এনসিপি আসলে কার?
২২ মে ২০২৫
এনসিপি ও তাদের কিছু নেতা-কর্মীর কার্যকলাপের সঙ্গে ‘সরকারি দল'-এর মিল পাচ্ছেন অনেকেই৷
তবে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারি প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, "তারা তো রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি করেছিল। সরকার তো সেটা মেনে নেয়নি।”
এনসিপির প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগের জবাবে এই দৃষ্টান্তকেই হাতিয়ার করলেন ফয়েজ আহম্মদ৷ তবে এনসিপির দাবি না মানার ওই দৃষ্টান্ত প্রায় ভুলিয়ে দিয়েছে তাদের আন্দোলনে পুলিশ প্রশাসনকে প্রায় সহযোগীর ভূমিকায় নামতে দেখার ঘটনা৷ সম্প্রতি গরমের কষ্ট থেকে এনসিপির নেতা-কর্মীদের বাঁচাতে নগর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ঠান্ডা পানির বাষ্প ছিটানোর উদ্যোগ, অন্যদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে গরম পানির জলকামান৷
৯ মে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও দলটির বিচারের দাবিতে এনসিপি যখন হাসনাত আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু করে, তাদের বোতলজাত খাবার পানিও সরবরাহ করা হয়। শাহবাগ এলাকা থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাওয়ার সময় তাদের বাধা দেয়া হয়নি। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের পাশে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পূর্ব দিকের সড়কে মঞ্চ বানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে তারা। অথচ পূর্বের এক আদেশ অনুযায়ী তখন ওই এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ৷ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-র সেই নিষেধাজ্ঞা এনসিপি সেদিন মানেনি, পুলিশ মানতে বাধ্যও করেনি৷
কিন্তু মাত্র চারদিন পর, অর্থাৎ ১৪ মে দেখা যায় সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র৷ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তিনদফা দাবি আদায়ে যমুনার দিকে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হতেই পুলিশ হামলা চালায়। শিক্ষকরাও হামলা থেকে রেহাই পায়নি। জগন্নাথের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাকরাইল মোড়েই থামিয়ে দেয়া হয়। তাদের ওপর গরম পানি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছোঁড়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যেতে দেয়া তো দূরের কথা, সেদিকে এগোতেই দেয়া হয়নি। তাদের জন্য শীতল পানির ব্যবস্থাও করেনি সিটি কর্পোরেশন। বরং আগের দিন প্রয়োগ না দেখা গেলেও সেদিন সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা ঠিকই কার্যকর করে পুলিশ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এটা যেহেতু একটা গণঅভ্যুত্থানের সরকার, যেহেতু সব দল এবং সবার মতামতের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে, তাই আমাদের আশা ছিল এই সরকার সবার প্রতি সমান আচরণ করবে। কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম আমাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনের কয়েকদিন আগে এনসিপি যখন তাদের রাজনৈতিক দাবি আদায়ের আন্দোলন করে, তখন ঠান্ডা পানি ছিটিয়ে তাদের সেখানে ( যমুনার সামনে) রাখা হয়। আর আমরা যখন আন্দোলন করতে গেলাম, আমাদের ওপর পুলিশ হামলা চালালো। নির্বিচারে লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার গ্যাস- সবই প্রয়োগ করল। আমরা আহত হলাম। আমাদের শিক্ষকদের ওপরও হামলা চালানো হলো। এটা অবশ্যই একটা বৈষম্য। অথ চ এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেই আমরা আন্দোলন করেছি।”
