1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গৃহযুদ্ধের দিকে মিশর

১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩

মোহাম্মদ মুরসির পতনের পর মিশরে এবার শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা৷ আর সেই দাঙ্গা মোকাবিলায় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে ইসলামপন্থিদের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন পুলিশের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা৷

epa03873586 Egyptian soldiers and civilian reporters take cover behind an armoured personnel carrier as they keep watch during an operation against gunmen in the Kerdasa district in Giza, south of Cairo, Egypt, 19 September 2013. An Egyptian police general has been killed in clashes between Islamist gunmen and security forces storming a village south of Cairo, security officials said. General Nabil Farrag, assistant security director of Giza Province, died shortly after being brought to hospital. Security forces also captured 14 Islamist fugitives wanted for alleged involvement in violence in the village and at the six-week long Islamist sit-in outside Cairo University in support of ousted president Mohammed Morsi. EPA/AHMED KHALED +++(c) dpa - Bildfunk+++
ছবি: picture-alliance/dpa

সিরিয়া ইস্যু যখন কিছুটা থিতিয়ে পড়েছে, তখন আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মিশর৷ মোহাম্মদ মুরসির পতনের পর কেরদাশায় আশ্রয় নেয় ইসলামপন্থিরা৷ এ সপ্তাহের প্রথমে ঐ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয় নিরাপত্তাবাহিনী৷ তাই বৃহস্পতিবার ভোরেই পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে সেখানে অভিযান শুরু করে৷ এ সময় দু'পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হন গিজা প্রদেশের সহযোগী নিরাপত্তা পরিচালক জেনারেল নাবিল ফারাগ৷ সেখান থেকে রকেট চালিত গ্রেনেড, বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ ১৫ জনকে আটক করে নিরাপত্তাবাহিনী৷ প্রসঙ্গত, কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে মুরসি সমর্থকদের সহায়তা এবং ঐ অঞ্চলে সহিংসতার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে৷ গত মাসে ঐ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১১ জন পুলিশ সদস্য৷

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, তালিকাভুক্ত ১৪০ ব্যক্তিকে খুঁজতে কেরদাশায় হেলিকপ্টার টহল দিচ্ছে৷ ঐ এলাকা থেকে সব জঙ্গি এবং অপরাধীদের বের করা না পর্যন্ত নিরাপত্তাবাহিনী বিশ্রাম নেবে না৷

অতঙ্কে ভীত সংখ্যালঘুরা

মিশরের দক্ষিণাঞ্চলের আর একটি শহর দালগায় আতঙ্কের সাথে দিন কাটাচ্ছেন খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা৷ ১ লাখ ২০ হাজার অধিবাসীর মধ্যে ২০ হাজারই খ্রিষ্টান৷ এরই মধ্যে কট্টর ইসলামপন্থিরা প্রায়ই তাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে যে নিরাপত্তাবাহিনী আর বেশিদিন তাদের রক্ষা করতে পারবে না৷

আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মিশরছবি: Reuters

মুরসির পতনের পর ইসলামি কট্টরপন্থিরা ঐ এলাকাটিতে জড়ো হতে থাকে৷ সেসময় তারা খ্রিষ্টানদের বাড়িঘরে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুন দিয়েছে, লুট পাট চালিয়েছে৷ গত আগস্টে মুরসি সমর্থকদের উপর নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানের পর তাদের সহিংসতা চরমে রূপ নেয়৷ খ্রিষ্টানদের ৪০টি বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয় তারা৷ দালগার একমাত্র ক্যাথলিক গির্জায় হামলা চালানো হয়, চালানো হয় লুটপাট৷ সেসময় ৫০টি পরিবার দালগা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়৷

নিরাপত্তা ব্যর্থ, ভয়াবহ পরিস্থিতি

দালগার স্থানীয় এক খ্রিষ্টান অধিবাসী জানালেন, মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের মধ্যে সমতা নেই বলে আগে থেকেই অভিযোগ ছিল তাদের, মুরসি ক্ষমতায় এলে যা আরো বেড়ে যায়৷ আর ৩রা জুলাই মুরসির পতনের পর পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে৷ তাদের ধারণা, নিরাপত্তাবাহিনী তাদের সবসময় নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে৷

গত সোমবার দালগার নিয়ন্ত্রণ নিতে অভিযান চালায় নিরাপত্তাবাহিনী৷ ১৩০ জন আটক হয়৷ শহরে প্রবেশ করতে এবং বের হতে প্রতিটি মানুষ ও যানবাহন তল্লাশি করে পুলিশ৷ বাসায় বাসায়ও চলে তল্লাশি৷ তবে স্থানীয় ইসলামপন্থিদের দাবি, জঙ্গি অভিযানের নামে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে৷ এমনকি শহরটিকে হত্যাযজ্ঞের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন এক কট্টরপন্থি৷

স্থানীয় গির্জার যাজক ফাদার আব্রাহাম জানান, গত কয়েক দশকে ঐ এলাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কোনো লক্ষণ দেখেননি তিনি৷ কিন্তু ২০১২ সালের জুন মাসে মুরসি ক্ষমতা নেয়ার পর চিত্রটা পুরো বদলে যায়৷ বদলে যায় স্থানীয় ইসলামপন্থিদের আচরণ৷ তারা ঔদ্ধত্য আচরণ করতে থাকে, যেন প্রত্যেকেই এক একজন মুরসি৷

ফাদার বলেন, অনেক মুসলিম পরিবার তাদের সাহায্যে এগিয়ে এলেও তারা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছেন না৷ তবে এখনও তার বিশ্বাস বড় বড় পরিবারের কর্তা ব্যক্তিদের সহায়তায় এ সহিংসতা বন্ধ হওয়া সম্ভব৷ এমনকি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এবং স্থানীয় বেশ কিছু গণমাধ্যম যখন তাদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিল, তখন ইসলামপন্থিদের একটি মিছিল তাদের এই বলে ধাওয়া করে যে গণমাধ্যম সব সময়ই তাদের বিপক্ষে৷

গত ৩রা জুলাই মুরসির পতনের পর এ পর্যন্ত দুই হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে মিশরে, যাদের বেশিরভাগই মুরসি সমর্থক৷ নিহত হয়েছে শতাধিক পুলিশ৷

এপিবি/ডিজি (এপি/রয়টার্স/ডিপিএ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