তুরস্কের মহাকাশ পরিকল্পনার কথা জানালেন এর্দোয়ান। আগামী ১০ বছরের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। যার মধ্যে আছে, চাঁদে রকেট পাঠানো এবং মহাকাশ-বন্দর তৈরি করা।
এর্দোয়ান বলেছেন, ''২০২৩ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ভিত্তিতে আমারা হাইব্রিড রকেট পাঠাব। ঈশ্বর চাইলে আমরা চাঁদে যাচ্ছি।''
তুরস্কের প্রজাতন্ত্র হওয়ার একশ বছর পূর্তিও হচ্ছে ওই সময়। এর্দোয়ান মহাকাশ-বন্দর গড়ে তুলতে চান। তিনি চান, তুরস্ক যেন রকেট প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রণী দেশে পরিণত হয়। তিনি বলেছেন, ''আমি আশা করব, আমাদের প্রয়াস সফল হবে এবং মহাকাশ গবেষণায় এগিয়ে থাকা দেশের তালিকায় তুরস্কও ঠাঁই পাবে।''
২০১৮ সালে তুরস্কের মহাকাশ এজেন্সি তৈরি হয়। সে সময় আর্থিক অনটন চলছিল। তার মধ্যে এই এজেন্সির গঠন নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় এর্দোয়ানকে। কিন্তু এই প্রকল্পের সমর্থকদের দাবি ছিল, এর ফলে তুরস্কের মহাকাশ গবেষকরা উপকৃত হবেন এবং ব্রেন ড্রেন বন্ধ হবে।
ইস্তানবুলেই শেকড় এর্দোয়ানের
ইস্তানবুলের মেয়র পুনর্নির্বাচনেও জয় পেয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এর্দোয়ানের বিরোধীরা৷ কিন্তু তাই বলে তুর্কি প্রেসিডেন্ট ইস্তানবুলে প্রভাব হারিয়েছেন মনে করলে ভুল হবে৷ জন্মস্থান কাসিমপাসা এখনও তাঁর পক্ষেই আছে৷
এর্দোয়ানের শহর
বিখ্যাত গালাটা টাওয়ার থেকে হাঁটা দূরত্বে ইস্তানবুলের ইউরোপ অংশে ইসতিকলাল অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত কাসিমপাসা৷ ৬৫ বছর আগে এখানেই জন্মেছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এর্দোয়ান৷ ইস্তানবুলের এই অংশেই তাঁর কট্টর সমর্থকদের বাস৷
ছবি: Demetrios Ioannou
নতুন যুগ
গত গ্রীষ্মেই আধুনিক তুরস্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়৷ ২০১৮ সালের ২৪ জুন নতুন করে ৫ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন৷ দেশটির ইতিহাসে এতো ক্ষমতাবান প্রেসিডেন্ট এর আগে আসেননি৷ শপথ নেয়ার দিন নিজের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি- একেপির সদস্যদের এর্দোয়ান বলেন, ‘তুরস্ক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে’৷
ছবি: Demetrios Ioannou
ব্যাপক ক্ষমতাধর
২০১৭ সালে এক গণভোটের মাধ্যমে দেশটির সংবিধান সংশোধন করা হয়৷ সংসদীয় গণতন্ত্র থেকে রাষ্ট্রপতি শাসিত প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় তুরস্ক৷ এর ফলে একই সঙ্গে সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন এর্দোয়ান৷ ১৯২৩ সালে দেশটির প্রথম রাষ্ট্রপতি মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক তুর্কি রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটিই সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পরিবর্তন৷
ছবি: Demetrios Ioannou
পরিবারের সদস্য
এর্দোয়ানের মুখ ও একেপির দলীয় পতাকায় ছেয়ে আছে কাসিমপাসা৷ দেয়ালে টানানো পোস্টার বা ব্যালকনিতে ঝুলছে ব্যানার৷ কাসিমপাসার মানুষ কাকে সমর্থন করছে, সেটি স্পষ্ট৷ বিরোধী দলের ও প্রার্থীর পোস্টার প্রায় নেই বললেই চলে, যা আছে, তাও ছেঁড়া৷ কাসিমপাসার মানুষ এর্দোয়ানকে নিজের পরিবারের সদস্য বলেই মনে করেন৷
ছবি: Demetrios Ioannou
সাধাসিধে জীবন
এর্দোয়ান একটি রক্ষণশীল, খেটে খাওয়া পরিবারের অংশ হয়ে বড় হয়েছেন৷ তাঁর সমর্থকদের অনেকেই এমন জীবনের সঙ্গে পরিচিত৷ জীবনের বেশিরভাগ সময় কাসিমপাসাতেই কাটিয়েছেন তিনি৷ এখানেই শুরু তাঁর রাজনৈতিক জীবন৷ ১৯৯৪ সালে তিনি প্রথম ইস্তানবুলের মেয়র হন, ২০০৩ সালে হন প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট হন ২০১৪ সালে৷
ছবি: Demetrios Ioannou
5 ছবি1 | 5
মহাকাশ অভিযানে কত অর্থ খরচ হবে, তা এর্দোয়ান জানাননি। তবে তিনি স্পেসএক্সের প্রধান এলোন মাস্কের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তুরস্কের কোম্পানিগুলিকে মহাকাশ অভিযানে সাহায্য করার অনুরোধ জানিয়েছেন। স্পেস এক্সের সহযোগিতায় অ্যামেরিকা থেকে তুরস্কের উপগ্রহ টার্কস্যাট ৫এ মহাকাশে গেছে।
এর্দোয়ান বলেছেন, ''আমাদের পা থাকবে মাটিতে, চোখ আকাশে। আমাদের শিকড় থাকবে বিশ্বে, আমাদের ডালপালা থাকবে মহাকাশে।''