তার কথা, "আমরা যাদের ক্ষমতায় বসিয়েছি, তাদের বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের জন্যই বসিয়েছি। কিন্তু দেখলাম, তারা কাউকে বুকে টেনে নেয় আবার কাউকে আঘাত করে। এটা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে, বৈষম্যহীন সমাজ এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বৈষম্যহীন সমাজের জন্য আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
দাবি আদায়ের আন্দোলনে সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণ প্রসঙ্গে উঠে আসে গত ১১ মার্চের ধর্ষণবিরোধী সমাবেশের কথাও৷ নারীদের সেই সমাবেশেও হামলা চালিয়েছিল পুলিশ। সেদিনও আন্দোলনকারীরা শাহবাগ থেকে মিছিল নিয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে দিয়ে যমুনায় যেতে চেয়েছিলেন৷ পুলিশ হামলা চালানোর পরে তাদের বিরুদ্ধেই উল্টো মামলাও করেছিল। অথচ তখন ওই এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ছিল না।
১১ মার্চের পরই যমুনার আশপাশের এলাকায় মিছিল ও সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু সেটা এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা তাদের অনুসারী কয়েকটি সংগঠনের ক্ষেত্রে কখনোই প্রয়োগ করা হয় না বলে অভিযোগ। এই কয়েকটি সংগঠন শাহবাগ থেকে শুরু করে ইন্টারকন্টিরেন্টাল বা যমুনার সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করতে পারে নির্বিঘ্নে। করতে পারে মিছিল, মিটিং, এমনকি গরু জবাই করে আনন্দভোজও করতে পারে।
গত ফেব্রুয়ারিতেও এনসিপির বিপরীত ‘ভাগ্য' মেনে নিতে দেখা গেছে আন্দোলনকারীদের৷
প্রেসক্লাব ও শাহবাগে আন্দোলন করছিলেন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা৷ গরম পানি ছুঁড়ে তাদেরও লাঠিপেটা করেছিল পুলিশ। ১২ মার্চ মিছিল নিয়ে যমুনায় যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের আবার লাঠিপেটা করে পুলিশ। অথচ দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের ভিতরে ঢুকে বৈষম্যবিরোধীরা আন্দোলন করেলেও তাদের সামান্যতম বাধাও না দিয়ে উল্টো সহায়তাই করেছে পুলিশ।
বুধবার আগারগাঁয়ে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করে এনসিপি। মঙ্গলবার রাতে কর্মসূচি ঘোষণা করে বুধবার দুপুরে সহজেই সেখানে হাজির হয়ে সমাবেশ করে তারা। ব্যারিকেড দেয়ার সাময়িক প্রয়াস মৃদু চেষ্টায় সরিয়ে ফেলা হয়৷ তারা নির্বাচন কমিশনের দেয়াল ঘেঁষেই সমাবেশ করে। পুলিশও ছিল সেখানে, তবে তারা দাঁড়িয়ে ছিলেন নীরবে...। তারা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দাবি করে। তারা বলে, এই নির্বাচন কমিশন একটি দলের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট। কমিশন পুনর্গঠন না হলে তারা কোনো নির্বাচন হতে দেবেনা।
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেন, "দেখেন, আজকে (বুধবার) এনসিপি নির্বাচন কমিশন অভিমুখে যাত্রা করেছে। সেখানে সমাবেশ করেছে। তারা যে দাবি, করেছে সেই দাবি আমি ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন করি। কিন্তু তারা যে সেখানে গেল, সমাবেশ করলো, পুলিশ কিন্তু কোনো বাধা দেয়নি। তারা অবাধে সেখানে গিয়েছে, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙেছে। বিএনপি হলে কিন্তু এই সুযোগ পাবে না।”
তার কথা, "একটা পারসেপশন তৈরি হয়েছে যে, এনসিপি যেটা চায় সরকারও সেটাই চায়। তারা সরকারের হয়েই বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে নামে। ফলে তারা যখন কোনো দাবি নিয়ে আন্দোলন করে, তখন তারা কোনো বাধা বা পুলিশের হামলার মুখে পড়ে না। অন্যদের ক্ষেত্রে কিন্তু সেরকম হয় না।”
