মার্কিন গণমাধ্যম বলছে, বাইডেন জিতে গেছেন। এ বার কী করবেন ডনাল্ড ট্রাম্প? তিনি এখনো হার মানতে নারাজ।
বিজ্ঞাপন
বাইডেন পেনসিলভানিয়া ও নেভাডা জিতে গেছেন, ফলে তিনি এখন 'প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট' বলে জানাচ্ছে মার্কিন গণমাধ্যম। ওই দুই রাজ্যের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর ট্রাম্প কোনো ভাষণ দেননি। তিনি কেবল টুইট করে বলেছেন, ভোটে জালিয়াতি হয়েছে। তবে টিম ট্রাম্পের ইঙ্গিত, এই ফল তিনি মানছেন না। ট্রাম্প বলছেন, নির্বাচনী লড়াই এখনো শেষ হয়নি।
এই নির্বাচনে ট্রাম্প ৭ কোটি ভোট পেয়েছেন। অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন তিনি। কিন্তু তার পাশাপাশি ইতিহাস তৈরি করে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্তির সম্মান বাইডেন অধিকার করে বসে আছেন। তাই এত ভোট পেয়েও ট্রাম্পের জেতা সম্ভব হয়নি। এত প্রতিকূলতা, বিরূপ প্রচার, অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমের বিরোধিতা, ব্ল্যাক লাইভ ম্যাটার্স আন্দোলন, করোনা মোকাবিলার ব্যর্থতার অভিযোগ সত্ত্বেও এত ভোট পাওয়া নিঃসন্দেহে কৃতিত্বের। কিন্তু বাইডেন যেহেতু তাঁর এই কৃতিত্বকেও ছাপিয়ে গেছেন, তাই লাভ হয়নি ট্রাম্পের।
ফ্যাক্ট চেক: মার্কিন নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ
মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল আসতে শুরু করার পর বুধবার থেকে এই নির্বাচনে জালিয়াতির নানা অভিযোগ ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে৷ ছবিঘরে দেখে নেয়া যাক এসব অভিযোগ এর পেছনে কতটুকু ভিত্তি রয়েছে৷
ছবি: Goran Tomasevic/Reuters
জালিয়াতির অভিযোগ
মার্কিন নির্বাচনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ফলাফলে এগিয়ে আছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন৷ কিন্তু বুধবার থেকে এই নির্বাচনে জালিয়াতির নানা অভিযোগ ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে৷ এসব অভিযোগকারীর বেশির ভাগই ট্রাম্প এর সমর্থক৷
ছবি: Daniel Acker/REUTERS
ট্রাম্পের অভিযোগ
ট্রাম্প এবং তাঁর সমর্থকদের অভিযোগ, জালিয়াতি হয়েছে এবারের নির্বাচনে৷ বিশেষ করে ভোট গণনায়৷ তারা এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবার কথাও ভাবছে৷ এক টুইটে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, আমরা বড় ধরনের জয় পেতে যাচ্ছি, কিন্তু তারা নির্বাচন আমাদের কাছ থেকে চুরি করে নিয়ে যাবার চেষ্টা চালাচ্ছে৷
ছবি: Edgard Garrido/Reuters
ফ্যাক্ট চেক ১ : মিশিগানে বাইডেনের অবিশ্বাস্য জয়?
বুধবার সকালে হঠাৎ করে মিশিগানে বাইডেনের ভোট ১ লাখ ৩৮ হাজার বেড়ে যায়৷ এ নিয়ে শুরু হয় নানা অভিযোগ৷ আসলে এই ঘটনাটি ঘটে মিশিগানের এক নির্বাচন কর্মকর্তার ভুলের কারণে৷ তিনি ভুল করে একটি শূন্য বেশি বসিয়ে দিয়েছিলেন বাইডেনের ভোট গণনায়, কিন্তু ভুলটি ২০ মিনিটের মধ্যে শুধরে নেয়া হয়৷ তবে এই ভুলের খবর ছড়িয়ে পড়লে রিপাবলিকানরা জালিয়াতির অভিযোগ তোলে৷
ছবি: Angela Weiss/AFP
ফ্যাক্ট চেক ২: অ্যারিজোনার কলম বিভ্রাট
অ্যারিজোনায় ভোট দেয়ায় একটি বিশেষ কলম ব্যবহার করতে বাধ্য করা হচ্ছে ট্রাম্প সমর্থকদের, এরকম একটি অভিযোগও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে৷ তাদের অভিযোগ, এই বিশেষ কলম শুধু ট্রাম্প সমর্থকদেরই ব্যবহার করতে বাধ্য করা হচ্ছে, এবং এই কলম ব্যবহার করার ফলে ব্যালট পেপারটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু নির্বাচনী কর্মকর্তারা বলেছেন, যেকোন ধরণের কলম ব্যবহার করে ভোট দিলে তা বৈধ ভোট হিসেবে বিবেচিত হবে৷
ছবি: Goran Tomasevic/REUTERS
ফ্যাক্ট চেক ৩: উইসকনসিনে মোট ভোটের চেয়ে বেশি ভোট প্রদান?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে একজন অভিযোগ তোলেন যে উইসকনসিনে মোট রেজিস্টার্ড ভোটের চেয়ে বেশি ভোট দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, এই অভিযোগে তথ্যগত ভুল রয়েছে৷ কারণ, এই রাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী, যেকোন ভোট প্রদানের যোগ্য ব্যক্তি ভোটের দিনেও রেজিস্টার্ড ভোটার হতে পারেন এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হতে পারেন৷ আসলে মোট ভোটারের পরিমাণ অভিযোগে উল্লেখিত ভোটার সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি৷
ছবি: Edgard Garrido/REUTERS
5 ছবি1 | 5
কী করবেন ট্রাম্প
ট্রাম্প এখনো আদালতে যেতে পারেন। এই হুমকি তিনি অতীতে বহুবার দিয়েছেন। রাজ্যগুলির ফল প্রকাশিত হওয়ার পর মামলা করাও শুরু করে দিয়েছেন তিনি। এর আগে কয়েকটি মামলায় হেরেও গেছেন। মার্কিন নিয়মানুসারে, প্রথমে তাঁকে রাজ্যের আদালতে পুনর্গণনার জন্য যেতে হবে। সেখানে রায় তাঁর পক্ষে না গেলে তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে পারেন।
জর্জিয়াতে আবার ভোট গণনা হবে। ট্রাম্প চান, উইসকনসিনেও আবার ভোট গণনা হোক। ভোটের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে ট্রাম্পের লিগাল টিমকে।
গত শনিবার অ্যারিজোনায় ট্রাম্প মামলা করেছেন। সেখানে তাঁর অভিযোগ, নির্বাচনের দিন ভোটে কারচুপি হয়েছে। এই অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্যের সেক্রেটারি অফ স্টেট বলেছেন, ট্রাম্প এখন খড়কুটো আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইছেন।
সরকারিভাবে এখনো ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। কারণ, কিছু রাজ্যে গণনা শেষ হয়নি। সেখানে গণনা শেষ করে যতক্ষণ ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ফলাফল না আসছে, ততক্ষণ সরকারিভাবে ফল ঘোষণা হবে না। তারপরেই সম্ভবত ট্রাম্প তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানাবেন।