপ্রতিম সরকার বাবার অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির জন্য দক্ষিণ ভারতে রয়েছেন৷ কেন দক্ষিণে গেলেন? সুপ্রতিম বলেন, "কলকাতায় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার গলাকাটা খরচ যেমন, তেমনই পরিষেবাও ঠিক পাই না৷ সরকারি হাসপাতালে চূড়ান্ত অব্যবস্থা, ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগই হয় না৷ ফলে দক্ষিণে যাওয়াটা নিরাপদ৷” সুপ্রতিমের কথার সারবত্তা আছে বলে মত সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের চিকিৎসক স্বপন বিশ্বাসের৷ তিনি বলেন, "এ জন্য দায়ী সরকারি স্বাস্থ্যনীতি৷ আজ পশ্চিমবঙ্গে কর্পোরেটমুখী স্বাস্থ্য পরিষেবা৷ তুলনামূলকভাবে হয়তো ভেলোরে কিছুটা সস্তা৷” তার মতে, "পরিসংখ্যানই বলছে, সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা গড়ে একজন রোগীকে ৪০ সেকেন্ড সময় দেন৷ সেটা বেশি সময় হলে রোগীরা সন্তুষ্ট হতেন৷ জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামীণ হাসপাতাল বাড়েনি সেই অনুপাতে৷ ফলে পরিকাঠামোর অভাব থাকবেই৷”
চিকিৎসা পর্যটনে ভারতের সেরা হাসপাতালগুলো
প্রতি বছর কয়েক লাখ বাংলাদেশি কেবল চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। সেখানকার চিকিৎসা পর্যটনে সেরা কয়েকটি হাসপাতালের কথা জেনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: Getty Images/AFP/X. Galiana
ভারতে মেডিক্যাল ভিসা
প্রতি বছর কয়েক লাখ বাংলাদেশি কেবল চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। ২০১৯ সালে মেডিক্যাল ভিসায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছিলেন দুই লাখ ২৫ হাজার ৬৬৮ জন।
ছবি: Getty Images/AFP/X. Galiana
কলকাতায় ভিড় নেই
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রোগী কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসেন। এছাড়া আসেন বিপুল পরিমাণ আফগান রোগী। যে কারণে চিকিৎসা পর্যটনে কলকাতা দেশের মধ্যে অন্যতম। দক্ষিণ ভারতেও বহু রোগী চিকিৎসা করাতে যান।
ছবি: Getty Images/AFP/X. Galiana
চিকিৎসা পর্যটনের তালিকা
ভারতে বেশ কিছু সংস্থা চিকিৎসা পর্যটনের ব্যবস্থা করে। বিভিন্ন হাসপাতাল চেইনের সঙ্গে তাদের টাই আপ করা থাকে। তারই ভিত্তিতে বিদেশি রোগীদের কোন হাসপাতালে যাওয়া উচিত, তার পরামর্শ দেয় তারা।
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A.Nath
এক নম্বরে অ্যাপোলো
কলকাতায় সবচেয়ে বেশি বিদেশি রোগী, বিশেষ করে বাংলাদেশের রোগী আসেন অ্যাপোলো হাসপাতালে। মাসে প্রায় ছয় হাজার রোগী গড়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা করান।
ছবি: DW/P. Samanta
এএমআরআই হাসপাতাল
অ্যাপোলোর পরেই রয়েছে এএমআরআই হাসপাতাল। সাধারণত এই হাসপাতালেও মাসে গড়ে পাঁচ হাজার বাংলাদেশের রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন। এএমআরআই হাসপাতালের একাধিক ব্রাঞ্চ আছে। সল্টলেকের ব্রাঞ্চে বিদেশি রোগীর সংখ্যা বেশি। তবে এই মুহূর্তে কার্যত কোনও বিদেশি রোগী নেই এই হাসপাতালগুলিতে।
ছবি: DW/P.Samanta
রবীন্দ্রনাথ টেগোর হাসপাতাল
হার্টের চিকিৎসার জন্য বহু রোগী বিশিষ্ট চিকিৎসক দেবী শেঠির তৈরি রবীন্দ্রনাথ টেগোর হাসপাতালে যান। এছাড়াও ফোর্টিস, মেডিকা, রুবি জেনারেল হাসপাতালেও বহু বিদেশি চিকিৎসা করাতে আসেন।
ছবি: Getty Images/AFP/M. Sharma
দ্বিতীয় সারির হাসপাতাল
অ্যাপোলো বা এএমআরআই হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ যাঁরা সামলাতে পারেন না, তাঁদের জন্য রয়েছে দ্বিতীয় সারির হাসপাতাল। ভিআইপি রোড এবং বাইপাসের ধারে এমন আরও অসংখ্য হাসপাতাল রয়েছে। রয়েছে চোখের হাসপাতালও। অপেক্ষাকৃত কম খরচে এই হাসপাতালগুলিতে বহু মধ্যবিত্ত বিদেশি চিকিৎসা করাতে আসেন।
ছবি: Getty Images/AFP/M. Sharma
ক্যান্সার চিকিৎসা
ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য অবশ্য সবচেয়ে বেশি বিদেশি মুম্বইয়ে যান, টাটার ক্যান্সার হাসপাতালে। তবে কলকাতাতেও টাটা ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরি করেছে। এখন সেখানেও বহু বিদেশি চিকিৎসা করাতে আসছেন।
ছবি: Murali Krishnan
ভেলোর এখনও প্রথম
যাদের হাতে অর্থ বেশি, তাঁরা এখনও দক্ষিণ ভারতের ভেলোরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পছন্দ করেন। দক্ষিণ ভারতের ভেলোর অত্যন্ত নামকরা চিকিৎসা কেন্দ্র। বহু মানুষ মাসের পর মাস থেকে সেখানে চিকিৎসা করান। বিশেষ করে ক্রনিক অসুখের চিকিৎসায় ভেলোর এক নম্বরে।
ছবি: Getty Images/AFP/M. Vatsyayana
দক্ষিণের অ্যাপোলো, মিঅট
দক্ষিণ ভারতেও অ্যাপোলো হাসপাতালের চেইন রয়েছে। চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে বহু বিদেশি চিকিৎসার জন্য যান। দিল্লির অ্যাপলো হাসপাতালেও প্রচুর বিদেশি রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন। এ ছাড়াও দক্ষিণ ভারতে রয়েছে মিঅট হাসপাতাল চেইন।
ছবি: Adnan Abidi/Reuters
নেত্রালয়ে চোখ
চোখের চিকিৎসার জন্য কয়েক দশক ধরে এক নম্বর দক্ষিণ ভারতের নেত্রালয়। তবে গত কয়েক বছরে কলকাতাতেও বেশ কিছু ভালো চোখের হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। দিশা, প্রিয়ম্বদা বিড়লা এর মধ্যে অন্যতম। নেত্রালয়ের ব্রাঞ্চ তৈরি হয়েছে কলকাতায়।
ছবি: picture-alliance/AP Photo/C. Anand
সরকারি হাসপাতাল
বিদেশি রোগীরা ভারতের সরকারি হাসপাতালে খুব বেশি যান না। তবে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট ফর মেডিক্যাল সায়েন্সে (এইমস) কিছু কিছু বিদেশি রোগী দেখা যায়। অন্য হাসপাতাল থেকে রেফার করলে তবেই তারা এইমসে আসেন।
সরকারি হাসপাতাল চিকিৎসা পর্যটনে নেই
চিকিৎসা পর্যটনের সঙ্গে বিশাল অঙ্কের ব্যবসা জড়িত। ফলে বিদেশি রোগীদের ভারতের সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয় না। বস্তুত, ভারতের সরকারি হাসপাতালগুলিতে বেড পাওয়াও খুব কঠিন। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বক্তব্য, এখনও দেশের সরকারি হাসপাতালগুলি যে কোনও বেসরকারি হাসপাতালের চেয়ে অনেক এগিয়ে।
ছবি: picture-alliance/dpa
13 ছবি1 | 13
সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো পর্যাপ্ত নয়৷ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ কিংবা জটিল স্নায়ু চিকিৎসা, কিডনি বা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন, রক্তের ক্যান্সারের মতো গুরুতর চিকিৎসা কেবলমাত্র দু-একটি সরকারি হাসপাতালে হয়৷ তাছাড়া সরকারি হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের অন্যান্য চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে দীর্ঘ লাইন৷ তাই গলাকাটা খরচ সত্ত্বেও বেসরকারি হাসপাতালে জেনেশুনে মানুষকে যেতে হয়৷
পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসা ব্যবস্থা
ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী জনতাকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ভার কেন্দ্রের নয়, রাজ্য সরকারের৷ পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চিকিৎসার সমান্তরালে বিকল্প ব্যয়বহুল পরিষেবা থাকলেও, সিংহভাগ মানুষ সরকারি পরিষেবার ওপরই নির্ভরশীল৷
ছবি: The Week/Gunjan Sharma
মাত্র দু’টাকায় চিকিৎসা
দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী মানুষরা চিকিৎসার জন্য মূলত সরকারি হাসপাতালের ওপরই নির্ভরশীল৷ হাসপাতালের বহির্বিভাগে মাত্র দু’টাকার বিনিময়ে চিকিৎসার পাশাপাশি কম খরচে পেসমেকার স্থাপন, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, আল্ট্রাসাউন্ড বা ইসিজির মতো পরিষেবাও পাওয়া যায়৷
ছবি: DW/P. Samanta
চেতনা বাড়াতে টিভি
প্রসূতির দেখাশোনা বা নবজাতকের প্রতিপালনের নিয়ম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হাসপাতালের সরকারি হাসপাতালের ন্যাটাল ওয়ার্ডে এখন হাজির টিভি৷ তাতে মেগা সিরিয়ালের বদলে সচেতনামূলক অনুষ্ঠান দেখানো হয়!
ছবি: DW/P. Samanta
সর্বক্ষণের চিকিৎসক
রাতবিরেতে অসুখ-বিসুখে সরকারি হাসপাতালই ভরসা৷ এখানে আপৎকালীন পরিষেবা ছাড়াও ২৪x৭ চিকিৎসক পাওয়া যায়৷ সারা পশ্চিমবঙ্গেই বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় এই ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতাল অনেকটা এগিয়ে৷
ছবি: DW/P. Samanta
উন্নতমানের পরিষেবা
সম্প্রতি সরকারি হাসপাতালে সংকটাপন্ন রোগী ও শিশুদের বিশেষ পরিচর্যার জন্য এসএনসিইউ, সিসিইউ, এইচডিইউ চালু করা হয়েছে, যা এতদিন ছিল কেবল বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমেই৷ উপকৃত হয়েছে দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার৷
ছবি: DW/P. Samanta
ন্যায্য মূল্যে ওষুধ
ব্র্যান্ডের থাবা থেকে ওষুধ মুক্তি পেতেই মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে৷ চিকিৎসক জেনেরিক নামে ওষুধ লেখার ফলে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে৷ এ সব দোকানে ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় মেলে৷
ছবি: DW/P. Samanta
নাগালে আধুনিক পরিষেবা
সরকারি হাসপাতালে ডিজিটাল এক্স-রে, ইউএসজি, সিটি স্ক্যানের মতো আধুনিক পরিষেবা পাওয়া যায়৷ তবে রোগীর চাপে অনেক সময়েই এসব যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন বিকল হয়ে পড়ে থাকে৷
ছবি: DW/P. Samanta
নানারকম প্রকল্প
পশ্চিমবঙ্গে সরকারি স্তরে স্বাস্থ্য পরিষেবায় নানা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে৷ জননী শিশু সুরক্ষার মতো প্রকল্প এখন বেশ জনপ্রিয়৷ এর সাহায্যে মায়ের প্রসবকালীন মৃত্যুর হারও কমিয়ে ফেলা গেছে৷
ছবি: DW/P. Samanta
সরকারি হাসপাতাল প্রাঙ্গণ
বেশিরভাগ সময়েই তিল ধারণের জায়গা থাকে না৷ তবুও পরিষেবার খোঁজে দৈনিক কত না মানুষের জমায়েত হয় সরকারি হাসপাতালে! তৃতীয় বিশ্বের জনবহুল দেশে এটাই দস্তুর৷
ছবি: DW/P. Samanta
অতিথি দেবঃ ভব
সরকারি হাসপাতাল আগের থেকে পরিচ্ছন্ন হয়েছে, সুলভে মিলছে পরিষেবা: কিন্তু কিছু ছবি এখনও বদলায়নি: যেমন বিভিন্ন ওয়ার্ডে চারপেয়েদের অবাধ বিচরণ৷
ছবি: DW/P. Samanta
স্বাস্থ্য যখন পণ্য
যাঁদের হাতে টাকা রয়েছে, তাঁরা সরকারি হাসপাতালে ভিড় এড়াতে বেসরকারি পরিষেবার সুযোগ নেন৷ যদিও কলকাতার এমন বেসরকারি ক্লিনিকেও এখন ভালো ভিড় নজরে পড়ে৷
ছবি: DW/P. Samanta
যেখানে বিশ্বাস
অ্যালোপ্যাথির পাশাপাশি এ রাজ্যে হৈ হৈ করে হোমিওপ্যাথি বা আয়ুর্বেদ চিকিৎসাও চলছে৷ এর খরচ কম, তাছাড়া ব্যয়সাপেক্ষ পরীক্ষার ঝামেলা থাকে না বলে অনেকেই এ সবের উপর আস্থা রাখেন৷
ছবি: DW/P. Samanta
নার্সিংহোম দিকে দিকে
এখন পশ্চিমবঙ্গে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চালু হয়েছে৷ তবুও নার্সিংহোমের রমরমা কিন্তু কমেনি৷ সার্জারি, ডায়ালিসিস ইত্যাদির জন্য মানুষ এখনও এদের ওপর নির্ভরশীল৷
ছবি: DW/P. Samanta
বহুরূপে সম্মুখে
কলকাতা সহ সর্বত্রই রক্তসহ নানা পরীক্ষাগার বা প্যাথোলজি ল্যাব গজিয়ে উঠেছে৷ গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও দিব্যি তারা লাভজনক ব্যবসা করছে৷ উল্টোদিকে গ্রামীণ এলাকায় অনেক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনো ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান নেই৷
ছবি: DW/P. Samanta
13 ছবি1 | 13
এরই মধ্যে বেহালার একটি নার্সিংহোমে সোডিয়াম, পটাসিয়াম কমে যাওয়া নিয়ে একজন ভর্তি হলে মাত্রাছাড়া বিল করা হয়েছে৷ এমন নজির ভূরি ভূরি, তার কতটা সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে! ডাঃ পুণ্যব্রত গুণ বলেন, "বেসরকারি পুঁজির মালিকরা লাভের জন্য বেশি বিল করবেই৷ খরচ যেমন একটা বিষয়, তেমনি এখানে পরিষেবা রোগীবান্ধব নয়, তাই মানুষকে চিকিৎসার জন্য দক্ষিণে যেতে হয়৷”
স্বাস্থ্য কমিশনের পদক্ষেপ
চার বছর ধরে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনে মানুষ অভিযোগ জানাচ্ছেন৷ ছোট-বড় বেসরকারি নার্সিংহোম বা হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি দেখলে চমকে উঠতে হয়৷ এক্ষেত্রে দেখা যায়, রোগীর বিলের অঙ্ক অস্বাভাবিক বেশি এবং তা কোনোভাবেই পরিষেবার সমতুল নয়৷ এমনকি চিকিৎসার বিল বাড়াতে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও ওষুধের ব্যবহার করা হয়৷ চিকিৎসার মূল খরচের তুলনায় আনুপাতিক হারে আনুষঙ্গিক খরচ বেশি৷ যদিও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব মানতে নারাজ৷ ভেলোরের বিল প্রসঙ্গে একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ ডাঃ কুণাল সরকার বলেন, "কমিশনের তুলনা এখানে প্রাসঙ্গিক নয়৷ কমিশনের মন্তব্যও বিবেচনাপ্রসূত নয়৷ কলকাতা আর ভেলোর পাঞ্জা লড়াই করছে না৷ ভেলোর আমাদের কাছে নমস্য প্রতিষ্ঠান৷”
বরং ডাঃ সরকার স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্যকেই ‘বিভ্রান্তিকর' বলেছেন৷ বিকাশের চিকিৎসা প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, "একটা নির্দিষ্ট ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে৷ সংশ্লিষ্ট হাসপাতালটি যথেষ্ট ভালো চিকিৎসা করেছে৷ চারটে অপারেশন করতে হয়েছে বলে এই বিল হয়েছে৷”