প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে রাশিয়া৷ ফুটবলের সর্বোচ্চ এই আসর রাজনৈতিকভাবে এর আগে কখনোই এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেনি৷ কখন বন্ধ হবে রাজনীতি, শুরু হবে খেলার মজা, ফুটবলপ্রেমীরা এখন সে অপেক্ষায়৷
বিজ্ঞাপন
একটি আধুনিক ও বহুজাতিক দেশ হিসেবে বিশ্বের সামনে নিজেকে তুলে ধরার এত বড় সুযোগ রাশিয়ার সামনে এর আগে আসেনি৷ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনও রাজনীতির পাশাপাশি খেলাধুলাতেও বিশ্বের বৃহত্তম দেশটির গুরুত্ব তুলে ধরার সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ৷
বিশ্বকাপকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন পুটিন৷ ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় পুটিন বিশ্বকাপ আয়োজনে রাশিয়ার দাবির পক্ষে প্রচারণা চালাতে নিজেই জুরিখ গিয়েছিলেন৷ সে সময় ফিফা কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার অভিযোগও ওঠে রুশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে৷ বিশ্বকাপ আয়োজনের নিলাম প্রক্রিয়া নিয়ে ফিফাকে একাধিকবার তদন্তের সম্মুখীনও হতে হয়েছে৷
বিশ্বকাপ: শিল্পীর তুলিতে ইতিহাস
ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮-র চূড়ান্ত দল ঘোষণা করেছে জার্মানি৷ বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, চূড়ান্ত দলে নেই লেরয় জানে৷ তবে বিশ্বকাপে এটাই প্রথম বিস্ময় নয়৷ কার্টুনিস্ট জার্মান আচ্যেল ক্যানভাসে তুলে ধরেছেন আরো কিছু বিস্ময়ের কথা৷
ছবি: Aczel / Edel Books
১৯৩০: কোনো এক সময়...
প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৩০ সালে, উরুগুয়েতে৷ সেসময় মূলত উত্তর, মধ্য এবং দক্ষিণ অ্যামেরিকার দলগুলো বিশ্বকাপে অংশ নেয়৷ ইউরোপ থেকে স্টিমশিপে চেপে সেই বিশ্বকাপে অংশ নিতে যায় চারটি দল৷ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয় করে স্বাগতিক উরুগুয়ে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৫৪: বার্ন-এ চমক
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় সুইজারল্যান্ডে৷ সেবার প্রস্তুতি পর্বে হাঙ্গেরির কাছে ৮-৩ গোলে হারে জার্মানি৷ কিন্তু ফাইনালে ইতিহাস রচনা করে জার্মানরা৷ হাঙ্গেরিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে দেশটি৷ কার্টুনে জার্মান দলের ফ্রিৎস ভাল্টার (বামে) এবং প্রশিক্ষক সেপ হ্যার্বারগারকে উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের কাঁধের উপর দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৬৬: প্রথম এবং একমাত্র
যদিও ফুটবলের জন্মস্থান মনে করা হয় ইংল্যান্ডকে, তা সত্ত্বেও দেশটি বিশ্বকাপ জিতেছে মাত্র একবার - ১৯৬৬ সালে৷ সেবার নিজেদের মাটিতে জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারায় ইংলিশরা৷ খেলার ১০১ মিনিটে, অর্থাৎ অতিরিক্ত সময়ে করা এক গোল, যেটি ‘ওয়েম্বলি গোল’ হিসেবে পরিচিত, নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়ে গেছে৷ কার্টুনে ববি মুরকে বিশ্বকাপ হাতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৭০: পেলের জন্য ‘থ্রি চিয়ার্স’
সেবছর তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে ব্রাজিল৷ বিংশ শতাব্দির অন্যতম ফুটবল তারকা পেলের নেতৃত্বে ফাইনালে ৪-১ গোলে ইটালিকে হারায় ব্রাজিল৷ রঙিন টিভিতে প্রচার হওয়া প্রথম বিশ্বকাপ সেটি৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৭৪: বেকেনবাওয়ার বনাম ক্রুইফ
জার্মানিতে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপে বেশ কিছু নাটকীয় ঘটনা ঘটেছিল৷ জার্মানির তখনকার সেরা খেলোয়াড় ফ্রানৎস বেকেনবাওয়ারের সঙ্গে তাঁর মতোই জনপ্রিয় নেদারল্যান্ডসের ইয়োহান ক্রুইফের লড়াই দেখতে উন্মুখ ছিলেন অনেকে৷ সেবার পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে খেলেছিল পূর্ব জার্মানি৷ ফাইনালে ২-১ গোলে নেদারল্যান্ডসকে হারায় জার্মানি৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৮৬: ঈশ্বরের হাত
সেবার ফুটবল তারকা দিয়েগো মারাদোনার দিকে নজর ছিল সবার৷ তাঁর কল্যাণে আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জিতেছে বটে, কিন্তু তাঁর করা একটি গোল নিয়ে আজও বিতর্ক রয়েছে৷ ‘ঈশ্বরের হাত’ খ্যাত সেই গোলটি মারাদোনা হাত দিয়ে করেছিলেন বলেই দাবি অনেকের৷ তবে সেবার পাঁচ ইংলিশ খেলোয়াড়কে কাটিয়ে মারাদোনার করা আরেক গোল ‘শতাব্দির সেরা গোল’-এর স্বীকৃতি পেয়েছে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৯০: থুথু হামলা
ইটালিতে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয় করে জার্মানি৷ সেবার এক ম্যাচে জার্মানির রুডি ভ্যলারের গায়ে থুথু দিয়েছিলেন ডাচ খেলোয়াড় ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড৷ সেই ঘটনার পর দুই খেলোয়াড় ধস্তাধস্তি শুরু করলে দু’জনকেই মাঠ থেকে বের করে দেয়া হয়৷
ছবি: Aczel/Edel Books
২০০৬: ক্ষিপ্ত জিদান
সেবারের বিশ্বকাপ নিয়ে এখনো আলোচনা হয় জিনেদিন জিদানের এক আচরণের কারণে৷ জার্মানিতে অনুষ্ঠিত আসরের ফাইনালে পেনাল্টি শ্যুটআউটে ফ্রান্সকে হারায় ইটালি৷ তবে ফাইনালের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত ছিল যখন ইটালির মার্কো মাতেরাৎসিকে মাথা দিয়ে ঢুস দিয়ে ফেলে দেন জিদান৷ সেই ঘটনায় জিদানের উজ্জ্বল ফুটবল কেরিয়ারের সমাপ্তি ঘটে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
২০১০: টিকি-টাকার জয়
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতিপক্ষকে কাবু করতে টিকি-টাকা স্টাইল ব্যবহার করে স্পেন৷ এই স্টাইলের মাধ্যমে নিজের দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে পাস দিয়ে প্রতিপক্ষকে বিরক্ত ও বিভ্রান্ত করেছে স্প্যানিশরা৷ ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ জেতে তারা৷
ছবি: Aczel/Edel Books
২০১৪: ড্রিবলিংয়ের রাজা
ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত গত বিশ্বকাপের তারকা ছিলেন লিওনেল মেসি৷ তাঁর কল্যাণে আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠেছিল বটে, তবে ফাইনালে হেরেছে জার্মানির কাছে৷
ছবি: Aczel / Edel Books
২০১৪: চার-তারকা দল
রিও ডি জেনেইরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে ফাইনালে হাজির ছিল ৭৫,০০০ দর্শক৷ ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে গোল করে আর্জেন্টিনাকে হারায় জার্মানি৷ সেটা ছিল দক্ষিণ অ্যামেরিকার মাটিতে ইউরোপের কোনো দলের প্রথম বিশ্বকাপ জয়৷
ছবি: Aczel / Edel Books
২০১৮: বিতর্কিত কাপ
