বাংলাদেশে ‘এপ্রিলের প্রথমার্ধে’ জাতীয় নির্বাচন
৬ জুন ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেন, ‘‘সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন এই তিনটি ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম৷ সে বিবেচনায় আগামী রোজার ঈদের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য জায়গায় পৌঁছতে পারবো বলে বিশ্বাস করি৷ বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার- যা কি না জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি আমাদের সম্মিলিত দায়- সে বিষয়ে আমরা দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পারব৷''
তিনি বলেন, ‘‘এতে আমাদের ওপর আপনাদের অর্পিত ম্যান্ডেট ন্যূনতম হলেও বাস্তবায়ন করে যেতে পারব৷ সে বিবেচনায় ও ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য সকল পক্ষের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি৷ পাশাপাশি, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন সংক্রান্ত চলমান সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনা করে আমি আজ দেশবাসীর কাছে ঘোষণা করছি যে আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে৷ এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত সময়ে আপনাদের কাছে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রদান করবে৷''
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানেও তার সরকার উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমাদের দেশে এখন ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা বসবাস করছে৷ প্রায় ১ লক্ষ রোহিঙ্গা এসেছে ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর সময়কালে, যখন রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছিল৷ সেখানে চলমান সংঘাত ও মানবিক পরিস্থিতির কারণে এখনো অনেকে আসতে চেষ্টা করছেন৷ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসা বন্ধ করতে এবং যারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি৷''
তিনি বলেন, ‘‘জাতিসংঘের মহাসচিব গত মার্চ মাসে ঢাকা সফরকালে রাখাইন রাজ্যে মানবিক বিপর্যয়ের মোকাবেলার জন্য একটি ত্রাণ চ্যানেলের প্রস্তাব করেছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন এই প্রস্তাবটি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহায়ক হবে৷ বিষয়টি প্রস্তাব পর্যায়েই রয়ে গেছে৷''
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য করেছি রাখাইনের জন্য বাংলাদেশ করিডোর দিয়ে দিয়েছে বলে একটা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে৷ আমি সুস্পষ্টভাবে বলছি, এটি সর্বৈব মিথ্যা৷ এটা চিলে কান নিয়ে যাওয়ার গল্প৷ যারা অসত্য কল্পকাহিনী বানিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ক্রমাগত বিভ্রান্ত করে অশান্তি সৃষ্টিতে নিয়োজিত, এটা তাদেরই শিল্পকর্ম৷ আপনারা এ বিষয়ে হুঁশিয়ার থাকবেন৷ কোনোভাবেই বিভ্রান্ত হবেন না৷ এসব অপপ্রচার সত্ত্বেও আমরা লক্ষ্যচ্যুত হবো না৷ এই জটিল সমস্যাটি সমাধানে আমাদের কাজ চালিয়ে যাবো৷''
জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন, মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অতীতের গুম, খুন ও দুর্নীতির বিচার করার ব্যাপারে অঙ্গীকার পুর্নব্যক্ত করেন তিনি৷ পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সরকারের অবস্থান জানিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস৷
এআই/এসিবি