1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এবার ঈদ পর্যটনে ধসের আশঙ্কা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৬ জুন ২০২৪

বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ পর্যটনের ৫০ শতাংশই হয় দুই ঈদে। তবে এবার কোরবানির ঈদে আশানুরূপ পর্যটক পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন পর্যটন এলাকার হোটেল- রিসর্টের মালিকেরা।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড়
এবার ঈদে আগের মতো পর্যটকদের ভিড় হবে বলে মনে করছেন না একাধিক হোটেল ও রিসর্টের মালিকেরা।ছবি: Mortuza Rashed/DW

তাই তার ৪০-৭০ ভাগ ছাড় দিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদের সময় পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে থাকে কক্সবাজার। এপর রাঙামাটি, সিলেট, শ্রীমঙ্গল, কুয়াকাটায় পর্যটকরা যান। সেন্টমার্টিন ও সুন্দরবনও আকর্ষণের জায়গা।  কিন্তু এবার ঈদে আগের মতো পর্যটকদের ভিড় হবে বলে মনে করছেন না কক্সবাজার হোটেল রিসর্ট মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম শিকদার।

তিনি বলেন,"এখনো পর্যন্ত যা বুকিং হয়েছে তাতে ঈদের আগে পরের দুই-একদিন ৫০ ভাগ রুমই খালি আছে। তবে ঈদের কয়েকদিন পর হয়তো পর্যটক বাড়বে। আমরা পর্যটকদের আকর্ষণ করতে এখন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দিচ্ছি। আমাদের এখানে নিরাপত্তাসহ সার্বিক আয়োজন বেশ ভালো। তারপর গত কোরবানির ঈদের চেয়ে এবার সাড়া কম।”

কক্সবাজারে হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টের সংখা পাঁচ শতাধিক জানিয়ে তিনি বলেন," এখানো ৩০ হাজারেরও বেশি পর্যটকের আবাসন ব্যবস্থা আছে। আমরা দুই ঈদে মোট পর্যটকের ৫০ শতাংশ পাই।”

'এবারের ঈদে আগের মতো সাড়া পাচ্ছি না'

This browser does not support the audio element.

তার মতে," এবার গরম এবং মানুষের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় হয়তো বা পর্যটক কম।”

তবে কক্সবাজারের একজন ট্যুর অপারেটর আজিজুর রহমান জানান," হোটেলের মালিকরা এরকমই বলে। আসলে ঈদের দিন মূলত স্থানীয় লোকজন পর্যটন এলাকায় ঘুরতে যান। আর দূরের পর্যটকরা আসেন ঈদের দুই-তিন দিন পর। আর এখন হোটেল মালিকরা ডিসকাউন্টের কথা বললেও তারা তখন আর ডিসকাউন্ট মানেনা। ইচ্ছে মতো হোটেল ভাড়া আদায় করে।”

মিয়ানমারে যুদ্ধাবস্থার কারণে বাংলাদেশের প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে এখন পর্যটন বন্ধ আছে। আর পার্বত্য জেলাগুলোর বেশকিছু এলাকায় পর্যটকদের ওপর ভ্রমণ নিণেধাজ্ঞা আছে।

সুন্দরবনে গত মাসে আগুন লাগার পর সেখানে পর্যটন বন্ধ আছে। ঈদের সময় এই তিনটি এলাকায়ও পর্যটকেরা যান। কিন্তু এবার যেতে পারছেন না।  তারপরও রাঙামাটিতে পর্যটকদের ভিড় হবে বলে মনে হচ্ছে। রাঙামাটির হোটেল রিসোর্টগুলোর ৮০ ভাগই বুকিং হয়ে গেছে।

রাঙামাটির পর্যটন মোটেলের বুকিং সহকারী আবুল কালাম আজাদ জানান," ঈদের দিনসহ  পরের দুই-তিনদিন আমাদের কোনো রুম খালি নাই। তিনি বলেন," ঈদের তিন-চারদিন পরে নন-এসি রুম পাওয়া যাবে।”

মিয়ানমারে যুদ্ধাবস্থার কারণে বাংলাদেশের প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে এখন পর্যটন বন্ধ আছে।ছবি: Al Ehsan/DW