চলতি বছর বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ রাশিয়া৷ দেশটিতে বিশ্বকাপ আয়োজন দুর্নীতিতে জর্জরিত ফিফা’র এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত৷ ইতোমধ্যে ফ্যান-আইডির মাধ্যমে অগুনতি ফুটবল সমর্থকের গোপন তথ্য হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে৷ এমনকি জার্মানির সরকারি কর্মকর্তাদের যারা খেলা দেখতে যাচ্ছেন, তাঁদের স্মার্টফোন থেকে যাতে রাশিয়া তথ্য চুরি করতে না পারে, সেজন্য সেসব ফোন দেশে রেখে যেতে বলেছে জার্মানি৷
ছবি: Aczel / Edel Books
ফুটবল ইতিহাস নিয়ে কমিক
বিশ্বকাপ ১৯৩০-২০১৮ শীর্ষক কমিক বইতে বিশ্বকাপের বিভিন্ন স্মরণীয় ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে৷ কমিক বইটির প্রচ্ছদে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো, মানুয়েল নয়্যার, লিওনেল মেসি এবং নেইমারসহ কয়েকজন তারকাকে শিল্পীর তুলিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷
ছবি: Aczel / Edel Books
যার হাতে তুলি
কমিক বইটির জন্য কার্টুন এঁকেছেন আর্জেন্টিনার শিল্পী জার্মান আচ্যেল৷ তিনি কেরিয়ার শুরু হয়েছিল বুয়েনেস আইরেসে৷ সেখানে এল গ্রাফিকো স্পোর্টস ম্যাগাজিনে কাজ করতেন৷ পরবর্তীতে ২৬ বছর বয়সি এই কার্টুনিস্ট জার্মানিতে চলে আসেন এবং বর্তমানে মিউনিখে বসবাস করছেন ও ব্রিটিশ সকার ম্যাগাজিন ফোরফোরটু’তে কাজ করছেন৷
ছবি: Aczel/Edel Books
14 ছবি1 | 14
ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার প্রেসিডেন্ট পদেও এসেছিল পরিবর্তন৷ রাশিয়া অবশ্য বরাবরের মতোই সব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে৷
২০১৪ সালে সোচিতে আয়োজিত শীতকালীন অলিম্পিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে ডোপিংয়ের অভিযোগ ওঠে৷ এরপর পশ্চিমা বিশ্বের দৃষ্টিতে রাশিয়ার অপরাধের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে৷ ইউক্রেন আক্রমণ, সিরিয়ায় আগ্রাসন, জার্মান সরকারের বিরুদ্ধে সাইবার আক্রমণ, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ কেবলই রাশিয়াকে করেছে কোণঠাসা৷
সাবেক গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপলের ওপর ‘আক্রমণ'ও পূর্ব–পশ্চিমের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরিয়েছে৷ তবে, পশ্চিম ইউরোপের চেয়ে আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকাতে রাশিয়ার ভাবমূর্তি সম্পূর্ণ আলাদা৷
এই সব বিষয়েই অবগত রাশিয়ার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা৷ রুশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের চেয়ারম্যান ভ্যালেন্টিনা মাতভিয়েঙ্কো অবশ্য পুরো দায় চাপিয়েছেন বিদেশি সাংবাদিকদের ওপর৷ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাশিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হচ্ছে বলে দাবি তাঁর৷ এখন লাখ লাখ মানুষ আসছে রাশিয়ায়, সত্যিকার রুশদের দেখবে তাঁরা৷ তথ্যের যে যুদ্ধ চলছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে, তা তাঁদের প্রভাবিত করবে না৷
এমনকি, পুটিনবিরোধী রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত জনপ্রিয় ফুটল ধারাভাষ্যকার ভাসিলি উতকিনও খেলার সাথে রাজনীতি বেশি না মেশানোর আহ্বান জানিয়েছেন৷ ‘‘দেশের যে-কোনো ভোটারের মতো আমারও দেশের নেতৃত্ব নিয়ে আপত্তি আছে৷ কিন্তু কোনো দেশই বিশ্বকাপ বয়কট করেনি, রাশিয়ায় উপস্থিত হয়ে বিদেশি বন্ধুরা রাশিয়াকেই সমর্থন দিয়েছেন৷''