"আসলে তাদের যে আচার-আচরণ, কর্মকাণ্ড সব মিলিয়ে এখন মানুষের মনে একটি ধারণা তৈরি হয়েছে যে, এনসিপি একটি সরকারি দল। আর এনসিপি গঠনের ব্যাপারেও ড. ইউনূসের সরাসরি একটা ভূমিকা আছে। তিনি নিজেও সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে তিনি ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠন করতে বলেছেন,” বলেন মাসুদ কামাল।তার মতে, "এনসিপি নেতারা এখন নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। তারা ঢাকার বাইরে গেলে পুলিশের প্রটোকল পান। যেমন ,গতকাল (মঙ্গলবার) এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদ ধানমন্ডি থানায় গিয়ে আটক তিনজনকে ছাড়িয়ে আনলেন। বিএনপির কোনো নেতা এটা পারতেন? পুলিশ কেন তার কথা শুনলো? শুনলো এই কারণে যে, পুলিশও মনে করে যে, এনসিপি নেতার কথা না শুনলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার হতে পারেন।”
মাসুদ কামাল যে ঘটনার কথা বলেছেন, সেই ঘটনায় আবদুল হান্নান মাসউদকে শোকজ করেছে এনসিপি।
সোমবার রাতে ধানমন্ডিতে মব ভায়োলেন্স করতে গিয়ে আটক হন ‘বৈষম্যবিরোধী' তিন নেতা। তারা দলবল নিয়ে গিয়ে হাক্কানী পাবলিসার্সের মলিক গোলাম মোস্তফার বাসায় ঢোকার চেষ্টা করে। ওই বাসায় ‘ফ্যাসিস্টের দোসর' আছে দাবি তুলে বাসার সামনে গিয়ে হইচই শুরু করে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে ওই বাসা থেকে গোলাম মোস্তফাকে আটকের জন্য পুলিশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তারা। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় কোনো মামলা ছাড়া আটক করা যাবে না৷ফলে পুলিশের সাথে বাকবিতণ্ডায়য় লিপ্ত হয় তারা। এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সোমবার রাতে আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বী , ঢাকা মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারহান সরকার দীনা। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়েন। আরেকজন হলেন মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদউল্লাহ জিসান । তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী এবং পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে সহায়ক হিসেবে কাজ করেন। মঙ্গলবার থানায় গিয়ে ওই তিনজনকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এসনিপি)-র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। এই ঘটনায় এনসিপির পক্ষ থেকে হান্নান মাসউদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এনসিপির নোটিশে বলা হয়েছে, "বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক উক্ত তিনজনের অন্যতম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিকে নৈতিকতা স্খলনজনিত কারণে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। তা সত্ত্বেও, আপনি সংশ্লিষ্ট থানায় উপস্থিত হয়ে আটক তিনজনের মুচলেকা প্রদান করে থানা থেকে তাদেরকে জামিন করিয়েছেন। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে আপনার ব্যাখ্যা এবং আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার লিখিত বিবরণ আগামী তিন দিনের মধ্যে শৃঙ্খলা কমিটির প্রধানের নিকট উপস্থাপন করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হলো।”
এর আগেও কয়েকটি ক্ষেত্রে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে এনসিপি৷ দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল যুগ্ম সদস্য সচিব সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে৷ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। তবে এখনো তাকে চূড়ান্তভাবে দল থেকে বহিস্কার করেনি এনসিপি। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বলেন, "আমাদের দলটি নতুন। এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে অনেকেই এনেছেন। তাদের হয়তো বিভিন্ন ধরনের কমিটমেন্ট আছে। সেই কারণে কিছু ঘটনা ঘটছে। কিন্তু আমরা দলের নৈতিকতা ও শৃঙ্খলাকে প্রাধান্য দিচ্ছি। ফলে যখনই কোনো ঘটনা আমাদের নজরে আসে, আমরা তদন্ত করি, ব্যবস্থা নিই।”