তবে এবার সাজেকেও আগের মতো পর্যটক যাবেন বলে মনে করছেন না সাজেক রিসোর্ট ও কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চাকমা জন। তিনি বলেন," আমাদের ১২৭টি রিসোর্ট কটেজ আছে। তিন হাজার লোক থাকতে পারেন। তবে এবার ঈদে আগের মতো সাড়া পাচ্ছিনা। তাই ৪০ শতাংশ ডিসকাউন্ট ঘোষণা করেছি। গত ঈদে আমরা বুকিং ফিরিয়ে দিয়েছি। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত ৫০ ভাগ বুকিং হয়েছে। তবে আশা করছি ঈদের পর বাড়বে।”

তার কথায়," মানুষের হাতে পয়সা নেই। কস্টিং বেড়ে গেছে। তার ওপরে গরম। এই কারণে হয়তো এবার পর্যটক কম।”

'ঈদে হাওর এলাকায় ট্যুরিস্টদের ভাল সাড়া মিলেছে'

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ ট্যুরিজম সম্ভামনাময় হলেও গত এক বছরে এই খাতে কিছুটা হলেও ধস নেমেছে বলে মনে  করেন আরিফুর রহমান সুমন। তিনি সুনামগঞ্জ হাউজ বোট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি।

তিনি বলেন," তারপরও এবার ঈদে হাওর এলাকায় আমরা ট্যুরিস্টদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আমাদের সুনামগঞ্জসহ হাওর এলাকায় হাউজ-বোট পর্যটনকে ঘিরে নতুন আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। প্রচলিত পর্যটন স্পটগুলোতে মন্দা চললেও আমাদের বুকিং বেশ ভালো।”

তার মতে," অবকাঠামো এবং স্থাপনার উন্নতি হলে হাওরে পর্যটনের আকর্ষণ অনেক বাড়বে।”

ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সাবেক সভাপতি শিহাবুল আযম কোরেশি বলেন," আমাদের সারা বছর যত পর্যটন ট্যুর হয় তার ৩০ শতাংশ হয় রোজার ঈদে। আর ২০ শতাংশ কোরবানির ঈদে। আর বাকি ৫০ শতাংশ সারা বছর। আমাদের সংগঠনে ৯০০-এর বেশি ট্যুর অপাটের আছেন। তাদের কাছ থেকে যে রিপোর্ট পাচ্ছি। তাতে গত কোরবানির ঈদের চেয়ে এবার সাড়া কম।”

তার কথায়," সেন্টমার্টিন, সুন্দরবনে ট্যুরিজম বন্ধ থাকা, আবার মূল্যস্ফীতির কারণে সব কিছুর খরচ বেড়ে যাওয়া, গরম-এইসব মিলিয়ে এবার অবস্থা একটু খারাপ। তবে টাঙ্গুয়া হাওড়ে এবার প্রচুর পর্যটক এই ঈদে যাচ্ছে।''

'গত কোরবানির ঈদের চেয়ে এবার সাড়া কম'

This browser does not support the audio element.

তার কথায়, "২০২৩ সালে বিদেশ থেকে আমাদের দেশে পাঁচ-ছয় লাখ ট্যুরিস্ট এসেছেন। ৫০ লাখ বাংলাদেশ থেকে বিদেশে গিয়েছেন। আর ডোমেস্টিক ট্যুরিস্ট ওই সময়ে ছিলো এক কোটি। ফলে ডোমেস্টিক ট্যুরিজমই আমাদের জন্য সবচয়ে বেশি সম্ভাবনাময়।” সরকারের নীতি সহায়তা ও অবকাঠামো এবং স্থাপনার সহায়তা পেলে পর্যটনের উন্নতি হবে বলে মনে করছেন তিনি।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপ-পরিচালক( বিপণন ও ব্র্যান্ডি) মহিবুল ইসলাম বলেন," আমরাও রিপোর্ট নিচ্ছি। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তাতে  ঈদ ট্যুরিজমে মন্দার কোনো লক্ষণ দেখছি না। এবারও পর্যটন স্পটগুলোতে ঈদে প্রচুর পর্যটক যাবেন বলে আশা করি। আরো বেশি ভিড় হবে ঈদের পরে।”

তার কথায়, "আমরা ব্র্যান্ডিং এবং স্থাপনার উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছি।”

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