উত্তেজনার সেই মুহূর্তগুলো
মনে আছে রবার্তো বাজ্জোর সেই ফ্রি-কিকের কথা? মনে পড়ে, ১৯৯৪ বিশ্বকাপের সেই কালজয়ী ফাইনাল? এমন টানটান উত্তেজনা ইতিহাসে বিরল৷ চলুন ঘুরে আসি ১৯৩০ থেকে ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালের মাঠ থেকে৷
ছবি: imago sportfotodienst
১৯৩০
প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনাল৷ উরুগুয়ের মন্টিভিডিওতে স্বাগতিকরা মুখোমুখি আর্জেন্টিনার৷ ছবিটি আর্জেন্টাইনদের জালে উরুগুয়ের প্রথম বল ফেলার মুহূর্তের৷ আর্জেন্টিনাকে সেবার ২-৪ ব্যবধানে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামায় ১৯৪২ ও ১৯৪৬ এর বিশ্বকাপ দু’টি অনুষ্ঠিত হয়নি৷ এই আসর বসেছিল ব্রাজিলে৷ একমাত্র এই বিশ্বকাপেই কোনো ফাইনাল হয়নি৷ ১৩টি দলের অংশগ্রহণ থেকে শেষে শীর্ষস্থান নির্ধারণী ম্যাচে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতে উরুগুয়ে৷
ছবি: picture-alliance/ASSOCIATED PRESS
১৯৫৪
হেলমুট রানের পশ্চিম জার্মানিকে উল্লাসই মানায়৷ জমজমাট এক ফাইনালে ৩-২ গোলে তারা হাঙ্গেরিকে হারিয়ে প্রথমবার শিরোপা ঘরে তোলে৷ সুইজারল্যান্ডের বার্নে হয়েছিল এই ফাইনাল ম্যাচটি৷
ছবি: AP
১৯৫৮
এই বিশ্বকাপে সারাবিশ্ব এক সদ্য কৈশোর পেরুনো তরুণকে দেখেছিল৷ নাম তার পেলে৷ ছবিটি স্বাগতিক সুইডেনকে ফাইনালে ৫-২ গোলে হারিয়ে ব্রাজিলের প্রথম শিরোপা জেতার মুহূর্তে তোলা৷ পেলে আবেগ ধরে রাখতে না পেরে গোলরক্ষক গিলমার দস সান্তোসের কাঁধে মুখ লুকিয়ে কাঁদছিলেন৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
১৯৬২
পেলে অধ্যায় শুরু হয়েছে আগের বিশ্বকাপের আগেই৷ এ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ম্যাচেই চেকদের বিপক্ষে ইনজুরিতে পড়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েন পেলে৷ কিন্তু গারিঞ্চাসহ দলের অন্য সদস্যরা দলকে টেনে নিয়ে যান ফাইনালে৷ সেখানে চেকোস্লোভাকিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জেতে তারা৷
ছবি: AP
১৯৬৬
ইংল্যান্ড একবারই বিশ্বকাপ জেতার স্বাদ পেয়েছে৷ সেটিও ১৯৬৬ সালে৷ ছবিতে তৎকালীন অধিনায়ক ববি মুরকে জুলে রিমে ট্রফিতে চুমু খেতে দেখা যাচ্ছে৷ ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে জার্মানিকে হারায় ইংলিশরা৷
ছবি: Getty Images
১৯৭০
আবারো ব্রাজিল৷ আবারো জুলে রিমে ট্রফি৷ ইটালিকে ফাইনালে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেন পেলে, কার্লোস আলবার্তোরা৷ তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জিতে জুলে রিমে ট্রফিকে চিরদিনের জন্য নিজেদের করে নেয় ব্রাজিল৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/G. Foggia
১৯৭৪
ফাইনালে হল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারায় পশ্চিম জার্মানি৷ ছবিতে বেকেনবাওয়ারকে দেখা যাচ্ছে ট্রফি হাতে৷
এই বিশ্বকাপেই তরুণ মারাদোনা পা রাখেন বিশ্বকাপে৷ কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ড পার হতে পারেনি তাঁর দল৷ পশ্চিম জার্মানিকে ফাইনালে ৩-১ গোলে হারিয়ে সেবার শিরোপা জেতে ইটালিয়ানরা৷