দলটি সরকারের অনুকুল্য পাচ্ছে বা সরকারেরই দল এনসিপি- এমন ধারণার সত্যতা অস্বীকার করে তিনি বলেন, "আসলে সরকার ও এনসিপিকে একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলার একটা প্রবণতা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আছে। কিছু কিছু সংবাদমাধমেওরও একটা প্রবণতা আছে। আসলে আমরা একটি রাজনৈতিক দল। আমরা সরকারের কোনো দল না।”
"আসলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি আমাদের আগে থেকেই ছিল। আমাদের যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তখন আমরা আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন নিয়ে গেছি। আর নির্বাচন কমিশনেও আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে গিয়েছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিও যৌক্তিক। তাদের ওপর হামলা আমরা সমর্থন করি না,” বলেন তিনি।
তবে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, " এরা (এনসিপি) শুধু রাজনৈতিক দল না, এরা হলো ইউনূস সাহেবের নিয়োগকর্তা। তিনি নিজেই বলেছেন এরা (ছাত্ররা) তাকে বসিয়েছে। ফলে নিয়োগকর্তা যখন আন্দোলন করে বা দাবি করে, কর্মচারীকে সেটা মানতেই হবে। ইউনূস সাহেব তাদের কর্মচারী। এই দলটির এখনো নিবন্ধন না থাকলেও তারা রাজনৈতিক দলের চেয়েও বেশি। তার কিংস পার্টি।”
তার কথা, "এনসিপি ছাড়া আর সবার সাথে, সব রাজনৈতিক দলের সাথে এই সরকার বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। এনসিপি হচ্ছে তার (ড. ইউনূস) ঢোলের বাড়ি। তিনি যা চান, এনসিপি তা বলে। সারাদেশে সর্বোচ্চ দুই হাজার ছেলে-মেয়ে আছে। তারা ঢোলে বাড়ি দেয় আর ইউনূস সাহেব তা মেনে নেন।”
তবে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ বলেন, " এনসিপি হলো জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রদের একটি অংশের রাজনৈতিক দল। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতোই এনসিপি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেক হোল্ডার। যেমন বিএনপি, জামায়াত, এবি পার্টি, নাগরিক পার্টিসহ আরো নানান ধরনের পলিটিক্যাল পার্টি আছে। সবগুলো পলিটিক্যাল পার্টি যেমন সরকারের স্টেক হোল্ডার, তারাও (এনসিপি) সরকাররে স্টেক হোল্ডার। কেউ কেউ আসলে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে যে এনসিপি সরকারের সহানুভূতি পাচ্ছে। তারা কিন্তু আরো অনেক দাবি তুলেছে। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ, জুলাই ঘোষণা পত্রের দাবি করে। সেই দাবি কিন্তু সরকার মানেনি। তাহলে আপনি কীভাবে প্রমাণ কনরবেন যে, শুধুমাত্র তাদের দাবিই মেনে নেয়া হয়। এক পর্যায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিও তো মেনে নেয়া হয়েছে।”
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন," প্রতিটি আন্দোলনের যে ধরন সেই ধরন বুঝে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তার করণীয় নির্ধারণ করে থাকে। কারা কতটুকু করতে পারে বা কী করবে তাও তারা জেনে সিদ্ধান্ত নেয়। এনসিপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল একত্রিত হয়ে যখন যমুনা অভিমুখে ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে এসেছে, যেখানে তাদের পুলিশ আটকে দিয়েছে। তার পরে কিন্তু তারা আর প্রবেশ করেনি। তেমনিভাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ের ছাত্রদেরও একটা জায়গায় আটকে দেয়া হয়। যে গ্রুপকে আটকে দেয়ার পর তারা আর ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করেনি, তাদের ক্ষেত্রে পুলিশের আচরণ যেরকম হবে, আবার যাদের আটকে দেয়ার পরও প্রবেশের চেষ্টা করেছে,তাদের ক্ষেত্রে পুলিশের আচরণ নিশ্চয়ই একইরকম হবে না।”