রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে মার খেতে হয়েছিল তাদের। এবার তাদের নামেই এফআইআর। বিচার চেয়ে হাইকোর্টে ইডি।
বিজ্ঞাপন
গত শুক্রবার রেশন দুর্নীতি মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি সংগ্রহ করতে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সন্দেশখালিতে গেছিলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) কর্মকর্তারা। সেখানে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু রাস্তাতেই তাদের উপর হামলা হয়। তাদের গাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন ইডি অফিসারেরা।
এই ঘটনার পরেই পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হয়, যে ইডি কর্মকর্তারা ওই দিন সেখানে গেছিলেন, তাদের একজনের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত করছে। অর্থাৎ, তাকে ক্লিন চিট দেয়া যায় না। এরপরেই ওই ইডি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা এফআইআর করা হয় রাজ্য পুলিশে।
বুধবার এই বিষয়টি নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ইডি কর্মকর্তারা। তাদের অভিযোগ, ইডি-র তদন্তে বাধা দিতে রাজ্যে সবরকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাদেরকেই মারা হচ্ছে, আবার তাদের বিরুদ্ধেই এফআইআর করা হচ্ছে। হাইকোর্ট এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক, এই আবেদন জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ইডি।
ইডির বিরুদ্ধে অভিষেক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে বাম, চাকুরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ
কলকাতায় রাজভবনের বাইরে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইডি-সিবিআই ও অভিষেকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালো সিপিএম। তার কিছুটা দূরেই হবু শিক্ষকরা প্রায় তিন বছর ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
রাজভবনের সামনে
কলকাতায় রাজভবনের সামনে মঞ্চ তৈরি করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতেই তিনি রাজভবন অভিযানের ঘোষণা করেছিলেন। বুধবার সেই অভিযানও করেন। কিন্তু রাজ্যপাল তখন কলকাতা ছিলেন না। অভিষেক ঘোষণা করেন, রাজ্যপাল না আসা পর্যন্ত তারা ওখানেই অবস্থান করবেন। দিল্লিতে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে হেনস্থা ও ইডি-সিবিআই যেভাবে কাজ করছে, তার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বন্যা দেখতে রাজ্যপাল
অভিষেক যখন রাজভবন অভিযান করছেন, তখন রাজ্যপাল বন্যা পরিস্থিতি দেখতে উত্তরবঙ্গে। সেখান থেকে তিনি দিল্লি চলে যান। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত তিনি কলকাতা ফেরেননি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
অভিষেক বিক্ষোভে
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখনো বিক্ষোভ দেখিয়ে যাচ্ছেন। রাতে তিনি বিক্ষোভস্থলের পিছনে চলে যান। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ তিনি আবার মঞ্চে আসেন। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা না করে তিনি যাবেন না।
ছবি: Subrata Goswami/DW
প্রচুর পুলিশ মোতায়েন
বিক্ষোভস্থলে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে রাজভবনের সামনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কী করে মঞ্চ করে বিক্ষোভ দেখানোর অনুমতি দেয়া হলো, সে প্রশ্নও তুলছেন বিরোধীরা।
ছবি: Subrata Goswami/DW
অভিষেকের মঞ্চে নেতা-মন্ত্রী
অভিষেকের মঞ্চে তৃণমূলের প্রচুর নেতা-মন্ত্রীকে দেখা যাচ্ছে। সেখানে গান-বাজনাও হচ্ছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কাছেই শিক্ষক-প্রার্থীদের বিক্ষোভ
অভিষেক যেখানে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তার থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গত প্রায় তিন বছর ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের কথা তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীরা অবশ্য কানে নেন না বলে বিক্ষোভকারীদের দাবি। তারা সকলেই শিক্ষক হওয়ার পরীক্ষায় পাস করেছেন। কিন্তু দুর্নীতির জন্য চাকরি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
এখনো বিক্ষোভ দেখিয়ে যাচ্ছেন
তারা এখনো বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। হাতে পোস্টার। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন তারা। তাদের বক্তব্য, রাজ্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে অভিষেক দিল্লি গিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, কলকাতায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তারাও তো এতদিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। কিন্তু তাদের কথা কেউ শোনে না।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সিপিএমের প্রতিবাদ
সিপিএমের নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, অন্য রাজ্যে ইডি-সিবিআই দুর্নীতির নামে বিরোধী দলের নেতাদের হেনস্থা করছে। আর পশ্চিমবঙ্গে তারা দুর্নীতির চাঁইদের ছেড়ে রাখছে। সেজন্যই সিজিও কমপ্লেক্সে অভিযানের ডাক দিয়েছিল সিপিএম। সেখানে কর্মী-সমর্থদের নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সিপিএমের প্রচার
এই বাম দল বেশ কিছুদিন বলো বিজেমূলের তত্ত্ব সামনে এসেছে। এর অর্থ, বিজেপি ও তৃণমূল আসলে গোপনে হাত মিলিয়ে চলেছে। বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেবরা সমাবেশে এই অভিযোগই করেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
পশ্চিমবঙ্গে ইন্ডিয়া জোট নয়
সিপিএম আগেই জানিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে তারা তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলাবে না। এখানে বিরোধীদের জোট হবে না। ভোটের আগে তারাও দুর্নীতির অভিযোগকে হাতিয়ার করে রাস্তায় নেমে পড়েছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
10 ছবি1 | 10
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত মামলাটি গ্রহণ করেছেন। চলতি সপ্তাহেই মামলাটির শুনানি শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে।
কী হয়েছিল সন্দেশখালিতে
গত শুক্রবার সন্দেশখালিতে তৃণমূলের বাহুবলী নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গেছিলেন ইডি-র পাঁচ কর্মকর্তা। বাড়ির সামনে পৌঁছে তারা দেখেন দরজা বন্ধ। এলাকায় মুহূর্তের মধ্যে লোক জমতে শুরু করে। সকলেরই দাবি, তারা শাহজাহানের অনুগামী। এরপর ইডি দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করতেই মারমুখী হয়ে ওঠে জনতা। তিনজন ইডি কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে আঘাত করা হয়। একজনের আঘাত গুরুতর। কোনোরকমে প্রাণ হাতে করে ঘটনাস্থল থেকে পালান ইডি অফিসারেরা। পরে তারা জানান, হাতাহাতির সময় তাদের মোবাইল এবং ল্যাপটপও খোয়া গেছে। মারমুখী জনতা তা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ।
কেন সরকারি কর্মকর্তাদের গায়ে হাত উঠল, কেন স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিল না, সে প্রশ্নও উঠেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে নোটিস পাঠিয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার হাইকোর্ট ইডি-র মামলা গ্রহণ করল।