ছবি: dapd
১৯৮৬
এই বিশ্বকাপেই জাদু দেখিয়েছেন ফুটবলের জাদুকর মারাদোনা৷ নিজে গোল করেছেন৷ গোল করিয়েছেনও৷ ইতিহাসের সেরা দু’টি গোল, একটি ‘ঈশ্বরের হাত’ দিয়ে গোল ও আরেকটি মাঝমাঠ থেকে প্রতিপক্ষের বেশ ক’জন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে, করেছেন এই বিশ্বকাপে৷ ফাইনালে আর্জেন্টিনা পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয়৷
ছবি: imago sportfotodienst
১৯৯০
এই বিশ্বকাপের ফাইনালেও আর্জেন্টিনা মুখোমুখি পশ্চিম জার্মানির৷ মারাদোনার দল ১-০ গোলে হেরে যায় লোথার ম্যাথিউস-ক্লিন্সমানদের জার্মানির কাছে৷ তবে রেফারিং, ফাউল ও খেলোয়াড়দের অসহিষ্ণুতার কারণে এটি সবচেয়ে কুৎসিত বিশ্বকাপ ফাইনালের তকমা পেয়েছে৷
ছবি: STAFF/AFP/Getty Images
১৯৯৪
এই বিশ্বকাপের ফাইনালটিই বোধ হয় এ যাবৎ সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনাল৷ নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় গোলশূন্য থাকার পর ব্রাজিল ও ইটালির ম্যাচটি গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে৷ সেখানে প্রথম চারটির তিনটিই প্রতিপক্ষের জালে ফেলে ব্রাজিল৷ আর ইটালি দু’টি৷ পঞ্চম কিকটি ছিল ইটালিয়ান তারকা বাজ্জোর৷ কিন্তু তিনি উত্তেজনাতেই কি না গোলবারের ওপর দিয়ে বল মারেন৷ ফলে চতুর্থ শিরোপা ঘরে তোলে ব্রাজিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
১৯৯৮
স্বাগতিক ফ্রান্স ও জিনেদিন জিদানের বিশ্বকাপ এটি৷ জিদানের জাদুতে বিশ্বকাপ জেতে ফ্রেঞ্চরা৷ ফাইনালে রোনাল্ডো, রিভাল্ডো, কার্লোস, ডুঙ্গাদের মতো তারকা খেলোয়াড় নিয়ে গড়া ব্রাজিলকে ৩-০ গোলে হারায় জিদানের ফ্রান্স৷ জিদান নিজেই করেন দুই গোল৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Euler
২০০২
কোরিয়া ও জাপানে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপের ফাইনালে রোনাল্ডোর জোড়া গোলে পঞ্চম শিরোপা জিতে ব্রাজিল৷ ফাইনালের প্রতিপক্ষ ছিল জার্মানি৷
ছবি: picture-alliance/ASA
২০০৬
এই বিশ্বকাপেও জিদানের ফ্রান্স ফাইনাল খেলে৷ কিন্তু এই ফাইনালটিও কুৎসিত হয় জিদানেরই কারণে৷ প্রতিপক্ষ ইটালির ডিফেন্ডার মাতেরাৎসিকে মাথা দিয়ে গুঁতো মেরে লালকার্ড দেখেন তিনি৷ তার আগেই এই দু’জনই নিজ নিজ দলের পক্ষে একটি করে গোল করেন৷ পরে খেলা অতিরিক্ত সময় পেরিয়ে পেনাল্টি শুটআউটে গড়ায়৷ সেখানে ৫-৩ গোলে হারে ফ্রান্স৷
ছবি: John MacDougall/AFP/Getty Images
২০১০
দক্ষিণ আফ্রিকায় শাকিরার তুমুল জনপ্রিয় ‘ওয়াকা ওয়াকা’ থিম সংয়ের এই বিশ্বকাপে টিকি টাকা ফুটবল খেলে পুরো আসর মাতিয়েছে স্পেন৷ জোহানেসবার্গের ফাইনালে ডাচদের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময় শেষের চার মিনিট আগে গোল করে স্পেনের শিরোপা নিশ্চিত করেন তারকা মিডফিল্ডার ইনিয়েস্তা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
২০১৪
গত বিশ্বকাপে মেসির দিকেই চোখ ছিল সবার৷ কিন্তু মেসি আর্জেন্টিনাকে শিরোপা এনে দিতে পারেননি৷ সেই দুঃখে তো দেশের পক্ষে খেলাই ছেড়ে দেবার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি৷ সে যাই হোক, পরে ফিরে এসেছেন৷ জার্মানি তাদের চতুর্থ শিরোপাটি ঘরে তোলে এ বছর৷ ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে গ্যোৎসের করা গোলে জয় নিশ্চিত করে তারা৷